ঢাকা ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




জন্মনিবন্ধন ফি ১৫০০ টাকা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২৮:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৫৪ বার পড়া হয়েছে

উপজেলা প্রতিনিধি মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

জন্মনিবন্ধন করতে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সোহেল মোল্লার বিরুদ্ধে।

বিষয়টি স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেনকে জানালে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টা বলেছেন, উদ্যোক্তার কিছু খরচ আছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, ৪৫ দিন বয়সী শিশুদের জন্মনিবন্ধন নিতে কোনো ফি নির্ধারণ করেনি সরকার। ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত ২৫ টাকা এবং ৫ বছর একদিন বয়স থেকে সব বয়সের ব্যক্তির জন্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সরকারের এই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উদ্যোক্তা সোহেল খান ইচ্ছামতো জন্মনিবন্ধন ফি নিচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জন্মনিবন্ধন করতে আসা লোকজনের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করেন সোহেল খান। পাশাপাশি পাসপোর্ট করে দেয়ার কথা বলে অতিরিক্ত ফি নেন তিনি। বানাইল ইউনিয়নের ভাবখন্ড বাজার ও আশপাশের কয়েকটি বাড়ি, কুড়ালিয়াপাড়া বাজার এবং চামারি এলাকার পল্টন মোড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য জানা যায়।

বাংগলা গ্রামের শাহরিয়ার আহমেদ পিয়াল বলেন, জন্মনিবন্ধন করতে আমার কাছে ৬০০ টাকা ফি নিয়েছেন উদ্যোক্তা সোহেল খান।

পাটুলী গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ছেলের পাসপোর্ট করাতে ১৯ বছরের পরিবর্তে ২০ বছর দেয়ার কথা বললে আমার কাছে ১০ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেছেন।

ভাবখন্ড গ্রামের রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমার চাচাতো ভাই সবুজ মিয়ার জন্মনিবন্ধন করতে ৫০০ টাকা ফি নিয়েছেন সোহেল খান। এর কমে করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

বানাইল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান বলেন, অতিরিক্ত টাকা না নেয়ার জন্য সোহেলকে অনেকবার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু কারও কথা শোনে না সোহেল।

ভাবখন্ড গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেনের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেণ, আমার মেয়ের জন্মনিবন্ধন করতে আমার কাছ থেকে ১৫০০ টাকা নিয়েছেন সোহেল।

শৈলজানা গ্রামের রকমান খানের স্ত্রী রেবেকা বেগম বলেন, আমার ছেলে আবিদের জন্মনিবন্ধন করাতে ১১০০ টাকা নিয়েছেন সোহেল খান। চেয়েছিল ১৫০০ টাকা। পরে ১১০০ টাকা রাখেন।

ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আলী আহম্মদ বলেন, যে কারও জন্মনিবন্ধনের জন্য সোহেলকে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এককথায় ভয়ঙ্কর ঘুষখোর সোহেল।

সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা দেওড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনকে বিষয়টি জানাই। তখন চেয়ারম্যান বলেছেন, কিছু টাকা না নিলে সোহেলের চলার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে বানাইল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা সোহেল খান বলেন, দু’একজনকে পাসপোর্ট করিয়ে দেই। কিছু খরচপাতি নিই। জন্মনিবন্ধন করে দিলে কেউ খরচপাতি দিলে তা নিই। কারও কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেয়া হয় না।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন বলেন, কয়েকজনের কাছ থেকে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য কেউ কেউ অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকতে পারেন।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




জন্মনিবন্ধন ফি ১৫০০ টাকা!

আপডেট সময় : ০৯:২৮:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

উপজেলা প্রতিনিধি মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

জন্মনিবন্ধন করতে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা সোহেল মোল্লার বিরুদ্ধে।

বিষয়টি স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেনকে জানালে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টা বলেছেন, উদ্যোক্তার কিছু খরচ আছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, ৪৫ দিন বয়সী শিশুদের জন্মনিবন্ধন নিতে কোনো ফি নির্ধারণ করেনি সরকার। ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত ২৫ টাকা এবং ৫ বছর একদিন বয়স থেকে সব বয়সের ব্যক্তির জন্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সরকারের এই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে উদ্যোক্তা সোহেল খান ইচ্ছামতো জন্মনিবন্ধন ফি নিচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জন্মনিবন্ধন করতে আসা লোকজনের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করেন সোহেল খান। পাশাপাশি পাসপোর্ট করে দেয়ার কথা বলে অতিরিক্ত ফি নেন তিনি। বানাইল ইউনিয়নের ভাবখন্ড বাজার ও আশপাশের কয়েকটি বাড়ি, কুড়ালিয়াপাড়া বাজার এবং চামারি এলাকার পল্টন মোড়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য জানা যায়।

বাংগলা গ্রামের শাহরিয়ার আহমেদ পিয়াল বলেন, জন্মনিবন্ধন করতে আমার কাছে ৬০০ টাকা ফি নিয়েছেন উদ্যোক্তা সোহেল খান।

পাটুলী গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ছেলের পাসপোর্ট করাতে ১৯ বছরের পরিবর্তে ২০ বছর দেয়ার কথা বললে আমার কাছে ১০ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেছেন।

ভাবখন্ড গ্রামের রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমার চাচাতো ভাই সবুজ মিয়ার জন্মনিবন্ধন করতে ৫০০ টাকা ফি নিয়েছেন সোহেল খান। এর কমে করতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

বানাইল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান বলেন, অতিরিক্ত টাকা না নেয়ার জন্য সোহেলকে অনেকবার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু কারও কথা শোনে না সোহেল।

ভাবখন্ড গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেনের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেণ, আমার মেয়ের জন্মনিবন্ধন করতে আমার কাছ থেকে ১৫০০ টাকা নিয়েছেন সোহেল।

শৈলজানা গ্রামের রকমান খানের স্ত্রী রেবেকা বেগম বলেন, আমার ছেলে আবিদের জন্মনিবন্ধন করাতে ১১০০ টাকা নিয়েছেন সোহেল খান। চেয়েছিল ১৫০০ টাকা। পরে ১১০০ টাকা রাখেন।

ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আলী আহম্মদ বলেন, যে কারও জন্মনিবন্ধনের জন্য সোহেলকে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এককথায় ভয়ঙ্কর ঘুষখোর সোহেল।

সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা দেওড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনকে বিষয়টি জানাই। তখন চেয়ারম্যান বলেছেন, কিছু টাকা না নিলে সোহেলের চলার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে বানাইল ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা সোহেল খান বলেন, দু’একজনকে পাসপোর্ট করিয়ে দেই। কিছু খরচপাতি নিই। জন্মনিবন্ধন করে দিলে কেউ খরচপাতি দিলে তা নিই। কারও কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেয়া হয় না।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন বলেন, কয়েকজনের কাছ থেকে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য কেউ কেউ অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকতে পারেন।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।