কর্মী থেকে অগ্নিবীর: আধুনিক ফায়ার সার্ভিসের রূপকার যিনি
- আপডেট সময় : ০১:১৬:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩ ৫৫৭ বার পড়া হয়েছে
এইচ আর শফিক: দেশের অগ্নি দুর্যোগে অথবা অথৈ নদীতে ডুবে যাওয়া প্রাণের খোঁজে। প্রান থেকে প্রাণী যেখানে জীবনের ঝুঁকি -অগ্নি দুর্যোগ, সেখানেই মানব সেবায় প্রাণ বাজি রেখে দেশের মানুষের জান মাল রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়েন ‘অগ্নিবীর’ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিলডিফেন্সের সাহসী কর্মীরা।
সাভারের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি থেকে তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্প। দেশজুড়ে অগ্নিকান্ড, সড়ক দুর্ঘটনা, ভবন ও ভূমি ধস, লঞ্চডুবি সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাহসী অগ্নিবীরেরা যেন সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে উদ্ধারকারী হিসেবে উদয় হয়।
গতি, সেবা ও ত্যাগের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা অবলীলায় ছুটে চলেন দেশ ও মানবসেবায়। মৃত্যুঝুঁকি জেনেও ঝাঁপিয়ে পড়েন যে কোনো কঠিন দুর্যোগে। ফায়ার কর্মীদের প্রতি আস্থার জায়গাটি এতটাই যে; ভবনের কার্নিশ বা গাছের ডাল, এমনকি ভবনের সরু পথে আটকে থাকা বিড়ালছানা অথবা বৈদ্যুতিক তারে পাখি উদ্ধারেও ডাক পড়ে তাদের। সাধারণ মানুষের জীবন বাঁচাতে তাদের আত্মসমর্পণ পারিবারিক ভবিষ্যৎ বিসর্জন দিয়ে দেশ ও জাতির দুর্যোগ মোকাবেলায় বদ্ধপরিকর। নানামুখী চাওয়া পাওয়ার সংকট অপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠানটি একটি সাহসী ও পূর্ণাঙ্গ সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে।
মাত্র কয়েক বছর আগেও যে প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষের কাছে জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত মনে হতো। এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মপরিধি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে কোন ধারণাই ছিল না। সেই প্রতিষ্ঠানটি আজ জাতির সকল ক্রান্তি কারে সবচেয়ে সাহসী ভূমিকা পালন করে আসছে।
প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সকল দুর্যোগে সবার প্রথমেই ওর ধরে যে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে আসে সেটাই বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স। অগ্নি প্রতিরোধ ও অগ্নি নির্বাপণ থেকে শুরু করে নদীপথ ও সড়কপথের যেকোনো দুর্ঘটনায় নিরলসভাবে উদ্ধারকাজ করে যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটির সদস্যগণ।
মানব সেবী এই প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের চাওয়া পাওয়ার খারাপ ছিল আকাশ পাতাল। তাদের সাহসী কর্মকান্ড ও আত্মত্যাগের রাষ্ট্রীয় কোন স্বীকৃতি না থাকলেও নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যের জীবন রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর সেবাধর্মী এ প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির সদস্যদের হাজারো না পাওয়ার কান্না অভিযোগ মনোযোগ আকুতি সবকিছুর ত্রাণকর্তা হিসেবে আবিভূত হয়েছিলেন বর্তমান মহাপরিচালক।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মীদের প্রাণের দাবি দাওয়া সহ বহুমুখী সমৃদ্ধিও পেছনে যার মেধা মনন দক্ষতা ও নিরলস পরিশ্রম আর প্রজ্ঞাপূর্ণ নেতৃত্ব আজকের সত্যিকারের সেবামূলক ও কর্মীবান্ধব হিসাবে পূর্ণাঙ্গ শক্তি লাভ করেছে তিনি প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন। একজন নীতিবান ও যোগ্য সেনাপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির সাহসী এবং মানবিক নেতৃত্ব গুটিকয়েক শব্দে প্রকাশ করার মত নয়। ফায়ার সার্ভিসের সাহসী কর্মীরা মানব সেবায় আজ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যেতে সক্ষম হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে আলাপ পেয়ে উঠে আসে তাদের বিগত দিনের পরিস্থিতির কথা। তারা জানান, এক সময় সমাজে আমাদের চাকুরীর কোন সম্মান ছিলনা, সমাজের মানুষ জানতোইনা ফায়ার সার্ভিস কি। সেই ধরতে থাকা ফায়ার সার্ভিস আজ দেশের মানব সেবায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের মহাপরিচালক স্যারের কর্মপরিকল্পনা ও নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক হিসাবে যোগদান করেই গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। এছাড়াও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিনের কর্মপরিকল্পনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে বেশ কয়েকজন চৌকস ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা অত্যন্ত প্রহরীর মত কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের কর্মফলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আজ জনবান্ধব একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। আগামীতে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন।
প্রতিষ্ঠানটি আগামীতে আরো বেশি সেবাবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে কর্মোঠ ও যোগ্য জনবল বাড়ানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই সাথে অধিদপ্তরের সুনামক্ষুন্নকারী কর্মকর্তাদের আনা হচ্ছে জবাদিহিতার আওতায়। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে আইনানুসারে ব্যবস্থা। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না এই অধিদপ্তরে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন যোগদানের পরপরই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা চরম বিপাকে পরেছেন।
সূত্র জানায়, মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিনের অন্যতম সফলতা ও কর্মপরিকল্পনায় সু উচ্চ ভবনের আগুন নেভানো এবং উদ্ধার কাজ সহজতর করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের কার্যক্রমে যুক্ত হলো মইবাহী (টার্ন টেবিল ল্যাডার-টিটিএল) গাড়ি। সেবা সংস্থাটির কার্যক্রমে গতিশীলতা এবং আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতায় জার্মানি থেকে ৬৮ মিটার উচ্চতায় মইবাহী (টার্ন টেবিল ল্যাডার -টিটিএল) এই গাড়িটি এবারই প্রথম বাংলাদেশে আনা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে আর তিনটি মইবাহী গাড়ি আনা হবে। ফায়ার সার্ভিসের জন্য আরও ৩৫৭টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি জনবল ৩১ হাজার করার জন্য অর্গানোগ্রাম পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন যুক্ত হওয়া মইবাহী গাড়িটি ২৪ তলার আগুন নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। ১৮০০ লিটার পানি ধারণ ক্ষমতার এই গাড়িটির রয়েছে ডিজেলচালিত ইঞ্জিন। ২৫ ফুট দূরত্ব থেকে পানি ছুড়ে আগুন নেভাতে সাহায্য করবে এই সুউচ্চ মইবাহী গাড়িটি। এতে ফায়াস সার্ভিসের সক্ষমতা আরো বেড়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, কিছু দিনের মধ্যে সংযোজন হবে আরও তিনটি এ ধরনের সুউচ্চ মইবাহী গাড়ি। যদিও বাংলাদেশে এর ব্যবহার হবে প্রথম। চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, তুরস্ক ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ আগুন নিয়ন্ত্রণে এই গাড়িটি ব্যবহার করে আসছে। মেগিরাস এম৬৮এল ব্যান্ডের এই গাড়িতে তেলের ধারণক্ষমতা ৩০০ লিটার। এর ইঞ্জিন ফোর স্ট্রোক। ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ১২ হাজার ৮৮০ সিসি। পুরো গাড়িটির ওজন ৩৪ টন। ফোম ধারণ ক্ষমতা ২০০ লিটার। গাড়িটিতে ৮টি মইয়ের সংযোজন করা হয়েছে, যার উচ্চতা ৬৮ মিটার। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, মইবাহী এই গাড়িটি থেকে ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী ৮ থেকে ৯ মিনিটের মধ্যে পানি শেষ হয়ে যাবে। এই কম সময় তো আর আগুন নেভে না। সে কারণে এই গাড়িটি যখন উপরে উঠে যায় তখন পাইপের সঙ্গে নিচে আরেকটি পাইপের কানেকশন দেওয়া থাকবে। কোনও ওয়াটার সোর্সের সঙ্গে সেই পাইপের সংযোগ থাকবে। সংযোগ ঠিকঠাক হওয়ার পর আগুন লক্ষ্য করে পানি ছুড়তে থাকবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসে ততক্ষণ পর্যন্ত পানি ছোড়া সম্ভব হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিস আধুনিকায়নের আওতায় কুইক রেসপন্স টিম হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের জন্য আরও ৩৫৭টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমানে ১৯০টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। দিন দিন সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির কারণে ফায়ার সার্ভিসের এসব অ্যাম্বুলেন্স কাজ করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি নির্মাণের কাজও চলমান রয়েছে। মিরপুরে ফায়ার সার্ভিসের জন্য পাঁচতলা নিজস্ব হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। জানা গেছে, ২০০৯ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জনবল ছিল ৬ হাজারের সামান্য বেশি। বর্তমানে এই জনবল হয়েছে ১৪ হাজারের বেশি। ফায়ার স্টেশন নির্মাণের চলমান প্রকল্প শেষে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬ হাজার। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের জনবল ৩১ হাজার করার জন্য অর্গানোগ্রাম পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ফায়ারম্যানের পদের নাম ফায়ার ফাইটার এবং তাদের বেতন ১৮ থেকে ১৭ গ্রেডে উন্নত করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা এবং সদস্যদের মধ্যে কাজের গতি বেড়েছে। আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতায় দুটো মইবাহী (টার্ন টেবিল ল্যাডার-টিটিএল) গাড়ি যুক্ত হয়েছে। আগুন নেভাতে এবং উদ্ধার কাজে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর যে কোনো দুর্যোগ-দুর্ঘটনায় প্রথম সাড়াদানকারী সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। গতি, সেবা ও ত্যাগের মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে এ বিভাগের কর্মীরা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা মানুষের সেবায় নিয়োজিত। প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানে উন্নত করতে বর্তমান সরকার নানামুখী কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশের প্রতিটি উপজেলায় ন্যূনতম একটি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী ঘোষণা বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ও সর্বাধিক বাজেটের এই প্রকল্প একনেকে অনুমোদন লাভ করায় এই বিভাগের কর্মীরা আরো বেশি উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত।
প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আরো বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ৬২ হাজার আরবান ভলান্টিয়ার তৈরির কার্যক্রম পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৪৯ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক তৈরি হয়েছে। তাদের জন্য উদ্ধার সরঞ্জাম সংগ্রহের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। বস্তির আগুন নির্বাপণের জন্য বস্তিবাসীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ৯০০ স্বেচ্ছাসেবক। নৌ দুর্ঘটনায় ডুবুরি হিসেবে কাজ করার জন্য আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবকদের দেওয়া হয়েছে ডুবুরি প্রশিক্ষণ। আধুনিক সাজ-সরঞ্জামে পর্যাক্রম সমৃদ্ধ হচ্ছে এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। প্রশিক্ষণের মান উন্নয়নের জন্য বিদ্যমান ট্রেনিং কমপ্লেক্সকে যুগোপযোগী ট্রেনিং একাডেমিতে রূপান্তর এবং বৃহৎ পরিসরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিভাগের জন্য একটি বার্ন ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন নতুন ফায়ার স্টেশন নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানায় নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পরিদর্শন কার্যক্রম এবং পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ব্যবসায়ী ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সুবিধার্থে পরিচালনা করা হচ্ছে ফায়ার লাইসেন্স মেলা। এসব উদ্যোগ অত্র অধিদপ্তরকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নেয়ার নিরন্তর প্রয়াস।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন বলেন, সেবার সামর্থ্য বাড়ানোর পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ সম্মতিতে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা ও আন্তরিক উদ্যোগে এ বিভাগের সদস্যদের জীবন-মান উন্নত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অপারেশনাল কর্মীদের জন্য ঝুঁকিভাতা চালু, নন-ইউনিফর্ম কর্মীসহ সবার জন্য পূর্ণাঙ্গ রেশন সরবরাহ, দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি এবং বিভাগের প্রতিটি কর্মীর দীর্ঘদিনের দাবি খাকি পোশাক পরিবর্তন করে দুই রঙের নতুন পোশাক প্রবর্তন করা হয়েছে। এসব বিষয় বাস্তবায়নের ফলে এ বিভাগের কর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ও মনোবল বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভাগীয় কার্যক্রমে আশানুরূপ গতি সঞ্চারিত হয়েছে।
পরিচালক (প্রশাঃ ও অর্থ) যুগ্ম সচিব মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ রেশন এবং ঝুঁকি ভাতাসহ তাদের পদকের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সেবা সহজে গ্রহণে ১৬১৬৩ নম্বরের হটলাইন চালু করা হয়েছে। দেশের যেকোনও জায়গায় বসে সাধারণ মানুষ এখন ফায়ার সার্ভিসের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ ব্যবহার করেও সব তথ্য সংগ্রহ করতে পারছেন। তিনি বলেন, মহাপরিচালক মহোদয়ের নেতৃত্বে জনবল, প্রশিক্ষণ, অবকাঠামো, সরঞ্জাম সহ সকল ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের দক্ষতা ও সক্ষমতা স্বল্প সময়ে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বাহিনীর সেবার প্রতি মানুষের আস্থা যেমন বেড়েছে তার সাথে সঙ্গতি রেখে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর কর্মীদের জনসেবার প্রতি আন্তরিকতা ও দায়বদ্ধতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সাধারণ মানুষের কাছে একটি পরমসেবার প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, সুউচ্চ ভবনের আগুন নেভানো এবং উদ্ধার কাজে যুক্ত হওয়া মইবাহী (টার্ন টেবিল ল্যাডার-টিটিএল) গাড়িটি অধিদপ্তরের সক্ষমতা আরো বাড়িয়েছে। মহাপরিচালক মহোদয়ের আন্তরিক প্রচেষ্টায় অধিদপ্তরটি সেরা সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানে রূপ নিবে।