ঢাকা ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল দলকে নিয়ে বিএনপির যৌথসভা Logo ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বরিশাল-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপনের মনোনয়নপত্র দাখিল Logo রাজপথ বিএনপির দখলে না থাকলেও বিটিভি  বিএনপি জামায়াতের দখলে! Logo দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেস্ট হোল্ডিং Logo অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ সালমা উসমানের বেপরোয়া দুর্নীতি! Logo বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ঘরে লুটপাট Logo চাকুরীচ্যুত হওয়ার পরেও বহাল পায়রা বন্দর প্রকৌশলী নাছির: গড়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়!  Logo ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন এখন করাপশনের ত্রিমুখী জুটি Logo মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা Logo থিয়েটার কুবি’র নেতৃত্বে সুইটি-হান্নান




চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৫:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০১৯ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি;

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের বাইতুলহুদা জামে মসজিদ সংলগ্ন পূর্ব-পশ্চিম বাদুরতলা খালের ওপর বাশেঁর সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ মানুষ। বাঁশের সাঁকোই যেন তাদের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন দু’পাড়ের স্কুল শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকার জনগণকে অসহনীয় দুর্ভোগ পাড়ি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রয়োজনীয় কাজে যেতে হচ্ছে।

বর্ষা আসলেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে এ দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। সাঁকোটির স্থলে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীসহ দুই সহস্রাধিক মানুষ দুর্ভোগ ও ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে স্থানীয় জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা জানায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মঠবাড়ি ইউনিয়নের বিষখালীর ভাঙন কবলিত এলাকা হওয়ায় বাড়িঘর, জায়গা-জমিসহ রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় যোগাযোগের একমাত্র বাশেঁর সাঁকোটি সবার ভরসা। এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন উপজেলার পশ্চিম বাদুরতলা এম এস আলম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বাদুরতলা আফাজ উদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১১৫নং পশ্চিম বাদুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬৫ নং পূর্ব বাদুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আব্দুল মালেক কলেজ, ৬৪নং চুনপুরী সরকারি বিদ্যালয় ও উত্তর উত্তমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

বছরের পর বছর এ সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হলেও জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এ ছাড়াও সময় বাঁচাতে বড়ইয়া ইউনিয়নের লোকজন উপজেলা, জেলা শহরে যেতে এ সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।

এলাকাটির বাসিন্দা আ. করিম হাওলাদার জানান, নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা ব্রিজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন শেষে কারো মনে থাকে না। এই সাঁকো পার হতে গিয়ে আমার ছেলে শামিম হোসেনের অকাল মৃত্যু হয়েছে।

কোমলমতি শিক্ষার্থী বিথি আক্তার, তুলি আক্তার, মো. শাকিল, তিথি, মবিন ও জুবায়ের জানায়, আমরা বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় হাক্কা (সাঁকো) দিয়ে পড়ে গিয়ে জামা-কাপড়, বই-খাতা ভিজে আবার বাড়িতে ফিরে যাই। পরে স্কুল না যাওয়ার কারণে আবার স্কুলে গিয়ে স্যারদের মারও খেয়েছি।

স্থানীয় চৌকিদার মো. আনোয়ার হোসেন জানায়, বর্ষাকালে এই সাঁকো পারাপারে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে আমার পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করিয়েও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি। ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকার জনসাধারণ শিগগিরই একটি ব্রিজ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল সিকদার জানান, ওখানে ব্রিজ করার জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। আবেদন মঞ্জুর হলে প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান জানান, আমি ওই স্থানে ব্রিজ করতে আগ্রহী। ইচ্ছা করলে একা কিছুই করতে পারি না। তবে উপজেলা চেয়ারম্যানের রেজুলেশন থাকলে ব্রিজের কাজ করা সম্ভব।

এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. মনিরউজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সরেজমিনে দেখে যদি আমাদের উপজেলার অর্থায়নে সম্ভব হয় তবে ব্রিজের কাজ দ্রুত শুরু করব। আমাদের অর্থায়নে না হলে জেলা হয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠাব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




চরম দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ১১:৪৫:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি;

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের বাইতুলহুদা জামে মসজিদ সংলগ্ন পূর্ব-পশ্চিম বাদুরতলা খালের ওপর বাশেঁর সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ মানুষ। বাঁশের সাঁকোই যেন তাদের একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন দু’পাড়ের স্কুল শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকার জনগণকে অসহনীয় দুর্ভোগ পাড়ি দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রয়োজনীয় কাজে যেতে হচ্ছে।

বর্ষা আসলেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে এ দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। সাঁকোটির স্থলে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীসহ দুই সহস্রাধিক মানুষ দুর্ভোগ ও ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে স্থানীয় জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা জানায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মঠবাড়ি ইউনিয়নের বিষখালীর ভাঙন কবলিত এলাকা হওয়ায় বাড়িঘর, জায়গা-জমিসহ রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় যোগাযোগের একমাত্র বাশেঁর সাঁকোটি সবার ভরসা। এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন উপজেলার পশ্চিম বাদুরতলা এম এস আলম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম বাদুরতলা আফাজ উদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১১৫নং পশ্চিম বাদুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬৫ নং পূর্ব বাদুরতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আব্দুল মালেক কলেজ, ৬৪নং চুনপুরী সরকারি বিদ্যালয় ও উত্তর উত্তমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

বছরের পর বছর এ সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হলেও জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এ ছাড়াও সময় বাঁচাতে বড়ইয়া ইউনিয়নের লোকজন উপজেলা, জেলা শহরে যেতে এ সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।

এলাকাটির বাসিন্দা আ. করিম হাওলাদার জানান, নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা ব্রিজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচন শেষে কারো মনে থাকে না। এই সাঁকো পার হতে গিয়ে আমার ছেলে শামিম হোসেনের অকাল মৃত্যু হয়েছে।

কোমলমতি শিক্ষার্থী বিথি আক্তার, তুলি আক্তার, মো. শাকিল, তিথি, মবিন ও জুবায়ের জানায়, আমরা বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় হাক্কা (সাঁকো) দিয়ে পড়ে গিয়ে জামা-কাপড়, বই-খাতা ভিজে আবার বাড়িতে ফিরে যাই। পরে স্কুল না যাওয়ার কারণে আবার স্কুলে গিয়ে স্যারদের মারও খেয়েছি।

স্থানীয় চৌকিদার মো. আনোয়ার হোসেন জানায়, বর্ষাকালে এই সাঁকো পারাপারে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে আমার পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করিয়েও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারিনি। ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকার জনসাধারণ শিগগিরই একটি ব্রিজ নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল সিকদার জানান, ওখানে ব্রিজ করার জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। আবেদন মঞ্জুর হলে প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান জানান, আমি ওই স্থানে ব্রিজ করতে আগ্রহী। ইচ্ছা করলে একা কিছুই করতে পারি না। তবে উপজেলা চেয়ারম্যানের রেজুলেশন থাকলে ব্রিজের কাজ করা সম্ভব।

এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. মনিরউজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সরেজমিনে দেখে যদি আমাদের উপজেলার অর্থায়নে সম্ভব হয় তবে ব্রিজের কাজ দ্রুত শুরু করব। আমাদের অর্থায়নে না হলে জেলা হয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠাব।