ঢাকা ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




তার কিছুই করতে পারেনা কেউ..

সরকার বিরোধী রাজউক প্রকৌশলী করিমের সম্পদের খনি 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪ ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

# টেণ্ডারবাণিজ্য ও দুর্নীতি করে গড়েছেন বাড়ি-গাড়ি
# নামে- বেনামে শহর ও গ্রামে সম্পদের পাহাড়
# চড়েন ৬০ লাখ টাকার গাড়িতে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
মো: আব্দুল করিম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে ২০১৮ সালে সহকারী প্রকৌশোলী সিভিল ইন্জিনিয়ার হিসাবে চাকরি নেন রাজউকে। বর্তমানে তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত রয়েছে। এখন তিনি কর্মরত রয়েছেন, গাজিপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। চাকরির মাত্র ৭ বছরেই গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য (চুক্তি ভিত্তিক), ঠিকাদারদের থেকে ঘুষ বানিজ্য, ব্যবসায়িক চুক্তি ও অবৈধ ভাবে লেনদেন করে গড়েছেন এই সম্পদ। ঢাকাসহ গ্রামের বাড়ি রংপুরে নিজ এলাকার বাইরে গিয়ে রংপুর নগরীর পাকার মাথা এলাকায় কিনেছেন কয়েক একর জমি।
সম্পদের পাহাড় করিমের:
অনুসন্ধ্যানে জানযায়, শহর ও গ্রামে রয়েছে নামে- বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। যার সবই হয়েছে চাকরির পর। চলেন ৬০লাখ টাকার বিলাশবহুল গাড়িতে। যার নম্বর- রেজিষ্টেশন নং ঢাকা মেট্রো ঘ-১২৩৪০৯। নিজ গাড়িতে রেখেছেন রাজউকের মাস্টারুলের ড্রাইভার। ঢাকার আফতাবনগরে রয়েছে আড়াই ও ৩ কাঠা জমির শেয়ার। রংপুরে নিজ এলাকায় কিনেছেন কয়েক একর জমি। আ: করিমের নিজ এলাকায় রংপুরে প্রচুর সম্পদ ক্রয় করেছে। নারায়ণগঞ্জের মিজিমিজি এলাকায় শ্বশুরের সাথে সম্পদ ক্রয় করে যেখানে ৮ তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লি: সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কিছু অসৎ প্রকৌশলীদের সাথে মিলে কোটি কোটি টাকার প্লট ও ফ্ল্যাটের ব্যবসা রয়েছে তাদের।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বরে চাকরিতে যোগদান করেন আব্দুল করিম। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। গড়েছেন বিপুল পরিমানে সম্পদ। টাকার গরমে কর্মস্থলেও দেখান প্রভাব। সদ্য জেল খেটে এসেও নিয়মিত করছেন অফিস।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অফিসের একজন বলেন, মাত্রকয়েক বছর হলো চাকরিতে এসেছেন। কিন্তু এতো অল্প সময়ে এতো টাকার মালিক কাওকে হতে দেখিনি। রাজউকে আজ চাকরি করি প্রায় ১৬ বছর। এইভাবে টাকার মালিক হওয়া দেখে সবাই আমরা অবাক হই।
রংপুরে তার নিজ এলাকার কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে, নিজ এলাকার গরীব মানুষজনের কাছ থেকে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন দফতরে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আর এ কাজে সহযোগিতা করেন তারই আপন বড় ভাই আ.রহিম।
একজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, আমরা এরকম অসংখ্য লিখিত অভিযোগ রাজউকের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর দাখিল করেছি। কারও থেকে ৯০ হাজার আবার কারও থেকে নিয়েছেন ১লাখ ৭০ হাজার টাকা। এভাবে অনেকের থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। রাজউকে চাকরি দেয়ার নাম করে হাতিয়েছেন এই টাকা।

সরকার বিরোধী কর্মকর্তা করিম:
কর্মজীবনের শুরুতেই আ. করিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার বিরোধী বিভিন্ন অপ-প্রচারে লিপ্ত হয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে। যার প্রমাণ মিলেছে, তার নিজ কর্মস্থল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের ২০১৮ সালের ১৪ আগষ্টের এক অফিস আদেশে। অফিস আদেশ নম্বর-২৫.৩৯.০০০০.০০৯.৩১.০০৭.১৮-২৩৯৮ এ।
রাজউক সূত্রে জানাগেছে, আ: করিম সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল), ১১টি পরিত্যক্ত বাড়ীতে এপার্টমেন্ট নির্মান প্রকল্প, রাজউক তার ফেসবুক আইডি (MD.Abdul Karim) থেকে ৩১ জুলাই-২০১৭, ১১ ও ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১৫ই মে ২০১৮, ৪ আগষ্ট-২০১৮ তারিখে সরকার বিরোধী আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান এবং বিভিন্ন অপ-প্রচার শেয়ার করা হয়। এতে রাজউকের ভাব মূর্তি মারাত্বক ভাবে ক্ষুন্ন হয়। তার এমন আচার আচরন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরী বিধিমালা ২০১৩ এর ৩৭ (খ) বিধি মোতাবেক অসদাচরন ও ৩৭ (ছ) অনুযায়ী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর কার্যে লিপ্ত হওয়ার সামিল।
২০১৮সালের ৮ আগষ্ট এক অফিস আদেশে বলা হয়, উক্ত প্রজ্ঞাপনে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আ. রহমান স্বাক্ষরিক একপত্রে রাজউক (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরী বিধিমালা ২০১৩ এবং ৪৩ (১) বিধি মোতাবেক আ: করিম সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) কে সাময়িক ভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করেন।
অপরএক অফিস আদেশে যার স্মারক নম্বর চিঠিতে নং-২৫,০৯,০০০০০৯,৩১,০০৭,২৮-২৩৯৯ ৮ আগষ্ট ২০১৮ পরিচালক প্রশাসন ড. মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন (যুগ্ম সচিব) রাজউক, ডিআইজি সিটি এসবি মালিবাগ ঢাকাকে আব্দুল করিম এর ফেসবুক আইডি MD.Abdul Karim এর সঠিকতা যাচাই করুন ও তার ব্যক্তিগত পরিচিতির বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করে।
এছাড়াও, অপর এক আদেশে স্মারক নম্বর রাজউক/প্রঃ শাঃ/ বিঃ মাঃ-০৫,২০১৮,১১৬, ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজউক চেয়ারম্যান মো. সাঈদ নুর আলম স্বাক্ষরিত একপত্রে সমস্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্যতা পায়। তারপরেও কারণ দর্শানোর জবাব পর্যালোচনা ও নবীন কর্মকর্তা হিসেবে তাকে একই বিধি মালায় বিধি ৩৮ (১) (ক) এর (অ) ও পরিধি অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্তর আদেশ প্রত্যাহার করে “তিরস্কার” লঘুদন্ড আরোপের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, যে সাময়িক বরখাস্ত কালীন সময়ে বিধিমালার ৪৩ (৪) বিধি অনুযায়ী শুধু মাত্র খোরাকি ভাতা প্রাপ্য হন।
রাজউক সূত্রে আরও জানাগেছে, চাকরি জীবনের শুরু থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০২০সালের পূর্বে দুই বছর শুধু খোরাকি ভাতা পেয়েছেন। ২০২০ এরপর তিনি একজন সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) এ কর্মরত। বর্তমানে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর অধীনে রাজউক এর নিজ বেতনে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
যেখানে বসে করিমের আড্ডা::
করিমের ঘনিষ্ট একটিসূত্রের দেয়া তথ্যমতে, রাজধানীর বিজয়নগর এর হোটেল ৭১ ও ফার্রস হোটেলে রয়েছে প্রকৌশলী সিন্ডিকেটের নির্দিষ্ট রুম। যেখানে বসে উক্ত সিন্ডিকেটের মাদক ও জুয়াসহ নানা রকমের অবৈধ কর্মকান্ডের আসর। এমন একাধিক তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে সংরক্ষিত রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর সি, আর, মামলা নম্বর- ২৯০৬/ ২০২৩ দন্ডবিধি ধারা ৪০৬/৪২০/৫০৬ পেনাল কোড এর ৬০ লাখ টাকা আত্নসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সি, আর,আমলী আদালত গুলশান থানা, ঢাকা। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের গুরুত্বর, এমতাবস্থায় সার্বিক বিবেচনায় আদালত আসামীর জামিন না-মঞ্জুর করে। আসামিকে সি/ ডাবলু মূলে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
মামলা সূত্রে আরও জানাগেছে, আদালত মামলাটির গুরুত্ব বিবেচনায় তদন্তের জন্য ডিসি ডিবি গুলশান বরাবরে প্রেরণ করে। ডিসি ডিবি গুলশান কার্যালয়ের স্মারক নম্বর ( গো:গুল:বি:) (সি আর ২০২৩) ৪০৪। ২০২৩ সালের ২৪ আগষ্ট মুলে তদন্তভার ক্যন্টমেন্ট জোনাল টিম গুলশান গোয়েন্দা বিভাগকে দেয়া হয়। মামলাটির তদন্ত করেন পরিদর্শক (নিরস্ত্র) কাজী শরিফুল ইসলাম।
মামলার তদন্তের ফলাফল-
তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা চেয়ারম্যান রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রতিবেদন প্রদান করে। সেই প্রতিবেদনে দেখা য়ায়, বিবাদী ঢাকা সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. করিম বাদীর কাছ থেকে ২০২১ সালের ২১ মার্চ ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা, ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা, ২০২১ সালের ২৫ মে নগদে ২০ লাখ টাকা ও ২০২০ সালের ২৭ জুলাই নগদে৩০লাখ টাকা সর্বমোট-৬০ লাখ টাকা বিভিন্ন অজুহাতে ধার হিসেবে গ্রহন করার প্রমান মিলেছে বলে জানান।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (নিরস্ত্র) কাজী শরিফুল ইসলাম বলেন, …।
মামলায় যেভাবে পেলেন জামিন:
উক্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষ্য প্রমাণ আদালত আ: করিমের মামলায় জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করে এবং চলতি মাসের ১ জানুয়ারি সি,এম,এম আলাদতে স্বাক্ষরিত বিশেষ আবেদনের প্রেক্ষিতে সার্বিক বিবেচনায় আপষের শর্তে ১ হাজার টাকা বন্ডে বিজ্ঞ কৌশলী এবং একজন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় আসামীর জামিন আগাম ধার্য্য করে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মো. সাদ্দাম হোসেন মেট্রোপলিট্রন ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুর করেন।
বাংলাদেশ সরকারের জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গেজেট অতিরিক্ত নভেম্বর ১৪, ২০১৮, ৩৯ নম্বর এ (২) উপধারা কোন কর্মচারী দেনার দায়ে কারাগারে আটক থাকিলে অথবা কোন ফৌজদারী মামলায় গ্রেফতার হলে বা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র গৃহিত হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উপরক্ত আটক গ্রেফতার বা অভিযোগপত্র গ্রহণের দিন হতে তাহাকে সামরিক বরখাস্ত করতে পারবে। কিন্তু আ: করিম, বর্তমানে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্বে) বহাল তবিয়তে আছে।
মামলার বাদি দিবাকর চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, …
মো. আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন এর অভিযোগ ছাড়াও গ্রামের সহজ সরল মানুষের নিকট থেকে রাজউকে চাকরি দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। উক্ত অভিযোগের লিখিত কপি রাজউক কর্তৃপক্ষের নিকট জমা পড়েছে। যার কপি গণমাধ্যমের ও হাতে আছে।
অনুসন্ধ্যানে জানাগেছে, আ. করিমের ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর ১০-১৫১-৫৬১৬১। উক্ত একাউন্ট ছাড়াও তার আরো নামে বেনামে অসংখ্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে যেখানে তার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যাবে। তার বন্ধু পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেল এর ঠিকাদারী লাইসেন্স এর ব্যাংক একাউন্টে জমি বিক্রয়ের তিন কোটি টাকা জমা করা হয়েছে। এছাড়াও ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে তাদের সাড়ে ৭ কাঠার উপর আফতাব নগরে বহুতল ভবন এর কাজ নির্মানাধীন রয়েছে।
এমন বিস্তর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল করিম এর মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

চলবে….

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন




তার কিছুই করতে পারেনা কেউ..

সরকার বিরোধী রাজউক প্রকৌশলী করিমের সম্পদের খনি 

আপডেট সময় : ০৮:৪০:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

# টেণ্ডারবাণিজ্য ও দুর্নীতি করে গড়েছেন বাড়ি-গাড়ি
# নামে- বেনামে শহর ও গ্রামে সম্পদের পাহাড়
# চড়েন ৬০ লাখ টাকার গাড়িতে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
মো: আব্দুল করিম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে ২০১৮ সালে সহকারী প্রকৌশোলী সিভিল ইন্জিনিয়ার হিসাবে চাকরি নেন রাজউকে। বর্তমানে তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত রয়েছে। এখন তিনি কর্মরত রয়েছেন, গাজিপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। চাকরির মাত্র ৭ বছরেই গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য (চুক্তি ভিত্তিক), ঠিকাদারদের থেকে ঘুষ বানিজ্য, ব্যবসায়িক চুক্তি ও অবৈধ ভাবে লেনদেন করে গড়েছেন এই সম্পদ। ঢাকাসহ গ্রামের বাড়ি রংপুরে নিজ এলাকার বাইরে গিয়ে রংপুর নগরীর পাকার মাথা এলাকায় কিনেছেন কয়েক একর জমি।
সম্পদের পাহাড় করিমের:
অনুসন্ধ্যানে জানযায়, শহর ও গ্রামে রয়েছে নামে- বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। যার সবই হয়েছে চাকরির পর। চলেন ৬০লাখ টাকার বিলাশবহুল গাড়িতে। যার নম্বর- রেজিষ্টেশন নং ঢাকা মেট্রো ঘ-১২৩৪০৯। নিজ গাড়িতে রেখেছেন রাজউকের মাস্টারুলের ড্রাইভার। ঢাকার আফতাবনগরে রয়েছে আড়াই ও ৩ কাঠা জমির শেয়ার। রংপুরে নিজ এলাকায় কিনেছেন কয়েক একর জমি। আ: করিমের নিজ এলাকায় রংপুরে প্রচুর সম্পদ ক্রয় করেছে। নারায়ণগঞ্জের মিজিমিজি এলাকায় শ্বশুরের সাথে সম্পদ ক্রয় করে যেখানে ৮ তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লি: সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কিছু অসৎ প্রকৌশলীদের সাথে মিলে কোটি কোটি টাকার প্লট ও ফ্ল্যাটের ব্যবসা রয়েছে তাদের।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৫ ডিসেম্বরে চাকরিতে যোগদান করেন আব্দুল করিম। এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। হয়েছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। গড়েছেন বিপুল পরিমানে সম্পদ। টাকার গরমে কর্মস্থলেও দেখান প্রভাব। সদ্য জেল খেটে এসেও নিয়মিত করছেন অফিস।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার অফিসের একজন বলেন, মাত্রকয়েক বছর হলো চাকরিতে এসেছেন। কিন্তু এতো অল্প সময়ে এতো টাকার মালিক কাওকে হতে দেখিনি। রাজউকে আজ চাকরি করি প্রায় ১৬ বছর। এইভাবে টাকার মালিক হওয়া দেখে সবাই আমরা অবাক হই।
রংপুরে তার নিজ এলাকার কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানাগেছে, নিজ এলাকার গরীব মানুষজনের কাছ থেকে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন দফতরে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। আর এ কাজে সহযোগিতা করেন তারই আপন বড় ভাই আ.রহিম।
একজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, আমরা এরকম অসংখ্য লিখিত অভিযোগ রাজউকের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর দাখিল করেছি। কারও থেকে ৯০ হাজার আবার কারও থেকে নিয়েছেন ১লাখ ৭০ হাজার টাকা। এভাবে অনেকের থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। রাজউকে চাকরি দেয়ার নাম করে হাতিয়েছেন এই টাকা।

সরকার বিরোধী কর্মকর্তা করিম:
কর্মজীবনের শুরুতেই আ. করিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার বিরোধী বিভিন্ন অপ-প্রচারে লিপ্ত হয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে। যার প্রমাণ মিলেছে, তার নিজ কর্মস্থল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের ২০১৮ সালের ১৪ আগষ্টের এক অফিস আদেশে। অফিস আদেশ নম্বর-২৫.৩৯.০০০০.০০৯.৩১.০০৭.১৮-২৩৯৮ এ।
রাজউক সূত্রে জানাগেছে, আ: করিম সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল), ১১টি পরিত্যক্ত বাড়ীতে এপার্টমেন্ট নির্মান প্রকল্প, রাজউক তার ফেসবুক আইডি (MD.Abdul Karim) থেকে ৩১ জুলাই-২০১৭, ১১ ও ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১৫ই মে ২০১৮, ৪ আগষ্ট-২০১৮ তারিখে সরকার বিরোধী আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান এবং বিভিন্ন অপ-প্রচার শেয়ার করা হয়। এতে রাজউকের ভাব মূর্তি মারাত্বক ভাবে ক্ষুন্ন হয়। তার এমন আচার আচরন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরী বিধিমালা ২০১৩ এর ৩৭ (খ) বিধি মোতাবেক অসদাচরন ও ৩৭ (ছ) অনুযায়ী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর কার্যে লিপ্ত হওয়ার সামিল।
২০১৮সালের ৮ আগষ্ট এক অফিস আদেশে বলা হয়, উক্ত প্রজ্ঞাপনে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আ. রহমান স্বাক্ষরিক একপত্রে রাজউক (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরী বিধিমালা ২০১৩ এবং ৪৩ (১) বিধি মোতাবেক আ: করিম সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) কে সাময়িক ভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করেন।
অপরএক অফিস আদেশে যার স্মারক নম্বর চিঠিতে নং-২৫,০৯,০০০০০৯,৩১,০০৭,২৮-২৩৯৯ ৮ আগষ্ট ২০১৮ পরিচালক প্রশাসন ড. মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন (যুগ্ম সচিব) রাজউক, ডিআইজি সিটি এসবি মালিবাগ ঢাকাকে আব্দুল করিম এর ফেসবুক আইডি MD.Abdul Karim এর সঠিকতা যাচাই করুন ও তার ব্যক্তিগত পরিচিতির বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করে।
এছাড়াও, অপর এক আদেশে স্মারক নম্বর রাজউক/প্রঃ শাঃ/ বিঃ মাঃ-০৫,২০১৮,১১৬, ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি রাজউক চেয়ারম্যান মো. সাঈদ নুর আলম স্বাক্ষরিত একপত্রে সমস্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্যতা পায়। তারপরেও কারণ দর্শানোর জবাব পর্যালোচনা ও নবীন কর্মকর্তা হিসেবে তাকে একই বিধি মালায় বিধি ৩৮ (১) (ক) এর (অ) ও পরিধি অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্তর আদেশ প্রত্যাহার করে “তিরস্কার” লঘুদন্ড আরোপের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, যে সাময়িক বরখাস্ত কালীন সময়ে বিধিমালার ৪৩ (৪) বিধি অনুযায়ী শুধু মাত্র খোরাকি ভাতা প্রাপ্য হন।
রাজউক সূত্রে আরও জানাগেছে, চাকরি জীবনের শুরু থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০২০সালের পূর্বে দুই বছর শুধু খোরাকি ভাতা পেয়েছেন। ২০২০ এরপর তিনি একজন সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) এ কর্মরত। বর্তমানে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর অধীনে রাজউক এর নিজ বেতনে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
যেখানে বসে করিমের আড্ডা::
করিমের ঘনিষ্ট একটিসূত্রের দেয়া তথ্যমতে, রাজধানীর বিজয়নগর এর হোটেল ৭১ ও ফার্রস হোটেলে রয়েছে প্রকৌশলী সিন্ডিকেটের নির্দিষ্ট রুম। যেখানে বসে উক্ত সিন্ডিকেটের মাদক ও জুয়াসহ নানা রকমের অবৈধ কর্মকান্ডের আসর। এমন একাধিক তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে সংরক্ষিত রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানাগেছে, ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর সি, আর, মামলা নম্বর- ২৯০৬/ ২০২৩ দন্ডবিধি ধারা ৪০৬/৪২০/৫০৬ পেনাল কোড এর ৬০ লাখ টাকা আত্নসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সি, আর,আমলী আদালত গুলশান থানা, ঢাকা। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের গুরুত্বর, এমতাবস্থায় সার্বিক বিবেচনায় আদালত আসামীর জামিন না-মঞ্জুর করে। আসামিকে সি/ ডাবলু মূলে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
মামলা সূত্রে আরও জানাগেছে, আদালত মামলাটির গুরুত্ব বিবেচনায় তদন্তের জন্য ডিসি ডিবি গুলশান বরাবরে প্রেরণ করে। ডিসি ডিবি গুলশান কার্যালয়ের স্মারক নম্বর ( গো:গুল:বি:) (সি আর ২০২৩) ৪০৪। ২০২৩ সালের ২৪ আগষ্ট মুলে তদন্তভার ক্যন্টমেন্ট জোনাল টিম গুলশান গোয়েন্দা বিভাগকে দেয়া হয়। মামলাটির তদন্ত করেন পরিদর্শক (নিরস্ত্র) কাজী শরিফুল ইসলাম।
মামলার তদন্তের ফলাফল-
তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা চেয়ারম্যান রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রতিবেদন প্রদান করে। সেই প্রতিবেদনে দেখা য়ায়, বিবাদী ঢাকা সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. করিম বাদীর কাছ থেকে ২০২১ সালের ২১ মার্চ ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা, ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল ব্যাংকের মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা, ২০২১ সালের ২৫ মে নগদে ২০ লাখ টাকা ও ২০২০ সালের ২৭ জুলাই নগদে৩০লাখ টাকা সর্বমোট-৬০ লাখ টাকা বিভিন্ন অজুহাতে ধার হিসেবে গ্রহন করার প্রমান মিলেছে বলে জানান।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (নিরস্ত্র) কাজী শরিফুল ইসলাম বলেন, …।
মামলায় যেভাবে পেলেন জামিন:
উক্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষ্য প্রমাণ আদালত আ: করিমের মামলায় জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করে এবং চলতি মাসের ১ জানুয়ারি সি,এম,এম আলাদতে স্বাক্ষরিত বিশেষ আবেদনের প্রেক্ষিতে সার্বিক বিবেচনায় আপষের শর্তে ১ হাজার টাকা বন্ডে বিজ্ঞ কৌশলী এবং একজন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় আসামীর জামিন আগাম ধার্য্য করে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মো. সাদ্দাম হোসেন মেট্রোপলিট্রন ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুর করেন।
বাংলাদেশ সরকারের জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গেজেট অতিরিক্ত নভেম্বর ১৪, ২০১৮, ৩৯ নম্বর এ (২) উপধারা কোন কর্মচারী দেনার দায়ে কারাগারে আটক থাকিলে অথবা কোন ফৌজদারী মামলায় গ্রেফতার হলে বা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র গৃহিত হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উপরক্ত আটক গ্রেফতার বা অভিযোগপত্র গ্রহণের দিন হতে তাহাকে সামরিক বরখাস্ত করতে পারবে। কিন্তু আ: করিম, বর্তমানে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্বে) বহাল তবিয়তে আছে।
মামলার বাদি দিবাকর চন্দ্র রায় জানিয়েছেন, …
মো. আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন এর অভিযোগ ছাড়াও গ্রামের সহজ সরল মানুষের নিকট থেকে রাজউকে চাকরি দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। উক্ত অভিযোগের লিখিত কপি রাজউক কর্তৃপক্ষের নিকট জমা পড়েছে। যার কপি গণমাধ্যমের ও হাতে আছে।
অনুসন্ধ্যানে জানাগেছে, আ. করিমের ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর ১০-১৫১-৫৬১৬১। উক্ত একাউন্ট ছাড়াও তার আরো নামে বেনামে অসংখ্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে যেখানে তার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যাবে। তার বন্ধু পাওয়ার গ্রীড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেল এর ঠিকাদারী লাইসেন্স এর ব্যাংক একাউন্টে জমি বিক্রয়ের তিন কোটি টাকা জমা করা হয়েছে। এছাড়াও ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে তাদের সাড়ে ৭ কাঠার উপর আফতাব নগরে বহুতল ভবন এর কাজ নির্মানাধীন রয়েছে।
এমন বিস্তর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল করিম এর মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

চলবে….