ঢাকা ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:০২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০২০ ৪৭ বার পড়া হয়েছে

গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

জয়পুরহাট প্রতিনিধি; জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর সদরের শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামে মোবাইলে মিসড কল আসার অভিযোগ তুলে স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে (২০) লিচুর গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার নিড়ানি গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে প্রতিবেশীরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামী সাকিল হোসেন (২৪) ও ভাসুর আসলাম হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা একই এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে।

পুলিশ ও মেয়ের বাবার দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে শাকিল হোসেনের সঙ্গে খাদিজা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন অজুহাতে মেয়ের উপর নির্যাতন করত এবং দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। এরই ধারাবাহিকতায় মোবাইলে মিসড কল আসার অপরাধে স্বামী শাকিল, তার বড় ভাই আসলাম ((৩৫), শ্বশুর আব্দুস সালাম (৫৮) ও শাশুড়ি সেলিনা বেগম (৫০) সকলে মিলে মেয়েটিকে দড়ি দিয়ে বাড়ির ভিতর লিচু গাছের সঙ্গে বেঁধে হাত, পা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম লোহার ছ্যাঁকা দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। এক সময় মাথায় আঘাত করলে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলেও বাড়ির দরজা বন্ধ থাকায় কেহ সহজে প্রবেশ করতে পারেননি। মেয়েটির চিৎকার সহ্য করতে না পেরে একপর্যায়ে প্রতিবেশীরা ধাক্কা দিয়ে দরজা ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করেন এবং মেয়েটিকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়।

নির্মম নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ খাদিজা খাতুন বলেন, আমার তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছে। আমার বাবা বাড়ি সান্তাহারের পোতা গ্রামে । আমার স্বামী শাকিব হোসেন রাজমিস্ত্রির কাজ করে। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে সহ্য করতে পারছিলেন না। আমার স্বামী ভালো ছিল। শ্বশুর-শাশুড়ির কারণে সে বিভিন্ন সময় আমাকে মারধর করত। দাবিকৃত যৌতুকের টাকা পরিশোধও করা হয়েছে। বুধবার রাতে বাড়িতে ফিরে কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ওপর এই নির্যাতন চালায়। ওই গৃহবধূ আরও বলেন, স্বামী আমাকে নির্যাতন করে মেরেছে। তবুও স্বামী সংসার করতে চাই। এ কারণে মা-বাবাকে ঘটনাটি জানায়নি।

সাবেক ওর্য়াড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বলেন, গৃহবধূকে তার স্বামী প্রায় নির্যাতন করত বলে শুনেছি। বুধবার রাতে বাড়ির দরজা বন্ধ করে গৃহবধূকে লিচু গাছে বেঁধে রেখে শরীরে ছ্যাঁকা দিয়েছে তার স্বামী। গৃহবধূর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাটি জানতে পারেন। তারা মহল্লার লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকে গৃহবধূকে আহতবস্থায় উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আতিকুর রহমান বলেন, গৃহবধূর দুই গালে, দুই হাতে ও পায়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার চিহ্ন রয়েছে। তার পরিবার মেয়েটিকে রেফার্ড করে নওগাঁ জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেছে।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ জানান, গৃহবধূকে গাছে বেঁধে রেখে ছ্যাঁকা দেওয়ার ঘটনায় গৃহবধূর বাবা আইয়ুব আলী স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে। মামলা পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ গৃহবধূর স্বামী ও ভাসুরকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

আপডেট সময় : ০৭:০২:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০২০

জয়পুরহাট প্রতিনিধি; জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর সদরের শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামে মোবাইলে মিসড কল আসার অভিযোগ তুলে স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে (২০) লিচুর গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহার নিড়ানি গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে প্রতিবেশীরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামী সাকিল হোসেন (২৪) ও ভাসুর আসলাম হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা একই এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে।

পুলিশ ও মেয়ের বাবার দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে শাকিল হোসেনের সঙ্গে খাদিজা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর বিভিন্ন অজুহাতে মেয়ের উপর নির্যাতন করত এবং দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকত। এরই ধারাবাহিকতায় মোবাইলে মিসড কল আসার অপরাধে স্বামী শাকিল, তার বড় ভাই আসলাম ((৩৫), শ্বশুর আব্দুস সালাম (৫৮) ও শাশুড়ি সেলিনা বেগম (৫০) সকলে মিলে মেয়েটিকে দড়ি দিয়ে বাড়ির ভিতর লিচু গাছের সঙ্গে বেঁধে হাত, পা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম লোহার ছ্যাঁকা দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। এক সময় মাথায় আঘাত করলে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলেও বাড়ির দরজা বন্ধ থাকায় কেহ সহজে প্রবেশ করতে পারেননি। মেয়েটির চিৎকার সহ্য করতে না পেরে একপর্যায়ে প্রতিবেশীরা ধাক্কা দিয়ে দরজা ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ করেন এবং মেয়েটিকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়।

নির্মম নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ খাদিজা খাতুন বলেন, আমার তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছে। আমার বাবা বাড়ি সান্তাহারের পোতা গ্রামে । আমার স্বামী শাকিব হোসেন রাজমিস্ত্রির কাজ করে। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে সহ্য করতে পারছিলেন না। আমার স্বামী ভালো ছিল। শ্বশুর-শাশুড়ির কারণে সে বিভিন্ন সময় আমাকে মারধর করত। দাবিকৃত যৌতুকের টাকা পরিশোধও করা হয়েছে। বুধবার রাতে বাড়িতে ফিরে কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ওপর এই নির্যাতন চালায়। ওই গৃহবধূ আরও বলেন, স্বামী আমাকে নির্যাতন করে মেরেছে। তবুও স্বামী সংসার করতে চাই। এ কারণে মা-বাবাকে ঘটনাটি জানায়নি।

সাবেক ওর্য়াড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বলেন, গৃহবধূকে তার স্বামী প্রায় নির্যাতন করত বলে শুনেছি। বুধবার রাতে বাড়ির দরজা বন্ধ করে গৃহবধূকে লিচু গাছে বেঁধে রেখে শরীরে ছ্যাঁকা দিয়েছে তার স্বামী। গৃহবধূর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাটি জানতে পারেন। তারা মহল্লার লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকে গৃহবধূকে আহতবস্থায় উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আতিকুর রহমান বলেন, গৃহবধূর দুই গালে, দুই হাতে ও পায়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার চিহ্ন রয়েছে। তার পরিবার মেয়েটিকে রেফার্ড করে নওগাঁ জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেছে।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ জানান, গৃহবধূকে গাছে বেঁধে রেখে ছ্যাঁকা দেওয়ার ঘটনায় গৃহবধূর বাবা আইয়ুব আলী স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে। মামলা পাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ গৃহবধূর স্বামী ও ভাসুরকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।