সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও সেবাগ্রহীতার আনন্দ প্রকাশ
রাজউকের নথি গায়েবের মূল হোতা নাসির উদ্দীন স্ট্যান্ড রিলিজ

- আপডেট সময় : ০৮:০৩:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৯৭৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজউকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা নথি গায়েবের মূল হোতা সদস্য (পরিকল্পনা) রাজউক নাসির উদ্দিনকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষন-১ শাখা হতে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে পরিচালক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) তে বদলী করা হয়। তার এ বদলীতে রাজউকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সেবাগ্রহীতার মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে।
বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশ, নাসির উদ্দিন একজন টেকনিক্যাল পার্সন না হয়েও অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে পরিকল্পনা বিভাগের দায়িত্ব নিয়ে বিসি কমিটির বিভিন্ন সভায় সবাইকে এড়িয়ে নিজ ক্ষমতাবলে অনৈতিকভাবে প্ল্যান পাশ করিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। তার এ কাজে সহয়তা করতে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন জোন এর অথরাইজড অফিসার থেকে শুরু করে ইন্সপেক্টর পর্যন্ত ঘুষ গ্রহনের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ন হতে হয়।
রাজউকে ঘুষের চাহিদা যেন শেষ হয় না। একবার টাকা নিয়ে আরো লোভের কারনে বিভিন্ন পর্যায়ে নাসির উদ্দিনের নির্দেশে নথি আটকে যেত। টাউন ইম্প্রুভমেন্ট এ্যাক্ট অনুযায়ী ইমারত নির্মান কমিটি বা বিসি কমিটির সদস্য হতে হলে তাকে হতে হবে ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট বা প্ল্যানার। এ বাধ্যবাধকতা থাকলেও নিজের প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিসি কমিটির সভাপতির পদ দখল করে রেখেছিলেন বহুদিন। তার কালেকশন মজবুত করতে বিসি কমিটির আওতায় নয় তলা পর্যন্ত তালিকাভূক্ত থাকলেও এটাকে এড়িয়ে তিনি আট তলা পর্যন্ত বিসি কমিটির অনুমোদন লাগবে মর্মে প্রচলন করে নিজেই সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করে সর্বময় ক্ষমতা তার হাতে নিয়ে আসেন। নন টেকনিক্যাল জোন পরিচালকদের এ দায়িত্ব নেয়া আইনের সম্পুর্ন ব্যত্যয়।
ডিজিটাল ও এমআইএস এর নামে রাজউকের দীর্ঘসূত্রিতা ও অনিয়ম ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে এটা সেবা গ্রহীতা পর্যায়ে সর্বজন স্বীকৃত। আগে যেখানে ২/৩ মাসে ছাড়পত্র থেকে শুরু করে নকশা অনুমোদিত হত সেটা এখন ১-২ বছর সময়েও হচ্ছেনা। ইতোমধ্যে রহস্যজনক কারনে রাজউকের সার্ভার থেকে ত্রিশ হাজার নথি গায়েব হয়ে গিয়েছিল যা পরবর্তীতে উদ্ধার করা হয়েছে। এই কার্যক্রম রাজউকের এমআইএস শাখার আওতাধীন যার দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখা প্রধান সদস্য (পরিকল্পনা) নাসির উদ্দীন কোন ভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। পরবর্তীতে প্রতিটি নথি রিসাবমিটের নামে নাসির উদ্দীন রাজউকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কোটি কোটি টাকা ঘুষ হাতিয়ে নিয়েছে। ইতিমধ্যে তার অন্যতম সহযোগী আরেক মহা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা সদস্য (উন্নয়ন) তন্ময় দাসকেও বদলী করা হয়েছে। নাসির উদ্দিন এবং তন্ময় দাস এর পরিকল্পনা মাফিক সব প্ল্যানের ফাইল যাতে তাদের কাছে থাকে সেজন্য বৃহদায়তন কমিটির আওতায় ৯ তলার পরিবর্তে ৮ তলা করে নেন। নাসির উদ্দিনের ঘুষ আদায়ে প্রধান সহযোগী হিসাবে বর্তমান অথরাইজড অফিসার হাসান এবং ইমরুল দায়িত্ব পালন করছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। তাছাড়া রাজউকে বৃহদায়তন প্রকল্পের নকশা মানুয়ালি স্বাক্ষরের বিধান না থাকলেও নাসির উদ্দিন ম্যানুয়ালি স্বাক্ষর প্রচলন সহ চাহিদা মাফিক টাকা না পেলে আলোচনা করুন মর্মে নোট দিয়ে পুনরায় উপস্থানের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে জানা যায় তিনি ও তার সিন্ডিকেট ইতিমধ্যে প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে দায়িত্ব পালন করাকালীন সময়ে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এ মহাদুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে অপসারন করায় রাজউকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও সেবাগ্রহীতার মধ্যে প্রানের সঞ্চার হয়েছে।