ঢাকা ০৪:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo চাকুরীচ্যুত প্রকৌশলী নাসির বহাল তবিয়তে পায়রা বন্দরে: গড়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়!  Logo যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল দলকে নিয়ে বিএনপির যৌথসভা Logo ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বরিশাল-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপনের মনোনয়নপত্র দাখিল Logo রাজপথ বিএনপির দখলে না থাকলেও বিটিভি  বিএনপি জামায়াতের দখলে! Logo দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেস্ট হোল্ডিং Logo অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ সালমা উসমানের বেপরোয়া দুর্নীতি! Logo বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ঘরে লুটপাট Logo ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন এখন করাপশনের ত্রিমুখী জুটি Logo মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা Logo থিয়েটার কুবি’র নেতৃত্বে সুইটি-হান্নান




সাধারণ নারী মিষ্টি আজাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২ ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

একজন সাধারণ নারী মিষ্টি আজাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প শুনে উদ্যোক্তা হতে চায় এমন অনেক নারী উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবে। ঘরে বসে নিজের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে হোমমেড মজাদার সব খাবার তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করে মিষ্টি আজাদ দিন দিন হয়ে উঠছেন একজন সফল উদ্যোক্তা। সংসার খরচে কিছুটা হলেও নিজের উপার্জিন দিয়ে হাল ধরতে পারে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। তবে চলুন জেনে নেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প:

সকালের সংবাদ ডেস্ক: আমার পেইজের নাম নাম_ Nithi’s kitchen – নিথি’র রান্নাঘর।
সবার কথায় আমিও উদ্দোক্তা হবার গল্প বলে চলে আসলাম। আমি গ্রামের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও বাবা মা কখনো পড়াশোনা নিয়ে বাধা দেন নি। নিজের জেলা থেকে অন্য জেলায় হোস্টেল এ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি। পড়াশোনা শেষ হবার আগে ই বিয়ে হয়ে যায়। বর পূর্ব পরিচিত ছিলো রিলেটিভ এক দূর সম্পর্কের। যা হোক ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাড়াবো। আমার কোন ভাই নেই তিন বোন, আমিই বড়। আমাদের সমাজটাই তো এমন ভাই কেন নেই,মেয়েরা কি করবে। তাই তো এসব কারনে নিজে যাতে বাবা মাকে হেল্প করতে পারি তার জন্য ই অনেক ইচ্ছে ছিলো।
কিন্তু সব ইচ্ছের গুড়েবালি বিয়ের পর। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় আমার ফাইনাল ইয়ারের এক্সাম এর সময় ই জানতে পারি মা হতে যাচ্ছি। যা হোক মেয়ে সন্তানের মা হলাম। মেয়ের ছয় মাস বয়সে ঢাকায় বরের সাথে শিফট হলাম।

আমার বরের বাবা মা কেউ ই ছিলো না। বর যখন ইন্টারে পড়ে তখন ই তার মা মারা যায় ক্যানসারে। তার দু বছর পরেই বাবা মারা যান। বরের একটা বোন ই শুধু। তার বিয়ে হয়ে শশুরবাড়ি। যেহেতু শশুর শাশুড়ি কে আমি দেখিনি,তাই একা একা ঢাকায় এসে মেয়ে কে কার কাছে রেখে জব করবো,সেটা ভেবেই জবের ইচ্ছে টা নিজের মধ্যে ই রেখে দেই। মেয়ে কে বড় করতে থাকি। বর একটা সরকারি চাকুরী করে। ভালো চাকুরী করা সত্ত্বেও কেন জানি সব গুছিয়ে উঠতে পারছিলাম না। কারন তার বাবার মায়ের অধরা সপ্ন গুলো পূরন বরকে ই একা করতে হয়।
যা হোক তবুও আলহামদুলিল্লাহ দিন গুলো ভালো কেটে যাচ্ছিল। অনলাইনে সবার বিজনেস দেখে বর সব সময়ই সাপোর্ট করতো তুমি ও বিজনেস করো,কারন জানে আমার চাকুরীর ইচ্ছে টা কত ছিলো। আমাকে বলতো তোমার টাকা আমার প্রয়োজন নেই,তুমি যাতে নিজে নিজে কিছু করতে পারো,তোমার টাকায় তুমি যাতে কাউকে গিফট দিতে পারো তার জন্য তুমি বিজনেস টা করো। আমি তোমাকে হেল্প করবো। বরের কথায় সাহস নিয়ে গত বছর একটি উদ্যোক্তা গ্রুপে জয়েন হই ২০২০ এর ২৯ জুন। ওখানেই সবাই কে দেখে অনুপ্রাণীত হয়ে আচার এর কাজ টা শুরু করি। কারন আচার আমি ভালো ই বানাই। শুরুতে কিভাবে ডেলিভারি দিবো বুঝতে পারছিলাম না,পরে ঢাকার মধ্যে বর ই ডেলিভারি দিয়ে দিতো প্রথম প্রথম। কারন বরের শুক্রবার শনিবার অফিস অফ ডে। তাই বর ই ডেলিভারি করতো, আর ঢাকার বাহিরের গুলো কুরিয়ার করে দিতাম। আলহামদুলিল্লাহ এই এক বছরে আমি প্রায় বিশ রকমের আচার সেল করেছি। রিপিট কাস্টমার ও অনেক হয়েছে।
বিভিন্ন গ্রুপ, নিজের পেইজ, প্রফাইল থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমার টাকা সংসারে খরচের জন্য দিতে হয় না, অন্তত নিজের টাকায় নিজের শখ পূরন করতে পারি, বরের কাছ থেকে টাকা নিতে হয় না। আমি মনে করি প্রতিটি নারী নিজের অবসর সময় হেয়ালিতে নষ্ট না করে কোনো না কোনো কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা উচিত। আমার সব সপ্ন পূরনের পাশে বর আছে আলহামদুলিল্লাহ। নিজের অভিজ্ঞতা ইচ্ছে আর উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে হাজারো সমস্যা কাটিয়ে উঠে এতটুকু আসতে পেরেছি যার জন্য শুকরিয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সাধারণ নারী মিষ্টি আজাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জানুয়ারী ২০২২

একজন সাধারণ নারী মিষ্টি আজাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প শুনে উদ্যোক্তা হতে চায় এমন অনেক নারী উদ্যোক্তা হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবে। ঘরে বসে নিজের অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে হোমমেড মজাদার সব খাবার তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করে মিষ্টি আজাদ দিন দিন হয়ে উঠছেন একজন সফল উদ্যোক্তা। সংসার খরচে কিছুটা হলেও নিজের উপার্জিন দিয়ে হাল ধরতে পারে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। তবে চলুন জেনে নেই তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প:

সকালের সংবাদ ডেস্ক: আমার পেইজের নাম নাম_ Nithi’s kitchen – নিথি’র রান্নাঘর।
সবার কথায় আমিও উদ্দোক্তা হবার গল্প বলে চলে আসলাম। আমি গ্রামের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও বাবা মা কখনো পড়াশোনা নিয়ে বাধা দেন নি। নিজের জেলা থেকে অন্য জেলায় হোস্টেল এ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি। পড়াশোনা শেষ হবার আগে ই বিয়ে হয়ে যায়। বর পূর্ব পরিচিত ছিলো রিলেটিভ এক দূর সম্পর্কের। যা হোক ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিলো পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাড়াবো। আমার কোন ভাই নেই তিন বোন, আমিই বড়। আমাদের সমাজটাই তো এমন ভাই কেন নেই,মেয়েরা কি করবে। তাই তো এসব কারনে নিজে যাতে বাবা মাকে হেল্প করতে পারি তার জন্য ই অনেক ইচ্ছে ছিলো।
কিন্তু সব ইচ্ছের গুড়েবালি বিয়ের পর। বিয়ের ছয় মাসের মাথায় আমার ফাইনাল ইয়ারের এক্সাম এর সময় ই জানতে পারি মা হতে যাচ্ছি। যা হোক মেয়ে সন্তানের মা হলাম। মেয়ের ছয় মাস বয়সে ঢাকায় বরের সাথে শিফট হলাম।

আমার বরের বাবা মা কেউ ই ছিলো না। বর যখন ইন্টারে পড়ে তখন ই তার মা মারা যায় ক্যানসারে। তার দু বছর পরেই বাবা মারা যান। বরের একটা বোন ই শুধু। তার বিয়ে হয়ে শশুরবাড়ি। যেহেতু শশুর শাশুড়ি কে আমি দেখিনি,তাই একা একা ঢাকায় এসে মেয়ে কে কার কাছে রেখে জব করবো,সেটা ভেবেই জবের ইচ্ছে টা নিজের মধ্যে ই রেখে দেই। মেয়ে কে বড় করতে থাকি। বর একটা সরকারি চাকুরী করে। ভালো চাকুরী করা সত্ত্বেও কেন জানি সব গুছিয়ে উঠতে পারছিলাম না। কারন তার বাবার মায়ের অধরা সপ্ন গুলো পূরন বরকে ই একা করতে হয়।
যা হোক তবুও আলহামদুলিল্লাহ দিন গুলো ভালো কেটে যাচ্ছিল। অনলাইনে সবার বিজনেস দেখে বর সব সময়ই সাপোর্ট করতো তুমি ও বিজনেস করো,কারন জানে আমার চাকুরীর ইচ্ছে টা কত ছিলো। আমাকে বলতো তোমার টাকা আমার প্রয়োজন নেই,তুমি যাতে নিজে নিজে কিছু করতে পারো,তোমার টাকায় তুমি যাতে কাউকে গিফট দিতে পারো তার জন্য তুমি বিজনেস টা করো। আমি তোমাকে হেল্প করবো। বরের কথায় সাহস নিয়ে গত বছর একটি উদ্যোক্তা গ্রুপে জয়েন হই ২০২০ এর ২৯ জুন। ওখানেই সবাই কে দেখে অনুপ্রাণীত হয়ে আচার এর কাজ টা শুরু করি। কারন আচার আমি ভালো ই বানাই। শুরুতে কিভাবে ডেলিভারি দিবো বুঝতে পারছিলাম না,পরে ঢাকার মধ্যে বর ই ডেলিভারি দিয়ে দিতো প্রথম প্রথম। কারন বরের শুক্রবার শনিবার অফিস অফ ডে। তাই বর ই ডেলিভারি করতো, আর ঢাকার বাহিরের গুলো কুরিয়ার করে দিতাম। আলহামদুলিল্লাহ এই এক বছরে আমি প্রায় বিশ রকমের আচার সেল করেছি। রিপিট কাস্টমার ও অনেক হয়েছে।
বিভিন্ন গ্রুপ, নিজের পেইজ, প্রফাইল থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমার টাকা সংসারে খরচের জন্য দিতে হয় না, অন্তত নিজের টাকায় নিজের শখ পূরন করতে পারি, বরের কাছ থেকে টাকা নিতে হয় না। আমি মনে করি প্রতিটি নারী নিজের অবসর সময় হেয়ালিতে নষ্ট না করে কোনো না কোনো কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা উচিত। আমার সব সপ্ন পূরনের পাশে বর আছে আলহামদুলিল্লাহ। নিজের অভিজ্ঞতা ইচ্ছে আর উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে হাজারো সমস্যা কাটিয়ে উঠে এতটুকু আসতে পেরেছি যার জন্য শুকরিয়া।