ঢাকা ০৩:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




সাফল্যের দিগন্ত ছোঁয়ার স্বপ্নে কয়েকজন নারী উদ্যোক্তার জীবনের হার না মানা গল্প

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:২৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ৪০৭ বার পড়া হয়েছে

সমাজ সংসার জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েও প্রতিটি মানুষ স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নের দিগন্ত ছুঁয়ে দেখতে জীবন চলার গতিকে কর্মের শক্তিতে আবদ্ধ করে প্রতিটি মানুষ পৃথিবীর নানামুখী বাস্তবতার অলিগলি পেরিয়ে ছুটে চলে স্বপ্ন ও সাফল্যের দিগন্ত নাগালে পেতে।

এমন কঠিন বাস্তবতা চিন্তার দ্বিধাদ্বন্দ্ব জয় করে জীবনের কর্মক্ষেত্র নির্ধারণ করাটা আরও ভীষণ কঠিন। কিন্তু এমন কঠিন সব প্রতিকূলতাকে ছুঁড়ে ফেলে সাধারণ জন নারী সমাজে জাগরণ সৃষ্টি করে। যা বাংলার নারী সমাজের জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার স্বপ্নের জয়জয়কার বলে মেনে নিতেই হয়।

বর্তমান বৈশ্বিক মহামারী ও শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে একজন স্বপ্নবাজ, সফলতার  অগ্রগামী কান্ডারী, নারী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা কিছু নারীর জীবনের গল্প নিয়ে “মিচুয়াল বিজনেস পয়েন্ট গ্রুপ” আয়োজিত উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প শিরোনামের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী স্বপ্নবাজ নারীদের মধ্য থেকে কয়েকজন নারী উদ্যোক্তাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনের গল্প সকালের সংবাদ এর সকল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:……

#Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ১

আমি সোহেলী ফারহানা, স্বত্বাধিকারী ZA Fashion & Cosmetics

আমার মনে সবসময়ই একটি সুপ্ত ইচ্ছে ছিল। নিজে কিছু একটা করব। সেই ইচ্ছে নিয়ে এসএসসি(S.S.C) শেষ করেই জবের জন্য পরীক্ষা দেই প্রাইমারিতে। রিটেন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও হই।

কিন্তু আমাকে ভাইভা বোর্ডে কোশ্চেন করল

জবের জন্য পরীক্ষা দিতে এসেছ বাবা জানে

রেজাল্ট তো ভালই আরেকটু বড় হও ।

কি আর করার তারপর…… আইএসসি(I.S.C) কমপ্লিট করলাম। অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হলাম বেশকিছুদিন এভাবে চলল। ইতোমধ্যে বিবাহিত জীবনে ও পা রাখলাম। পড়ালেখা চলছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন অনুভব করলাম আমার নারী জীবন পূর্ণতা পেতে চলেছে। হ্যাঁ প্রথম সন্তানের মা হলাম আমি কিন্তু অনার্স ফার্স্ট ইয়ার পরীক্ষা টা আর দেওয়া হলো না। আশিক এর চাকরিসূত্রে রাজশাহীতে ওর সঙ্গে একাই থাকতাম। ও হ্যাঁ আশিক আমার হাজবেন্ডের নাম। একমাত্র সন্তান জিদানকে নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আমি। পরের বছরও পরীক্ষা দেওয়া হলো না। তারপর জিদান একটু বড় হলে নিজেকে সামলে নিয়ে এডমিশন নিলাম রাজশাহী কলেজে। অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে কমপ্লিট করলাম বিএসএস(B.S.S)। মাস্টার্স শুরু করলাম দ্বিতীয় সন্তানের মা হলাম। এই দীর্ঘ সময়ে সংসারের মায়া আমাকে আষ্টেপৃষ্টে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। “যেন আমার ঘর স্বর্গ আমার”। আমার জান পাখি বাচ্চা দুইটাকে একা রেখে বাইরে যেয়ে কাজ করার ইচ্ছা হারিয়ে ফেললাম আমি। বেশ ভালো কাটছিল আমার দিনগুলি। ওদের নিয়ে সময় কাটানো। ওদের বাবার ছুটির দিনগুলোতে বাইরে যাওয়া শপিং করা খাওয়া, ঘোরাঘুরি বেশ যাচ্ছিল।

 

তারপর শুরু হল ”করোনা” পরিস্থিতির বিভীষিকা। ঘরবন্দী জীবন-যাপনে কিছুটা বিরক্তি চলে আসছিলো আমার। শুধু আমার কেন বলছি হয়তো আমাদের সকলেরই। তখন মনের সুপ্ত বাসনা গুলো আবার আমার সামনে ধরা দিতে লাগলো। ভাবলাম এমন কি করতে পারি যাতে আমার সোনামনিরা আমার চোখের সামনেই থাকবে আর আমার কিছু করার স্বপ্ন পূরণ হবে। তখনই চোখে পরলো নাসিমা আক্তার নিশা আপুর WE গ্রুপ। শত শত আপুদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প পড়ে পড়ে নিজেও চিন্তা করলাম এই কাজটি আমার জন্য বেস্ট হতে পারে।

কিন্তু কিভাবে শুরু করব বুঝতে পারছিলাম না। কিভাবে নিজেকে পরিচিত করব। পার্সোনাল ব্রান্ডিং তৈরি করব। এই নিয়ে আপ্সেট ছিলাম। তবুও কাউকে না জানিয়ে সাহস করে শুরু করে দিলাম নিজের জমানো সামান্য কিছু টাকা নিয়ে। কিন্তু (we) এর মত এত বড় একটা প্লাটফর্মে পরিচিতি পাওয়াটা ভীষণ কঠিন হয়ে দাঁড়ালো।

ঠিক এই সময়ে এমবিপি(MBP) গ্রুপের এডমিন আপুর সাথে পরিচয় হলো আমার। এখান থেকেই আমার সুন্দর সূচনা। আপুর আন্তরিকতা গাইডলাইন আমার কনফিডেন্স লেভেল কে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।

কিন্তু এরই মধ্যে দেখা দিল আরেক সমস্যা। আগেই জানিয়েছি কাউকে না জানিয়ে উদ্যোগটা নিয়েছিলাম আমি। হাসবেন্ড এর কাছে বেশিদিন চেপে রাখতে পারলাম না। সে জানল আমার উদ্যোগ এর ব্যাপারে। আশিক বলল-তোমার এগুলা করার কি দরকার বলোতো। আমি আছি তো! কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ শেষ পর্যন্ত সে আমাকে বুঝতে পেরেছে। আশিক বলল আচ্ছা তোমার যদি ভাল লাগে, ইচ্ছে করে তুমি কর। ওর সাপোর্ট পাওয়ার পর আমি আমার কাজটিতে আরো সতেজতা খুঁজে পেলাম।

তবে সিদ্ধান্ত নিলাম কারো কোনো আর্থিক হেল্প আমি নিব না মেন্টাল সাপোর্ট অনেক আমার জন্য। ভাবলাম নিজেকে নিজের মতো করে একবার ট্রাই করে দেখি না কি হয়! তাই খুব ছোট্ট পরিসরে নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমের উদ্যোগটি শুরু করলাম।

এই ছিল আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পেরেছি কিনা জানিনা। তবে এটা বুঝতে পারছি গুটিগুটি পায়ে একটু একটু করে হলেও সাফল্য আসছে। অনেক অনেক প্লানিং করে রেখেছি, আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন আমার। ইনশাআল্লাহ একদিন স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখাব। জানি সহজ হবে না, কারণ “সফল হওয়া সহজ হলেও সাফল্য অর্জন করা মোটেই সহজ নয়” (But I will try my best) জেতে জেতে আবারো পরিচয়টা দিয়েই যাচ্ছি

 

 #Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ২

আমি আসমা খান সূচনা…

আমার জীবনের গল্প জীবনের গল্প তো অনেক বড় লিখে শেষ হবে না। তবুও ছোট করে লিখতে চেষ্টা করছি সবার ছোট বেলা হয় অনেক সুন্দর। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমার ছোট বেলার কোন মধুর সৃতি নাই বলেই চলে লেখা পড়ার প্রবল ইচ্ছা থাকা শর্তেও কমপ্লিট হয় নাই। জীবনের ঘুর্নীঝড় সব এলো মেলো করে দিয়েছে।সবার সুন্দর একটা পরিবার থাকে বাবা-মা নিয়ে। ছোট বেলা থেকে আল্লাহর কাছে দোয়াই করেছি শুধু সব ঠিক করে দিন আল্লাহ। ব্রকেন পরিবারের সন্তানেরা এই পৃথিবীতে সহযে ভাল কিছু করতে পারে না।কারণ পরিবার থেকেই সব সময় অবহেলিত হয় দুঃখ্য ছাড়া খুশি জীবনে ছিল না।

উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প শুরু ছোট বেলায় পুতুল খেলার সময় থেকেই। পুতুল খেলতাম এবং টেইলার্স দোকান থেকে সুন্দর সুন্দর কাপড় এনে ছোট কেচি দিয়ে কেটে ডিজাইন করে হাতে শেলাই করেই জামা বানাতাম একদম পুতুলের মাপে খুব ছোট থেকে নিজের জামা নিজে বানাই সাথে পরিচিতদের বানানো শুরু বয়স ১৬ থেকেই ইনকাম শুরু আমার সব সময় আমি কাজে ডুবে থাকাই পছন্দ করি। আমার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নাই সেলাই কাজে।আর তখন কোন ইউটিউব ছিল না যে দেখে দেখে শিখবো। কারো কোন ডিজাইন দেখলেই কপি করা কোন বেপার ছিল না।নিজের টাকা দিয়েই মেশিন কিনেছিলাম প্রথম ২০০৭ সালে ২২০০ টাকা দিয়ে পুরনো। পায়ে মেশিন চালানোর কারণে খুব পেইন হতো তাই মোটর লাগিয়ে অনেক টাকা ইনকাম করেছি। অবশেষে বিয়ে ২০১৫ তে এই ফেসবুকের মাধ্যমে তাকে পেয়েছি আর এখন ২০২১ এই ফেসবুকই আমাকে বানিয়েছে উদ্যোক্তা আলহামদুলিল্লাহ ।

২০১৬ তে ধরা পরে আমার মেরুদন্ডের টিসু ক্ষয় তাই ১ মাস বেড রেস্ট। ভারি কাজ,ঘর মুছা নিষেধ এবং বাকা হওয়া যাবে না। তাই জামাই মেশিন বিক্রি করে দিছে কাজ করা যাবে না। অনেক সময় ধরে বসে কাজ করার কারনে আমার এই অবস্থা হয়েছে।

২০১৭ ডিসেম্বর রাজকন্যার মা হলাম। শশুড় বাড়ির মন মতো হতে পারি নাই। খুব কষ্ট পোহাতে হয় প্রেগনেন্সির সময় পরে বাধ্য হয়ে হাসবেন্ট আলাদা বাসা নিলো। স্বামীর ছিল না ভাল জব বা বিজনেস একমাত্র ছেলে হওয়াতে দুইটা বাসা ভাড়া দেয়া খুব কষ্টের তাই বেবি হওয়ার পরে আবার মেশিন কিনলাম।পরিচিতদের বললাম কাজ শুরু করে সংসারের প্রায় অর্ধেক খচর চালাচ্ছিলাম।মেয়ে হলো নিজে কিছু কিনতেও পারি নাই প্রায় ১ বছর। তুবার জন্মের পরে ৪ টা জামা কিনেছিল ওর বাবা সব ভিজিয়ে ফেলতো বমি করে বারান্দা না থাকায় শীত বেশি থাকায় শুখাতো না সহজে তখন তাকে কাথা বা কাপড় দিয়ে পেচিয়ে রেখেছি। ওর ৪ মাস বয়স থেকে আবার টেইলার্স এর কাজ শুরু করি। খুব ব্যাক পেইন নিয়ে এবং ওকে রাখার কেউ ছিল না।ও ঘুমালে অর্ডারের কাজ শেষ করেছি নিজে না ঘুমি।

এই ভাবে অনেকটা ইনকাম করে সংসার খরচ চলে। ২০১৯ নভেম্বর মাসে একটা গ্রুপে আমার কাজ নিয়ে লিখি এবং টেইলার্স এর হোম সার্ভিস চালু করি। বাসায় গিয়ে আপুদের মাপ ও কাপড় নিয়ে আসছি আবার বানিয়ে দিয়ে এসেছি আলহামদুলিল্লাহ। ২০২০ এ মার্চে শুরু হলো মহামারী বাসায় যাওয়া অফ। কি করি তখন ছিলাম উই গ্রুপে। অনেক আপুদের ঘরে বসে কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হই কিন্তু মুলধন পাবো কই কিছু করবো যে।

সেই মহামারীতে রোজার ইদে এক আপুর বাসা ছিল খিলগাও আপু ও আপু বেবিদের জামা বানিয়ে ৫০০০ টাকা পাই মুজুরি। ২০২০ এর মে ৩১ তারিখ খুলে ফেললাম অনলাইন বিজনেস এর মাধ্যমে কাজ শুরু করার উদ্দেশ্যে Tuba’s Zone নামের ফেসবুক পেজ ওপেন করে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ চলা।

প্রথম শুরু করি এই টাকা দিয়ে অল্প অল্প করে কাপড় কিনে বেবি ড্রেস বানানো নিজের ডিজাইনে আলহামদুলিল্লাহ কোরবানির ইদ ছিল মাশাআল্লাহ অনেক ভাল সারা পেয়েছি। এবং হয়ে উঠি উদ্যোক্তা আলহামদুলিল্লাহ নিজের অজান্তেই ।

আর এই বেবি ড্রেস নিয়ে আইডিয়া সব আমার মেয়ে হওয়াতে আগে কোন দিন বেবিদের জামা বানাই নাই। আমার বাচ্চাটা মাশাআল্লাহ খুব গ্রথ ভাল ছিল বাহিরের জামা লাগতো না।তার বিভিন্ন ডিজাইনে জামা বানাতাম এবং গ্রুপে পোষ্ট করাতে অনেকেই নিতে চাইতো। জিজ্ঞেস করতো কোথা থেকে জামা কিনি যখন বলতাম আমি বানাই সবাই অনেক উত্তসাহ দিতো আমাকে এইটা নিয়ে কাজ করার জন্য।

আমার স্বপ্ন নিজে কিছু করার এবং প্রয়োজনও ছিল টাকা ইনকাম করা তাই স্বপ্ন ও প্রয়োজন এক সাথে হয়ে আমার সব রকম রোগ দুর করে দিয়েছে। এখন যতো অসুস্থই থাকি না কেনো কাজ করেই যাচ্ছি।

এখন ১ বছর ধরে এতো কেনাকাটা করি নিজের ও বাচ্চার জন্য আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া।মেয়ে হাটা শিখেছিল এক জোড়া জুতা কিনতে পারি নাই,সে মা এখন অনলাইন থেকে এক ইদেই ৩ জোড়া জুতা কিনে ফেলি। একটা ড্রেস ভাল করে পরাই না এখন এতো এতো ড্রেস তার এখন গরীবদের দিয়ে দেই সব ভাল থাকতেই আমার উদ্যোগ যেহেতু অনলাইনের মধ্যমে প্রসারিত হচ্ছে তাই আমি ৯৯% কেনা-কাটা অনলাইন থেকেই করি আলহামদুলিল্লাহ এই ১৫ মাসে দেড় লাখ+ টাকা ইনকার করেছি এই আমি একা হাতে কোন কারিগর ছাড়া।ভাল লোক পাচ্ছি না তাই পাগল হয়ে যাচ্ছি কাজ নিয়ে একা সম্ভব হচ্ছে না দিন যাচ্ছে আর আলহামদুলিল্লাহ কাস্টমারের সংখ্যা বাড়ছে। ধৈর্যশীল মানুষ খুজে পাচ্ছি না কাজ শিখাবো। আমার স্বপ্ন তুবাস যোনের ফেক্টরি হবে যেখানে আমার নিজোস্য প্রোডাক্ট তৈরি হবে আল্লাহ যেনো সে পর্যন্ত আমাকে বাচিয়ে রাখেন।

আমার নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের থেকে কিনতে ভাল লাগে। আশা আছে নারীদের নিয়ে কাজ করবো তুবাস যোন কে অনেক বড় করবো।আমার পায়ের নিচের মাটি শক্ত করবো।নিজের সব হবে একটুকরো জমি যেনো নিজ টাকায় করতে পারি যেখানে মাস শেষে ভাড়া নিয়ে মাথা ব্যথা থাকবে না। খেয়ে না খেয়ে মাস শেষে হাজার হাজার টাকা দিবো না তুলে কারো হাতে।একটু সুন্দর ভাবে থাকার মতো ছাদ করে দিয়ে যেতে চাই আমার তুবা মা কে, যা আমি পাই নাই জীবনে সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য লিখতে গেলে চোখ ভিজে যায় ঘোলা হয়ে আসে দুঃখিত অনেক বড় হয়ে গেলো লেখাটা।

আমাকে সাপোর্ট দেয়ার মতো কেউ ছিল না।তবে এখন হাসবেন্ট খুব সাপোর্ট দেয় আলহামদুলিল্লাহ আর আমার জীবন সঙ্গী ছাড়া ছাড়া আমার দুনিয়াতে কেউ নাই।

এই ফেসবুক আমাকে দুইটা জিনিষ দিলো উদ্যোক্তা হলাম,জিবনে ভাল সংগি পেলাম সাথে অনেক আত্বার সম্পর্কের অনেক গুলা প্রিয় মানুষ পেলাম আলহামদুলিল্লাহ।

“মিউচুয়াল বিজনেস পয়েন্ট” এর সাথে থেকে নিজের স্বপ্ন ও উদ্যোক্তা হওয়ার পথ চলাকে সুদূর প্রসারী করতে চাই সকলের দোয়া প্রার্থনা করি।

আমার ফেসবুক পেজ: Tuba’s Zone

 

#Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ৩

আমি দোলা দাস, আমার উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্প….

রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলা সদরে আমার বাড়ি।বাবা-মায়ের প্রথম এবং একমাএ কন‍্যা সন্তান আমি। তাই খুব যত্ম,আদর আর ভালোবাসা নিয়ে বড় হয়েছি।বাবার নয়নের মনি আমি।বাবা ব‍্যবসায়ী,জুয়েলারির ব‍্যবসা।বলতে গেলে বংশ পরমপরাই আমার বাবা,কাকারা সবাই স্বর্ণশিল্পী।ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো নাচ করতে পারতাম বলে অনেক পুরস্কার পেয়েছি,নাচ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল।যদিও সে স্বপ্নের পিছু ছুটে মাঝপথে স্বপ্নটাকে হারিয়ে ফেলেছি।সবসময় মনে মনে ভাবতাম যে নিজে কিছু একটা করবো,আমার পরিচয়ে আমি পরিচিত হবো সবার কাছে।

২০১২ সালের এইচএসসি পাশের পর বিয়ে হয়ে যায়।কিন্তু পড়ালেখা চলতে থাকে,কিছু দিন যেতে না যেতেই দেশের স্বনামধন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান BRAC এর স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে ক‍্যাশিয়ার হিসেবে কর্মজীবনের শুরু । তারপর আমার বাবু হয়,বাবার বাড়িতে বাবুকে রেখে চাকরি করতাম। আমার কাজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আর লেগে থাকার সাফল‍্য হিসেবে স্বল্প সময়ে পদোন্নতি পেয়ে এ‍্যাকাউন্ট ম‍্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।

সারাদিন বসে থেকে কাজ করতে অনেক বিরক্ত লাগতো বিশেষ করে টাকার মধ‍্যে সারাদিন ডুবে থাকতে হতো।তাই হঠাৎ করেই অব‍্যাহতি দিয়ে দিলাম। MBA শেষ করলাম। ২০১৮ সালে একেবারেই চলে আসলাম ঢাকায়।আমার স্বামীর চাকরির সুবাদে।ঠিক সেই সময় সখ‍্যতা গড়ে এক আপুর সাথে।যার মাধ্যমে আমি মনিপুর স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ এ শিক্ষকতা শুরু করলাম।সবকিছু নিয়ে ভালোই দিন কাটছিল আমার।কিন্তু দেশের পরিস্থিতি যখন ২০২০ সালে খারাপ হয়ে গেল স্কুল বন্ধ হয়ে গেল,তখন কিছুটা হতাশ হয়ে গেলাম।ঘরে বসে সময় যেতেই চায় না।কোন কিছুর মধ‍্যেই মনোনিবেশ করতে পারতাম না।নিজেকে সান্তনা দেওয়ার মত অবশিষ্ট কিছু রইল না।সাহস দিলেন আমার স্বামী। যথাযথ সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিল।স্ত্রীর পাশে থেকে সর্বোচ্চ সাহস দিয়ে এগিয়ে রাখলেন শত বাধা উপেক্ষা করে।চাকরির জন‍্য চেষ্টা করতে করতে মাঝখানে একটি বছর চলে গেল।আমার মা আমার সেই স্বপ্নটাকে নাড়া দিলেন।উদ‍্যোক্তা হবার স্বপ্ন পেয়ে বসলো আমাকে।পূর্ব থেকেই মার্কেটিং আর ম‍্যানেজমেন্ট এর কিছুটা ধারণা ছিল। ব‍্যবসার পরিকল্পনা করলাম,ভাগ‍্য সহায় হলো। যদিও স্বপ্ন ছোট-বড় হয় না,তবুও আমি বলবো,একটি স্বপ্ন নিয়ে গুটিগুটি পায়ে আমি এগিয়ে চলেছি।একদিন অবশ্যই সফল হবো এই প্রত‍্যাশায়।”রেডিমেড থ্রি পিস, কুর্তি, গাউন, বোরকা, নিয়ে কাজ করি। আমার সোশ‍্যাল মিডিয়ায় একটি পেজ রয়েছে। যার ফেসবুক পেজের নাম RD Fashion Zone এটি খোলার মাধ্যমে আমার যাত্রা শুরু হয়।সামনে -পেছনে না ভেবে শুরু করলেও এখন আমি নিজের খরচ,ইচ্ছা,চাহিদা কিছুটা পূরণ করতে পারি।গর্বের সাথে বলতে পারি আমি আত্মনির্ভরশীল।

যদিও অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়,তবুও আমি ধৈর্য্য হারাই না।আমার মা সবসময়ই বলেন আমি নাকি খুবই মিশুক,আর এজন‍্যই নাকি আমি জীবনে ভালো কিছু করতে পারবো।তাই আমার মায়েদের -বাবাদের আর্শিবাদ,স্বামীর সাপোর্ট,আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসা নিয়ে আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করবো।

 

আমি আমার মতো নারী উদ‍্যোক্তাদের বলতে চাই,একজন পুরুষের সমান যোগ‍্যতাসম্পন্ন হলেও বাংলাদেশে শুধুমাত্র নারী বলে বিভিন্ন আচরণের সম্মুখীন হতে হয় একজন নারী উদ‍্যোক্তাদের।তাই বলে থেমে গেলে হবে না।

প্রতিষ্ঠিত বা পরীক্ষিত পথে ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠা করলেই উদ‍্যোক্তা হওয়া যায় না।নারী উদ‍্যোক্তাদের পথে ঝুঁকির সম্ভাবনা শতভাগ।নিজেদের প্রতিভা দিয়ে এই পথে হাঁটতে হবে।

সবাই দোয়া/আর্শিবাদ করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে। দোলা দাস। স্বত্বাধিকারী RD Fashion Zone

 

 #Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ৪

আমি সুপ্রীতি পাল আপনাদের সামনে তুলে ধরব আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আমি স্বপ্ন দেখতাম পড়ালেখা শেষ করে কিছু করব। তবে ক্লাস নাইনে যখন পড়ি তখন থেকেই টিউশন করা শুরু করি। এরপর বিয়ের পরও পড়ালেখা চলছে। এরমাঝে একটা কোচিং-এ পড়ানোর অফার আসে। জয়েন করলাম। কয়েকমাস পড়েই একটা স্কুলের জবের জন্য পরীক্ষা দিলাম, ভাইবা দিলাম। সেখানে জব টা হলো জব করছি, পড়াশোনা করছি, সংসার করছি মাস্টার্স শেষ হলো, আমার একটা ছেলে হলো জব টা ছেড়ে দিলাম। কারণ ছেলেকে রাখার কেউ নাই এভাবেই কাটতে লাগল। কিন্তু খুব মন চাইতেছে কিছু একটা করি, কিন্তু কি করব ঘরে বসে এটা ভাবতে ভাবতেও অনেক সময় নষ্ট হল। তারপর আমার হাতের কাজ দেখে যখন দেখি সবাই প্রশংসা করছে আর বলছে এটা নিয়েও শুরু করতে পার। অফলাইনে একটু একটু করে শুরু করি।

এরপর করোনাকালীন সময় যখন একেবারে ঘর বন্ধী হয়ে গেলাম, তখন বিভিন্ন গ্রুপে অনেক আপুদের পোস্ট পড়ে উৎসাহিত হয়েছি। সিদ্ধান্ত নিলাম এবার ভালো করে কিছু একটা শুরু করতে হবে। বাসা থেকে কোনো সাপোর্ট নেই, তাও মনের জোরে অল্প করে শুরু করলাম। হাতের বানানো জুয়েলারি নিয়ে শুরু করলাম পথ চলা। সেই সাথে বানাতাম বিভিন্ন ঝাড় পুঁতি। এগুলো নিয়েই একটা গ্রুপ খুললাম। নাম দিলাম মায়ের নামে “অঞ্জলি” এখন আমার অঞ্জলি নাম অনেকের কাছে পরিচিত। এমন অনেক কাস্টমার আছে আমার, জুয়েলারি লাগবে কোথাও দেখবে না, অঞ্জলি তে চলে আসবে নিত্যনতুন ডিজাইনের জুয়েলারি বানানো আজ আমার নেশা। খুব ভালোবাসি নিজের কাজকে এভাবেই আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু হল। অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই ।

স্বত্বাধিকারী গ্রুপ- অঞ্জলি

 

 

 #Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ৫

আমি খুব চঞ্চল মেয়ে ছিলাম, ধৈর্য্য বলতে আমার মাঝে কিছু ছিল না, খুবই অগুছালো সেই ছোট থেকেই, ঘুম কাতুরে ছিলাম। তাই স্কুল,কলেজ যেতে লেট করতাম, ২০১৩ তে HSC পাস করে ইউনিভার্সিটি ভর্তি হলাম ঢাকাতে, 2016 পর্যন্ত ভালোই যাচ্ছিল। ক্লাস,টিউশন সব কিছু মিলিয়ে পড়াশুনাটা ভালোই করছিলাম তখন ভাবতাম আমি বিসিএস দিবো, MBA করবো,,,অনেক সপ্ন মনে ছিল পড়া নিয়ে হঠাৎ আমার পেট ব্যাথা হওয়ায় ডক্টর দেখাই তখন ধরা পড়ে আমার কিডনিতে অনেক প্রবলেম, আমার ইউরিন ব্লাডার এ প্রবলেম,আমার নার্ভ এ প্রবলেম তখন ইন্ডিয়া নিয়ে যায় আমার পরিবার, উন্নত ট্রিটমেন্ট এর জন্য,,দীর্ঘ ৬ মাস ট্রিটমেন্ট করিয়ে বাংলাদেশ আসি। বাংলাদেশ এসেই ৩ দিন পর একাই ঢাকা চলে যাই কেউ রাজি ছিল না আমার পড়াশুনা টা চালিয়ে নেবার জন্য কিন্তু আমি তা মানিনাই নিজের দায়িত্ব নিজে নিয়ে একা ঢাকা চলে গেলাম, তার পরও পড়াশুনাটা চালিয়ে যাচ্ছিলাম এতো শারীরিক সমস্যায় নিয়ে সবাই বলত কি দরকার পড়ে অসুস্থ আমি, ট্রিটমেন্ট করবো নাকি পড়ার পিছনে টাকা নষ্ট করবো, তখন খুব কষ্ট লাগতো তাও হাল ছাড়িনি,,,ভালোবেসে বিয়ে করলাম 2018 তে, শশুর বাড়িতে স্বামী ছাড়া কেউ আমায় ভালোবেসে গ্রহণ করে নাই। আমি অসুস্থ বলে। সবাই কথা শুনাইত অসুস্থ মেয়ে বিয়ে করছে তার পিছনেই সব টাকা শেষ হবে। বাচ্চা হবে না এতো সমস্যা নিয়ে। যাই হোক আমার জীবনে টাকা টা মুক্ষ হয়ে দাঁড়ালো কারণ আমার সব ট্রিটমেন্ট খুব ব্যয়বহুল। তখন ভাবতাম নিজে যদি কিছু করতে পারতাম তাহলে নিজের চিকিৎসার ভার নিজেই নিতাম আমার জন্য মা বাবা স্বামীর এতো চাপ সহ্য করতে হতো না। নিজে কিছু করার খুব প্রয়াস করতাম। স্বামী জব করতে দিবে না ঘরে বসে কি করা যায় ভাবতাম,,,,হাতের কাজ জানি,,পার্লারের কাজ জানি কিন্তু শশুর পার্লারের কাজ করতে দিবে না। তো কি করবো সারাক্ষণ শুধু এসব ভেবে ডিপ্রেশন এ ভুগতাম।

আমি 2019 এর লাস্টের দিকে একটা পেজ খুলি তাও সখ করে,, আবার একটু আশা নিয়েও কারণ দেখতাম অনলাইন বিজনেস খুব চাহিদা, এমনিতেই নাম খুঁজে পাচ্ছিনা কি দেবো তাই নিজের নামেই খুললাম,,, পূজার পছন্দ। সখের বশে যা যা কাজ করতাম সব কিছুর ছবি তুলে দিতাম মেম্বার ছিল না বেশি। কিন্তু যখন লকডাউন পড়লো করোনার থাবা পড়লো দেশে তখন আমি কনসিভ করি। সেই সময়কালীন আমার স্বামীর দোকানটা বিক্রি হয়ে যায়, সব মাল নিয়ে বাড়ি বসা আমিও প্রেগনেন্ট,,,কি করবো কিছুই মাথায় কাজ করছিল না। তখন নিজের হাতের কাজকে সম্বল করে প্রেগনেন্ট অবস্থায় চট নিয়ে বসলাম কাজ করতে হবে, কিন্তু শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল ডক্টর আমাকে baby নিতে বারণ করেছিল তাও আমি নেই কারণ গ্রামে থাকি একটা মেয়ের বাবু না হলে কত কথা যে শুনতে হয় তা গ্রামের বউরাই বুঝে,,,আমার ডেলিভারির সময় লাইফ রিস্ক নিয়ে টাকার উপর ভর করে অপারেশন হয় আমার কিডনিতে সমস্যা,আমার ইউরিন সমস্যা, আরো অনেক সমস্যা প্রেগনেন্সি অবস্থায় 3 মাস ক্যাথেদের পরে ছিলাম বাঁচার সম্ভাপনা খুব কম ছিল। স্বামীকে বলেছিলাম যদি 2জনের মধ্যে একজন বাঁচে তাহলে আমার সন্তানকে বেছে নিও। কিন্তু সবার আশির্বাদ আর ভগবানের কৃপায় বেচেঁ ফিরলাম,,,বাবু হবার পর 2 মাস পর্যন্ত কেথেদার পড়া ছিল,,,আমি যে বেচেঁ আছি এটা ভগবানের কৃপা আর মা বাবার আশির্বাদ। আমি অনেক কেঁদেছিলাম যে আমি আমার স্বামীর এমন দুঃসময়েও ওর পাশে থাকতে পারছি না,,আমার স্বামী যখন কোরণার জন্য কোনো কিছু করতে পারছিল না তখন ওর মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না ছেলে মানুষ হাতে টাকা নাই, সদ্য বাবা হয়েছে ইচ্ছে করলেও ছেলেকে কিছু কিনে দিতে পারছে না এই চাপা কষ্ট ওরে কুরে কুরে খাচ্ছিল আমাকে। অনেক কাজ জানি পড়াশুনা জানি কিন্তু টাকা কই পাবো শিক্ষাকে কাজে লাগাতেও পারছিনা এখন যে টাকার খুব দরকার আমাদের ,তখন আবার চট নিয়ে কাজ শুরু করলাম। ,আসলে ভগবান কাউকে কষ্টে রাখে না কোনো না কোনো ভাবে ঠিকই উদ্ধার করে। আজ আমি আমার কাজ দিয়ে আর কিছু না পারি আমার এই দুঃসময়ে আমার স্বামীর পাশে তো থাকতে পারবো এটাই শান্তি এখন আমার মত ধৈর্যশীল আর কে হবে কারণ চটের উপর এই সুই সুতার কাজ খুব ধৈর্যের কাজ জা এখন আমার আছে,,,আমি আর আগের মত চঞ্চল নাই,,ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করি,,,আগের মত আর ঘুম কাতুরে না এখন রাত জেগে কাজ করি,,,আসলে সময় আর পরিস্থিতি মানুষকে বদলাতে বাধ্যকরে, একসময়ের সখ ছিল আর এখন এটা আমার জীবিকা হলো,,,,, আমি এই কয়েক মাসে যেই পরিমান ভালোবাসা পেয়েছি তা আমার জন্য বিশাল৷

আমাদের এমন দুঃসময় হয়তো সব সময় থাকবে না কিন্তু আমার এই কাজ থাকবে আমি মরার আগ পর্যন্ত আমার এই ছোট্ট পেজটা একদিন এক বড় পর্যায়ে নিবো এই সপ্ন আর একনিষ্ঠ পরিশ্রম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি যাবো পিছু পা হবো না।

 #আমার ফেসবুক পেইজ _ পূজার পছন্দ

 

#Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প _৬

বর্তমানে আমি একজন উদ্যোক্তা কিন্তু আমার উদ্যোক্তা জীবন খুব যে বেশি হয়েছে তা কিন্তু নয় তবে প্রতিকূল অনুকূল সব পরিস্থিতিতে পড়েছি আমি। ইনশাআল্লাহ সব কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি।তবে উদ্যোক্তা হয়ে কাছের বা দূরের অনেক মানুষের আসল রুপ দেখেছি। অনেক আপনজন থেকে কটু কথাও শুনতে হয়েছে।তবু্ও থেমে যাইনি।
এবার আসা যাক মূল গল্পেঃ
আমার জন্ম ঢাকার শাহজাহানপুর, আমার বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবি। আমার বাবা খুব অল্প বয়সে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেন।সেই থেকে নতুন জীবন শুরু। আমার হাজব্যান্ড কাছাকাছি বাসা ভাড়া নিয়েছিল যেন আমি রেগুলার বাবার বাসায় যেতে পারি এভাবেই দিনাতিপাত করতে লাগলাম। আলহামদুলিল্লাহ। লেখাপড়া ও চালিয়ে গেছি। কখনও অলস জীবন যাপন করিনি।অনেক পরিশ্রমি মানুষ আমি। তবে খুব অল্প বয়সে মা হয়ে গেলাম কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না জন্ম হয়ে আমার ছেলে কান্না করেনি বহু জটিলতা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছে। সাথে সাথে অন্য হসপিটালে ট্রান্সফার করেছে। ইন্কিউবিটারে রেখেছিল অনেকদিন যেটা তখনকার সময় এতটা ব্যায়বহুল ছিল যে আমার হাজব্যান্ডের
খুব কস্ট হয়েছিল।এদিকে আমি এসব কিছুই জানিনা যেহেতু আমি অন্য একটা হসপিটালে অজ্ঞান অবস্থায় ছিলাম ৫দিন।
আমি কিছুটা সুস্থ হয়ে ৯দিনের দিন আমার ছেলেকে প্রথম দেখলাম তাও ইন্কিউবিটারে খুবই কঠিন অবস্হায়। কিযে কস্ট সেটা বলে বুঝানো যাবে না। যাইহোক অবশেষে সবার দোয়ায় আল্লাহর রহমতে দুই মাস পর সুস্হ হয়ে হসপিটাল থেকে মা ও ছেলে বাবার বাসায় গেলাম। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না, জন্ম থেকেই বাচ্চাটি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক প্রতিকূলতায় দিয়ে দিনাতিপাত করছে।
আজ এ ডক্টর, কাল ও ডক্টর এর কাছে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়।যাক এভাবেই জীবন সংগ্রাম শুরু করলাম।পাশাপাশি লেখাপড়া ও চালিয়ে রেখেছিলাম। এভাবেই দীর্ঘ আট বছর অনেক কস্ট করেছি।
অনেক ভালো ভালো চাকরির অফার পেয়েও করতে পারিনি কারন ইতিমধ্যে আমি আবারও কনসেভ করেছি।যেহেতু প্রথম বাচ্চাটার সময় আমার বয়স অল্প ছিল কিছু বুঝিনি এবার অনেক সচেতন হয়েছি। ইনশাআল্লাহ আামার ছোট ছেলেটা সুস্থ ভাবে জন্ম গ্রহণ করেছে। তবে এলাকার কাছের একটা স্কুলে অনেক বছর শিক্ষকতা করেছি সুনামের সহিত।
তবে আকাঙ্খা রয়েই গেছে।
উদ্যোক্তা হওয়ার ভাবনাঃ
আমার বড় ছেলের এতো বড় কাহিনী বলার কারন হচ্ছে আজ এতো বছর পর আমি যখন আমার বাবার মৃত্যু তে খুবই শোকাবহ ( ২০২০সালের ১৭ ই জুন মৃত্যু বরন করেন) দিন কাটাচ্ছি। তার উপর আবার করোনার জন্য ঘরে বন্দী জীবন কাটাচ্ছি। এভাবেই ২০২০ সাল শেষ হয়েছে কিন্তু আমার শোকাবহ অবস্থায় আছি তখন আমাকে ব্যাস্ত রাখতে আমার এই ছেলে আমাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আমাকে ৩০শে মার্চ Puspo’s Kitchen নামে পেইজ খুলে দেয়।এভাবেই আমার আস্তে আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
আমার উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি সার্পোট পেয়েছি আমার বড় ছেলের কাছে সে সবসময়ই বন্ধুর মতো সাহস দিয়েছে। এরপর আমি নিজে আরেকটি পেজ ওপেন করি ৩ই জুন Puspo Fashion House নামে।আর এই পেজের জন্য আমার ছোট ছেলে আমাকে অনেক সহযোগিতা করে। যা এখন ও করে আসছে।
নিজে সাবলম্বি হওয়ার জন্য অনলাইন বিজনেস খুব ভালো মাধ্যম মনে করার কারন আমি ২০১৭থেকে ২০২০পর্যন্ত ধুমছে অনলাইন থেকে কেনাকাটা করেছি। এখনও করছি।তখন ভাবতাম খুব সহজ অনলাইন বিজনেস করা।
উদ্যোগ নিয়েছি ঠিক, তবে এখন মনে হচ্ছে যতটা সহজ ভেবেছিলাম তার থেকে হাজার গুন কঠিন উদ্যোক্তা হওয়া।প্রতি মুহূর্তে আমি শিখছি বিভিন্ন উদ্যোক্তা আপুদের কাছ থেকে।চেষ্টা -পরিশ্রম -ধৈর্য সহযোগে আমিও একদিন একজন সফল উদ্যোক্তা হবো ইনশাআল্লাহ। সবাই দোয়া করবেন, পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

#আমি পুস্প আহমেদ, কাজ করছি ঢাকার বনশ্রী থেকে হোম মেইড ফুড, মেয়েদের থ্রি পিস, শাড়ী, জুয়েলারি আইটেম ও বিছানার চাদর নিয়ে।
আমার পেজ: Puspo’s kitchen
puspo Fashion House

 

 

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সাফল্যের দিগন্ত ছোঁয়ার স্বপ্নে কয়েকজন নারী উদ্যোক্তার জীবনের হার না মানা গল্প

আপডেট সময় : ০৪:২৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

সমাজ সংসার জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েও প্রতিটি মানুষ স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নের দিগন্ত ছুঁয়ে দেখতে জীবন চলার গতিকে কর্মের শক্তিতে আবদ্ধ করে প্রতিটি মানুষ পৃথিবীর নানামুখী বাস্তবতার অলিগলি পেরিয়ে ছুটে চলে স্বপ্ন ও সাফল্যের দিগন্ত নাগালে পেতে।

এমন কঠিন বাস্তবতা চিন্তার দ্বিধাদ্বন্দ্ব জয় করে জীবনের কর্মক্ষেত্র নির্ধারণ করাটা আরও ভীষণ কঠিন। কিন্তু এমন কঠিন সব প্রতিকূলতাকে ছুঁড়ে ফেলে সাধারণ জন নারী সমাজে জাগরণ সৃষ্টি করে। যা বাংলার নারী সমাজের জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার স্বপ্নের জয়জয়কার বলে মেনে নিতেই হয়।

বর্তমান বৈশ্বিক মহামারী ও শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে একজন স্বপ্নবাজ, সফলতার  অগ্রগামী কান্ডারী, নারী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা কিছু নারীর জীবনের গল্প নিয়ে “মিচুয়াল বিজনেস পয়েন্ট গ্রুপ” আয়োজিত উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প শিরোনামের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী স্বপ্নবাজ নারীদের মধ্য থেকে কয়েকজন নারী উদ্যোক্তাদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনের গল্প সকালের সংবাদ এর সকল পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:……

#Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ১

আমি সোহেলী ফারহানা, স্বত্বাধিকারী ZA Fashion & Cosmetics

আমার মনে সবসময়ই একটি সুপ্ত ইচ্ছে ছিল। নিজে কিছু একটা করব। সেই ইচ্ছে নিয়ে এসএসসি(S.S.C) শেষ করেই জবের জন্য পরীক্ষা দেই প্রাইমারিতে। রিটেন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও হই।

কিন্তু আমাকে ভাইভা বোর্ডে কোশ্চেন করল

জবের জন্য পরীক্ষা দিতে এসেছ বাবা জানে

রেজাল্ট তো ভালই আরেকটু বড় হও ।

কি আর করার তারপর…… আইএসসি(I.S.C) কমপ্লিট করলাম। অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি হলাম বেশকিছুদিন এভাবে চলল। ইতোমধ্যে বিবাহিত জীবনে ও পা রাখলাম। পড়ালেখা চলছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন অনুভব করলাম আমার নারী জীবন পূর্ণতা পেতে চলেছে। হ্যাঁ প্রথম সন্তানের মা হলাম আমি কিন্তু অনার্স ফার্স্ট ইয়ার পরীক্ষা টা আর দেওয়া হলো না। আশিক এর চাকরিসূত্রে রাজশাহীতে ওর সঙ্গে একাই থাকতাম। ও হ্যাঁ আশিক আমার হাজবেন্ডের নাম। একমাত্র সন্তান জিদানকে নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আমি। পরের বছরও পরীক্ষা দেওয়া হলো না। তারপর জিদান একটু বড় হলে নিজেকে সামলে নিয়ে এডমিশন নিলাম রাজশাহী কলেজে। অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে কমপ্লিট করলাম বিএসএস(B.S.S)। মাস্টার্স শুরু করলাম দ্বিতীয় সন্তানের মা হলাম। এই দীর্ঘ সময়ে সংসারের মায়া আমাকে আষ্টেপৃষ্টে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। “যেন আমার ঘর স্বর্গ আমার”। আমার জান পাখি বাচ্চা দুইটাকে একা রেখে বাইরে যেয়ে কাজ করার ইচ্ছা হারিয়ে ফেললাম আমি। বেশ ভালো কাটছিল আমার দিনগুলি। ওদের নিয়ে সময় কাটানো। ওদের বাবার ছুটির দিনগুলোতে বাইরে যাওয়া শপিং করা খাওয়া, ঘোরাঘুরি বেশ যাচ্ছিল।

 

তারপর শুরু হল ”করোনা” পরিস্থিতির বিভীষিকা। ঘরবন্দী জীবন-যাপনে কিছুটা বিরক্তি চলে আসছিলো আমার। শুধু আমার কেন বলছি হয়তো আমাদের সকলেরই। তখন মনের সুপ্ত বাসনা গুলো আবার আমার সামনে ধরা দিতে লাগলো। ভাবলাম এমন কি করতে পারি যাতে আমার সোনামনিরা আমার চোখের সামনেই থাকবে আর আমার কিছু করার স্বপ্ন পূরণ হবে। তখনই চোখে পরলো নাসিমা আক্তার নিশা আপুর WE গ্রুপ। শত শত আপুদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প পড়ে পড়ে নিজেও চিন্তা করলাম এই কাজটি আমার জন্য বেস্ট হতে পারে।

কিন্তু কিভাবে শুরু করব বুঝতে পারছিলাম না। কিভাবে নিজেকে পরিচিত করব। পার্সোনাল ব্রান্ডিং তৈরি করব। এই নিয়ে আপ্সেট ছিলাম। তবুও কাউকে না জানিয়ে সাহস করে শুরু করে দিলাম নিজের জমানো সামান্য কিছু টাকা নিয়ে। কিন্তু (we) এর মত এত বড় একটা প্লাটফর্মে পরিচিতি পাওয়াটা ভীষণ কঠিন হয়ে দাঁড়ালো।

ঠিক এই সময়ে এমবিপি(MBP) গ্রুপের এডমিন আপুর সাথে পরিচয় হলো আমার। এখান থেকেই আমার সুন্দর সূচনা। আপুর আন্তরিকতা গাইডলাইন আমার কনফিডেন্স লেভেল কে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।

কিন্তু এরই মধ্যে দেখা দিল আরেক সমস্যা। আগেই জানিয়েছি কাউকে না জানিয়ে উদ্যোগটা নিয়েছিলাম আমি। হাসবেন্ড এর কাছে বেশিদিন চেপে রাখতে পারলাম না। সে জানল আমার উদ্যোগ এর ব্যাপারে। আশিক বলল-তোমার এগুলা করার কি দরকার বলোতো। আমি আছি তো! কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ শেষ পর্যন্ত সে আমাকে বুঝতে পেরেছে। আশিক বলল আচ্ছা তোমার যদি ভাল লাগে, ইচ্ছে করে তুমি কর। ওর সাপোর্ট পাওয়ার পর আমি আমার কাজটিতে আরো সতেজতা খুঁজে পেলাম।

তবে সিদ্ধান্ত নিলাম কারো কোনো আর্থিক হেল্প আমি নিব না মেন্টাল সাপোর্ট অনেক আমার জন্য। ভাবলাম নিজেকে নিজের মতো করে একবার ট্রাই করে দেখি না কি হয়! তাই খুব ছোট্ট পরিসরে নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমের উদ্যোগটি শুরু করলাম।

এই ছিল আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প। উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পেরেছি কিনা জানিনা। তবে এটা বুঝতে পারছি গুটিগুটি পায়ে একটু একটু করে হলেও সাফল্য আসছে। অনেক অনেক প্লানিং করে রেখেছি, আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন আমার। ইনশাআল্লাহ একদিন স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখাব। জানি সহজ হবে না, কারণ “সফল হওয়া সহজ হলেও সাফল্য অর্জন করা মোটেই সহজ নয়” (But I will try my best) জেতে জেতে আবারো পরিচয়টা দিয়েই যাচ্ছি

 

 #Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ২

আমি আসমা খান সূচনা…

আমার জীবনের গল্প জীবনের গল্প তো অনেক বড় লিখে শেষ হবে না। তবুও ছোট করে লিখতে চেষ্টা করছি সবার ছোট বেলা হয় অনেক সুন্দর। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমার ছোট বেলার কোন মধুর সৃতি নাই বলেই চলে লেখা পড়ার প্রবল ইচ্ছা থাকা শর্তেও কমপ্লিট হয় নাই। জীবনের ঘুর্নীঝড় সব এলো মেলো করে দিয়েছে।সবার সুন্দর একটা পরিবার থাকে বাবা-মা নিয়ে। ছোট বেলা থেকে আল্লাহর কাছে দোয়াই করেছি শুধু সব ঠিক করে দিন আল্লাহ। ব্রকেন পরিবারের সন্তানেরা এই পৃথিবীতে সহযে ভাল কিছু করতে পারে না।কারণ পরিবার থেকেই সব সময় অবহেলিত হয় দুঃখ্য ছাড়া খুশি জীবনে ছিল না।

উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প শুরু ছোট বেলায় পুতুল খেলার সময় থেকেই। পুতুল খেলতাম এবং টেইলার্স দোকান থেকে সুন্দর সুন্দর কাপড় এনে ছোট কেচি দিয়ে কেটে ডিজাইন করে হাতে শেলাই করেই জামা বানাতাম একদম পুতুলের মাপে খুব ছোট থেকে নিজের জামা নিজে বানাই সাথে পরিচিতদের বানানো শুরু বয়স ১৬ থেকেই ইনকাম শুরু আমার সব সময় আমি কাজে ডুবে থাকাই পছন্দ করি। আমার কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নাই সেলাই কাজে।আর তখন কোন ইউটিউব ছিল না যে দেখে দেখে শিখবো। কারো কোন ডিজাইন দেখলেই কপি করা কোন বেপার ছিল না।নিজের টাকা দিয়েই মেশিন কিনেছিলাম প্রথম ২০০৭ সালে ২২০০ টাকা দিয়ে পুরনো। পায়ে মেশিন চালানোর কারণে খুব পেইন হতো তাই মোটর লাগিয়ে অনেক টাকা ইনকাম করেছি। অবশেষে বিয়ে ২০১৫ তে এই ফেসবুকের মাধ্যমে তাকে পেয়েছি আর এখন ২০২১ এই ফেসবুকই আমাকে বানিয়েছে উদ্যোক্তা আলহামদুলিল্লাহ ।

২০১৬ তে ধরা পরে আমার মেরুদন্ডের টিসু ক্ষয় তাই ১ মাস বেড রেস্ট। ভারি কাজ,ঘর মুছা নিষেধ এবং বাকা হওয়া যাবে না। তাই জামাই মেশিন বিক্রি করে দিছে কাজ করা যাবে না। অনেক সময় ধরে বসে কাজ করার কারনে আমার এই অবস্থা হয়েছে।

২০১৭ ডিসেম্বর রাজকন্যার মা হলাম। শশুড় বাড়ির মন মতো হতে পারি নাই। খুব কষ্ট পোহাতে হয় প্রেগনেন্সির সময় পরে বাধ্য হয়ে হাসবেন্ট আলাদা বাসা নিলো। স্বামীর ছিল না ভাল জব বা বিজনেস একমাত্র ছেলে হওয়াতে দুইটা বাসা ভাড়া দেয়া খুব কষ্টের তাই বেবি হওয়ার পরে আবার মেশিন কিনলাম।পরিচিতদের বললাম কাজ শুরু করে সংসারের প্রায় অর্ধেক খচর চালাচ্ছিলাম।মেয়ে হলো নিজে কিছু কিনতেও পারি নাই প্রায় ১ বছর। তুবার জন্মের পরে ৪ টা জামা কিনেছিল ওর বাবা সব ভিজিয়ে ফেলতো বমি করে বারান্দা না থাকায় শীত বেশি থাকায় শুখাতো না সহজে তখন তাকে কাথা বা কাপড় দিয়ে পেচিয়ে রেখেছি। ওর ৪ মাস বয়স থেকে আবার টেইলার্স এর কাজ শুরু করি। খুব ব্যাক পেইন নিয়ে এবং ওকে রাখার কেউ ছিল না।ও ঘুমালে অর্ডারের কাজ শেষ করেছি নিজে না ঘুমি।

এই ভাবে অনেকটা ইনকাম করে সংসার খরচ চলে। ২০১৯ নভেম্বর মাসে একটা গ্রুপে আমার কাজ নিয়ে লিখি এবং টেইলার্স এর হোম সার্ভিস চালু করি। বাসায় গিয়ে আপুদের মাপ ও কাপড় নিয়ে আসছি আবার বানিয়ে দিয়ে এসেছি আলহামদুলিল্লাহ। ২০২০ এ মার্চে শুরু হলো মহামারী বাসায় যাওয়া অফ। কি করি তখন ছিলাম উই গ্রুপে। অনেক আপুদের ঘরে বসে কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হই কিন্তু মুলধন পাবো কই কিছু করবো যে।

সেই মহামারীতে রোজার ইদে এক আপুর বাসা ছিল খিলগাও আপু ও আপু বেবিদের জামা বানিয়ে ৫০০০ টাকা পাই মুজুরি। ২০২০ এর মে ৩১ তারিখ খুলে ফেললাম অনলাইন বিজনেস এর মাধ্যমে কাজ শুরু করার উদ্দেশ্যে Tuba’s Zone নামের ফেসবুক পেজ ওপেন করে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ চলা।

প্রথম শুরু করি এই টাকা দিয়ে অল্প অল্প করে কাপড় কিনে বেবি ড্রেস বানানো নিজের ডিজাইনে আলহামদুলিল্লাহ কোরবানির ইদ ছিল মাশাআল্লাহ অনেক ভাল সারা পেয়েছি। এবং হয়ে উঠি উদ্যোক্তা আলহামদুলিল্লাহ নিজের অজান্তেই ।

আর এই বেবি ড্রেস নিয়ে আইডিয়া সব আমার মেয়ে হওয়াতে আগে কোন দিন বেবিদের জামা বানাই নাই। আমার বাচ্চাটা মাশাআল্লাহ খুব গ্রথ ভাল ছিল বাহিরের জামা লাগতো না।তার বিভিন্ন ডিজাইনে জামা বানাতাম এবং গ্রুপে পোষ্ট করাতে অনেকেই নিতে চাইতো। জিজ্ঞেস করতো কোথা থেকে জামা কিনি যখন বলতাম আমি বানাই সবাই অনেক উত্তসাহ দিতো আমাকে এইটা নিয়ে কাজ করার জন্য।

আমার স্বপ্ন নিজে কিছু করার এবং প্রয়োজনও ছিল টাকা ইনকাম করা তাই স্বপ্ন ও প্রয়োজন এক সাথে হয়ে আমার সব রকম রোগ দুর করে দিয়েছে। এখন যতো অসুস্থই থাকি না কেনো কাজ করেই যাচ্ছি।

এখন ১ বছর ধরে এতো কেনাকাটা করি নিজের ও বাচ্চার জন্য আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া।মেয়ে হাটা শিখেছিল এক জোড়া জুতা কিনতে পারি নাই,সে মা এখন অনলাইন থেকে এক ইদেই ৩ জোড়া জুতা কিনে ফেলি। একটা ড্রেস ভাল করে পরাই না এখন এতো এতো ড্রেস তার এখন গরীবদের দিয়ে দেই সব ভাল থাকতেই আমার উদ্যোগ যেহেতু অনলাইনের মধ্যমে প্রসারিত হচ্ছে তাই আমি ৯৯% কেনা-কাটা অনলাইন থেকেই করি আলহামদুলিল্লাহ এই ১৫ মাসে দেড় লাখ+ টাকা ইনকার করেছি এই আমি একা হাতে কোন কারিগর ছাড়া।ভাল লোক পাচ্ছি না তাই পাগল হয়ে যাচ্ছি কাজ নিয়ে একা সম্ভব হচ্ছে না দিন যাচ্ছে আর আলহামদুলিল্লাহ কাস্টমারের সংখ্যা বাড়ছে। ধৈর্যশীল মানুষ খুজে পাচ্ছি না কাজ শিখাবো। আমার স্বপ্ন তুবাস যোনের ফেক্টরি হবে যেখানে আমার নিজোস্য প্রোডাক্ট তৈরি হবে আল্লাহ যেনো সে পর্যন্ত আমাকে বাচিয়ে রাখেন।

আমার নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের থেকে কিনতে ভাল লাগে। আশা আছে নারীদের নিয়ে কাজ করবো তুবাস যোন কে অনেক বড় করবো।আমার পায়ের নিচের মাটি শক্ত করবো।নিজের সব হবে একটুকরো জমি যেনো নিজ টাকায় করতে পারি যেখানে মাস শেষে ভাড়া নিয়ে মাথা ব্যথা থাকবে না। খেয়ে না খেয়ে মাস শেষে হাজার হাজার টাকা দিবো না তুলে কারো হাতে।একটু সুন্দর ভাবে থাকার মতো ছাদ করে দিয়ে যেতে চাই আমার তুবা মা কে, যা আমি পাই নাই জীবনে সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য লিখতে গেলে চোখ ভিজে যায় ঘোলা হয়ে আসে দুঃখিত অনেক বড় হয়ে গেলো লেখাটা।

আমাকে সাপোর্ট দেয়ার মতো কেউ ছিল না।তবে এখন হাসবেন্ট খুব সাপোর্ট দেয় আলহামদুলিল্লাহ আর আমার জীবন সঙ্গী ছাড়া ছাড়া আমার দুনিয়াতে কেউ নাই।

এই ফেসবুক আমাকে দুইটা জিনিষ দিলো উদ্যোক্তা হলাম,জিবনে ভাল সংগি পেলাম সাথে অনেক আত্বার সম্পর্কের অনেক গুলা প্রিয় মানুষ পেলাম আলহামদুলিল্লাহ।

“মিউচুয়াল বিজনেস পয়েন্ট” এর সাথে থেকে নিজের স্বপ্ন ও উদ্যোক্তা হওয়ার পথ চলাকে সুদূর প্রসারী করতে চাই সকলের দোয়া প্রার্থনা করি।

আমার ফেসবুক পেজ: Tuba’s Zone

 

#Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ৩

আমি দোলা দাস, আমার উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্প….

রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলা সদরে আমার বাড়ি।বাবা-মায়ের প্রথম এবং একমাএ কন‍্যা সন্তান আমি। তাই খুব যত্ম,আদর আর ভালোবাসা নিয়ে বড় হয়েছি।বাবার নয়নের মনি আমি।বাবা ব‍্যবসায়ী,জুয়েলারির ব‍্যবসা।বলতে গেলে বংশ পরমপরাই আমার বাবা,কাকারা সবাই স্বর্ণশিল্পী।ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো নাচ করতে পারতাম বলে অনেক পুরস্কার পেয়েছি,নাচ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল।যদিও সে স্বপ্নের পিছু ছুটে মাঝপথে স্বপ্নটাকে হারিয়ে ফেলেছি।সবসময় মনে মনে ভাবতাম যে নিজে কিছু একটা করবো,আমার পরিচয়ে আমি পরিচিত হবো সবার কাছে।

২০১২ সালের এইচএসসি পাশের পর বিয়ে হয়ে যায়।কিন্তু পড়ালেখা চলতে থাকে,কিছু দিন যেতে না যেতেই দেশের স্বনামধন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান BRAC এর স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে ক‍্যাশিয়ার হিসেবে কর্মজীবনের শুরু । তারপর আমার বাবু হয়,বাবার বাড়িতে বাবুকে রেখে চাকরি করতাম। আমার কাজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আর লেগে থাকার সাফল‍্য হিসেবে স্বল্প সময়ে পদোন্নতি পেয়ে এ‍্যাকাউন্ট ম‍্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করলাম।

সারাদিন বসে থেকে কাজ করতে অনেক বিরক্ত লাগতো বিশেষ করে টাকার মধ‍্যে সারাদিন ডুবে থাকতে হতো।তাই হঠাৎ করেই অব‍্যাহতি দিয়ে দিলাম। MBA শেষ করলাম। ২০১৮ সালে একেবারেই চলে আসলাম ঢাকায়।আমার স্বামীর চাকরির সুবাদে।ঠিক সেই সময় সখ‍্যতা গড়ে এক আপুর সাথে।যার মাধ্যমে আমি মনিপুর স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ এ শিক্ষকতা শুরু করলাম।সবকিছু নিয়ে ভালোই দিন কাটছিল আমার।কিন্তু দেশের পরিস্থিতি যখন ২০২০ সালে খারাপ হয়ে গেল স্কুল বন্ধ হয়ে গেল,তখন কিছুটা হতাশ হয়ে গেলাম।ঘরে বসে সময় যেতেই চায় না।কোন কিছুর মধ‍্যেই মনোনিবেশ করতে পারতাম না।নিজেকে সান্তনা দেওয়ার মত অবশিষ্ট কিছু রইল না।সাহস দিলেন আমার স্বামী। যথাযথ সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিল।স্ত্রীর পাশে থেকে সর্বোচ্চ সাহস দিয়ে এগিয়ে রাখলেন শত বাধা উপেক্ষা করে।চাকরির জন‍্য চেষ্টা করতে করতে মাঝখানে একটি বছর চলে গেল।আমার মা আমার সেই স্বপ্নটাকে নাড়া দিলেন।উদ‍্যোক্তা হবার স্বপ্ন পেয়ে বসলো আমাকে।পূর্ব থেকেই মার্কেটিং আর ম‍্যানেজমেন্ট এর কিছুটা ধারণা ছিল। ব‍্যবসার পরিকল্পনা করলাম,ভাগ‍্য সহায় হলো। যদিও স্বপ্ন ছোট-বড় হয় না,তবুও আমি বলবো,একটি স্বপ্ন নিয়ে গুটিগুটি পায়ে আমি এগিয়ে চলেছি।একদিন অবশ্যই সফল হবো এই প্রত‍্যাশায়।”রেডিমেড থ্রি পিস, কুর্তি, গাউন, বোরকা, নিয়ে কাজ করি। আমার সোশ‍্যাল মিডিয়ায় একটি পেজ রয়েছে। যার ফেসবুক পেজের নাম RD Fashion Zone এটি খোলার মাধ্যমে আমার যাত্রা শুরু হয়।সামনে -পেছনে না ভেবে শুরু করলেও এখন আমি নিজের খরচ,ইচ্ছা,চাহিদা কিছুটা পূরণ করতে পারি।গর্বের সাথে বলতে পারি আমি আত্মনির্ভরশীল।

যদিও অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়,তবুও আমি ধৈর্য্য হারাই না।আমার মা সবসময়ই বলেন আমি নাকি খুবই মিশুক,আর এজন‍্যই নাকি আমি জীবনে ভালো কিছু করতে পারবো।তাই আমার মায়েদের -বাবাদের আর্শিবাদ,স্বামীর সাপোর্ট,আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসা নিয়ে আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করবো।

 

আমি আমার মতো নারী উদ‍্যোক্তাদের বলতে চাই,একজন পুরুষের সমান যোগ‍্যতাসম্পন্ন হলেও বাংলাদেশে শুধুমাত্র নারী বলে বিভিন্ন আচরণের সম্মুখীন হতে হয় একজন নারী উদ‍্যোক্তাদের।তাই বলে থেমে গেলে হবে না।

প্রতিষ্ঠিত বা পরীক্ষিত পথে ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠা করলেই উদ‍্যোক্তা হওয়া যায় না।নারী উদ‍্যোক্তাদের পথে ঝুঁকির সম্ভাবনা শতভাগ।নিজেদের প্রতিভা দিয়ে এই পথে হাঁটতে হবে।

সবাই দোয়া/আর্শিবাদ করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে। দোলা দাস। স্বত্বাধিকারী RD Fashion Zone

 

 #Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ৪

আমি সুপ্রীতি পাল আপনাদের সামনে তুলে ধরব আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প।

আমি স্বপ্ন দেখতাম পড়ালেখা শেষ করে কিছু করব। তবে ক্লাস নাইনে যখন পড়ি তখন থেকেই টিউশন করা শুরু করি। এরপর বিয়ের পরও পড়ালেখা চলছে। এরমাঝে একটা কোচিং-এ পড়ানোর অফার আসে। জয়েন করলাম। কয়েকমাস পড়েই একটা স্কুলের জবের জন্য পরীক্ষা দিলাম, ভাইবা দিলাম। সেখানে জব টা হলো জব করছি, পড়াশোনা করছি, সংসার করছি মাস্টার্স শেষ হলো, আমার একটা ছেলে হলো জব টা ছেড়ে দিলাম। কারণ ছেলেকে রাখার কেউ নাই এভাবেই কাটতে লাগল। কিন্তু খুব মন চাইতেছে কিছু একটা করি, কিন্তু কি করব ঘরে বসে এটা ভাবতে ভাবতেও অনেক সময় নষ্ট হল। তারপর আমার হাতের কাজ দেখে যখন দেখি সবাই প্রশংসা করছে আর বলছে এটা নিয়েও শুরু করতে পার। অফলাইনে একটু একটু করে শুরু করি।

এরপর করোনাকালীন সময় যখন একেবারে ঘর বন্ধী হয়ে গেলাম, তখন বিভিন্ন গ্রুপে অনেক আপুদের পোস্ট পড়ে উৎসাহিত হয়েছি। সিদ্ধান্ত নিলাম এবার ভালো করে কিছু একটা শুরু করতে হবে। বাসা থেকে কোনো সাপোর্ট নেই, তাও মনের জোরে অল্প করে শুরু করলাম। হাতের বানানো জুয়েলারি নিয়ে শুরু করলাম পথ চলা। সেই সাথে বানাতাম বিভিন্ন ঝাড় পুঁতি। এগুলো নিয়েই একটা গ্রুপ খুললাম। নাম দিলাম মায়ের নামে “অঞ্জলি” এখন আমার অঞ্জলি নাম অনেকের কাছে পরিচিত। এমন অনেক কাস্টমার আছে আমার, জুয়েলারি লাগবে কোথাও দেখবে না, অঞ্জলি তে চলে আসবে নিত্যনতুন ডিজাইনের জুয়েলারি বানানো আজ আমার নেশা। খুব ভালোবাসি নিজের কাজকে এভাবেই আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু হল। অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই ।

স্বত্বাধিকারী গ্রুপ- অঞ্জলি

 

 

 #Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প ৫

আমি খুব চঞ্চল মেয়ে ছিলাম, ধৈর্য্য বলতে আমার মাঝে কিছু ছিল না, খুবই অগুছালো সেই ছোট থেকেই, ঘুম কাতুরে ছিলাম। তাই স্কুল,কলেজ যেতে লেট করতাম, ২০১৩ তে HSC পাস করে ইউনিভার্সিটি ভর্তি হলাম ঢাকাতে, 2016 পর্যন্ত ভালোই যাচ্ছিল। ক্লাস,টিউশন সব কিছু মিলিয়ে পড়াশুনাটা ভালোই করছিলাম তখন ভাবতাম আমি বিসিএস দিবো, MBA করবো,,,অনেক সপ্ন মনে ছিল পড়া নিয়ে হঠাৎ আমার পেট ব্যাথা হওয়ায় ডক্টর দেখাই তখন ধরা পড়ে আমার কিডনিতে অনেক প্রবলেম, আমার ইউরিন ব্লাডার এ প্রবলেম,আমার নার্ভ এ প্রবলেম তখন ইন্ডিয়া নিয়ে যায় আমার পরিবার, উন্নত ট্রিটমেন্ট এর জন্য,,দীর্ঘ ৬ মাস ট্রিটমেন্ট করিয়ে বাংলাদেশ আসি। বাংলাদেশ এসেই ৩ দিন পর একাই ঢাকা চলে যাই কেউ রাজি ছিল না আমার পড়াশুনা টা চালিয়ে নেবার জন্য কিন্তু আমি তা মানিনাই নিজের দায়িত্ব নিজে নিয়ে একা ঢাকা চলে গেলাম, তার পরও পড়াশুনাটা চালিয়ে যাচ্ছিলাম এতো শারীরিক সমস্যায় নিয়ে সবাই বলত কি দরকার পড়ে অসুস্থ আমি, ট্রিটমেন্ট করবো নাকি পড়ার পিছনে টাকা নষ্ট করবো, তখন খুব কষ্ট লাগতো তাও হাল ছাড়িনি,,,ভালোবেসে বিয়ে করলাম 2018 তে, শশুর বাড়িতে স্বামী ছাড়া কেউ আমায় ভালোবেসে গ্রহণ করে নাই। আমি অসুস্থ বলে। সবাই কথা শুনাইত অসুস্থ মেয়ে বিয়ে করছে তার পিছনেই সব টাকা শেষ হবে। বাচ্চা হবে না এতো সমস্যা নিয়ে। যাই হোক আমার জীবনে টাকা টা মুক্ষ হয়ে দাঁড়ালো কারণ আমার সব ট্রিটমেন্ট খুব ব্যয়বহুল। তখন ভাবতাম নিজে যদি কিছু করতে পারতাম তাহলে নিজের চিকিৎসার ভার নিজেই নিতাম আমার জন্য মা বাবা স্বামীর এতো চাপ সহ্য করতে হতো না। নিজে কিছু করার খুব প্রয়াস করতাম। স্বামী জব করতে দিবে না ঘরে বসে কি করা যায় ভাবতাম,,,,হাতের কাজ জানি,,পার্লারের কাজ জানি কিন্তু শশুর পার্লারের কাজ করতে দিবে না। তো কি করবো সারাক্ষণ শুধু এসব ভেবে ডিপ্রেশন এ ভুগতাম।

আমি 2019 এর লাস্টের দিকে একটা পেজ খুলি তাও সখ করে,, আবার একটু আশা নিয়েও কারণ দেখতাম অনলাইন বিজনেস খুব চাহিদা, এমনিতেই নাম খুঁজে পাচ্ছিনা কি দেবো তাই নিজের নামেই খুললাম,,, পূজার পছন্দ। সখের বশে যা যা কাজ করতাম সব কিছুর ছবি তুলে দিতাম মেম্বার ছিল না বেশি। কিন্তু যখন লকডাউন পড়লো করোনার থাবা পড়লো দেশে তখন আমি কনসিভ করি। সেই সময়কালীন আমার স্বামীর দোকানটা বিক্রি হয়ে যায়, সব মাল নিয়ে বাড়ি বসা আমিও প্রেগনেন্ট,,,কি করবো কিছুই মাথায় কাজ করছিল না। তখন নিজের হাতের কাজকে সম্বল করে প্রেগনেন্ট অবস্থায় চট নিয়ে বসলাম কাজ করতে হবে, কিন্তু শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল ডক্টর আমাকে baby নিতে বারণ করেছিল তাও আমি নেই কারণ গ্রামে থাকি একটা মেয়ের বাবু না হলে কত কথা যে শুনতে হয় তা গ্রামের বউরাই বুঝে,,,আমার ডেলিভারির সময় লাইফ রিস্ক নিয়ে টাকার উপর ভর করে অপারেশন হয় আমার কিডনিতে সমস্যা,আমার ইউরিন সমস্যা, আরো অনেক সমস্যা প্রেগনেন্সি অবস্থায় 3 মাস ক্যাথেদের পরে ছিলাম বাঁচার সম্ভাপনা খুব কম ছিল। স্বামীকে বলেছিলাম যদি 2জনের মধ্যে একজন বাঁচে তাহলে আমার সন্তানকে বেছে নিও। কিন্তু সবার আশির্বাদ আর ভগবানের কৃপায় বেচেঁ ফিরলাম,,,বাবু হবার পর 2 মাস পর্যন্ত কেথেদার পড়া ছিল,,,আমি যে বেচেঁ আছি এটা ভগবানের কৃপা আর মা বাবার আশির্বাদ। আমি অনেক কেঁদেছিলাম যে আমি আমার স্বামীর এমন দুঃসময়েও ওর পাশে থাকতে পারছি না,,আমার স্বামী যখন কোরণার জন্য কোনো কিছু করতে পারছিল না তখন ওর মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না ছেলে মানুষ হাতে টাকা নাই, সদ্য বাবা হয়েছে ইচ্ছে করলেও ছেলেকে কিছু কিনে দিতে পারছে না এই চাপা কষ্ট ওরে কুরে কুরে খাচ্ছিল আমাকে। অনেক কাজ জানি পড়াশুনা জানি কিন্তু টাকা কই পাবো শিক্ষাকে কাজে লাগাতেও পারছিনা এখন যে টাকার খুব দরকার আমাদের ,তখন আবার চট নিয়ে কাজ শুরু করলাম। ,আসলে ভগবান কাউকে কষ্টে রাখে না কোনো না কোনো ভাবে ঠিকই উদ্ধার করে। আজ আমি আমার কাজ দিয়ে আর কিছু না পারি আমার এই দুঃসময়ে আমার স্বামীর পাশে তো থাকতে পারবো এটাই শান্তি এখন আমার মত ধৈর্যশীল আর কে হবে কারণ চটের উপর এই সুই সুতার কাজ খুব ধৈর্যের কাজ জা এখন আমার আছে,,,আমি আর আগের মত চঞ্চল নাই,,ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করি,,,আগের মত আর ঘুম কাতুরে না এখন রাত জেগে কাজ করি,,,আসলে সময় আর পরিস্থিতি মানুষকে বদলাতে বাধ্যকরে, একসময়ের সখ ছিল আর এখন এটা আমার জীবিকা হলো,,,,, আমি এই কয়েক মাসে যেই পরিমান ভালোবাসা পেয়েছি তা আমার জন্য বিশাল৷

আমাদের এমন দুঃসময় হয়তো সব সময় থাকবে না কিন্তু আমার এই কাজ থাকবে আমি মরার আগ পর্যন্ত আমার এই ছোট্ট পেজটা একদিন এক বড় পর্যায়ে নিবো এই সপ্ন আর একনিষ্ঠ পরিশ্রম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি যাবো পিছু পা হবো না।

 #আমার ফেসবুক পেইজ _ পূজার পছন্দ

 

#Mutual _Business_point #উদ্যোক্তা_হওয়ার_গল্প _৬

বর্তমানে আমি একজন উদ্যোক্তা কিন্তু আমার উদ্যোক্তা জীবন খুব যে বেশি হয়েছে তা কিন্তু নয় তবে প্রতিকূল অনুকূল সব পরিস্থিতিতে পড়েছি আমি। ইনশাআল্লাহ সব কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি।তবে উদ্যোক্তা হয়ে কাছের বা দূরের অনেক মানুষের আসল রুপ দেখেছি। অনেক আপনজন থেকে কটু কথাও শুনতে হয়েছে।তবু্ও থেমে যাইনি।
এবার আসা যাক মূল গল্পেঃ
আমার জন্ম ঢাকার শাহজাহানপুর, আমার বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবি। আমার বাবা খুব অল্প বয়সে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেন।সেই থেকে নতুন জীবন শুরু। আমার হাজব্যান্ড কাছাকাছি বাসা ভাড়া নিয়েছিল যেন আমি রেগুলার বাবার বাসায় যেতে পারি এভাবেই দিনাতিপাত করতে লাগলাম। আলহামদুলিল্লাহ। লেখাপড়া ও চালিয়ে গেছি। কখনও অলস জীবন যাপন করিনি।অনেক পরিশ্রমি মানুষ আমি। তবে খুব অল্প বয়সে মা হয়ে গেলাম কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না জন্ম হয়ে আমার ছেলে কান্না করেনি বহু জটিলতা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছে। সাথে সাথে অন্য হসপিটালে ট্রান্সফার করেছে। ইন্কিউবিটারে রেখেছিল অনেকদিন যেটা তখনকার সময় এতটা ব্যায়বহুল ছিল যে আমার হাজব্যান্ডের
খুব কস্ট হয়েছিল।এদিকে আমি এসব কিছুই জানিনা যেহেতু আমি অন্য একটা হসপিটালে অজ্ঞান অবস্থায় ছিলাম ৫দিন।
আমি কিছুটা সুস্থ হয়ে ৯দিনের দিন আমার ছেলেকে প্রথম দেখলাম তাও ইন্কিউবিটারে খুবই কঠিন অবস্হায়। কিযে কস্ট সেটা বলে বুঝানো যাবে না। যাইহোক অবশেষে সবার দোয়ায় আল্লাহর রহমতে দুই মাস পর সুস্হ হয়ে হসপিটাল থেকে মা ও ছেলে বাবার বাসায় গেলাম। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না, জন্ম থেকেই বাচ্চাটি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক প্রতিকূলতায় দিয়ে দিনাতিপাত করছে।
আজ এ ডক্টর, কাল ও ডক্টর এর কাছে দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়।যাক এভাবেই জীবন সংগ্রাম শুরু করলাম।পাশাপাশি লেখাপড়া ও চালিয়ে রেখেছিলাম। এভাবেই দীর্ঘ আট বছর অনেক কস্ট করেছি।
অনেক ভালো ভালো চাকরির অফার পেয়েও করতে পারিনি কারন ইতিমধ্যে আমি আবারও কনসেভ করেছি।যেহেতু প্রথম বাচ্চাটার সময় আমার বয়স অল্প ছিল কিছু বুঝিনি এবার অনেক সচেতন হয়েছি। ইনশাআল্লাহ আামার ছোট ছেলেটা সুস্থ ভাবে জন্ম গ্রহণ করেছে। তবে এলাকার কাছের একটা স্কুলে অনেক বছর শিক্ষকতা করেছি সুনামের সহিত।
তবে আকাঙ্খা রয়েই গেছে।
উদ্যোক্তা হওয়ার ভাবনাঃ
আমার বড় ছেলের এতো বড় কাহিনী বলার কারন হচ্ছে আজ এতো বছর পর আমি যখন আমার বাবার মৃত্যু তে খুবই শোকাবহ ( ২০২০সালের ১৭ ই জুন মৃত্যু বরন করেন) দিন কাটাচ্ছি। তার উপর আবার করোনার জন্য ঘরে বন্দী জীবন কাটাচ্ছি। এভাবেই ২০২০ সাল শেষ হয়েছে কিন্তু আমার শোকাবহ অবস্থায় আছি তখন আমাকে ব্যাস্ত রাখতে আমার এই ছেলে আমাকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য আমাকে ৩০শে মার্চ Puspo’s Kitchen নামে পেইজ খুলে দেয়।এভাবেই আমার আস্তে আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
আমার উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি সার্পোট পেয়েছি আমার বড় ছেলের কাছে সে সবসময়ই বন্ধুর মতো সাহস দিয়েছে। এরপর আমি নিজে আরেকটি পেজ ওপেন করি ৩ই জুন Puspo Fashion House নামে।আর এই পেজের জন্য আমার ছোট ছেলে আমাকে অনেক সহযোগিতা করে। যা এখন ও করে আসছে।
নিজে সাবলম্বি হওয়ার জন্য অনলাইন বিজনেস খুব ভালো মাধ্যম মনে করার কারন আমি ২০১৭থেকে ২০২০পর্যন্ত ধুমছে অনলাইন থেকে কেনাকাটা করেছি। এখনও করছি।তখন ভাবতাম খুব সহজ অনলাইন বিজনেস করা।
উদ্যোগ নিয়েছি ঠিক, তবে এখন মনে হচ্ছে যতটা সহজ ভেবেছিলাম তার থেকে হাজার গুন কঠিন উদ্যোক্তা হওয়া।প্রতি মুহূর্তে আমি শিখছি বিভিন্ন উদ্যোক্তা আপুদের কাছ থেকে।চেষ্টা -পরিশ্রম -ধৈর্য সহযোগে আমিও একদিন একজন সফল উদ্যোক্তা হবো ইনশাআল্লাহ। সবাই দোয়া করবেন, পাশে থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।

#আমি পুস্প আহমেদ, কাজ করছি ঢাকার বনশ্রী থেকে হোম মেইড ফুড, মেয়েদের থ্রি পিস, শাড়ী, জুয়েলারি আইটেম ও বিছানার চাদর নিয়ে।
আমার পেজ: Puspo’s kitchen
puspo Fashion House