ঢাকা ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




মানিকগঞ্জে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক;
  • আপডেট সময় : ১১:৫২:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২ ৩০৯ বার পড়া হয়েছে

মানিকগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিক ও তার অনুসারীদের হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এঘটনায় মামলা হলেও অভিযুক্তাদের কেউ এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুরে দৌলতপুর উপজেলার চক মিরপুর ইউনিয়নের চক খরিচরণ এলাকায় সরকারি জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঘটনাস্থলেই হামলার শিকার হন তারা। চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম (শফিক) তার অনুসারীদের নিয়ে অতর্কিত এই হামলা চালায়।

আহতরা হলেন ‘দৈনিক অধিকার পত্রিকার’ মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও ‘দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকার’ বিশেষ প্রতিনিধি রফিক খান এবং ‘দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকা’র মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি খাববাব হোসেন ত্বোহা।
এ ঘটনায় আহত সাংবাদিকের ভ্রাতা ‘দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকা’র সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সুজন বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে মঙ্গলবার রাত সাড়েদশটায় দৌলতপুর থানায় মামলা করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্র জানা গেছে, উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তার অনুসারীদের নিয়ে সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ সময় তার সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান, বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন মিয়া, বিএনপি নেতা এবং ভূমিদস্যু মো, রফিকসহ অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জন্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধরক মারধর করে। একপর্যায়ে টেনে হিছড়ে বাজার সংলগ্ন একটি ভবনের পৃথক দুটি রুমে নিয়ে আটক করে প্রাণ নাশের ভয় দেখিয়ে অবৈধভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেওয়ার চেষ্টা করে ইউপি চেয়ারম্যান শফিক এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক আতাউর রহমান।

এ বিষয়ে সাংবাদিক রফিক খান বলেন, ‘ঘন্টাব্যাপী চলে শারিরিক নির্যাতন, ধারণ করা হয় এসব ভিডিও। চাওয়া হয় চাঁদাবাজের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী। অস্বীকৃতি জানালে বদ্ধ ঘরে চলে বেধরক নির্যাতন যা ইউপি চেয়ারম্যানের সামনেই হচ্ছিল।’

এ সময় সাংবাদিকদের সাথে থাকা মুঠোফোন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় চেয়াম্যানের লোকজন। মুছে ফেলা হয় সকল তথ্য। মুঠোফোন ফেরত পেলেও ব্যবহৃত ক্যামেরাটি পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত সফিক চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে দ্বিতীয় অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি ঘটনার শেষে সেখানে যাই। সফিক চেয়ারম্যানসহ সবাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের অবস্থার অবনতি দেখে আমি তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমি এই ঘটনার সাথে জরিত না বরং সাংবাদিকদের সহযোগীতা করেছি।’

 

এ ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে দৌলতপুর উপজেলার চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম রাজা বলেন, ‘অন্যায়কারি যেই হোক আইন তার গতিতে চলবে। এঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবী করি।’

এখনো পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার নেই জানিয়ে শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী বলেন, ‘আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
এ ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, সাধারন সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ। দ্রুত দোষীদের গ্রেফতারের দাবী করে সর্বচ্চ শাস্তি দাবী করেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




মানিকগঞ্জে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট সময় : ১১:৫২:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২

মানিকগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শফিক ও তার অনুসারীদের হামলার শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এঘটনায় মামলা হলেও অভিযুক্তাদের কেউ এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুরে দৌলতপুর উপজেলার চক মিরপুর ইউনিয়নের চক খরিচরণ এলাকায় সরকারি জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণের বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঘটনাস্থলেই হামলার শিকার হন তারা। চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম (শফিক) তার অনুসারীদের নিয়ে অতর্কিত এই হামলা চালায়।

আহতরা হলেন ‘দৈনিক অধিকার পত্রিকার’ মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও ‘দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকার’ বিশেষ প্রতিনিধি রফিক খান এবং ‘দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকা’র মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি খাববাব হোসেন ত্বোহা।
এ ঘটনায় আহত সাংবাদিকের ভ্রাতা ‘দৈনিক টেলিগ্রাম পত্রিকা’র সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সুজন বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে মঙ্গলবার রাত সাড়েদশটায় দৌলতপুর থানায় মামলা করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্র জানা গেছে, উপজেলার চকমিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তার অনুসারীদের নিয়ে সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ সময় তার সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুর রহমান, বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমন মিয়া, বিএনপি নেতা এবং ভূমিদস্যু মো, রফিকসহ অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জন্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধরক মারধর করে। একপর্যায়ে টেনে হিছড়ে বাজার সংলগ্ন একটি ভবনের পৃথক দুটি রুমে নিয়ে আটক করে প্রাণ নাশের ভয় দেখিয়ে অবৈধভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেওয়ার চেষ্টা করে ইউপি চেয়ারম্যান শফিক এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক আতাউর রহমান।

এ বিষয়ে সাংবাদিক রফিক খান বলেন, ‘ঘন্টাব্যাপী চলে শারিরিক নির্যাতন, ধারণ করা হয় এসব ভিডিও। চাওয়া হয় চাঁদাবাজের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী। অস্বীকৃতি জানালে বদ্ধ ঘরে চলে বেধরক নির্যাতন যা ইউপি চেয়ারম্যানের সামনেই হচ্ছিল।’

এ সময় সাংবাদিকদের সাথে থাকা মুঠোফোন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় চেয়াম্যানের লোকজন। মুছে ফেলা হয় সকল তথ্য। মুঠোফোন ফেরত পেলেও ব্যবহৃত ক্যামেরাটি পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত সফিক চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে দ্বিতীয় অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি ঘটনার শেষে সেখানে যাই। সফিক চেয়ারম্যানসহ সবাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের অবস্থার অবনতি দেখে আমি তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমি এই ঘটনার সাথে জরিত না বরং সাংবাদিকদের সহযোগীতা করেছি।’

 

এ ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করে দৌলতপুর উপজেলার চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম রাজা বলেন, ‘অন্যায়কারি যেই হোক আইন তার গতিতে চলবে। এঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবী করি।’

এখনো পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার নেই জানিয়ে শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরজাহান লাবনী বলেন, ‘আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
এ ঘটনাকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, সাধারন সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী সহ সকল সাংবাদিকবৃন্দ। দ্রুত দোষীদের গ্রেফতারের দাবী করে সর্বচ্চ শাস্তি দাবী করেন তারা।