অনলাইনে ট্রেনের টিকিট না পাওয়ার রহস্য উন্মোচিত হয়নি

- আপডেট সময় : ১০:৫০:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০১৯ ১৮৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক;
ট্রেনে ঈদের আগাম টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার অ্যাপ কাজ না করার অভিযোগ করেছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা। অনলাইন ও অ্যাপে টিকিট কিনতে না পেরে অনেকেই এসেছিলেন কমলাপুরসহ ঢাকার পাঁচটি কাউন্টারে। ক্ষোভ ও হতাশার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। আগামী রোববার পর্যন্ত অনলাইন ও অ্যাপে টিকিট বিক্রি হওয়ার কথা।
এ বছর অনলাইন ও অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে ৫০ শতাংশ। আগের বছরগুলোতে অনলাইন ও মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে এ পরিমাণ ছিল ৩০ শতাংশ। অনলাইনে বরাদ্দ করা টিকিটের পরিমাণ বাড়লেও কাউন্টারগুলোতে টিকিট বিক্রির প্রথম দুই দিনই পুরোনো দৃশ্য দেখা গেছে। আগের দিন রাত থেকেই কাউন্টারে ভিড় করছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা।
গতকাল বিক্রি হয়েছে ১ জুনের টিকিট। আগের রাত থেকে অনলাইনে চেষ্টা করেও টিকিট না পেয়ে ভোর পাঁচটায় কমলাপুরে এসেছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী সেলিম রেজা। লম্বা লাইন শেষে টিকিট পেয়েছেন দুপুর সাড়ে ১২টায়। বলছিলেন, অ্যাপে লগইন করলে যাত্রা শুরু ও গন্তব্যের স্থান নির্ধারণ করা পর্যন্ত সব ঠিকভাবে কাজ করে। কিন্তু যখন টিকিট কনফার্ম করব, তখন আর কিছু কাজ করে না। দেখায়, ‘সার্ভার নট ফাউন্ড।’
কমলাপুর কাউন্টারে বেশ কয়েকজন টিকিটপ্রত্যাশীর সঙ্গে কথা হয়, যাঁরা সবাই অনলাইনে টিকিট কিনতে না পেরে কাউন্টারে এসেছিলেন। তবে অনলাইনে টিকিট বিক্রি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সিএনএসের পক্ষ থেকে দেওয়া হিসাবে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অনলাইনে টিকিট বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ২০১টি। এর আগে প্রথম দিনের অনলাইনে টিকিট বিক্রির হিসাবে সিএনএস দাবি করে, মোট টিকিট বিক্রি হয়েছিল ৭ হাজার ৮১০টি, সেদিনও ঢাকাসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন কাউন্টারে অনলাইন নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ করেছিলেন যাত্রীরা।
এদিকে সিএনএস এবং রেল কর্তৃপক্ষের ৩১ মের টিকিট বরাদ্দের হিসাবে গরমিল পাওয়া গেছে। দুই পক্ষের দেওয়া হিসাবে বরাদ্দকৃত টিকিটের ব্যবধান প্রায় পাঁচ হাজার। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে সিএনএস জানায়, ৩১ মের জন্য অনলাইন ও কাউন্টার মিলিয়ে বরাদ্দকৃত ৩১ হাজার ৪২০টি টিকিটের মধ্যে বিক্রি হয়েছে ১৭ হাজার ৯৯৩টি। বাকি ১৩ হাজার ৪২৭ টিকিট অবিক্রীত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যাপে বিপুল গ্রাহক লগইন করেন। তাই অ্যাপ ঠিকভাবে কাজ করতে সার্ভারের সক্ষমতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।
অন্যদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের স্টেশন ব্যবস্থাপক আমিনুল হক গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রতিদিন ঢাকায় পাঁচটি স্থানের কাউন্টারে টিকিট বরাদ্দ থাকে ২৬ হাজার ৩৪১টি। দুই পক্ষের হিসাবের এই ভিন্নতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আমিনুল হক বলেন, সিএনএস যে সংখ্যার কথা বলেছে, তা তারাই ভালো বলতে পারবে।
সিএনএসের নির্বাহী পরিচালক জিয়াউল আহসান বলেন, তাঁদের বিক্রীত টিকিটের পরিপূর্ণ হিসাব কাল শনিবার গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরা হবে।
সার্ভারের সক্ষমতা নিয়ে গতকাল প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন। এ প্রসঙ্গে সিএনএসের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) শামীম উল হক বলেছেন, ‘কাউন্টারে যে সার্ভার ব্যবহার করে টিকিট বিক্রি করা হয়, একই সার্ভার ব্যবহৃত হয় অনলাইনে। কাউন্টারে যেহেতু সমস্যা হচ্ছে না, সুতরাং অনলাইনেও সার্ভার কোনো সমস্যার কারণ নয়।’
তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন বলেন, এই যুক্তি হাস্যকর। কারণ, কাউন্টারে সার্ভার ব্যবহার করেন ১০-১৫ জন টিকিট বিক্রেতা। আর অ্যাপে লগইন করেন হাজার হাজার গ্রাহক। ফলে অ্যাপের জন্য বেশি র্যামের সার্ভার প্রয়োজন, এটা থাকলে মানুষকে এমন ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।