ঢাকা ১০:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




সাপাহারে স্ত্রীকে স্বামীর কুপ্রস্তাব, রাজি না হওয়ায় কেটে দিলেন চুল

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৯:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ মে ২০২০ ৬৭ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁ প্রতিনিধি;

নওগাঁ সাপাহারে স্বামীর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জেসমিন (৩৩) নামে এক গৃহবধূর উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে মাথার মাথার চুল কেটে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী রফিকুল ইসলাম (৪০) ও শাশুড়ি রাজিয়া বেগম (৭০) পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হাপানিয়া গ্রামে।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম এর সাথে প্রায় এক বছর আগে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর দু’তিন মাস ভালো ভাবেই কেটেছে তাদের দাম্পত্য জীবন। এর পর থেকেই শুরু হয় স্বামী ও শাশুড়ি কর্তৃক মানুষিক, শারীরিক সহ নানা ধরনের পাশবিক নির্যাতন।

গত ২৩ মে পার্শ্ববর্তী এক ধনাঢ্য ব্যক্তিকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট কুৎসার রটানোর জন্য ওই গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেন তার স্বামী রফিকুল ইসলাম। একজন নিরপরাধী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কুৎসার রটানোর মত জঘন্যতম স্বামীর দেয়া কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ওই গৃহবধূ। যার কারণে তার উপর স্বামী কর্তৃক চালানো হয় পৈশাচিক নির্যাতন। শারীরিক নির্যাতন সহ্য করেও স্বামীর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে ওই গৃহবধূর মাথার সমস্ত চুল কাচি দিয়ে কেটে ফেলে দেয় তার পাষণ্ড স্বামী। এসময় তাকে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় এবং ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনা লোক মাঝে জানাজানি হলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় তার স্বামী ও শাশুড়ি। স্বামী ও শাশুড়ির হুমকির প্রেক্ষিতে নিজের প্রাণ হারানোর ভয়ে ঘটনাটি তিনদিন ধরে গোপন রাখে ওই গৃহবধূ। গতকাল সোমবার বিকেলে ওই গৃহবধূ পুকুর ঘাটে গেলে এলাকাবাসীর মাঝে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এরপর থেকেই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়ি পালাতক রয়েছে। গৃহবধূ জেসমিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চাঁনপুর সাহেব গ্রামের নূরল ইসলামের মেয়ে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গৃহবধূর শ্বশুর ও রফিকুল ইসলামের বাবা হোসেন আলী বলেন, আমি বৃদ্ধ মানুষ, আমার ছেলে ও স্ত্রীর এমন অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকেও বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত হতে হয়। এ কারণে তাদের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে উঠতে পারিনি। এহেন ন্যক্কার জনক ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেন তিনি।

ঘটনাটি জানাজানির পর মঙ্গলবার দুপুরে সাপাহার থানা পুলিশের উপ-পরির্দশক (এসআই) ইমরান হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান সাপাহার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই নিউটন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সাপাহারে স্ত্রীকে স্বামীর কুপ্রস্তাব, রাজি না হওয়ায় কেটে দিলেন চুল

আপডেট সময় : ০৯:১৯:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ মে ২০২০

নওগাঁ প্রতিনিধি;

নওগাঁ সাপাহারে স্বামীর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জেসমিন (৩৩) নামে এক গৃহবধূর উপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে মাথার মাথার চুল কেটে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী রফিকুল ইসলাম (৪০) ও শাশুড়ি রাজিয়া বেগম (৭০) পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হাপানিয়া গ্রামে।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম এর সাথে প্রায় এক বছর আগে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর দু’তিন মাস ভালো ভাবেই কেটেছে তাদের দাম্পত্য জীবন। এর পর থেকেই শুরু হয় স্বামী ও শাশুড়ি কর্তৃক মানুষিক, শারীরিক সহ নানা ধরনের পাশবিক নির্যাতন।

গত ২৩ মে পার্শ্ববর্তী এক ধনাঢ্য ব্যক্তিকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট কুৎসার রটানোর জন্য ওই গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেন তার স্বামী রফিকুল ইসলাম। একজন নিরপরাধী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কুৎসার রটানোর মত জঘন্যতম স্বামীর দেয়া কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ওই গৃহবধূ। যার কারণে তার উপর স্বামী কর্তৃক চালানো হয় পৈশাচিক নির্যাতন। শারীরিক নির্যাতন সহ্য করেও স্বামীর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে ওই গৃহবধূর মাথার সমস্ত চুল কাচি দিয়ে কেটে ফেলে দেয় তার পাষণ্ড স্বামী। এসময় তাকে বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় এবং ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনা লোক মাঝে জানাজানি হলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় তার স্বামী ও শাশুড়ি। স্বামী ও শাশুড়ির হুমকির প্রেক্ষিতে নিজের প্রাণ হারানোর ভয়ে ঘটনাটি তিনদিন ধরে গোপন রাখে ওই গৃহবধূ। গতকাল সোমবার বিকেলে ওই গৃহবধূ পুকুর ঘাটে গেলে এলাকাবাসীর মাঝে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এরপর থেকেই গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়ি পালাতক রয়েছে। গৃহবধূ জেসমিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চাঁনপুর সাহেব গ্রামের নূরল ইসলামের মেয়ে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গৃহবধূর শ্বশুর ও রফিকুল ইসলামের বাবা হোসেন আলী বলেন, আমি বৃদ্ধ মানুষ, আমার ছেলে ও স্ত্রীর এমন অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকেও বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত হতে হয়। এ কারণে তাদের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে উঠতে পারিনি। এহেন ন্যক্কার জনক ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেন তিনি।

ঘটনাটি জানাজানির পর মঙ্গলবার দুপুরে সাপাহার থানা পুলিশের উপ-পরির্দশক (এসআই) ইমরান হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান সাপাহার থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই নিউটন।