ঢাকা ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বিএনপি নেতা মাহিদুর রহমান নেতৃত্বের বিস্ময় Logo স্বৈরাচারের দোসর প্রধান বিচারপতির ধর্ম ছেলে পরিচয়ে মোজাম্মেলের অধর্ম! Logo রাজধানীতে মার্কেট দখল করতে গিয়ে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আটক Logo স্কুলের ভেতরে নিয়মিত চলে তাশ ও জুয়া! Logo চাঁদা চাওয়ায় দাকোপে ৫ আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা Logo ভোলা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আল আমিন সম্পাদক শামসউদ্দিন Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এর উদ্যোগে দুমকিতে ক্যারিয়ার সামিট অনুষ্ঠিত Logo সওজ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে প্রচারিত প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ Logo বিপ্লবী গান, আবৃত্তি এবং কাওয়ালী গানে মেতেছে আশা বিশ্ববিদ্যালয় Logo ছত্রিশ টাকার নকলনবীশ প্রভাবশালী কোটিপতি!




প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট নিরাপত্তা চেয়েও বাঁচতে পারেনি সাংবাদিক নাদিম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৫:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩ ২০৮ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি, জামালপুর: তিন মাস আগেও জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হামলার শিকার হয়েছিলেন। সে সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে নিজের জীবনের নিরাপত্তা ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁচতে পারলেন না। তিন মাস পর সন্ত্রাসীদের হামলায়ই প্রাণ গেল সাংবাদিক নাদিমের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টা দিকে বাড়ি ফেরার সময় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর হামলা করা হয়। ওই হামলার ঘটনায় অভিযোগ ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগমের বিরুদ্ধে। পরে সাংবাদিক নাদিম বকশীগঞ্জ থানায় শাহীনা বেগমসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৫০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। এর কয়েকদিন পরেই জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে নাদিম ওই হামলার ঘটনায় সমঝোতা করেন।

সাংবাদিক নাদিমের নিজের ও‌ পরিবারের নিরাপত্তা চাওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই ভিডিওতে নাদিম বলেন, আমি একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চাই, আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই। আমি যেন সুষ্ঠুভাবে সাংবাদিকতা করতে পারি এটার নিশ্চয়তা চাই।

নিহত সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের অভিযোগ, নাদিম অনেকবার হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু তারা কখনো কোনো বিচার পাননি।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, সেই সময়ের হামলার ঘটনায় অভিযোগ করা হয়েছিল। তার পরেই জেলা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে সাংবাদিক নাদিমের ওই ঘটনা নিয়ে সমঝোতা হয়।

নাদিম জীবনের নিরাপত্তা পেয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেই ঘটনা সমঝোতা হয়ে যায়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর স্ত্রীর তালাক নিয়ে সংবাদ করেন নাদিম। তারপর এ ঘটনা ঘটে।

সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে ওসি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমি এসপি স্যারসহ নিহত সাংবাদিকের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। এখনো মামলা হয়নি। তারা রাতে আসবেন, রাতেই হয়তো মামলা হবে। এখন পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ও তার ছেলে পলাতক রয়েছেন। তাদেরকে আটক করতে টিম মাঠে রয়েছে। আমরা রাতের মধ্যেই হয়তো আটক করতে পারবো।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌরসভার পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিম। তাকে ১০-১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত পিটিয়ে আহত করেন। পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। পরে রাত দেড়টার দিকে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিকট নিরাপত্তা চেয়েও বাঁচতে পারেনি সাংবাদিক নাদিম

আপডেট সময় : ১১:৪৫:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩

জেলা প্রতিনিধি, জামালপুর: তিন মাস আগেও জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হামলার শিকার হয়েছিলেন। সে সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে নিজের জীবনের নিরাপত্তা ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। কিন্তু বাঁচতে পারলেন না। তিন মাস পর সন্ত্রাসীদের হামলায়ই প্রাণ গেল সাংবাদিক নাদিমের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টা দিকে বাড়ি ফেরার সময় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর হামলা করা হয়। ওই হামলার ঘটনায় অভিযোগ ছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগমের বিরুদ্ধে। পরে সাংবাদিক নাদিম বকশীগঞ্জ থানায় শাহীনা বেগমসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৫০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। এর কয়েকদিন পরেই জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে নাদিম ওই হামলার ঘটনায় সমঝোতা করেন।

সাংবাদিক নাদিমের নিজের ও‌ পরিবারের নিরাপত্তা চাওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই ভিডিওতে নাদিম বলেন, আমি একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চাই, আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই। আমি যেন সুষ্ঠুভাবে সাংবাদিকতা করতে পারি এটার নিশ্চয়তা চাই।

নিহত সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের অভিযোগ, নাদিম অনেকবার হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু তারা কখনো কোনো বিচার পাননি।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, সেই সময়ের হামলার ঘটনায় অভিযোগ করা হয়েছিল। তার পরেই জেলা আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে সাংবাদিক নাদিমের ওই ঘটনা নিয়ে সমঝোতা হয়।

নাদিম জীবনের নিরাপত্তা পেয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেই ঘটনা সমঝোতা হয়ে যায়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর স্ত্রীর তালাক নিয়ে সংবাদ করেন নাদিম। তারপর এ ঘটনা ঘটে।

সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে ওসি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমি এসপি স্যারসহ নিহত সাংবাদিকের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। এখনো মামলা হয়নি। তারা রাতে আসবেন, রাতেই হয়তো মামলা হবে। এখন পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ও তার ছেলে পলাতক রয়েছেন। তাদেরকে আটক করতে টিম মাঠে রয়েছে। আমরা রাতের মধ্যেই হয়তো আটক করতে পারবো।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌরসভার পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিম। তাকে ১০-১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত পিটিয়ে আহত করেন। পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। পরে রাত দেড়টার দিকে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তার মৃত্যু হয়।