ঢাকা ০২:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বিজিএমইএ’র আসন্ন নির্বাচনে তৎপর জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার মামলার আসামীরা Logo দশমিনায় যুবদল নেতাকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন Logo কেরানীগঞ্জ মডেল ভূমি অফিস যেন ঘুষের আস্তানা: এসিল্যান্ড থেকে পিয়ন সবাই এক আত্মা!  Logo শেখ সোহেলের সহচর কাউট রাজু গ্রুপের তাণ্ডব: অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি Logo পদোন্নতি,বদলি. কেনাকাটায় পাহাড়সম দুর্নীতি ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরে: দুদকের বিশেষ অভিযান Logo সুনামগঞ্জে প্রবাসী সাংবাদিকের বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা Logo নিজেই মাদকাসক্ত মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা; মাসে মাসোহারা আদায় ৭লাখ! Logo দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রকারী মাস্টারমাইন্ড সেচ্ছাসেবকলীগ নেত্রী ফাতেমা আক্তার শাপলা Logo ‘শেখ হাসিনা ও জিয়াউলের বিরুদ্ধে ২০০ গুমের প্রমাণ মিলেছে’ Logo দুর্নীতির ছায়ায় রাজউক ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান!




ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রেখে নারীকে পেটালেন চেয়ারম্যান

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫০:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭৯ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থী এক নারীকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

নির্যাতনের শিকার রিমি অভিযোগ করেন, গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান হাজি সফি উল্যাহ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, নির্যাতনের শিকার ওই নারী এবং তার মাকে পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রাখা হয় প্রায় ৪ ঘণ্টা।

নির্যাতনের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন রিমি জানান, গত আগস্ট মাসে জন্ম নিবন্ধনের কার্ড করতে চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গেলে বোর্ড অফিসের তথ্য সেবা কর্মকর্তা রিয়াদ তার ওপর হামলা চালায়। এ হামলার বিচারের দাবি করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। রোববার সকালে ওই অভিযোগ পত্রে হামলার সত্যতার পক্ষে স্বাক্ষর নিতে ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গেলে চেয়ারম্যান তার স্বামী রিয়াদের পক্ষ নিয়ে প্রথমে তাকে এবং তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে, পরে মোটা একটি লাঠি দিয়ে তার চোখে আঘাত করে। এরপর চৌকিদার আবদুর রবসহ অজ্ঞাত এক যুবককে তার ওপর লেলিয়ে দেয়। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে চৌকিদার আবদুর রব ও অজ্ঞাত এক যুবক ওই নারীকে বেধড়ক মারধর করে।

নির্যাতনের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন রিমা আরও জানান, তার স্বামী রিয়াদ হোসেন চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের তথ্য সেবা কেন্দ্রে চাকরি করে। পরিবারের অমতে রিয়াদের সঙ্গে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তার বিয়ে হয়। পরে রিয়াদ তাকে তার বাড়িতে তুলে নিতে অস্বীকার করলে তার বিরুদ্ধে নারীও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন তিনি। ওই মামলা এখনও চলমান। পূর্ব শক্রতার জের ধরে তথ্য সেবা কর্মকর্তার পক্ষ নিয়ে চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রেখে এ নির্যাতন চালিয়েছে।

এ ঘটনায় চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজি সফি উল্যাহ‘র সঙ্গে রাত সাড়ে ৮টায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি লাঠি দিয়ে আঘাত করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি তার সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে বার বার বলার পরও সে সন্তানের বাবার নাম দিয়ে তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে শাসন করেছি। আমার বয়স এখন ৭১ বছর। সন্তান হিসেবে একটু শাসন করেছি। এখন এটি ভুল করলাম না সঠিক করলাম সেটি আপনাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আমরা জনপ্রতিনিধিরা যদি খারাপ মেয়েদের একটু থ্রেডিং দিয়ে ঠিক করতে না পারি, তাহলে আমরা কিসের জনপ্রতিনিধি।

তিনি আরও দাবি করেন, তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে শাসন করতেই পারেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বোর্ড অফিসের লোকজন তাকে টানা হেঁচড়া করে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় তার শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুর রহমান জানান, সন্ধ্যায় নির্যাতিতা নারী থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশে পাঠিয়েছি। ঘটনার সত্যতা জেনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে যা শুনেছি এটি করা সঠিক হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রেখে নারীকে পেটালেন চেয়ারম্যান

আপডেট সময় : ০৯:৫০:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থী এক নারীকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

নির্যাতনের শিকার রিমি অভিযোগ করেন, গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যান হাজি সফি উল্যাহ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, নির্যাতনের শিকার ওই নারী এবং তার মাকে পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রাখা হয় প্রায় ৪ ঘণ্টা।

নির্যাতনের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন রিমি জানান, গত আগস্ট মাসে জন্ম নিবন্ধনের কার্ড করতে চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গেলে বোর্ড অফিসের তথ্য সেবা কর্মকর্তা রিয়াদ তার ওপর হামলা চালায়। এ হামলার বিচারের দাবি করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। রোববার সকালে ওই অভিযোগ পত্রে হামলার সত্যতার পক্ষে স্বাক্ষর নিতে ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গেলে চেয়ারম্যান তার স্বামী রিয়াদের পক্ষ নিয়ে প্রথমে তাকে এবং তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে, পরে মোটা একটি লাঠি দিয়ে তার চোখে আঘাত করে। এরপর চৌকিদার আবদুর রবসহ অজ্ঞাত এক যুবককে তার ওপর লেলিয়ে দেয়। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে চৌকিদার আবদুর রব ও অজ্ঞাত এক যুবক ওই নারীকে বেধড়ক মারধর করে।

নির্যাতনের শিকার সাবিনা ইয়াসমিন রিমা আরও জানান, তার স্বামী রিয়াদ হোসেন চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের তথ্য সেবা কেন্দ্রে চাকরি করে। পরিবারের অমতে রিয়াদের সঙ্গে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তার বিয়ে হয়। পরে রিয়াদ তাকে তার বাড়িতে তুলে নিতে অস্বীকার করলে তার বিরুদ্ধে নারীও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন তিনি। ওই মামলা এখনও চলমান। পূর্ব শক্রতার জের ধরে তথ্য সেবা কর্মকর্তার পক্ষ নিয়ে চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আটকে রেখে এ নির্যাতন চালিয়েছে।

এ ঘটনায় চরকাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজি সফি উল্যাহ‘র সঙ্গে রাত সাড়ে ৮টায় ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি লাঠি দিয়ে আঘাত করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি তার সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে বার বার বলার পরও সে সন্তানের বাবার নাম দিয়ে তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে শাসন করেছি। আমার বয়স এখন ৭১ বছর। সন্তান হিসেবে একটু শাসন করেছি। এখন এটি ভুল করলাম না সঠিক করলাম সেটি আপনাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আমরা জনপ্রতিনিধিরা যদি খারাপ মেয়েদের একটু থ্রেডিং দিয়ে ঠিক করতে না পারি, তাহলে আমরা কিসের জনপ্রতিনিধি।

তিনি আরও দাবি করেন, তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে শাসন করতেই পারেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বোর্ড অফিসের লোকজন তাকে টানা হেঁচড়া করে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় তার শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুর রহমান জানান, সন্ধ্যায় নির্যাতিতা নারী থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশে পাঠিয়েছি। ঘটনার সত্যতা জেনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে যা শুনেছি এটি করা সঠিক হয়নি।