ঢাকা ১১:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত ৪

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০১৯ ১৪৫ বার পড়া হয়েছে

কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নামে ৫০ শয্যা হাসপাতাল। বাস্তবে আছে ৩১ শয্যা। ২৪ জন চিকিত্সকের স্থলে আছেন মাত্র চার জন। এতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত ভর্তিকৃত রোগীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।

সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি আবহাওয়ার তারতম্যজনিত কারণে গত দুই মাস ধরে রোগীদের ভিড় লেগেই আছে। হাসপাতালের ৩১টি বেডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় প্রতিনিয়ত ফ্লোরেও জায়গা নিতে হচ্ছে এসব রোগীদের। তবে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে শিশু রোগীদের সংখ্যাই বেশি। এসব রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবাশুশ্রূষা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্সরা। শনিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে পূর্বের রোগীদের সঙ্গে নতুন ১১ জন মিলিয়ে ৪৫ জন রোগী ভর্তি হন। ১১ জন রোগীর মধ্যে আট জন নিউমোনিয়া ও দুই জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত আগস্ট মাসে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন ৭০ জন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৮৫ জন এবং অন্যান্য ১৩৫ জনসহ ১৩৫৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। গর্ভবতী ৫৩ জন রোগী ভর্তি হন। এদের মধ্যে ৪২টি নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন হয় এবং ছয় জনকে সদরে রেফার্ড করা হয়। গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসূতির কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে নার্সদের। প্রায় পৌনে তিন লক্ষাধিক লোক অধ্যুষিত কমলগঞ্জ উপজেলার জনসাধারণের একমাত্র চিকিত্সা কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

২০১৮ সনের ১০ মার্চ তত্কালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আনুষ্ঠানিকভাবে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) কর্তৃক বাস্তবায়িত ৮ কোটি ৩২ লাখ ৬ হাজার ৭০১ টাকা ব্যয়ে ৩১ থেকে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করা হয়। তখন থেকেই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত লাভ করলেও এখন পর্যন্ত ৩১ শয্যায়ই হাসপাতাল পরিচালিত হচ্ছে। ৫০ শয্যা হাসপাতালের ২৪ জন চিকিত্সকের স্থলে টিএইচও, আরএমওসহ আছেন মাত্র চার জন চিকিত্সক। ১৫ জন নার্সের স্থলে আছেন ১২ জন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাবসেন্টারসমূহ থেকে আরো তিন জন চিকিত্সক এনে রোগীদের চিকিত্সাসেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। মেডিসিন, গাইনীসহ গুরুত্বপূর্ণ চিকিত্সকের ২০টি পদই শূন্য রয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিত্সক, যন্ত্রপাতি না থাকায় দরিদ্র লোকজন পর্যাপ্ত চিকিত্সাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে কর্মরত নার্স শামীমা ফেরদৌসী বলেন, গত দুই মাস ধরে প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এদের সামাল দিতে ও চিকিত্সাসেবা দিতে আমরা চার জন নার্স প্রতিনিয়ত দায়িত্ব পালন করছি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা সাজ্জাদুল কবির বলেন, চিকিত্সক সংকট থাকলেও আমরা যথাসাধ্য সেবা প্রদানের চেষ্টা করছি। ওষুধপত্রও মোটামুটি সরবরাহ করা হচ্ছে। আবহাওয়ার তারতম্যজনিত কারণে কিছুদিন যাবত্ ডাক্তার, নার্স মিলে সার্বক্ষণিক রোগীদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও প্রশাসনিকভাবে এখনো দায়িত্ব হস্তান্তর হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ইয়াহহিয়া বলেন, হাসপাতালে ৫০টি বেড নেই। তাছাড়া সব ধরনের সেবা প্রদানে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আমরা কীট সংগ্রহ করেছি এবং এ পর্যন্ত ৩০ জনের মতো রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত ৪

আপডেট সময় : ০৬:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০১৯

কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নামে ৫০ শয্যা হাসপাতাল। বাস্তবে আছে ৩১ শয্যা। ২৪ জন চিকিত্সকের স্থলে আছেন মাত্র চার জন। এতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত ভর্তিকৃত রোগীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।

সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি আবহাওয়ার তারতম্যজনিত কারণে গত দুই মাস ধরে রোগীদের ভিড় লেগেই আছে। হাসপাতালের ৩১টি বেডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় প্রতিনিয়ত ফ্লোরেও জায়গা নিতে হচ্ছে এসব রোগীদের। তবে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে শিশু রোগীদের সংখ্যাই বেশি। এসব রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবাশুশ্রূষা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্সরা। শনিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে পূর্বের রোগীদের সঙ্গে নতুন ১১ জন মিলিয়ে ৪৫ জন রোগী ভর্তি হন। ১১ জন রোগীর মধ্যে আট জন নিউমোনিয়া ও দুই জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত আগস্ট মাসে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন ৭০ জন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৮৫ জন এবং অন্যান্য ১৩৫ জনসহ ১৩৫৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। গর্ভবতী ৫৩ জন রোগী ভর্তি হন। এদের মধ্যে ৪২টি নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন হয় এবং ছয় জনকে সদরে রেফার্ড করা হয়। গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসূতির কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে নার্সদের। প্রায় পৌনে তিন লক্ষাধিক লোক অধ্যুষিত কমলগঞ্জ উপজেলার জনসাধারণের একমাত্র চিকিত্সা কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

২০১৮ সনের ১০ মার্চ তত্কালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আনুষ্ঠানিকভাবে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) কর্তৃক বাস্তবায়িত ৮ কোটি ৩২ লাখ ৬ হাজার ৭০১ টাকা ব্যয়ে ৩১ থেকে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করা হয়। তখন থেকেই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত লাভ করলেও এখন পর্যন্ত ৩১ শয্যায়ই হাসপাতাল পরিচালিত হচ্ছে। ৫০ শয্যা হাসপাতালের ২৪ জন চিকিত্সকের স্থলে টিএইচও, আরএমওসহ আছেন মাত্র চার জন চিকিত্সক। ১৫ জন নার্সের স্থলে আছেন ১২ জন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাবসেন্টারসমূহ থেকে আরো তিন জন চিকিত্সক এনে রোগীদের চিকিত্সাসেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। মেডিসিন, গাইনীসহ গুরুত্বপূর্ণ চিকিত্সকের ২০টি পদই শূন্য রয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিত্সক, যন্ত্রপাতি না থাকায় দরিদ্র লোকজন পর্যাপ্ত চিকিত্সাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে কর্মরত নার্স শামীমা ফেরদৌসী বলেন, গত দুই মাস ধরে প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এদের সামাল দিতে ও চিকিত্সাসেবা দিতে আমরা চার জন নার্স প্রতিনিয়ত দায়িত্ব পালন করছি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা সাজ্জাদুল কবির বলেন, চিকিত্সক সংকট থাকলেও আমরা যথাসাধ্য সেবা প্রদানের চেষ্টা করছি। ওষুধপত্রও মোটামুটি সরবরাহ করা হচ্ছে। আবহাওয়ার তারতম্যজনিত কারণে কিছুদিন যাবত্ ডাক্তার, নার্স মিলে সার্বক্ষণিক রোগীদের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও প্রশাসনিকভাবে এখনো দায়িত্ব হস্তান্তর হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ইয়াহহিয়া বলেন, হাসপাতালে ৫০টি বেড নেই। তাছাড়া সব ধরনের সেবা প্রদানে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আমরা কীট সংগ্রহ করেছি এবং এ পর্যন্ত ৩০ জনের মতো রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে।