ঢাকা ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জেলা জজের দুর্নীতি আড়াল করতে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo সাবেক ছাত্রদল নেতা জসীম উদ্দীনের খালার বনশ্রীর বাসায় সন্ত্রাসীদের হামলা Logo জুড়ি বিএনপির সভাপতি সেলিম’র অশ্লীল কথোপকথনের অডিও ভাইরাল Logo কাস্টমস কমিশনার মাহবুবুর রহমানের শত কোটি টাকার সাম্রাজ্য: দুদকের প্রশ্নবিদ্ধ নীরবতা! Logo ফায়ার সার্ভিসে চাকুরী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ Logo ডিজিটাল ও আধুনিক সেবায় অনন্য ডেমরা ভূমি অফিস Logo সাংবাদিক সাগর চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় ডিইউজের উদ্বেগ Logo জাতীয় কবি নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকীতে জিয়া শিশুকিশোর মেলার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল Logo “ফায়ার সার্ভিসে দুর্নীতির সিন্ডিকেট: ডিজি জাহিদ কামালের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ”- প্রথম পর্ব Logo অর্থপাচার বিরোধী অভিযানে সাফল্যে ষড়যন্ত্রের টার্গেটে বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুল ইসলাম

অর্থপাচার বিরোধী অভিযানে সাফল্যে ষড়যন্ত্রের টার্গেটে বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুল ইসলাম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১২:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫ ২১৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত ছবি ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কোনো ব্যক্তিগত বিতর্ক নয়—বরং অর্থপাচার বিরোধী চলমান অভিযানের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।

সাফল্যের কারণে টার্গেট

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে বিএফআইইউর নেতৃত্বে গঠিত যৌথ তদন্ত দল বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ শনাক্ত ও ফিরিয়ে আনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকার সম্পদ শনাক্ত ও জব্দ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় আরও ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বিদেশে শনাক্ত করা হয়েছে।

এস আলম গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংকসহ হাজারো প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে এই প্রক্রিয়ায়। স্বাভাবিকভাবেই এই সাফল্যে ক্ষুব্ধ পাচারকারী চক্র এখন প্রতিশোধ নিতে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভাইরাল ছবির পেছনে চক্র

সম্প্রতি শাহীনুল ইসলামের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো পুরনো ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে অশ্লীলভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন,
“এটি কোনো চাকরিবিধিভঙ্গ নয়, বরং একটি সুস্পষ্ট সাইবার অপরাধ। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটি ছড়ানো হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী এটি অজামিনযোগ্য অপরাধ।”

মনোবল ভাঙার চেষ্টা

বিএফআইইউ দেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে অর্থপাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধে কাজ করে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এ ধরনের কুৎসা কর্মকর্তাদের মনোবল দুর্বল করতে পারে, যার ফলে চলমান অভিযান ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, “গত এক বছরে তিনি একাধিক বড় সাফল্য অর্জন করেছেন। অর্থপাচারকারীদের আঘাত করায় এখন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।”

এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশে অর্থপাচার বিরোধী যুদ্ধ যখন সাফল্যের পথে, তখন প্রধান যোদ্ধাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন এখন—এই ষড়যন্ত্রের জালে কি রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টা দুর্বল হবে, নাকি শাহীনুল ইসলাম ও তার দল আগের চেয়েও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাবেন?

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অর্থপাচার বিরোধী অভিযানে সাফল্যে ষড়যন্ত্রের টার্গেটে বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুল ইসলাম

আপডেট সময় : ১১:১২:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত ছবি ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কোনো ব্যক্তিগত বিতর্ক নয়—বরং অর্থপাচার বিরোধী চলমান অভিযানের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।

সাফল্যের কারণে টার্গেট

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে বিএফআইইউর নেতৃত্বে গঠিত যৌথ তদন্ত দল বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ শনাক্ত ও ফিরিয়ে আনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকার সম্পদ শনাক্ত ও জব্দ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় আরও ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বিদেশে শনাক্ত করা হয়েছে।

এস আলম গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংকসহ হাজারো প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে এই প্রক্রিয়ায়। স্বাভাবিকভাবেই এই সাফল্যে ক্ষুব্ধ পাচারকারী চক্র এখন প্রতিশোধ নিতে মাঠে নেমেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভাইরাল ছবির পেছনে চক্র

সম্প্রতি শাহীনুল ইসলামের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো পুরনো ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে অশ্লীলভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন,
“এটি কোনো চাকরিবিধিভঙ্গ নয়, বরং একটি সুস্পষ্ট সাইবার অপরাধ। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটি ছড়ানো হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী এটি অজামিনযোগ্য অপরাধ।”

মনোবল ভাঙার চেষ্টা

বিএফআইইউ দেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে অর্থপাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তার রোধে কাজ করে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এ ধরনের কুৎসা কর্মকর্তাদের মনোবল দুর্বল করতে পারে, যার ফলে চলমান অভিযান ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, “গত এক বছরে তিনি একাধিক বড় সাফল্য অর্জন করেছেন। অর্থপাচারকারীদের আঘাত করায় এখন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।”

এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশে অর্থপাচার বিরোধী যুদ্ধ যখন সাফল্যের পথে, তখন প্রধান যোদ্ধাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন এখন—এই ষড়যন্ত্রের জালে কি রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টা দুর্বল হবে, নাকি শাহীনুল ইসলাম ও তার দল আগের চেয়েও দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাবেন?