৯ হাজার বছর আগের ‘ভয়ঙ্কর হত্যালীলা’র রহস্য উদ্ধার!

- আপডেট সময় : ০৩:৪৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০১৯ ২১৪ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক:
বাঁচতে কে না ভালবাসে! জীব বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের তত্ত্ব অনুযায়ী, প্রতিটি জীবই নিজের অস্তিত্ব প্রমাণে সংগ্রাম করে চলেছে অনবরত। যারা হেরে গেছে, কালচক্রের অতল গহ্বরে ক্রমশ তলিয়ে গেছে। এরকমই এক হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার খোঁজ মিলল এবার।
প্রায় নয় হাজার বছর আগে মধ্য প্রাচ্যে এখন যে জায়গাকে আমরা তুরস্ক বলে চিনি, সেখানেই গড়ে উঠেছিল এই সভ্যতা। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে খ্রিষ্টপূর্ব ৭১০০ সাল থেকে ৫৯৫০ সাল পর্যন্ত ছিল এর সময়কাল।
মূলত নব্য প্রস্তর যুগে এই সভ্যতা গড়ে ওঠে। দক্ষিণ তুর্কির শাতালহুইক নামক শহরে প্রায় ২৬ একর জায়গা নিয়ে ছিল এর অবস্থান। ইতিহাসবিদরা জানাচ্ছেন, পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এই সভ্যতার সমাপ্তি হয়েছিল খুব নির্মমভাবে। কী এমন ঘটেছিল সেখানে?
প্রায় ২৫ বছর ধরে দীর্ঘ গবেষণার পর প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানিয়েছেন, মূলত নিজেদের মধ্যে মারামারি করেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল গোটা একটা সভ্যতা। কিন্তু কেন এই নিষ্ঠুর খেলায় মেতেছিলেন তারা?
জানা গেছে, ওই ২৬ একর জায়গাজুড়ে ছিল প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। অতটুকু জায়গায় নিজেদের সংস্থান করতে না পেরে তারা মেতে ওঠে এক চরম হত্যা লীলায়।
প্রস্তর যুগে মানুষের খাদ্যের উৎস ছিল পশু শিকার। কিন্তু নব্য প্রস্তর যুগে এসে যখন তারা সভ্যতার আলো গায়ে মাখল, তখন থেকেই চাষাবাদের প্রতি তাদের উৎসাহ বাড়তে থাকে। চাষের জন্য নির্দিষ্ট কৃষিজমি বরাদ্দ করার ফলে বাসভূমির সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে ক্রমশ।
প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানিয়েছেন, প্রায় ৭৪২ জন মৃতের কঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে সেখান থেকে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী।
প্রায় প্রত্যেকের মাথায় রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। মূলত মাথার পেছনেই আঘাত করা হয়েছে ভারী কোনও পাথর বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে, এমনটাই জানিয়েছেন নৃতত্ত্ববিদরা।
গবেষণাকারীর দল এও জানিয়েছেন, গাদাগাদি করে বাসস্থান গড়ে ওঠার ফলে নিকাশি ব্যবস্থাও একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে, এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যাওয়ার জন্য ছাদে মইয়ের ব্যবস্থা ছিল। পায়ে হাঁটা পথের কোনও জায়গাই ছিল না।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দিনের পর দিন থাকার ফলে জীবাণু জনিত রোগের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না গবেষকদের একাংশ। উদ্ধার হওয়া অক্ষত দাঁতগুলিতে গভীর ক্ষত দেখেই এমন অনুমান। পাশাপাশি থাকার ফলে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও করেছেন তারা।
তবে বেশির ভাগের মতে, অস্তিত্ব রক্ষার এক অদম্য ইচ্ছাতেই শেষ হয়ে গিয়েছিলেন তারা। গবেষণার স্থান থেকে পাওয়া খুলিগুলোতে বারংবার আঘাতের চিহ্নই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।