ঢাকা ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ




মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী

প্রতিনিধি, শাবিপ্রবি
  • আপডেট সময় : ০১:৩৮:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ৩১৬ বার পড়া হয়েছে

শুভ নববর্ষ ১৪৩১ কে আমরা আসলে শুভকামনা জানাচ্ছি নাকি হাস্যকর, জোকসে পরিণত করছি? মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো কালচারাল একটা যাত্রা নিয়ে কিছু মানুষ প্রতিনিয়ত ছলে বলে কৌশলে এটাই বুঝাতে চাচ্ছে, এটা একটা ধর্মবিরোধী কার্যকলাপ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নাকি জনসাধারণের ট্যাক্সের টাকা মেরে এইসব বাজে কাজে অর্থ ব্যয় করে। মূর্তি যারা বানায় তাদের ব্যক্তিগত ভাবে পোক করে বলা হচ্ছে নাস্তিক। কলাবিজ্ঞানী, এবং আরো নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। এই কর্মকান্ডগুলো নববর্ষের মতো একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালনে ব্যঘাত ঘটছে

একটা জাতি কালচার বাদ দিবে এটার মধ্যে তো সার্থকতা দেখি না। যেখানে মঙ্গল শোভাযাত্রা বা আনন্দ শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি লাভ করে এবং বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে রিপ্রেজেন্ট করে সেখানে আমরা বাঙ্গালী জাতি হিসাবে এই যাত্রা নিয়ে গালমন্দ করে নিজেরাই কি নিজেদের ইমেজ নষ্ট করছি না। শিক্ষার্থী হিসেবে আমি মনে করি, ধর্ম আর কালচার সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী। যেহেতু ধর্ম পালন করতে মঙ্গল শোভাযাত্রা কোনে বাধা পালন করছে না, তাহলে তো এই যাত্রা দোষের কিছু না। এটা ধর্মীয় বিরোধী মানলাম। এবং যে বা যারা এটায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে পাপ পূর্ন্যের বোঝাটা আমরা কি তাদের কাঁধে দিতে পারি না।

চিন্তার জায়গায় পরিবর্তন নিয়ে আসাটা আমার মনে হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একটা জাতি যদি তার নিজস্ব কালচার ভুলে যায়, তখন সেই জাতিটা কি আসলেই তাদের নিজস্ব জাতিতে পরিচিত হতে পারবে বিশ্বের কাছে?

আমরা মনে হয় এমন একটা জাতিতে পরিনত হতে যাচ্ছি, যেখানে খুব সহজ রাস্তার বদলে আমরা তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উপরে উঠতে চাই। এবং যখন উঠতে পারি না, তখন বাঁশকে, জাতিকে সরকার,আর দেশ কে গালমন্দ করে থাকি। কিছু বলতে গেলে এটাও কথা আসে কিসের কালচার, ইলিশ মাছ খেতে পারি না, ইংলিশের দাম বেশি। একটা নির্দিষ্ট দিনেই আমার ইলিশ মাছ খেতে হবে, আর ইলিশ মাছ না খেলে আমার বৈশাখ পালন হবে না, কেনো বাকি মাছগুলো কি দোষ করছে। মাছে ভাতে বাঙ্গালি। ইলিশে ভাতে বাঙ্গালি না।

আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে নববর্ষের রীতি -নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা। সকল ধর্মের মানুষ একই সাথে ধর্ম-বর্ণ বাদ নিয়ে নববর্ষ উদযাপন করে। যেখানে সংস্কৃতি পর্যালোচনায় কিছু কাজ কর্ম ধর্মীয়বিশ্বাসের উপরে আঘাত হানে। তাই নববর্ষ নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। আমরা যদি নববর্ষকে দেশের ঐতিহ্য ধারন এর মাধ্যমে উদযাপন করি এবং ধর্মীয় কাজে আঘাত হানে এমন কাজ-কর্ম থেকে বিরত থাকি তাহলে কোন সমালোচনা থাকবে না বাংলা বছরের প্রথম দিন উদযাপনে।

কেউ কেউ হয়তো উন্নত বিশ্বের উদাহরণ টানে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা ছাড়া এতসব অনুষ্ঠান হয় না। ওরা ওদের নাইট পার্টি, আর মদ জুয়ার, কালচার ঠিকই পালন করে। তাহলে আমরা কেনো আমাদের কালচার কে হীনও করছি।

ধর্মকে আমরা ব্যাক্তিগত বিশ্বাস আর কালচারকে সার্বিক বিশ্বাস হিসাবে কেনো মেনে নিতে পারি না?

 

লেখিকা:: তাসফিয়া ফারহানা ঐশী, তরুণ কলাম লেখক ফোরাম শাবিপ্রবি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী

আপডেট সময় : ০১:৩৮:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪

শুভ নববর্ষ ১৪৩১ কে আমরা আসলে শুভকামনা জানাচ্ছি নাকি হাস্যকর, জোকসে পরিণত করছি? মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো কালচারাল একটা যাত্রা নিয়ে কিছু মানুষ প্রতিনিয়ত ছলে বলে কৌশলে এটাই বুঝাতে চাচ্ছে, এটা একটা ধর্মবিরোধী কার্যকলাপ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নাকি জনসাধারণের ট্যাক্সের টাকা মেরে এইসব বাজে কাজে অর্থ ব্যয় করে। মূর্তি যারা বানায় তাদের ব্যক্তিগত ভাবে পোক করে বলা হচ্ছে নাস্তিক। কলাবিজ্ঞানী, এবং আরো নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। এই কর্মকান্ডগুলো নববর্ষের মতো একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালনে ব্যঘাত ঘটছে

একটা জাতি কালচার বাদ দিবে এটার মধ্যে তো সার্থকতা দেখি না। যেখানে মঙ্গল শোভাযাত্রা বা আনন্দ শোভাযাত্রা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি লাভ করে এবং বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে রিপ্রেজেন্ট করে সেখানে আমরা বাঙ্গালী জাতি হিসাবে এই যাত্রা নিয়ে গালমন্দ করে নিজেরাই কি নিজেদের ইমেজ নষ্ট করছি না। শিক্ষার্থী হিসেবে আমি মনে করি, ধর্ম আর কালচার সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী। যেহেতু ধর্ম পালন করতে মঙ্গল শোভাযাত্রা কোনে বাধা পালন করছে না, তাহলে তো এই যাত্রা দোষের কিছু না। এটা ধর্মীয় বিরোধী মানলাম। এবং যে বা যারা এটায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে পাপ পূর্ন্যের বোঝাটা আমরা কি তাদের কাঁধে দিতে পারি না।

চিন্তার জায়গায় পরিবর্তন নিয়ে আসাটা আমার মনে হয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একটা জাতি যদি তার নিজস্ব কালচার ভুলে যায়, তখন সেই জাতিটা কি আসলেই তাদের নিজস্ব জাতিতে পরিচিত হতে পারবে বিশ্বের কাছে?

আমরা মনে হয় এমন একটা জাতিতে পরিনত হতে যাচ্ছি, যেখানে খুব সহজ রাস্তার বদলে আমরা তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উপরে উঠতে চাই। এবং যখন উঠতে পারি না, তখন বাঁশকে, জাতিকে সরকার,আর দেশ কে গালমন্দ করে থাকি। কিছু বলতে গেলে এটাও কথা আসে কিসের কালচার, ইলিশ মাছ খেতে পারি না, ইংলিশের দাম বেশি। একটা নির্দিষ্ট দিনেই আমার ইলিশ মাছ খেতে হবে, আর ইলিশ মাছ না খেলে আমার বৈশাখ পালন হবে না, কেনো বাকি মাছগুলো কি দোষ করছে। মাছে ভাতে বাঙ্গালি। ইলিশে ভাতে বাঙ্গালি না।

আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে নববর্ষের রীতি -নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা। সকল ধর্মের মানুষ একই সাথে ধর্ম-বর্ণ বাদ নিয়ে নববর্ষ উদযাপন করে। যেখানে সংস্কৃতি পর্যালোচনায় কিছু কাজ কর্ম ধর্মীয়বিশ্বাসের উপরে আঘাত হানে। তাই নববর্ষ নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। আমরা যদি নববর্ষকে দেশের ঐতিহ্য ধারন এর মাধ্যমে উদযাপন করি এবং ধর্মীয় কাজে আঘাত হানে এমন কাজ-কর্ম থেকে বিরত থাকি তাহলে কোন সমালোচনা থাকবে না বাংলা বছরের প্রথম দিন উদযাপনে।

কেউ কেউ হয়তো উন্নত বিশ্বের উদাহরণ টানে, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা ছাড়া এতসব অনুষ্ঠান হয় না। ওরা ওদের নাইট পার্টি, আর মদ জুয়ার, কালচার ঠিকই পালন করে। তাহলে আমরা কেনো আমাদের কালচার কে হীনও করছি।

ধর্মকে আমরা ব্যাক্তিগত বিশ্বাস আর কালচারকে সার্বিক বিশ্বাস হিসাবে কেনো মেনে নিতে পারি না?

 

লেখিকা:: তাসফিয়া ফারহানা ঐশী, তরুণ কলাম লেখক ফোরাম শাবিপ্রবি।