ঢাকা ১০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রকৌশলীর মৃত্যু

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:০০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ এপ্রিল ২০২০ ১০৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক; 

প্রকৌশলী জসিম উদ্দিনের (৫২) শরীরে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট ছিল। এই প্রকৌশলীর বাড়ি ঢাকার সাভারের জয়নাবাড়ি এলাকায়। এসব উপসর্গ নিয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

ভর্তির কয়েক ঘণ্টা পর তাকে হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর এই হাসপাতাল, ওই হাসপাতালে ঘুরে অবশেষে রাজধানীর একটি হাসপাতালে রোববার রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

জানতে চাইলে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারুল কাদের বলেন, ‘জসিম উদ্দিনকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

তাকে জোর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ সত্যি নয়। আর তার করোনাভাইরাসের লক্ষণ ছিল কি না, তা আমার জানা নেই।’

এনাম মেডিকেলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রসহ (আইসিইউ) সব ধরনের সুবিধা থাকার পরও জসিমকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান আনোয়ারুল কাদের।

জসিম উদ্দিন যে হাসপাতালে মারা গেছেন, সেখানকার চিকিৎসক বলেছেন, তার মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক আলামতে তার দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি।

জসিম উদ্দিনের শ্যালক ইকবাল হোসেন বলেন, তার ভগ্নিপতি বুধবার থেকে শরীরে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি বাড়ি থেকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

অবস্থার অবনতি হলে গতকাল রোববার বেলা একটার দিকে তাকে ওই হাসপাতালে (এনাম মেডিকেলে) ভর্তি করা হয়। বিকেলের দিকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।

তাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তারা রাজি না হওয়ায় হাসপাতালের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আনসার ডেকে আনেন। রাত ১০টার দিকে তার ভগ্নিপতিকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়।

স্বজনদের ভাষ্য, জসিম উদ্দিনকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তারা। করোনাভাইরাসের সন্দেহ থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা প্রাথমিক পরীক্ষা করেন। তাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকার লক্ষণ মেলেনি।

তাই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা নানা অজুহাতে তাকে ভর্তি করেননি।

নয়াবাজারের ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রাত তিনটার দিয়ে ওই হাসপাতালে গিয়ে অনেক অনুনয়-বিনয় করার পর তাকে ভর্তি করা হয়।

কিন্তু ভর্তির আধা ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান জসিম উদ্দিন।

ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মো. সায়েম বলেন, ‘কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে রোগীকে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তার হৃদযন্ত্র কাজ করছিল না। ভর্তির আধা ঘণ্টার মধ্যে তিনি মারা যান।’

এদিকে গতকাল রোববার রাতেই জসিম উদ্দিনের বাড়িটি লকডাউন করে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ।

তিনি বলেন, ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাতে জসিম উদ্দিনের বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রকৌশলীর মৃত্যু

আপডেট সময় : ০৩:০০:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ এপ্রিল ২০২০

নিউজ ডেস্ক; 

প্রকৌশলী জসিম উদ্দিনের (৫২) শরীরে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট ছিল। এই প্রকৌশলীর বাড়ি ঢাকার সাভারের জয়নাবাড়ি এলাকায়। এসব উপসর্গ নিয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

ভর্তির কয়েক ঘণ্টা পর তাকে হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর এই হাসপাতাল, ওই হাসপাতালে ঘুরে অবশেষে রাজধানীর একটি হাসপাতালে রোববার রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

জানতে চাইলে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ারুল কাদের বলেন, ‘জসিম উদ্দিনকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

তাকে জোর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ সত্যি নয়। আর তার করোনাভাইরাসের লক্ষণ ছিল কি না, তা আমার জানা নেই।’

এনাম মেডিকেলে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রসহ (আইসিইউ) সব ধরনের সুবিধা থাকার পরও জসিমকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান আনোয়ারুল কাদের।

জসিম উদ্দিন যে হাসপাতালে মারা গেছেন, সেখানকার চিকিৎসক বলেছেন, তার মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক আলামতে তার দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি।

জসিম উদ্দিনের শ্যালক ইকবাল হোসেন বলেন, তার ভগ্নিপতি বুধবার থেকে শরীরে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তিনি বাড়ি থেকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

অবস্থার অবনতি হলে গতকাল রোববার বেলা একটার দিকে তাকে ওই হাসপাতালে (এনাম মেডিকেলে) ভর্তি করা হয়। বিকেলের দিকে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।

তাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তারা রাজি না হওয়ায় হাসপাতালের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আনসার ডেকে আনেন। রাত ১০টার দিকে তার ভগ্নিপতিকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়।

স্বজনদের ভাষ্য, জসিম উদ্দিনকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তারা। করোনাভাইরাসের সন্দেহ থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা প্রাথমিক পরীক্ষা করেন। তাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকার লক্ষণ মেলেনি।

তাই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা নানা অজুহাতে তাকে ভর্তি করেননি।

নয়াবাজারের ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রাত তিনটার দিয়ে ওই হাসপাতালে গিয়ে অনেক অনুনয়-বিনয় করার পর তাকে ভর্তি করা হয়।

কিন্তু ভর্তির আধা ঘণ্টার মধ্যেই মারা যান জসিম উদ্দিন।

ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মো. সায়েম বলেন, ‘কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে রোগীকে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তার হৃদযন্ত্র কাজ করছিল না। ভর্তির আধা ঘণ্টার মধ্যে তিনি মারা যান।’

এদিকে গতকাল রোববার রাতেই জসিম উদ্দিনের বাড়িটি লকডাউন করে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ।

তিনি বলেন, ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাতে জসিম উদ্দিনের বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে।’