ঢাকা ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




কুমিল্লা দক্ষিণ আ.লীগের কমিটিতে ভর করেছে রাজাকার-শিবির বাদ পরেছেন ত্যাগীরা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ১৮০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:

বিতর্কের মুখে পড়েছে সদ্য ঘোষিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর পরই শুরু হয় এই বিতর্ক। যুদ্ধপরাধীর ছেলে, ছাত্র শিবির ক্যাডার, হত্যা মামলার আসামী, জাসদ নেতা, বিএনপি নেতা, ফ্রিডম পার্টির সাবেক নেতা, এমনকি চাঁদপুর ও নোয়াখালীর বাসিন্দাকেও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ দেওয়া সহ রয়েছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ।
জানা গেছে, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এতে সভাপতি করা হয় আ হ ম মোস্তফা কামালকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় মো. মুজিবুল হককে। সম্মেলনের চার মাসের মাথায় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে ১১ জনকে সহসভাপতি, ৩ জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ৩ জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৭ জনকে সম্পাদক ও সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে ৩৯ জনকে।
এই কমিটিতে বিতর্কিতদের পদ পাওয়া ও দলের বেশ কিছু ত্যাগী নেতা বাদ পড়ায় সংক্ষুব্ধ হয়ে ত্যাগী নেতাদের পক্ষে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর গত ১২ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ কর্মী।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর অভিযোগে বলা হয়, গত ৯ এপ্রিল কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশিত হওয়ার পর আমরা দেখতে পেলাম আমার মত আরও অনেকেই বাদ পড়েছেন। যারা গত ৩ দশকের অধিক সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার স্থানীয় রাজনীতিতে নিবেদিত প্রাণ কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। অথচ তাঁরা পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়েছেন। একজন সদস্য হিসেবেও আমাদেরকে রাখা হয়নি। এমনকি অন্য সহযোগী সংগঠনে পদ থাকার পরেও এখানে তাদেরকে পদ দেয়া হয়েছে। এমন লোককেও স্ব-সম্মানে স্থান দেয়া হয়েছে যার পিতা যুদ্ধঅপরাধী ও খুনি। এছাড়াও রয়েছে শিবির নেতা, বিএনপি নেতা, ফ্রিডম পার্টির নেতা, খুনের মামলার আসামী।

লিখিত অভিযোগের সাথে অভিযোগকারী বিতর্কিতদের একটি তালিকা সংযুক্ত করেছেন। সংযুক্ত বিতর্কিত তালিকা থেকে জানা গেছে,

পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদ পাওয়া সামসু উদ্দিন কালুর পিতা আকবর আলী একজন যুদ্ধাপরাধী, ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা কলিমুল্লাহকে হত্যা মামলার আসামি। অন্নদা, যশোদা, জগবন্ধুদের জমি আত্মসাৎ করেন। আকবরের বরুদ্ধে লাকসাম থানায় মামলা (নং- ১৮/১৯৭২) হয়। এছাড়া এই কালু বিএনপি, জাতীয়পার্টি হয়ে আওয়ামী লীগে এসে আসন গেড়েছেন।
সহ-সভাপতি এ.এম শাহাদাত হোসেন (তসলিম) যিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে আছেন।যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন (স্বপন), যিনি বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা পলাশ হত্যার অন্যতম আসামী ছিলেন। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী রিয়ার এডমিরার এম.এ তাহেরের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু তাকে কোন শাস্তিতো দেয়া হয়নি উপরন্তু তাঁকে জেলা আওয়ামী লীগের পদ দেয়া হয়েছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী দত্ত কুমিল্লা মহানগরের বাসিন্দা তাকেও কমিটিতে পদ দেওয়া হয়ছে।প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালেদ আহমেদ তালুকদার (চঞ্চল), তিনি চাঁদপুরের বাসিন্দা। অথচ তাঁকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে পদায়ন করা হয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এহতেশামুল হাসান ভূঁইয়া (রুমি), তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক। অথচ তাঁকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে পদ দেওয়া হয়েছে। আরেক হাইব্রিড নেতা আলী আকবর যাকে দেওয়া হয়েছে কোষাধ্যক্ষ পদ।
কথিত হাইব্রিড নেতা আবদুস সালাম বেগকে দেওয়া হয়েছে যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক। নোয়াখালীর রুপম মজুমদারকে করা হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোন ভাবেই তিনি আসতে পারেন না।
সদস্য আবদুল মালেক, নাঙ্গলকোট পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। দক্ষিণ জেলা যুবলীগেরও সদস্য সদস্য মো. বক্তার হোসেনকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগেও পদ দেওয়া হয়েছে।
উপ-প্রচার সম্পাদক কামরুল হাসান মুরাদ, তিনি চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁকেও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে পদ দেওয়া হয়েছে।তিনি জামাত পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই এডভোকেট মহসিন ভূঁইয়া পঞ্চগড় জেলা জামাতের আমির। কখনো আওয়ামী লীগের জন্য কাজ না করা এমরানুল হক কামাল ওরফে ভার্ড কামালকেও কমিটির সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লজ্জাজনক অর্থ কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িত ও অর্থ মন্ত্রীর আপন ভাই গোলাম সারোয়ারকে সদস্য করা হয়েছে। অথচ তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান। আর্থ মন্ত্রীর আরেক ভাই ও লালমাই উপজেলা আওয়ামী সভাপতি আবদুল হামিদকে সদস্য করা হয়েছে। তাঁর ছেলে শাহীন লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক।
দল না করেও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ীক সহযোগি যোগ্যতায় সদস্য হয়েছে সদস্য হয়েছেন সদস্য মো. কামাল উদ্দিন।

ছাত্র শিবিরের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সাবেক নেতা এ বি এম এ বাহারকে করা হয়েছে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। পদের ক্ষমতা খাটিয়ে আড়ালে জামায়াত লোকদের রক্ষায় কাজ করেন বাহার। এমন কি জামায়াতের হয়ে কাজ করা বাহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। সাবেক রেল মন্ত্রী মুজিবুল হকের ভাতিজা পরিচয়ে তিনি এই পদে বসেছেন।
কমিটিতে বিতর্কীতদের স্থান দেওয়ার পাশাপাশি উপদেষ্টা পদে রয়েছে নানা অভিযোগ:
দক্ষিণ আওয়ামীলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট আবুল খায়ের। কমিটিতে শিবির নেতা এক ভাতিজাকে পদ দেওয়া পরে আরেক আরেক ভাতিজা খায়ের কে করা হয়েছে উপদেষ্টা। ফ্রিডম পার্টির এ্যড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছিলেন পরে আন্দোলনের মুখে বাদ পড়েন। তিনি অনেক সিনিয়র আইনজীবিকে ডিঙ্গিয়ে বিস্ময়করভাবে জেলা পিপিও হয়েছিলেন। পিপি থাকাকালীন সময়ে বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে ঠিক পূর্ব মুহুর্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। প্রধানমন্ত্রী দলের সভাপতির নির্দেশের পরেও সেই মামলা প্রত্যাহার হয় নি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল ও মুজিবুল হক।

জানতে চাইলে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হলে কেউই নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজী হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকন জ্যেষ্ঠ নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, এই কমিটিতে যে কয়েকজন বিতর্কিত মুখ এসেছে তা সবাই জানেন। তাছাড়া স্বজনপ্রীতি যে হয়নি তা বলব না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিতর্কিত ব্যক্তিদের অধিকাংশই সাবেক রেলমন্ত্রী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হকের সুপারিশে এসেছে। এছাড়াও তাঁর আপন ভাই, ভাতিজা কমিটিতে স্থান পেয়েছে।
সামগ্রীক বিষয়ে জানতে মুজিবুল হকের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তাঁর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এমনকি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায় (ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকেও ফোনে পাওয়া যায়নি)।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




কুমিল্লা দক্ষিণ আ.লীগের কমিটিতে ভর করেছে রাজাকার-শিবির বাদ পরেছেন ত্যাগীরা!

আপডেট সময় : ১২:৪৫:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা:

বিতর্কের মুখে পড়েছে সদ্য ঘোষিত কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর পরই শুরু হয় এই বিতর্ক। যুদ্ধপরাধীর ছেলে, ছাত্র শিবির ক্যাডার, হত্যা মামলার আসামী, জাসদ নেতা, বিএনপি নেতা, ফ্রিডম পার্টির সাবেক নেতা, এমনকি চাঁদপুর ও নোয়াখালীর বাসিন্দাকেও পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ দেওয়া সহ রয়েছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ।
জানা গেছে, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। এতে সভাপতি করা হয় আ হ ম মোস্তফা কামালকে এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় মো. মুজিবুল হককে। সম্মেলনের চার মাসের মাথায় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে ১১ জনকে সহসভাপতি, ৩ জনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ৩ জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৭ জনকে সম্পাদক ও সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে ৩৯ জনকে।
এই কমিটিতে বিতর্কিতদের পদ পাওয়া ও দলের বেশ কিছু ত্যাগী নেতা বাদ পড়ায় সংক্ষুব্ধ হয়ে ত্যাগী নেতাদের পক্ষে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর গত ১২ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ কর্মী।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর অভিযোগে বলা হয়, গত ৯ এপ্রিল কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশিত হওয়ার পর আমরা দেখতে পেলাম আমার মত আরও অনেকেই বাদ পড়েছেন। যারা গত ৩ দশকের অধিক সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার স্থানীয় রাজনীতিতে নিবেদিত প্রাণ কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। অথচ তাঁরা পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়েছেন। একজন সদস্য হিসেবেও আমাদেরকে রাখা হয়নি। এমনকি অন্য সহযোগী সংগঠনে পদ থাকার পরেও এখানে তাদেরকে পদ দেয়া হয়েছে। এমন লোককেও স্ব-সম্মানে স্থান দেয়া হয়েছে যার পিতা যুদ্ধঅপরাধী ও খুনি। এছাড়াও রয়েছে শিবির নেতা, বিএনপি নেতা, ফ্রিডম পার্টির নেতা, খুনের মামলার আসামী।

লিখিত অভিযোগের সাথে অভিযোগকারী বিতর্কিতদের একটি তালিকা সংযুক্ত করেছেন। সংযুক্ত বিতর্কিত তালিকা থেকে জানা গেছে,

পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি পদ পাওয়া সামসু উদ্দিন কালুর পিতা আকবর আলী একজন যুদ্ধাপরাধী, ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা কলিমুল্লাহকে হত্যা মামলার আসামি। অন্নদা, যশোদা, জগবন্ধুদের জমি আত্মসাৎ করেন। আকবরের বরুদ্ধে লাকসাম থানায় মামলা (নং- ১৮/১৯৭২) হয়। এছাড়া এই কালু বিএনপি, জাতীয়পার্টি হয়ে আওয়ামী লীগে এসে আসন গেড়েছেন।
সহ-সভাপতি এ.এম শাহাদাত হোসেন (তসলিম) যিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে আছেন।যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন (স্বপন), যিনি বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা পলাশ হত্যার অন্যতম আসামী ছিলেন। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী রিয়ার এডমিরার এম.এ তাহেরের বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু তাকে কোন শাস্তিতো দেয়া হয়নি উপরন্তু তাঁকে জেলা আওয়ামী লীগের পদ দেয়া হয়েছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পার্থ সারথী দত্ত কুমিল্লা মহানগরের বাসিন্দা তাকেও কমিটিতে পদ দেওয়া হয়ছে।প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালেদ আহমেদ তালুকদার (চঞ্চল), তিনি চাঁদপুরের বাসিন্দা। অথচ তাঁকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে পদায়ন করা হয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এহতেশামুল হাসান ভূঁইয়া (রুমি), তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক। অথচ তাঁকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে পদ দেওয়া হয়েছে। আরেক হাইব্রিড নেতা আলী আকবর যাকে দেওয়া হয়েছে কোষাধ্যক্ষ পদ।
কথিত হাইব্রিড নেতা আবদুস সালাম বেগকে দেওয়া হয়েছে যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক। নোয়াখালীর রুপম মজুমদারকে করা হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোন ভাবেই তিনি আসতে পারেন না।
সদস্য আবদুল মালেক, নাঙ্গলকোট পৌরসভার মেয়র এবং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। দক্ষিণ জেলা যুবলীগেরও সদস্য সদস্য মো. বক্তার হোসেনকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগেও পদ দেওয়া হয়েছে।
উপ-প্রচার সম্পাদক কামরুল হাসান মুরাদ, তিনি চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁকেও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে পদ দেওয়া হয়েছে।তিনি জামাত পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই এডভোকেট মহসিন ভূঁইয়া পঞ্চগড় জেলা জামাতের আমির। কখনো আওয়ামী লীগের জন্য কাজ না করা এমরানুল হক কামাল ওরফে ভার্ড কামালকেও কমিটির সদস্য পদ দেওয়া হয়েছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লজ্জাজনক অর্থ কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িত ও অর্থ মন্ত্রীর আপন ভাই গোলাম সারোয়ারকে সদস্য করা হয়েছে। অথচ তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান। আর্থ মন্ত্রীর আরেক ভাই ও লালমাই উপজেলা আওয়ামী সভাপতি আবদুল হামিদকে সদস্য করা হয়েছে। তাঁর ছেলে শাহীন লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক।
দল না করেও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ীক সহযোগি যোগ্যতায় সদস্য হয়েছে সদস্য হয়েছেন সদস্য মো. কামাল উদ্দিন।

ছাত্র শিবিরের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সাবেক নেতা এ বি এম এ বাহারকে করা হয়েছে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। পদের ক্ষমতা খাটিয়ে আড়ালে জামায়াত লোকদের রক্ষায় কাজ করেন বাহার। এমন কি জামায়াতের হয়ে কাজ করা বাহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। সাবেক রেল মন্ত্রী মুজিবুল হকের ভাতিজা পরিচয়ে তিনি এই পদে বসেছেন।
কমিটিতে বিতর্কীতদের স্থান দেওয়ার পাশাপাশি উপদেষ্টা পদে রয়েছে নানা অভিযোগ:
দক্ষিণ আওয়ামীলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট আবুল খায়ের। কমিটিতে শিবির নেতা এক ভাতিজাকে পদ দেওয়া পরে আরেক আরেক ভাতিজা খায়ের কে করা হয়েছে উপদেষ্টা। ফ্রিডম পার্টির এ্যড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছিলেন পরে আন্দোলনের মুখে বাদ পড়েন। তিনি অনেক সিনিয়র আইনজীবিকে ডিঙ্গিয়ে বিস্ময়করভাবে জেলা পিপিও হয়েছিলেন। পিপি থাকাকালীন সময়ে বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে ঠিক পূর্ব মুহুর্তে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। প্রধানমন্ত্রী দলের সভাপতির নির্দেশের পরেও সেই মামলা প্রত্যাহার হয় নি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল ও মুজিবুল হক।

জানতে চাইলে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হলে কেউই নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজী হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকন জ্যেষ্ঠ নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, এই কমিটিতে যে কয়েকজন বিতর্কিত মুখ এসেছে তা সবাই জানেন। তাছাড়া স্বজনপ্রীতি যে হয়নি তা বলব না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিতর্কিত ব্যক্তিদের অধিকাংশই সাবেক রেলমন্ত্রী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হকের সুপারিশে এসেছে। এছাড়াও তাঁর আপন ভাই, ভাতিজা কমিটিতে স্থান পেয়েছে।
সামগ্রীক বিষয়ে জানতে মুজিবুল হকের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তাঁর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এমনকি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায় (ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকেও ফোনে পাওয়া যায়নি)।