করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে স্পেনের চার ধাপের পরিকল্পনা

- আপডেট সময় : ০৮:২০:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০ ১২৭ বার পড়া হয়েছে

স্পেন প্রতিবেদক |
স্পেন প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত চারটি ধাপে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেছেন, যা আগামী জুন মাসের শেষ পর্যন্ত চলবে। মঙ্গলবার বিকালে মন্ত্রীসভার এক সভায় তিনি এসব পরিকল্পনার কথা বলেন।
প্রস্তুতি ধাপ:
চারটি দ্বীপ ফর্মেন্তেরা (বালেয়ারেস), গোমেরা, লা গ্রাসিওসা এবং এল ইয়েররো(কানারিয়াস) ছাড়া পুরো স্পেনে এই ধাপের কাজ শুরু হবে আগামী ৪ মে থেকে। এই দ্বীপগুলো সরাসরি প্রথম ধাপে প্রবেশ করবে। তবে আগামী ২ মে থেকে লোকজন খেলাধুলা বা হাটাহাটির জন্য বাইরে যেতে পারার একটি পরিকল্পনা ইতোমধ্যে হাতে নেয়া হয়েছে।
আগে থেকে কাস্টমার এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ছোট ছোট দোকানপাট খুলতে শুরু করবে। যেমন: সেলুন। রেস্টুরেন্টগুলো তাদের টেক এওয়ে সার্ভিস চালু করতে পারবে। তবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা অবলম্বন করে। অর্থাৎ রেস্টুরেন্টের ভেতর ভিড় না জমিয়ে। লা লীগাসহ পেশাদার খেলোয়াড়রা তাদের ব্যক্তিগত অনুশীলন শুরু করতে পারবেন। এই ধাপে পাবলিক সেক্টরগুলো যথাযথ সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নেবে পরবর্তী ধাপের জন্য।
ধাপ ২:
১১ মে থেকে শুরু হবে এই ধাপ এবং দেশের সব কয়টা প্রদেশ এই ধাপের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। করোনা ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড হিসেবে পরবর্তী প্রত্যেকটি ধাপের সময় হবে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ। ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে শুরু করবে যথাযথ ও পর্যাপ্ত নিরাপদ ব্যবস্থা রেখে।
বড় শপিং মল, পার্ক বা যেখানে অধিক পরিমাণ লোক সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা সেগুলো বন্ধ থাকবে। রেস্টুরেন্টগুলোর সামনের খালি চত্বর (তের্রাসা) খোলা রেখে সার্ভিস দেয়া যাবে, তবে তা আগের চেয়ে ৩০ ভাগ ব্যস্ততা কমিয়ে। একই নিয়ম মেনে ট্যুরিস্ট হোটেলগুলোও খোলা হবে। প্রথম ধাপে খোলা প্রতিষ্ঠানগুলো দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় রাখবে ৬৫ বছরের বেশিদের জন্য।
কৃষি এবং মৎস খাতের যে সেক্টরগুলো সীমাবদ্ধ ছিল সেগুলো পূনরায় চালু করা হবে। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো মোট ধারণক্ষমতার তিন ভাগের এক ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। বড় পরিসরের খেলাধুলার স্থানগুলোতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তা মেনে চলতে হবে এবং সম্ভব হলে দফায় দফায় কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
ধাপ ৩: ২৫ মে
রেস্টুরেন্টগুলো তাদের ভেতরের অংশের মোট ধারণক্ষমতার তিন ভাগের এক ভাগ খোলা রাখতে পারবে তবে কাস্টমারদের একে অপরের দূরত্ব বা পৃথক থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত রেখে।
এই শিক্ষাবছরে স্কুল-কলেজগুলো আর খুলছে না। তবে যে শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের প্রয়োজন বা ছয় বছরের নিচের শিশুদের যাদের বাবা মা কাজে ব্যস্ত থাকবে তারা স্কুলে যেতে পারবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাও চলবে। শিকার এবং মাছ ধরা যাবে।
সিনেমা ও থিয়েটারগুলো তাদের মোট ধারণক্ষমতার তিন ভাগের এক ভাগ কার্যক্রম চালাতে পারবে।
বিভিন্ন কালচারাল সেন্টার ও প্রদর্শনীগুলোও তাদের মোট ধারণক্ষমতার তিন ভাগের এক ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
কালচারাল শো গুলোর ক্ষেত্রে বন্ধ রুমে ৫০ জনের বেশি অংশগ্রহণ করতে পারবেন না এবং খোলা জায়গায় ৪০০ জনের বেশি না এবং সেটা হতে হবে বসার ব্যবস্থা সম্পন্ন। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো তাদের মোট ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।
ধাপ ৪: ৮ জুন
ধাপ দুই এর পয়েন্টগুলো প্রতিপালন করলে স্বাভাবিক চলাফেরা সহজ করে দেয়া হবে। কিন্ত বাড়ির বাইরে এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টে মাস্ক ব্যাবহার করতে হবে এবং এটির প্রতি অত্যন্ত জোর দেয়া হয়েছে।
কমার্শিয়াল সেন্টারগুলোতে ধারণক্ষমতার শতকরা ৫০ ভাগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন এবং সর্বনিম্ন দুই মিটার নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। রেস্টুরেন্টগুলোতে ধারণক্ষমতা ও ব্যস্ততার সীমা শিথিল হবে, যদি গ্রাহকদের মধ্যকার পৃথকীকরণ ব্যবস্থা ভালোভাবে বজায় রাখা হয়।