বন্দরে পড়ে আছে আদা পিয়াজ রসুন! নিলাম হতে পারে ১২ কন্টেইনার পণ্য
- আপডেট সময় : ০৯:২৮:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল ২০২০ ১১৯ বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি;
দেশের করোনা পরিস্থিতিতে সংকটে পড়ছে পিয়াজ, রসুন এবং আদাসহ বিভিন্ন পণ্য। এই সংকটের মধ্যেই দিন দিন বেড়েই চলছে দামও। ফলে নিম্ম-মধ্যবিত্ত মানুষরা বেশি দামে এসব পণ্য ক্রয় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, জাহাজ থেকে নামানোর পর চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা আদা, পিয়াজ ও রসুনের প্রায় ১২ কন্টেইনারে থাকা পণ্য নির্দিষ্ট সময়ে আমদানিকারকরা নেননি। এসব পণ্য নির্দিষ্ট সময়ে না আনায় ইতোমধ্যে আমদানিকারীরা এসব পণ্য না নিলে ১২-১৫ দিনের মধ্যেই নিলামে তুলতে প্রক্রিয়াও শুরু করবেন বলে জানান কাস্টম কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দরে থাকা পিয়াজ, রসুন এবং আদার কন্টেইনার জাহাজ থেকে নেমেছে, সেগুলো ৩০ দিনের বেশি হয়েছে। অন্যদিকে পিয়াজ, আদা এবং রসুনের জন্য চলতি রমজানের চাহিদা থাকার ফলে বিভিন্নভাবে কিছু আমদানিকারককে কনটেইনার ডেলিভারি নিতে বলা হলেও এসব আমদানিকারক নানা কারণে নেননি। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরেই না নেয়া সেসব গুলো নিলামে তুলতে আরএল (রিমুভ লেটার) দেওয়া হয়েছে কাস্টম হাউসকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দরে ১২ কন্টেইনারে থাকা পিয়াজ, রসুন এবং আদা দ্রুত বাজারে এলেই দেশের করোনা পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও সাধারণ ক্রেতারা ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করতে পারবেন। এতোদিন বন্দরে কেন পড়ে আছেন এসব পণ্য? কেন ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন না? তাছাড়া দিন দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ায় বন্দর কর্তৃপক্ষ গত সোমবার চিঠি দিয়েছে কাস্টম হাউসকে। আমদারিকারকরা নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পণ্য খালাস করে নিতে হয়। যদি আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমদানিকারকরা বন্দর থেকে পণ্য চালান খালাস না করেন, তাহলে সেসব পণ্য কাস্টম হাউস নিলামেই তুলেন।
তিনি বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে পচনশীল আদা, পিয়াজ, রসুন, ফল আমদানি হয়। বন্দরে নামার পর বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েই আমদারিকৃত এ ধরনের কনটেইনার নিরাপদেই রাখতে হয়। এতে যদি মাসের পর মাস যদি পণ্য ডেলিভারি না হয়, তাহলে বন্দরের বিদ্যুৎ অপচয় হয়, পণ্যও পচে যায়, শিপিং এজেন্টের কনটেইনারও আটকে থাকে। তাছাড়া বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বাজারে এসব পণ্য সংকট রয়েছে সে ক্ষেত্রেও দ্রুত নিলাম করতে পারেন বলেও জানান তিনি।
চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কাস্টম হাউসের উপ কমিশনার (নিলাম) মো. ফরিদ আল মামুন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বন্দর থেকে দেয়া চিঠি এখনও হাতে পায়নি। চিঠি পাওয়ার পরেই ১০ দিনের একটি নোটিশ দেয়া হবে। এতে কেউ এগিয়ে না আসলে, তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই নিলাম দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবো। তবে এসব প্রক্রিয়া শেষ করতে ১২-১৫ দিন সময় লাগবে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বন্দর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পিয়াজের ৯টি, রসুনে ২টি এবং আদার ১টিসহ মোট ১২টি কন্টেনাইর নিলামে দেয়ার বন্দর কর্তৃপক্ষ চিঠি দেয়া হয়েছে কাস্টম হাউসকে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বন্দরে ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউ’স ধারণক্ষমতার বিপরীতে কনটেইনার রয়েছে ৪৭ হাজার ৪০৩টি। এর মধ্যে নিলামযোগ্য কনটেইনার রয়েছে ৭ হাজার ১৮২টি। বছরের পর বছর ডেলিভারি না নেওয়ায় এসব কনটেইনার জমে রয়েছে। তাছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ৯টি কনটেইনার জাহাজে হ্যান্ডলিং হচ্ছে। বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ আছে ২৯টি কনটেইনার জাহাজ। সকাল আটটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেলিভারি হয়েছে ২ হাজার ৭৫৩টি কনটেইনার। বন্দর কর্তৃপক্ষ কনটেইনার ও জাহাজ জট কমাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।