ঢাকা ০৭:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আগস্ট বিপ্লবের অদৃশ্য শক্তি তারেক রহমান – মাহমুদ হাসান Logo ছাত্র জনতাকে ১০ মিনিটে ক্লিয়ার করার ঘোষণা দেয়া হামিদ চাকুরীতে বহাল Logo ছাত্রলীগ নেত্রী যুবলীগ নেতার প্রতারণার শিকার চিকিৎসক সালেহউদ্দিন: বিচার ও প্রতিকার দাবি Logo দেশসেরা সহকারী জজ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনে সংবর্ধনা Logo মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি বিএমজিটিএ’র Logo এনবিআরে আরেক মতিউর: কর কমিশনার কবিরের সম্পদের পাহাড় Logo চাকুরীর নামে ভুয়া মেজরের কোটি টাকার প্রতারণা: মিথ্যে মামলায় ভুক্তভোগীদের হয়রানি Logo পটুয়াখালী এলএ শাখায় ঘুষ ছাড়া সেবা পাচ্ছেনা ইপিজেড ও পায়রা বন্দরের ক্ষতিগ্রস্তরা Logo খুলনায় বন্ধ পাটকল চালু ও বকেয়া বেতনের দাবিতে আমজনতার দলের বিক্ষোভ Logo এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী রশীদ’র বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ




ডিআইজি মিজানের সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫২:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০১৯ ১০২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক;
পুলিশের ‘বিতর্কিত’ উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের স্থাবর ও অস্থাবর সব সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। অসাধু উপায়ে অর্জিত ডিআইজি মিজানের সম্পদ বেহাত হওয়ার আশঙ্কায় এ আদেশ দেওয়া হয়।

বুধবার (১৯ জুন) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ দুদকের আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

ডিআইজি মিজানের সম্পদ ক্রোক করতে দুদকের আবেদনে বলা হয়, পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে ডিআইজি মিজানের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক। তার সম্পদের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকেই ডিআইজি মিজান তার বৈধ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বিক্রি ও স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে অসদ উপায়ে অর্জিত তার এসব সম্পদ বা সম্পত্তির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তা বেহাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে অবস্থায় তার এসব সম্পদ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করাও সম্ভব হবে না। সে কারণে তার সম্পদ ক্রোক করার আবেদন করা হচ্ছে।

দুদকের এ আবেদন আমলে নিয়ে আদালত দুদকের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবীর বক্তব্য শোনেন এবং সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করেন। পরে আদালত আদেশে বলেন, দরখাস্তে উল্লেখ করা ডিআইজি মিজানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এ মুহূর্তে ক্রোক করা না হলে সেগুলো হস্তান্তর হওয়ার আশঙ্কা আছে। ফলে ডিআইজি মিজানের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হলো।

ডিআইজি মিজানের ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- বেইলি রিটজ ভবনের চতুর্থ তলায় ৫৫ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট, কার পার্কিং স্পেসসহ ৫৫ দশমিক ৫১ অযুতাংশ জমি, কাকরাইলে ২ কোটি ২০ লাখ টাকার একটি বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট, দোকান ও জমি। এসব সম্পত্তির মূল্য মোট ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৬০ টাকা। এছাড়া ধানমন্ডি সিটি ব্যাংকের হিসাবে রয়েছে ১০ লাখ টাকা।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, গতকাল (১৯ জুন) আদালতে এ আবেদনের শুনানি হয়েছে। আমরা আজ এ বিষয়ে আদালতের আদেশ হাতে পেয়েছি। আদালত ডিআইজি মিজানের সব সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি তার ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ক্রোক করা সম্পত্তি যেন হস্তান্তর, বিক্রি বা মালিকানা স্বত্ব বদল করা না যায়, সে জন্য ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রারের নিবন্ধন পরিদফতরের মহাপরিদর্শক, তেজগাঁও শিল্প এলাকার ঢাকা রেজিস্টার কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্টার এবং ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, গুলশান, সাভার ও উত্তরার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশে বলা হয়েছে, ডিআইজি মিজানের অবরুদ্ধ করা অ্যাকাউন্টে তার নামে অর্থ জমা করা যাবে, কিন্তু কোনো অবস্থায়ই অর্থ তোলা যাবে না। সিটি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার ম্যানেজার এ আদেশ প্রতিপালন করবেন।

সম্প্রতি ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছিল দুদক। এজন্য দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু এই তদন্ত করতে গিয়ে এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ডিআইজি মিজান। এনামুল বাছিরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন তিনি। অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দুদক।

পরে কমিশনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও তথ্য পাচারের অভিযোগে এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুদক। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে কমিটি করেছে পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ডিআইজি মিজানের সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

আপডেট সময় : ০৯:৫২:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জুন ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক;
পুলিশের ‘বিতর্কিত’ উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের স্থাবর ও অস্থাবর সব সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। অসাধু উপায়ে অর্জিত ডিআইজি মিজানের সম্পদ বেহাত হওয়ার আশঙ্কায় এ আদেশ দেওয়া হয়।

বুধবার (১৯ জুন) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ দুদকের আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

ডিআইজি মিজানের সম্পদ ক্রোক করতে দুদকের আবেদনে বলা হয়, পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে ডিআইজি মিজানের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুদক। তার সম্পদের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকেই ডিআইজি মিজান তার বৈধ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বিক্রি ও স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে অসদ উপায়ে অর্জিত তার এসব সম্পদ বা সম্পত্তির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তা বেহাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে অবস্থায় তার এসব সম্পদ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করাও সম্ভব হবে না। সে কারণে তার সম্পদ ক্রোক করার আবেদন করা হচ্ছে।

দুদকের এ আবেদন আমলে নিয়ে আদালত দুদকের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবীর বক্তব্য শোনেন এবং সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করেন। পরে আদালত আদেশে বলেন, দরখাস্তে উল্লেখ করা ডিআইজি মিজানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি এ মুহূর্তে ক্রোক করা না হলে সেগুলো হস্তান্তর হওয়ার আশঙ্কা আছে। ফলে ডিআইজি মিজানের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হলো।

ডিআইজি মিজানের ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে- বেইলি রিটজ ভবনের চতুর্থ তলায় ৫৫ লাখ টাকার একটি ফ্ল্যাট, কার পার্কিং স্পেসসহ ৫৫ দশমিক ৫১ অযুতাংশ জমি, কাকরাইলে ২ কোটি ২০ লাখ টাকার একটি বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট, দোকান ও জমি। এসব সম্পত্তির মূল্য মোট ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭৪ হাজার ৪৬০ টাকা। এছাড়া ধানমন্ডি সিটি ব্যাংকের হিসাবে রয়েছে ১০ লাখ টাকা।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, গতকাল (১৯ জুন) আদালতে এ আবেদনের শুনানি হয়েছে। আমরা আজ এ বিষয়ে আদালতের আদেশ হাতে পেয়েছি। আদালত ডিআইজি মিজানের সব সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি তার ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ক্রোক করা সম্পত্তি যেন হস্তান্তর, বিক্রি বা মালিকানা স্বত্ব বদল করা না যায়, সে জন্য ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রারের নিবন্ধন পরিদফতরের মহাপরিদর্শক, তেজগাঁও শিল্প এলাকার ঢাকা রেজিস্টার কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্টার এবং ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, গুলশান, সাভার ও উত্তরার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশে বলা হয়েছে, ডিআইজি মিজানের অবরুদ্ধ করা অ্যাকাউন্টে তার নামে অর্থ জমা করা যাবে, কিন্তু কোনো অবস্থায়ই অর্থ তোলা যাবে না। সিটি ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার ম্যানেজার এ আদেশ প্রতিপালন করবেন।

সম্প্রতি ডিআইজি মিজানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করেছিল দুদক। এজন্য দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু এই তদন্ত করতে গিয়ে এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ডিআইজি মিজান। এনামুল বাছিরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন তিনি। অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দুদক।

পরে কমিশনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও তথ্য পাচারের অভিযোগে এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুদক। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে কমিটি করেছে পুলিশ।