ঢাকা ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo নিবন্ধন অধিদপ্তরের দুর্নীতির সম্রাট সালাম আজাদ! Logo ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য Logo স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লাটিম ঘুরাচ্ছেন ৬ ‘কুতুব’ Logo ওয়াসা প্রকৌশলী ফকরুলের আমলনামা: অবৈধ সম্পদের সাম্রাজ্য Logo আশা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত Logo চাঁদার টাকা না পেয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা Logo সাংবাদিকদের হত্যা চেষ্টার ঘটনায় চ্যানেল এস এর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা Logo জামিনে মুক্ত রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদ Logo স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির রাঘব বোয়াল বায়ো ট্রেড ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রাব্বি লাপাত্তা




পালাক্রমে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিল ব্যর্থ প্রেমিক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৩৬:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ জুন ২০২০ ৭৬ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি;

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের দাদপুর গ্রামে তিন বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে নববধূ কেয়াকে। পরে লাশ মাটিচাপা দেয় প্রেমিক মিলন ও তার সহযোগীরা। লাশ উদ্ধারের তিন মাস পর হত্যার এমন রোমহর্ষক বর্ণনা দেয় নিহতের প্রেমিক ও অপর দুই ধর্ষক।

এ ঘটনায় ঘাতক তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেফতাররা হলেন- কালীগঞ্জের ত্রীলোচনপুর গ্রামের সলেমান হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন (২৬), একই গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে ইসরাফিল (২৫) ও আজগর আলীর ছেলে আজিম (২৬)।

জানা যায়, চলতি বছরের ১৩ মার্চ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দাদপুর গ্রামের একটি রাস্তার পাশ থেকে মাথার চুলসহ ক্লিপ ও একটি স্যান্ডেল পাওয়া যায়। যার সূত্র ধরে ওই গ্রামের মাঠের মধ্যে থেকে কলাগাছ ও গাছের পাতার নিচে মাটিতে পুঁতে রাখা গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশটি কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রীলোচনপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের মেয়ে কেয়া খাতুনের বলে শনাক্ত করে নিহতের স্বজনরা। যিনি ১৭ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, লাশ উদ্ধারের পর হত্যার মোটিভ উদ্ধার ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকারীদের কোনো আলামত না পেয়ে ক্লু-লেস এ মামলার তদন্তে কিছুটা বেগ পেতে হয়। পরে কেয়ার বিয়ের আগে ও পরে নানা বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এতে জানা যায়, কেয়ার সঙ্গে তিন বছর আগে থেকে একই গ্রামের সলেমানের ছেলে মিলন হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু পরিবার থেকে একই উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মাইক্রোবাস চালক সাবজাল হোসেনের সঙ্গে কেয়ার বিয়ে দেয়া হয়।

কেয়ার বিয়ের পর মিলন হোসেন প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে এমন সন্দেহে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর এলাকায় ছদ্মবেশে অভিযান শুরু করে পুলিশ। অভিযানের একপর্যায়ে গত ১৬ মার্চ জীবননগরের হাসাদাহ এলাকা থেকে মিলনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মিলন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং সঙ্গে ইসরাফিল ও আজিম জড়িত বলে জানায়।

মিলন গ্রেফতার হওয়ার পর আসামি ইসরাফিল ও আজিম গাঢাকা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করতে থাকে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসরাফিলকে ২৭ মার্চ গ্রেফতার করলে সেও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

আলাদা জিজ্ঞাসাবাদে দুজনের বক্তব্য একই রকম হওয়ায় ইসরাফিল হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত হয়। সেই সঙ্গে আজিমও জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। দুজনকে গ্রেফতার করা হলেও তৃতীয় আসামি আজিমকে গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। দীর্ঘ প্রায় তিন মাসের চেষ্টায় গত মঙ্গলবার (০২ জুন) কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা এলাকা থেকে আজিমকে গ্রেফতার করা হয়। সেও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

হত্যার দিনের ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আসামিদের আলাদা আলাদা জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, ঘটনার দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে কেয়া খাতুনকে তার বাবার বাড়ি থেকে মিলন ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে মাঠের মধ্যে নিয়ে প্রথমে মিলন তাকে ধর্ষণ করে। পরে পালাক্রমে আজিম ও ইসরাফিল ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের পর মিলন বাঁশ দিয়ে কেয়ার মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। পরে সেখানে পাশের বাড়ি থেকে একটি কোদাল এনে রাস্তার পাশে মাটি চাপা দিয়ে কলাগাছ ও কলাগাছের পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যায়। প্রেমে ব্যর্থ হয়েই মিলন অন্য সহযোগীদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




পালাক্রমে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিল ব্যর্থ প্রেমিক

আপডেট সময় : ১২:৩৬:৪১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ জুন ২০২০

জেলা প্রতিনিধি;

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের দাদপুর গ্রামে তিন বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে নববধূ কেয়াকে। পরে লাশ মাটিচাপা দেয় প্রেমিক মিলন ও তার সহযোগীরা। লাশ উদ্ধারের তিন মাস পর হত্যার এমন রোমহর্ষক বর্ণনা দেয় নিহতের প্রেমিক ও অপর দুই ধর্ষক।

এ ঘটনায় ঘাতক তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেফতাররা হলেন- কালীগঞ্জের ত্রীলোচনপুর গ্রামের সলেমান হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন (২৬), একই গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে ইসরাফিল (২৫) ও আজগর আলীর ছেলে আজিম (২৬)।

জানা যায়, চলতি বছরের ১৩ মার্চ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দাদপুর গ্রামের একটি রাস্তার পাশ থেকে মাথার চুলসহ ক্লিপ ও একটি স্যান্ডেল পাওয়া যায়। যার সূত্র ধরে ওই গ্রামের মাঠের মধ্যে থেকে কলাগাছ ও গাছের পাতার নিচে মাটিতে পুঁতে রাখা গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশটি কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রীলোচনপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের মেয়ে কেয়া খাতুনের বলে শনাক্ত করে নিহতের স্বজনরা। যিনি ১৭ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, লাশ উদ্ধারের পর হত্যার মোটিভ উদ্ধার ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকারীদের কোনো আলামত না পেয়ে ক্লু-লেস এ মামলার তদন্তে কিছুটা বেগ পেতে হয়। পরে কেয়ার বিয়ের আগে ও পরে নানা বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এতে জানা যায়, কেয়ার সঙ্গে তিন বছর আগে থেকে একই গ্রামের সলেমানের ছেলে মিলন হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু পরিবার থেকে একই উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মাইক্রোবাস চালক সাবজাল হোসেনের সঙ্গে কেয়ার বিয়ে দেয়া হয়।

কেয়ার বিয়ের পর মিলন হোসেন প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে এমন সন্দেহে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর এলাকায় ছদ্মবেশে অভিযান শুরু করে পুলিশ। অভিযানের একপর্যায়ে গত ১৬ মার্চ জীবননগরের হাসাদাহ এলাকা থেকে মিলনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মিলন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এবং সঙ্গে ইসরাফিল ও আজিম জড়িত বলে জানায়।

মিলন গ্রেফতার হওয়ার পর আসামি ইসরাফিল ও আজিম গাঢাকা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করতে থাকে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসরাফিলকে ২৭ মার্চ গ্রেফতার করলে সেও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

আলাদা জিজ্ঞাসাবাদে দুজনের বক্তব্য একই রকম হওয়ায় ইসরাফিল হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত হয়। সেই সঙ্গে আজিমও জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। দুজনকে গ্রেফতার করা হলেও তৃতীয় আসামি আজিমকে গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না। দীর্ঘ প্রায় তিন মাসের চেষ্টায় গত মঙ্গলবার (০২ জুন) কালীগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা এলাকা থেকে আজিমকে গ্রেফতার করা হয়। সেও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

হত্যার দিনের ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আসামিদের আলাদা আলাদা জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, ঘটনার দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে কেয়া খাতুনকে তার বাবার বাড়ি থেকে মিলন ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে মাঠের মধ্যে নিয়ে প্রথমে মিলন তাকে ধর্ষণ করে। পরে পালাক্রমে আজিম ও ইসরাফিল ধর্ষণ করে।

ধর্ষণের পর মিলন বাঁশ দিয়ে কেয়ার মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। পরে সেখানে পাশের বাড়ি থেকে একটি কোদাল এনে রাস্তার পাশে মাটি চাপা দিয়ে কলাগাছ ও কলাগাছের পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যায়। প্রেমে ব্যর্থ হয়েই মিলন অন্য সহযোগীদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।