ঢাকা ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ




বরিশালে মেম্বরের বিরুদ্দে জেলেদের বরাদ্ধকৃত চাল বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ ! 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৩৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০২০ ৭৪ বার পড়া হয়েছে

বরিশাল ব্যুরো || বরিশাল সদর উপজেলার ১০ নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নে জেলেদের জন্য ভিজিএফ চাল বিতরণে ৪০ কেজি নির্ধারিত বরাদ্দের বিপরীতে জনপ্রতি প্রদান করা হচ্ছে ৩০-৩৫ কেজি করে। আবার সেই চাল প্রদান করতে অসহায় জেলেদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১শ’ টাকা করে জনপ্রতি। এই অনিয়ম চক্রের সদস্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ১নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ফোরকান হোসেন।
চাল বিতরণে এমন অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয়দের দেয়া অভিযোগ সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে দেখা যায় তার বাস্তব চিত্র। পাশাপাশি দূর্নীতির কার্যপরিচালনায় অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার ও পরিষদের সচিব এর দেয়া বক্তব্যে স্থানীয় চেয়ারম্যান এ কে এম আজিজ হাওলাদারের সক্রিয় যোগসাজেশ ও সম্পৃক্ততার তথ্য বেড়িয়ে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চন্দ্রমোহন ইউনিয়নে ১২শ’ জন জেলে তালিকা থাকলেও ভিজিএফ কার্ডধারী ৬৮০ জন জেলের বিপরীতে মাসে ৪০ কেজি হিসেবে ফ্রেব্রুয়ারি ও মার্চে মোট ৮০ কেজি করে ১০৮৮ বস্তায় ৫৪ টন ৪শ” কেজি বরাদ্দকৃত চাল বরিশাল খাদ্য গুদাম থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়।
সরাসরি চেয়ারম্যান কর্তৃক বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার নিয়ম থাকেলেও চাল ছাড়িয়ে আনা ও বিতরণের দায়িত্ব অর্পিত ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফোরকান হোসেনে উপর। যার পরিপেক্ষিতে মেম্বারের ম্যানেজ পক্রিয়ায় নির্ধারিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অসহায় কর্মহীন জেলেরা। জানা গেছে ইতিপূর্বে চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে এবার অন্য কৌশল অবলম্বন করেন তিনি।

এদিকে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, ইউপি মেম্বার তাদের জন্য নির্ধারিত নিয়মে বরাদ্দকৃত চাল প্রদান করছেন না। প্রভাব খাটিয়ে জনপ্রতি ৩০-৩৫ কেজি করে চাল নিতে বাধ্য করছেন মেম্বার ফোরকান। শুধু তাই নয় এই চাল নিতে হলে দিতে হচ্ছে মাথাপিছু ১’শ টাকা করে উৎকোচ। এই জনপ্রতি ১’শ টাকা নেয়া হচ্ছেএকজন গ্রাম চৌকিদার এর হাত থেকে। আমরা মুখ খুললে আমাদের কার্ড থাকবেনা। (ভিডিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত)

এ বিষয়ে জেলেদের অভিযোগ নিয়ে অভিযুক্ত ইউপি মেম্বারের সাথে আলাপকালে অকপটে তিনি এমন অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন – ‘ যা যেমনে দরকার সেভাবেই হইছে ‘ এসময় জনপ্রতি সরকারি বরাদ্দের নিয়মের বিপরীতে চাল কম দেয়া এবং ১’শ টাকা করে উত্তোলনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বিভিন্ন খাতের হিসাব দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দোষারোপ করে বলেন- “কম না দিয়ে উপায় আছে বলেন। গোড়া থেকেই (খাদ্য গুদাম) জোড় করে কম ধরিয়ে দেওয়া হয়”। চাল ছাড়ানো হতে শুরু করে আনার খরচ, লেবার খরচ, আনুসাঙ্গিক খরচ সহ তার ব্যাক্তিগত খরচের বরাত দিয়ে তিনি জানান- এইগুলা মেকাপ করতেই এই টাকা জেলেদের কাছ থেকে নেওয়া হয়।”

পরে অবশ্য প্রথম পর্যায়ে পরিষদের সচিব সুবত চন্দ্র দাসের দেয়া এক বক্তব্যে জানা যায় উল্লেখিত খাতের খরচ নাকি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বহন করা হয়। এসময় পরিষদ কর্তৃক এমন খরচের সুনির্দিষ্ট হিসাবের তথ্য দেখাতে না পেরে পরবর্র্তীতে সচিব বলেন- সব চেয়ারম্যান স্যার জানে, খরচ তিনিই করেন।

এদিকে, তালিকাভূক্ত কার্ডধারী ৬৮০ জন জেলেদের জন্য বরাদ্ধকৃত চাল বিতরণে আরো অনিয়মের তথ্য বের হয়ে আসে অনুসন্ধানকালে। চাল গ্রহণে জেলেদের নাম ঠিকানা সম্বলিত টিপসহ ফরমে ৬৮০ জনের তালিকা থাকলেও গত ফেব্রুয়ারীতে ২৮৩ জনকে চাল প্রদান করার হিসেব দেখা যায়।বাকি জেলেদের চাল কোথায় আছে এমন প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য পরিষদের সচিব ও অভিযুক্ত মেম্বার টাকার প্রলোভন দেখায় সাংবাদিকদের।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব ও তদারকির বিষয়ে গাফলতির চিত্র দেখা গেছে স্থানীয় চেয়ারম্যানের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বরিশালে মেম্বরের বিরুদ্দে জেলেদের বরাদ্ধকৃত চাল বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ ! 

আপডেট সময় : ১০:৩৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০২০

বরিশাল ব্যুরো || বরিশাল সদর উপজেলার ১০ নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নে জেলেদের জন্য ভিজিএফ চাল বিতরণে ৪০ কেজি নির্ধারিত বরাদ্দের বিপরীতে জনপ্রতি প্রদান করা হচ্ছে ৩০-৩৫ কেজি করে। আবার সেই চাল প্রদান করতে অসহায় জেলেদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১শ’ টাকা করে জনপ্রতি। এই অনিয়ম চক্রের সদস্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ১নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ফোরকান হোসেন।
চাল বিতরণে এমন অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয়দের দেয়া অভিযোগ সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে দেখা যায় তার বাস্তব চিত্র। পাশাপাশি দূর্নীতির কার্যপরিচালনায় অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার ও পরিষদের সচিব এর দেয়া বক্তব্যে স্থানীয় চেয়ারম্যান এ কে এম আজিজ হাওলাদারের সক্রিয় যোগসাজেশ ও সম্পৃক্ততার তথ্য বেড়িয়ে আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চন্দ্রমোহন ইউনিয়নে ১২শ’ জন জেলে তালিকা থাকলেও ভিজিএফ কার্ডধারী ৬৮০ জন জেলের বিপরীতে মাসে ৪০ কেজি হিসেবে ফ্রেব্রুয়ারি ও মার্চে মোট ৮০ কেজি করে ১০৮৮ বস্তায় ৫৪ টন ৪শ” কেজি বরাদ্দকৃত চাল বরিশাল খাদ্য গুদাম থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়।
সরাসরি চেয়ারম্যান কর্তৃক বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার নিয়ম থাকেলেও চাল ছাড়িয়ে আনা ও বিতরণের দায়িত্ব অর্পিত ইউনিয়নে ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফোরকান হোসেনে উপর। যার পরিপেক্ষিতে মেম্বারের ম্যানেজ পক্রিয়ায় নির্ধারিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অসহায় কর্মহীন জেলেরা। জানা গেছে ইতিপূর্বে চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে এবার অন্য কৌশল অবলম্বন করেন তিনি।

এদিকে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, ইউপি মেম্বার তাদের জন্য নির্ধারিত নিয়মে বরাদ্দকৃত চাল প্রদান করছেন না। প্রভাব খাটিয়ে জনপ্রতি ৩০-৩৫ কেজি করে চাল নিতে বাধ্য করছেন মেম্বার ফোরকান। শুধু তাই নয় এই চাল নিতে হলে দিতে হচ্ছে মাথাপিছু ১’শ টাকা করে উৎকোচ। এই জনপ্রতি ১’শ টাকা নেয়া হচ্ছেএকজন গ্রাম চৌকিদার এর হাত থেকে। আমরা মুখ খুললে আমাদের কার্ড থাকবেনা। (ভিডিও প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত)

এ বিষয়ে জেলেদের অভিযোগ নিয়ে অভিযুক্ত ইউপি মেম্বারের সাথে আলাপকালে অকপটে তিনি এমন অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন – ‘ যা যেমনে দরকার সেভাবেই হইছে ‘ এসময় জনপ্রতি সরকারি বরাদ্দের নিয়মের বিপরীতে চাল কম দেয়া এবং ১’শ টাকা করে উত্তোলনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বিভিন্ন খাতের হিসাব দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দোষারোপ করে বলেন- “কম না দিয়ে উপায় আছে বলেন। গোড়া থেকেই (খাদ্য গুদাম) জোড় করে কম ধরিয়ে দেওয়া হয়”। চাল ছাড়ানো হতে শুরু করে আনার খরচ, লেবার খরচ, আনুসাঙ্গিক খরচ সহ তার ব্যাক্তিগত খরচের বরাত দিয়ে তিনি জানান- এইগুলা মেকাপ করতেই এই টাকা জেলেদের কাছ থেকে নেওয়া হয়।”

পরে অবশ্য প্রথম পর্যায়ে পরিষদের সচিব সুবত চন্দ্র দাসের দেয়া এক বক্তব্যে জানা যায় উল্লেখিত খাতের খরচ নাকি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বহন করা হয়। এসময় পরিষদ কর্তৃক এমন খরচের সুনির্দিষ্ট হিসাবের তথ্য দেখাতে না পেরে পরবর্র্তীতে সচিব বলেন- সব চেয়ারম্যান স্যার জানে, খরচ তিনিই করেন।

এদিকে, তালিকাভূক্ত কার্ডধারী ৬৮০ জন জেলেদের জন্য বরাদ্ধকৃত চাল বিতরণে আরো অনিয়মের তথ্য বের হয়ে আসে অনুসন্ধানকালে। চাল গ্রহণে জেলেদের নাম ঠিকানা সম্বলিত টিপসহ ফরমে ৬৮০ জনের তালিকা থাকলেও গত ফেব্রুয়ারীতে ২৮৩ জনকে চাল প্রদান করার হিসেব দেখা যায়।বাকি জেলেদের চাল কোথায় আছে এমন প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য পরিষদের সচিব ও অভিযুক্ত মেম্বার টাকার প্রলোভন দেখায় সাংবাদিকদের।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব ও তদারকির বিষয়ে গাফলতির চিত্র দেখা গেছে স্থানীয় চেয়ারম্যানের।