ঢাকা ০১:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo কুবির শেখ হাসিনা হলের নতুন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মেহের নিগার Logo শাবিপ্রবিতে সুষ্ঠভাবে গুচ্ছভুক্ত ‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন Logo গুচ্ছ খ-ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষা উপকরণ ও সুপেয় পানি দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের সহযোগিতা Logo মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি হবে সত্যিকারের গ্রীন ক্যাম্পাসঃ ভিসি মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo প্রতারণাচক্র থেকে সাবধান থাকতে আহবান জানিয়েছেন শাবি উপাচার্য Logo শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী কাজে সর্বদা সাপোর্ট থাকবে; শাবি উপাচার্য Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন




ভোলাহাটের মাদ্রাসা ছাত্র রাজিব যখন ভ্যান চালক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:০৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১ ৭৪ বার পড়া হয়েছে

ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ চাঁপাই নবাবগঞ্জের ভোলাহাটের এক গ্রামের ছেলে রাজিব । বিকেলে ময়ামারি মোড়ের উপর ভ্যানের প্যাডেলে পা রেখে যাত্রীর সন্ধান ছোট রাজিবের। বয়স সবে ১২ বছর। ৭ম শ্রেনীর ছাত্র। বাধ্য হয়ে ভ্যান নিয়ে নেমেছে রাস্তায়। দরিদ্র পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৪ জন। এক বোন বিয়ে হয়ে শ্বশুর বাড়ী। বাবা জিয়াউর রহমান (সুকলাল) মাজার ব্যাথা নিয়ে বাড়ীতে। কাজ কর্ম করতে পারছেন না। এদিকে মাথায় চেপে আছে সাপ্তাহিক ঋণের বোঝা । মা লকাডাউনের সময় করোনার জন্য কারো বাড়ীতে গিয়ে কাজ করতে পারছে না। একদিকে সংসার বাবার চিকিৎসার খরচ অন্যদিকে ঋণের টাকা যোগাড় করতে হয় ছোট রাজিবকে। যার কারণে বন্ধ থাকা বাবার ভ্যান নিয়ে আয়ের পথে নিজেই নেমে পড়েছে রাস্তায় রাজিব। ১৯ এপ্রিল ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে ইফতারের জন্য যে যার মত ছুটছে বাড়ীতে। কিন্তু ভোলাহাট উপজেলার ময়ামারী মোড়ে ভ্যানের উপর বসে বাম হাতে কম দামী মোবাইল দিয়ে যাত্রীর অপেক্ষা করতে করতে বাবার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিচ্ছে রাজিব।
ভ্যানের উপর বসে থাকা মিষ্টি চেহারার রাজিবের দিকে এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করা হলে সে বলে, আমি ময়ামারী মাদ্রাসায় ৭ম শ্রেনীতে পড়া-লেখা করি। আমার বাড়ী ভোলাহাট উপজেলার পোল্লাডাংগা(উলাডাংগা) গ্রামে। আমার বাবা ভ্যাান চালিয়ে সংসার চালাতো। মাজার ব্যাথায় ভ্যান চালাতে পারে না। সংসারে ৪জন মানুষ। সাপ্তাহিক কিস্তি আছে। লকডাউনে মাদ্রাসা বন্ধ। তাই ভ্যান নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় বের হতে হয়। রাজিব আরো বলে, নিজের খরচের জন্য তেমন টাকা খরচ করি না। একদিকে বাবার চিকিৎসা খরচ আরেক দিকে সংসার। ছোট মানুষ তেমন কেউ ভ্যানে উঠতেও চায় না। ভ্যান চালাতে চালাতে অনেক সময় হাঁপায় যাই তাও বাধ্য হয়ে চালাই। লকডাউনের মধ্যে পড়া-লেখা বন্ধ । বাবা অসুস্থ্য , সাপ্তাহিক ঋণের বোঝা বাধ্য করেছে ভ্যান চালাতে বলে রাজিব জানায়। দিনে তেমন আয় হচ্ছে না। এদিকে লকডাউন তারপর রোজা। রাস্তায় লোকজন তেমন না থাকায় দিনে ১’শ টাকা করে আয় হয় বরে রাজিব জানায়।
রাজিবের বাবা জিয়াউর রহমান জানান, আমার ছোট ছেলেটা কষ্ট করে। সইতে না পারলেও করবার কিছুই যে নেই। ভ্যান না চালালে খাবার জুটবে না । আমার মাজার ব্যাথায় ভ্যান চালাতে পারি না। চিকিৎসা, ঋণের টাকা, সংসার সব কিছুরির ভার এখন একমাত্র ছোট ছেলে রাজিবের উপর পড়ে গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ভোলাহাটের মাদ্রাসা ছাত্র রাজিব যখন ভ্যান চালক

আপডেট সময় : ০৬:০৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল ২০২১

ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ চাঁপাই নবাবগঞ্জের ভোলাহাটের এক গ্রামের ছেলে রাজিব । বিকেলে ময়ামারি মোড়ের উপর ভ্যানের প্যাডেলে পা রেখে যাত্রীর সন্ধান ছোট রাজিবের। বয়স সবে ১২ বছর। ৭ম শ্রেনীর ছাত্র। বাধ্য হয়ে ভ্যান নিয়ে নেমেছে রাস্তায়। দরিদ্র পরিবারে সদস্য সংখ্যা ৪ জন। এক বোন বিয়ে হয়ে শ্বশুর বাড়ী। বাবা জিয়াউর রহমান (সুকলাল) মাজার ব্যাথা নিয়ে বাড়ীতে। কাজ কর্ম করতে পারছেন না। এদিকে মাথায় চেপে আছে সাপ্তাহিক ঋণের বোঝা । মা লকাডাউনের সময় করোনার জন্য কারো বাড়ীতে গিয়ে কাজ করতে পারছে না। একদিকে সংসার বাবার চিকিৎসার খরচ অন্যদিকে ঋণের টাকা যোগাড় করতে হয় ছোট রাজিবকে। যার কারণে বন্ধ থাকা বাবার ভ্যান নিয়ে আয়ের পথে নিজেই নেমে পড়েছে রাস্তায় রাজিব। ১৯ এপ্রিল ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে ইফতারের জন্য যে যার মত ছুটছে বাড়ীতে। কিন্তু ভোলাহাট উপজেলার ময়ামারী মোড়ে ভ্যানের উপর বসে বাম হাতে কম দামী মোবাইল দিয়ে যাত্রীর অপেক্ষা করতে করতে বাবার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিচ্ছে রাজিব।
ভ্যানের উপর বসে থাকা মিষ্টি চেহারার রাজিবের দিকে এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করা হলে সে বলে, আমি ময়ামারী মাদ্রাসায় ৭ম শ্রেনীতে পড়া-লেখা করি। আমার বাড়ী ভোলাহাট উপজেলার পোল্লাডাংগা(উলাডাংগা) গ্রামে। আমার বাবা ভ্যাান চালিয়ে সংসার চালাতো। মাজার ব্যাথায় ভ্যান চালাতে পারে না। সংসারে ৪জন মানুষ। সাপ্তাহিক কিস্তি আছে। লকডাউনে মাদ্রাসা বন্ধ। তাই ভ্যান নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় বের হতে হয়। রাজিব আরো বলে, নিজের খরচের জন্য তেমন টাকা খরচ করি না। একদিকে বাবার চিকিৎসা খরচ আরেক দিকে সংসার। ছোট মানুষ তেমন কেউ ভ্যানে উঠতেও চায় না। ভ্যান চালাতে চালাতে অনেক সময় হাঁপায় যাই তাও বাধ্য হয়ে চালাই। লকডাউনের মধ্যে পড়া-লেখা বন্ধ । বাবা অসুস্থ্য , সাপ্তাহিক ঋণের বোঝা বাধ্য করেছে ভ্যান চালাতে বলে রাজিব জানায়। দিনে তেমন আয় হচ্ছে না। এদিকে লকডাউন তারপর রোজা। রাস্তায় লোকজন তেমন না থাকায় দিনে ১’শ টাকা করে আয় হয় বরে রাজিব জানায়।
রাজিবের বাবা জিয়াউর রহমান জানান, আমার ছোট ছেলেটা কষ্ট করে। সইতে না পারলেও করবার কিছুই যে নেই। ভ্যান না চালালে খাবার জুটবে না । আমার মাজার ব্যাথায় ভ্যান চালাতে পারি না। চিকিৎসা, ঋণের টাকা, সংসার সব কিছুরির ভার এখন একমাত্র ছোট ছেলে রাজিবের উপর পড়ে গেছে।