সুন্দরবনে বেড়েছে বনদস্যুদের তৎপরতা, আতঙ্কে জেলেরা

- আপডেট সময় : ০৩:৩০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ৪০৭ বার পড়া হয়েছে

সুন্দরবনে আবারও শুরু হয়েছে বনদস্যুদের তৎপরতা। মুক্তিপণের জন্য জেলে অপহরণ, জেলে বহরে হামলা, মারধর ও লুটপাট। নয়ন বাহিনী নামে ১৭ সদস্যের একটি দস্যু গ্রুপ এরই মধ্যে ১১ জেলেকে অপহরণ করেছে। ফলে জেলেদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। প্রশাসন বলছে, জেলেদের নিরাপত্তা ও সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করতে র্যাব, কোস্টগার্ড ও পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, সর্বশেষ ৬টি বাহিনীর ৫৪ বনদস্যুর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছরের সুন্দরবনের জেলেদের ওপর দস্যুবৃত্তির সমাপ্তি ঘটে। আর সেই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ১ নভেম্বর ২০১৮ সালে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রত্যাশা ছিল সুন্দরবনে থাকবে না ভয়ঙ্কর দস্যুদের নিষ্ঠুরতা। জেলেরা থাকবেন নিরাপদ আর তাদের পরিবার থাকবে নিশ্চিন্তে। এমন প্রত্যাশাকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে আবারও সুন্দরবনে দস্যুবৃত্তি শুরু করেছে নতুন আর্বিভাব হওয়া নয়ন বাহিনী। নতুন করে তাদের কাছে জিম্মি হচ্ছে জেলেরা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এখনই নির্মূল করতে না পারলে আবারও তৈরি হতে পারে নতুন নতুন বাহিনী।
পুলিশ আরও জানায়, চলতি মাসের ১৩ ডিসেম্বর রাতে বনের হারবাড়িয়ার চরাপুটিয়া, কলামুলো, তাম্বল বুনিয়া ও হরমল খাল থেকে পৃথক ১১ জন জেলেকে অপহরণ করে দস্যু নয়ন বাহিনী সদস্যরা, মুক্তিপণ চাওয়া হয় জনপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা। ৭ দিন পর দস্যুদের জিম্মি দশা থেকে ২১ ডিসেম্বর প্রশাসনের অভিযানের মুখে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পান জেলেরা। প্রশাসনের তোপের মুখে ২৬ ডিসেম্বর ভোর রাতে চাঁদপাই রেঞ্জের মৃগামারী এলাকা থেকে ৩ বন দস্যুকে গ্রেফতার করে মোংলা থানা পুলিশ। উদ্ধার করা হয় অগ্নেয়াস্ত্রসহ দস্যুতার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মালামাল। নতুন করে সুন্দরবনে বনদস্যু প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় জেলে পরিবারের মাঝে এখন চলছে দস্যু আতঙ্ক। মাছ ও কাকড়া আহরণে যাওয়া জেলেরা বনে ছেড়ে দিয়েছে অনেকে।
মোংলা-রামপাল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসিফ ইকবাল বলেন, ‘সুন্দরবন দস্যু মুক্ত রাখতে অভিযান চলমান রেখেছে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা। যতক্ষণ জেলেদের নিরাপত্তা ও বন দস্যুদের নির্মূল না হবে ততক্ষণ আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
র্যাবের কাছে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের সর্বমোট ৩২টি বাহিনীর প্রধানসহ ৩২৪ জন দস্যু আত্মসমর্পণ করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪২৬টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।