চীন ও ভারত প্রীতির কারণেই বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন বিদ্বেষ
- আপডেট সময় : ০৯:৩৫:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ৪৪০ বার পড়া হয়েছে
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক: সবাই মনে করেছিলো, এমনকি কোন কোন বিশ্লেষকও বলেছিলেন যে আমেরিকা বাংলাদেশ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশে তাদের সেই অর্থে কোন স্বার্থ নেই। কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞা যেন সব হিসেব উল্টে দিয়েছে। বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আছে ভারতের সঙ্গে, চীনের সঙ্গেও। এই দেশে প্রকল্প আছে রাশিয়ার, ফ্রান্স থেকেও যুদ্ধ বিমান কিনতে চায় ঢাকা, যোগাযোগ বাড়ছিলো এমনকি পাকিস্তানের সঙ্গেও। ইউরোপের সঙ্গেও আছে নানাবিধ সম্পর্ক। এই ভারসাম্যের কূটনীতিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বড় ধরণের চপেটাঘাত। বাংলাদেশ কি চীনের দিকে একটু বেশি ঝুঁকে পড়ছিলো? নিশ্চয়ই।।
ওয়াশিংটন তার চীন বিরোধী জোট কোয়াডে বাংলাদেশকে ঢোকাতে চেয়েছে। যৌক্তিকভাবেই বাংলাদেশ রাজি নয়। হয়তো এটাই কাল হলো।
এতোদিন মিলিট্যান্সি ঠেকাতে সরকারের তৎপরতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে। সেটা দিয়ে সন্ত্রাস মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক শক্তির কাছে নিজের অপরিহার্যতা অনুধাবন করানো গেছে। পুষিয়ে নেয়া গেছে সুষ্ঠু নির্বাচন কিংবা গণতান্ত্রিক অনুশীলনের ঘাটতি। কিন্তু এখন খোদ আমেরিকাই সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ থেকে দৃষ্টি সরিয়েছে। তাদের দৃষ্টি এখন চীন-রাশিয়ার দিকে। কারণ আমেরিকার মুসলিম জঙ্গিবিরোধী যুদ্ধের ব্যস্ততায় চীন-রাশিয়া অগ্রসর হয়েছে বহুদূর।
অন্যদিকে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। এমন বাস্তবতায় কোয়াডে না থাকাকে আমেরিকা ভালোভাবে নেয়নি।
এখন যদি আমেরিকার চাপের মুখে বাংলাদেশ কোয়াডে যোগ দেয়, সেটা দেশটিকে নতুন বিপদের মুখে ঠেলে দেবে।
না গেলে এক বিপদ, গেলে হবে নি:শর্ত আত্মসমর্পন। তখন অনেক ছাড় দিতে হবে বাংলাদেশকে।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশের বিপদ যেখানে সেটা হচ্ছে গণতন্ত্রের তাত্ত্বিক কাঠামোয় দেশটির অবস্থান এখন ‘কর্তৃত্ববাদী গণতন্ত্রে’র ঘরে।
বিপুল মার্কিন চাপকে নেগোশিয়েট করার মতো বা স্বাধীন এবং সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে যেরকম শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ভিত্তি দরকার, বাংলাদেশে সেটি নেই বলেই বিশ্লেষকরা বলছেন। জনসমর্থনের যে শক্তিতে ঢাকা একসময় যুদ্ধাপরাধের বিচারে জন কেরির ফোনকলকে নাকচ করতে পেরেছে, সেই শক্তি বা ম্যান্ডেটে এখন নিশ্চিতভাবেই বিপুল ঘাটতি আছে। এবং এই ঘাটতি ও চাপ নিয়ে দুই বছরের মধ্যে আগের স্টাইলে আরেকটি নির্বাচন সামলানো কঠিন হবে। যদি না পররাষ্ট্রনীতির কোন ভেলকি দেখাতে পারে ঢাকা!