খুলনায় স্ত্রীসহ খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- আপডেট সময় : ১০:৪২:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ২৪৯ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা
খুলনায় স্ত্রীসহ খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
খুলনার কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামের সাবেক সহকারী ব্যবস্থাপক শেখ মনিরুল ইসলাম (৫৫) এবং তার স্ত্রী শারমিন আক্তারের (৪৯) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান শুভ্র।
মামলায় তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী দুদক খুলনার সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান শুভ্র।
দুদক থেকে জানা গেছে, শেখ মনিরুল হাসান বর্তমানে বাগেরহাট সদরের উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। স্বামীর অবৈধ আয় থেকে স্ত্রী সম্পদ অর্জন করায় দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। খাদ্য কর্মকর্তা শেখ মনিরুল হাসানকে দুটি মামলায় আসামি করা হলেও একটি মামলায় তার স্ত্রী শারমিন আক্তারকেও আসামি করা হয়েছে। খাদ্য কর্মকর্তা শেখ মনিরুল হাসান খুলনা মহানগরীর বেনী বাবু রোড এলাকার বাসিন্দা।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দুদক খাদ্য কর্মকর্তা শেখ মনিরুল হাসানের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে ২০১৮ সালে। আর ২০১৯ সালে সম্পদ বিবরণী জারি করে। তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধানকালে শেখ মনিরুল হাসান মোট ৫০ লাখ ৮৩ হাজার ৭০৯ টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ সময়ে তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়ের পরিমাণ ৪৮ লাখ ৬৩ হাজার ৪৩০ টাকা। শেখ মনিরুল হাসান জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ৬৩৭ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
অপর মামলাটি করা হয় শেখ মনিরুল হাসান এবং তার স্ত্রী শারমিন আক্তারের বিরুদ্ধে। এ মামলায় তাদের দাখিলকৃত সম্পদ অনুসন্ধানকালে তার স্ত্রী শারমিন আক্তারের ৮৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার স্থাবর ও ৩৪ লাখ ৭৮ হাজার ১০৭ টাকার অস্থাবর মোট ১ কোটি ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ১০৭ টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এর মধ্যে স্ত্রীর ব্র্যাক ব্যাংকের ঋণ, দোকান ভাড়ার জামানত গ্রহণ ও বরফকল ভাড়ার জামানত বাবদ মোট ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩ টাকার দায়-দেনা আছে। দায়-দেনা বাদে তার নিট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ২ লাখ ২ হাজার ১৪ টাকা। ওই সম্পদের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৬৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৪ টাকা। এই সময়ে তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়ের পরিমাণ ৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩৩২ টাকা।
ব্যয় বাদে তার নিট আয়/সঞ্চয় ৫৭ লাখ ৯০ হাজার ১৮২ টাকা। অর্থাৎ খাদ্য কর্মকর্তা মনিরুলের স্ত্রী শারমিন আক্তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৪৪ লাখ ১১ হাজার ৮৩২ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। আর আসামি শেখ মনিরুল হাসান দায়িত্বশীল সরকারি পদে কর্মরত থেকে অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন কররে তার স্ত্রী আসামী শারমিন আক্তারের নামে অর্জন দেখিয়ে উক্ত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।