বয়স্ক ভাতার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন একজন সাবেক ইউপি মেম্বর

- আপডেট সময় : ১১:৩৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯ ৯৮ বার পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ;
একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন আশাশুনি সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বলাবাড়িয়া গ্রামের মনিক চন্দ্র সানা। তার জন্ম ১৯৩১ সালের ২২ অক্টোবর। সেই হিসেবে তার বয়স প্রায় ৮৭ বছর। দু’বছর ধরে সমাজসেবা অফিসে ঘুরাঘুরি করেও তিনি একটি বয়স্ক ভাতা পাননি। রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী চন্দ্র মল্লিকা সাহানীকে খুঁজে হয়রান হয়ে অবশেষে বাসায় ফিরে আসেন। তার দেখা না পেয়ে তিনি নিজের বাসার গেটের পাশে ঘাসের ওপর শুয়ে পড়েন।
তিনি জানান, যৌবনকালে ৮০ দশকে তিনবার নির্বাচিত ইউপি সদস্য ছিলাম। ৩ ছেলের মধ্যে দুটো থাকে ভারতে। একটি ছেলে (খগেন্দ্র) সামান্য জমিতে মাছের ঘের করলেও বাগদায় ভাইরাস লাগায় সেও অর্থনৈতিকভাবে একেবারেই শুন্যের কোঠায় নেমেছে ফলে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রায় দু’বছর ধরে সমাজসেবা অফিসে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ঘুরছি। অফিসের লোকেরা দু’বার আমার আইডি কার্ডের (৮৭১০৪১৭৬৯৬৩৬৭) ফটোকপি নিয়েছেন কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আজও কার্ড করে দেননি শুধুই ঘুরাচ্ছেন। এই রোদের প্রায় ৭ কিলোমিটার পথ হেটে এই অফিসে এসেছিলাম। মাত্র দশ টাকা পকেটে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছি। একদিকে দুপুরের ঝাঁ ঝাঁ রোদ অন্যদিকে ক্ষুধায় মাথা ঘুরছে তাই চন্দ্র মল্লিকার বাসার সামনে ঘাসের ওপর শুয়ে পড়েছিলাম।
তিনি বলেন, হোটেলে গিয়েছিলাম ভাত খেতে। ১০ টাকায় ডাল-ভাতও হয় না, তাই চলে এসেছি। পরিস্থিতি আর নিয়তি এখানে নিয়ে এসেছে। অসহায় ছেলের বোঝা হয়ে থাকতে বড় কষ্ট হয়। এ ব্যাপারে উপস্থিত সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানান।
তিনি জানান, মানিক চন্দ্র সানা তালিকা জমা দেওয়ার পর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বরও মানিক চন্দ্র সানার নাম তালিকাভূক্ত করেননি। তাকে বলেছি এর পরের তালিকায় অবশ্যই তার নাম দেব।
সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হুমায়ন কবীর জানান, ওই বৃদ্ধের নাম তার ওয়ার্ডের প্রতিনিধি আমাদের দেননি। আমরা চেষ্টা করছি কোনও ভাবে তাকে সহযোগিতা করা যায় কিনা।