ঢাকা ০২:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




খালেদা-তারেকের বাইরে নেতৃত্ব নিয়ে গুঞ্জন বিএনপিতে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৫৪:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০১৯ ৬৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক; 

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর থেকে বিএনপির নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে স্কাইপে যুক্ত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিচ্ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এভাবে যৌথ নেতৃত্বে চলছে দলটি। কিন্তু এতে করে দল সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বলে বিএনপি ও সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ মনে করছেন। তাদের ভাষ্য, দেশে একক কাউকে নেতৃত্ব দেওয়া হলে বিএনপির সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া যাবে ও দলকে করা যাবে গতিশীল।

এ বিষয়ে বিএনপির হিতাকাক্সক্ষী হিসেবে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নানা ইস্যুতে পর্যুদস্ত বিএনপি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এ বিষয়টি তিনি বিভিন্ন সময়ে বলেছেন। কারণ দলটির চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া কারাবন্দি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ কারণে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে দল ঠিকভাবে চলছে না। তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপিকে বিষয়টি বারবার বলে আসছি, কিন্তু তারা শুনছে না। বিএনপির চৈতন্য দরকার। দলে গণতন্ত্র না থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। সেদিন থেকে তিনি কারাগারে আছেন। কারাগারে যাওয়ার আগে দল পরিচালনার জন্য তিনি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব দিয়ে যান। এরপর থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দল পরিচালনা করছেন। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি। তার মুক্তির জন্য কর্মসূচি দেওয়া দরকার। হয় বিএনপি নেতৃত্ব দিক, না হয় আমাদের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিন।’

উল্লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে অলি কী বোঝাতে চেয়েছেন জানতে চাইলে কাছে তিনি কোনো ব্যাখ্যা দিতে রাজি হননি। অলির এমন বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘উনার দল আছে। উনি তার দলের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন। বিএনপি উনার কর্মসূচিতে সমর্থন জানাবে। কিন্তু উনি তো তা করছেন না। বিএনপি যৌথ নেতৃত্বে ভালোই চলছে।’

সম্প্রতি তারেক রহমান জেলা নেতাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। রাজধানীর নয়াপল্টনে স্কাইপের মাধ্যমে এ আলোচনার একপর্যায়ে কুমিল্লা জেলার এক নেতা তারেক রহমানকে বলেন, ‘চেয়ারপারসন জেলে। আপনি সুদূর লন্ডনে।

এ অবস্থায় দলের কাউকে দায়িত্ব দিলে ভালো হতো, দল ভালো চলত। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত।’ কিন্তু তার বক্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তারেক রহমান। বিষয়টি নিয়ে দলে নানা আলোচনা হয়। তিনি বিষয়টি প্রকাশ্যে বললেও দলের মধ্যে কেউ কেউ এমন কথা বলছেন মাঝেমধ্যেই।

জেলা নেতার এমন বক্তব্য ও এলডিপি চেয়ারম্যানের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানান, বিএনপির এখন দুঃসময়। নানাজনে নানা কথা বলছেন। কিন্তু কাজের বেলায় কেউ নেই। এসব বিষয় নিয়ে তিনি কিংবা তার দল বিএনপি কিছু ভাবছে না।

তিনি বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ার আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তাই স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তা ছাড়া প্রয়োজনে স্কাইপের মাধ্যমে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। এমনকি কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে মাঝেমধ্যে নেতাদের সাক্ষাৎ হচ্ছে। সেখানে কথা হচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতারা চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিলেন। এভাবেই দল ভালোই চলছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




খালেদা-তারেকের বাইরে নেতৃত্ব নিয়ে গুঞ্জন বিএনপিতে

আপডেট সময় : ১০:৫৪:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক; 

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর থেকে বিএনপির নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে স্কাইপে যুক্ত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিচ্ছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এভাবে যৌথ নেতৃত্বে চলছে দলটি। কিন্তু এতে করে দল সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বলে বিএনপি ও সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ মনে করছেন। তাদের ভাষ্য, দেশে একক কাউকে নেতৃত্ব দেওয়া হলে বিএনপির সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া যাবে ও দলকে করা যাবে গতিশীল।

এ বিষয়ে বিএনপির হিতাকাক্সক্ষী হিসেবে পরিচিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নানা ইস্যুতে পর্যুদস্ত বিএনপি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এ বিষয়টি তিনি বিভিন্ন সময়ে বলেছেন। কারণ দলটির চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া কারাবন্দি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ কারণে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে দল ঠিকভাবে চলছে না। তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপিকে বিষয়টি বারবার বলে আসছি, কিন্তু তারা শুনছে না। বিএনপির চৈতন্য দরকার। দলে গণতন্ত্র না থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। সেদিন থেকে তিনি কারাগারে আছেন। কারাগারে যাওয়ার আগে দল পরিচালনার জন্য তিনি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব দিয়ে যান। এরপর থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দল পরিচালনা করছেন। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি। তার মুক্তির জন্য কর্মসূচি দেওয়া দরকার। হয় বিএনপি নেতৃত্ব দিক, না হয় আমাদের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিন।’

উল্লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে অলি কী বোঝাতে চেয়েছেন জানতে চাইলে কাছে তিনি কোনো ব্যাখ্যা দিতে রাজি হননি। অলির এমন বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘উনার দল আছে। উনি তার দলের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন। বিএনপি উনার কর্মসূচিতে সমর্থন জানাবে। কিন্তু উনি তো তা করছেন না। বিএনপি যৌথ নেতৃত্বে ভালোই চলছে।’

সম্প্রতি তারেক রহমান জেলা নেতাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। রাজধানীর নয়াপল্টনে স্কাইপের মাধ্যমে এ আলোচনার একপর্যায়ে কুমিল্লা জেলার এক নেতা তারেক রহমানকে বলেন, ‘চেয়ারপারসন জেলে। আপনি সুদূর লন্ডনে।

এ অবস্থায় দলের কাউকে দায়িত্ব দিলে ভালো হতো, দল ভালো চলত। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত।’ কিন্তু তার বক্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তারেক রহমান। বিষয়টি নিয়ে দলে নানা আলোচনা হয়। তিনি বিষয়টি প্রকাশ্যে বললেও দলের মধ্যে কেউ কেউ এমন কথা বলছেন মাঝেমধ্যেই।

জেলা নেতার এমন বক্তব্য ও এলডিপি চেয়ারম্যানের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানান, বিএনপির এখন দুঃসময়। নানাজনে নানা কথা বলছেন। কিন্তু কাজের বেলায় কেউ নেই। এসব বিষয় নিয়ে তিনি কিংবা তার দল বিএনপি কিছু ভাবছে না।

তিনি বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ার আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। তাই স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তা ছাড়া প্রয়োজনে স্কাইপের মাধ্যমে লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। এমনকি কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে মাঝেমধ্যে নেতাদের সাক্ষাৎ হচ্ছে। সেখানে কথা হচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতারা চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তখন তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিলেন। এভাবেই দল ভালোই চলছে।’