ঢাকা ১২:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বিএনপি নেতা মাহিদুর রহমান নেতৃত্বের বিস্ময় Logo স্বৈরাচারের দোসর প্রধান বিচারপতির ধর্ম ছেলে পরিচয়ে মোজাম্মেলের অধর্ম! Logo রাজধানীতে মার্কেট দখল করতে গিয়ে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আটক Logo স্কুলের ভেতরে নিয়মিত চলে তাশ ও জুয়া! Logo চাঁদা চাওয়ায় দাকোপে ৫ আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা Logo ভোলা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আল আমিন সম্পাদক শামসউদ্দিন Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এর উদ্যোগে দুমকিতে ক্যারিয়ার সামিট অনুষ্ঠিত Logo সওজ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে প্রচারিত প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ Logo বিপ্লবী গান, আবৃত্তি এবং কাওয়ালী গানে মেতেছে আশা বিশ্ববিদ্যালয় Logo ছত্রিশ টাকার নকলনবীশ প্রভাবশালী কোটিপতি!




পীরগঞ্জে যে গ্রামে চেরাগের আলোতে চলে লেখাপড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক;
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৫:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩ ৩০২ বার পড়া হয়েছে

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে খেকিডাঙ্গী গ্রামে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের কাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। কাজ শেষ না করেই সিমেন্টের খুঁটি ফেলে রেখে চলে গেছেন ঠিকাদার। লাইন নির্মান না হওয়ায় বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই গ্রামের প্রায় এক’শ পরিবার। চরম অসুবিধায় মধ্য দিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে তাদের। পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ বলছেন, উপর মহলের নির্দেশে লাইন নির্মান কাজ বন্ধ করা হয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা ইউনিয়নের খেকিডাঙ্গী গ্রামে প্রায় এক’শ পরিবারে বিদ্যুৎ পৌছানোর লক্ষ্যে ১.৩৩ কিলোমিটার নতুন বিদ্যুৎ লাইন নির্মানের পরিকল্পনা করেন ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সে লক্ষ্যে ২০২০ সালে মাঠ জরিপ ও নকশার প্রনয়ন করে টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়। জনৈক লুৎফর রহমান নামে এক ঠিকাদার লাইন নির্মানের কার্যাদেশ পান।

লাইন নির্মানের জন্য ১৮টি সিমেন্টের খুঁটি এনে ঐ গ্রামে ফেলেন ঠিকাদার লুৎফর। ৫টি খুঁটি পুতেন। এরপর একটি বহুজাতিক কোম্পানীর স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন। বন্ধ হয়ে যায় লাইন নির্মান কাজ। এর পর আর ঠিকাদার সেখানে যাননি।খেকিডাঙ্গী গ্রামের আলম, জামাল সহ বেশ কয়েকজন জানান,
তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেয়ার জন্য তারা বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে লাইন বরাদ্দ করান কিন্তু একটি স্বার্থন্বেষী মহলের বাধার কারণে সেখানে লাইন নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন কিন্তু কাজ হচ্ছে না।

তারা আরো জানান, তাদের গ্রামটি অবহেলিত ও সীমান্তবর্তী। সেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি রয়েছে। তার বাড়িতেও বিদ্যুৎ নাই। সবাইকে অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। সন্ধা নামলেই সেখানে নানা ধরণের সমস্যায় পড়েন তারা। ছেলে মেয়েরা ঠিকমত পড়াশুনা করতে পারে না। রাতের বেলা হারিকেন কিংবা কেরোসিনের কুপি (চেরাগ) দিয়ে তাদের সব কাজ সারতে হয়।

কোন দিন কেরোসিন তেল না থাকলে সেদিন বাচ্চাদের লেখা-পড়া বন্ধ থাকে। এ গ্রামে কোন মানুষ বিয়ে সাদি দিতে বা করতে চায় না অন্য এলাকার মানুষ। বিদ্যুৎ নিয়ে এখানকার নব দম্পতিদের মাধ্যে প্রায় ঝগড়া ঝাটি হচ্ছে। শুধু তাই না বিদ্যুৎ না থাকার কারণে সব ধরণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক জানান, “প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ, ঘড়ে ঘড়ে বিদ্যুৎ” এ শ্লোগান এখানে কাজে আসছে না।

আমি দেশ স্বাধীনের জন্য যুদ্ধ করেছি। দেশে আজ এত উন্নয়ন। অথচ আমার বাড়িতে বিদ্যুৎ নাই। আমিও ব্যক্তিগত ভাবে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেছি কিন্তু বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। খুটি গুলি অবহেলা অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পীরগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক বাচ্চু মিয়া বলেন, বাধার কারণে উপর মহলের নির্দেশে সেখানে লাইন নির্মান বন্ধ করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলে কাজ করা হবে।

Loading

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




পীরগঞ্জে যে গ্রামে চেরাগের আলোতে চলে লেখাপড়া

আপডেট সময় : ০৫:৩৫:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে খেকিডাঙ্গী গ্রামে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের কাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। কাজ শেষ না করেই সিমেন্টের খুঁটি ফেলে রেখে চলে গেছেন ঠিকাদার। লাইন নির্মান না হওয়ায় বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই গ্রামের প্রায় এক’শ পরিবার। চরম অসুবিধায় মধ্য দিয়ে দিন পার করতে হচ্ছে তাদের। পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ বলছেন, উপর মহলের নির্দেশে লাইন নির্মান কাজ বন্ধ করা হয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা ইউনিয়নের খেকিডাঙ্গী গ্রামে প্রায় এক’শ পরিবারে বিদ্যুৎ পৌছানোর লক্ষ্যে ১.৩৩ কিলোমিটার নতুন বিদ্যুৎ লাইন নির্মানের পরিকল্পনা করেন ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সে লক্ষ্যে ২০২০ সালে মাঠ জরিপ ও নকশার প্রনয়ন করে টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়। জনৈক লুৎফর রহমান নামে এক ঠিকাদার লাইন নির্মানের কার্যাদেশ পান।

লাইন নির্মানের জন্য ১৮টি সিমেন্টের খুঁটি এনে ঐ গ্রামে ফেলেন ঠিকাদার লুৎফর। ৫টি খুঁটি পুতেন। এরপর একটি বহুজাতিক কোম্পানীর স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন। বন্ধ হয়ে যায় লাইন নির্মান কাজ। এর পর আর ঠিকাদার সেখানে যাননি।খেকিডাঙ্গী গ্রামের আলম, জামাল সহ বেশ কয়েকজন জানান,
তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেয়ার জন্য তারা বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে লাইন বরাদ্দ করান কিন্তু একটি স্বার্থন্বেষী মহলের বাধার কারণে সেখানে লাইন নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন কিন্তু কাজ হচ্ছে না।

তারা আরো জানান, তাদের গ্রামটি অবহেলিত ও সীমান্তবর্তী। সেখানে একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি রয়েছে। তার বাড়িতেও বিদ্যুৎ নাই। সবাইকে অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। সন্ধা নামলেই সেখানে নানা ধরণের সমস্যায় পড়েন তারা। ছেলে মেয়েরা ঠিকমত পড়াশুনা করতে পারে না। রাতের বেলা হারিকেন কিংবা কেরোসিনের কুপি (চেরাগ) দিয়ে তাদের সব কাজ সারতে হয়।

কোন দিন কেরোসিন তেল না থাকলে সেদিন বাচ্চাদের লেখা-পড়া বন্ধ থাকে। এ গ্রামে কোন মানুষ বিয়ে সাদি দিতে বা করতে চায় না অন্য এলাকার মানুষ। বিদ্যুৎ নিয়ে এখানকার নব দম্পতিদের মাধ্যে প্রায় ঝগড়া ঝাটি হচ্ছে। শুধু তাই না বিদ্যুৎ না থাকার কারণে সব ধরণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক জানান, “প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ, ঘড়ে ঘড়ে বিদ্যুৎ” এ শ্লোগান এখানে কাজে আসছে না।

আমি দেশ স্বাধীনের জন্য যুদ্ধ করেছি। দেশে আজ এত উন্নয়ন। অথচ আমার বাড়িতে বিদ্যুৎ নাই। আমিও ব্যক্তিগত ভাবে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেছি কিন্তু বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। খুটি গুলি অবহেলা অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর জন্য আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পীরগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক বাচ্চু মিয়া বলেন, বাধার কারণে উপর মহলের নির্দেশে সেখানে লাইন নির্মান বন্ধ করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলে কাজ করা হবে।

Loading