ঢাকা ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




দুদকে অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রদল ক্যাডার গণপুর্তের প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে 

নিজস্ব প্রতিবেদক;
  • আপডেট সময় : ০৭:০০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩ ২৬৭ বার পড়া হয়েছে

গণপূর্তির ফিফটি পার্সেন্ট কমিশন খাওয়ার প্রকৌশলী হিসেবে পরিচিত। ছাত্র জীবনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের তুখোড় নেতা হিসেবে পরিচিত, বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমের অন্যতম বিশ্বস্ত ভাজন এবং বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে দুদকে অভিযুক্ত গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহাম্মদ। হাজারো দুর্নীতি ও অপরাধের বোঝা মাথায় নিয়েই প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন।

বিতর্কিত এই প্রকৌশলীর সাবেক কর্মস্থল সংসদ ভবনে থাকাকালীন সময়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন। সেই সময়ে সংসদীয় কমিটির তদন্তে অভিযোগের সত্যতাও মেলে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম) সিন্ডিকেটের অন্যতম একজন সহযোগী হিসেবেও পরিচিতি আছে তার।

এমন হাজারো অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগের পাহাড় নিয়েও মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের সমঝোতায় তিনি প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌঁড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহমেদের বিরূদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের যত অভিযোগ:

১. অষ্টম জাতীয় সংসদে অনিয়ম, দুর্নীতি তদন্তে অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়াকে (ডেপুটি স্পিকার) প্রধান করে সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল। ওই কমিটি গণপূর্ত বিভাগের তিন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল ওই কমিটি। কিন্তু ওই সুপারিশ অনুযায়ী কোনও ব্যবস্থা নেয়নি গণপূর্ত অধিদফতর। তদন্ত কমিটির সুপারিশে সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার ও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট আখতার হামিদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলা হলেও তিন প্রকৌশলী ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। এই তিন প্রকৌশলীর একজন হলেন বর্তমানে গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহাম্মদ। ২০০২-২০০৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদ ভবনে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
২. তিন দফা পদোন্নতি পাওয়ার পর মোসলেহউদ্দিনকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হতে সহায়তা করেন কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীম।
৩. তিন কোটি টাকা খরচ করে গত অক্টোবরে চট্টগ্রাম গণপূর্ত জোন থেকে ঢাকা গণপূর্ত জোনে বদলি হয়ে আসেন মোসলেহউদ্দিন।
৪.গণপূর্ত অধিদফতরে কমিশনভোগী মোসলেহউদ্দিন ‘ফিফটিন পার্সেন্ট’ নামে পরিচিত।
৫. ঘুষ ও দুর্নীতির টাকায় অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি করেছেন তিনি।
৬. ঢাকা ও কুমিল্লায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে তার।

অতিরিক্ত প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিনের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সহ মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলী হবার দৌড়ে এগিয়ে থাকার বিষয় সমূহ নিয়ে বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




দুদকে অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রদল ক্যাডার গণপুর্তের প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে 

আপডেট সময় : ০৭:০০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩

গণপূর্তির ফিফটি পার্সেন্ট কমিশন খাওয়ার প্রকৌশলী হিসেবে পরিচিত। ছাত্র জীবনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের তুখোড় নেতা হিসেবে পরিচিত, বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমের অন্যতম বিশ্বস্ত ভাজন এবং বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে দুদকে অভিযুক্ত গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহাম্মদ। হাজারো দুর্নীতি ও অপরাধের বোঝা মাথায় নিয়েই প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন।

বিতর্কিত এই প্রকৌশলীর সাবেক কর্মস্থল সংসদ ভবনে থাকাকালীন সময়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন। সেই সময়ে সংসদীয় কমিটির তদন্তে অভিযোগের সত্যতাও মেলে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম) সিন্ডিকেটের অন্যতম একজন সহযোগী হিসেবেও পরিচিতি আছে তার।

এমন হাজারো অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগের পাহাড় নিয়েও মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের সমঝোতায় তিনি প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌঁড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহমেদের বিরূদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের যত অভিযোগ:

১. অষ্টম জাতীয় সংসদে অনিয়ম, দুর্নীতি তদন্তে অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়াকে (ডেপুটি স্পিকার) প্রধান করে সংসদীয় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল। ওই কমিটি গণপূর্ত বিভাগের তিন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল ওই কমিটি। কিন্তু ওই সুপারিশ অনুযায়ী কোনও ব্যবস্থা নেয়নি গণপূর্ত অধিদফতর। তদন্ত কমিটির সুপারিশে সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার ও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট আখতার হামিদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলা হলেও তিন প্রকৌশলী ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। এই তিন প্রকৌশলীর একজন হলেন বর্তমানে গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহাম্মদ। ২০০২-২০০৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদ ভবনে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
২. তিন দফা পদোন্নতি পাওয়ার পর মোসলেহউদ্দিনকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হতে সহায়তা করেন কথিত যুবলীগ নেতা ও বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীম।
৩. তিন কোটি টাকা খরচ করে গত অক্টোবরে চট্টগ্রাম গণপূর্ত জোন থেকে ঢাকা গণপূর্ত জোনে বদলি হয়ে আসেন মোসলেহউদ্দিন।
৪.গণপূর্ত অধিদফতরে কমিশনভোগী মোসলেহউদ্দিন ‘ফিফটিন পার্সেন্ট’ নামে পরিচিত।
৫. ঘুষ ও দুর্নীতির টাকায় অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি করেছেন তিনি।
৬. ঢাকা ও কুমিল্লায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি রয়েছে তার।

অতিরিক্ত প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিনের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সহ মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে প্রধান প্রকৌশলী হবার দৌড়ে এগিয়ে থাকার বিষয় সমূহ নিয়ে বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।