ঢাকা ১২:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শাবিপ্রবির শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি সংঘের সভাপতি রনি, সম্পাদক দীপ্ত   Logo শাবিপ্রবির শাহপরান ও মুজতবা আলী হলে ৬ সহকারী প্রভোস্ট নিয়োগ Logo কুবির শেখ হাসিনা হলের নতুন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মেহের নিগার Logo শাবিপ্রবিতে সুষ্ঠভাবে গুচ্ছভুক্ত ‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন Logo গুচ্ছ খ-ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষা উপকরণ ও সুপেয় পানি দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের সহযোগিতা Logo মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি হবে সত্যিকারের গ্রীন ক্যাম্পাসঃ ভিসি মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo প্রতারণাচক্র থেকে সাবধান থাকতে আহবান জানিয়েছেন শাবি উপাচার্য Logo শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী কাজে সর্বদা সাপোর্ট থাকবে; শাবি উপাচার্য Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ




টাঙ্গাইলে গ্রাম্য সালিশের রায়কে কেন্দ্র খুন, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:২৮:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০২০ ৫২ বার পড়া হয়েছে

হাসান সিকদার, টাঙ্গাইলঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের সোনালিয়া মিয়াবাড়ী এলাকায় রোববার সন্ধ্যায় জমির পাওনা টাকা নিয়ে সালিশের রায়কে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে প্রকৌশল নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহ (৩৮) খুন হয়েছেন। তিনি সোনালিয়া গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে। সোমবার সকালে নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে করটিয়া শাখা প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে করটিয়া বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সোনালিয়া মিয়াবাড়ীর আব্দুল্লাহ মিয়া জমি বিক্রির জন্য স্থানীয় মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে এনামুল হক লিটনের কাছ থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা নেন। পরে নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহ মিয়া জমি না দিয়ে টাকা ফেরত দিতে তালবাহানা করছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে রোববার বিকালে স্থানীয় শামছু পীর সাহেবের বাড়ির পাশে খোলা জায়গায় গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। হাবলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান নাদুর সভাপতিত্বে গ্রাম্য সালিশে স্থানীয় মাতাব্বর ওয়াজেদ আলী, ছানোয়ার হোসেন, ইউপি সদস্য পলাশ মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা পানসু মিয়াসহ স্থানীয় মাতব্বররা উপস্থিত ছিলেন। সালিশে আব্দুর রহমান নাদু, মাতব্বর ওয়াজেদ আলী, ছানোয়ার হোসেন ও পলাশ মিয়ার সমন্বয়ে জুড়ি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আব্দুল্লাহ মিয়াকে পাওনাকৃত ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা এনামুল হক লিটনকে ফেরত ও তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষের এনামুল হক লিটনের ভাই টাঙ্গাইলের সাবেক জিপি অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ বিচারের রায় না মানার ঘোষণা দেন। এ সময় এনামুল হক লিটন ও তাদের পক্ষের লোকজন নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহ মিয়া ও তার ভাই আনু মিয়া(৩৫), ভাতিজা জাহিদকে(২৪) এলোপাতারি ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দোষীদের ফাঁসির দাবিতে সোমবার সকালে করটিয়া শাখা জেলা নির্মাণ প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল সোনালিয়া গ্রাম ও করটিয়া বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে তারা করটিয়া বাসস্ট্যান্ডে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধন চলাকালে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি করে বক্তব্য রাখেন, জেলা নির্মাণ প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বিপ্লব হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক রুস্তম মিয়া, সহ-সম্পাদক মেরাজ হোসেন, করটিয়া শাখার সভাপতি আমজাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরু মিয়া, স্থানীয় ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান প্রমুখ। স্থানীয় ইউপি সদস্য পলাশ মিয়া বলেন, সালিশে আব্দুল্লাহ মিয়াকে পাওনাকৃত ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা এনামুল হক লিটনকে ফেরত ও তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। কিন্তু এনামুল হক লিটনরা সে সিদ্ধান্ত মানেনি। এ সময় এনামুল হক লিটন ও তার পক্ষের লোকজন আব্দুল্লাহ মিয়াকে সালিশ থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে আহত করে। এ সময় তার ভাই-ভাতিজা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। আমরা তাদের ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।সালিশের সভাপতি ও হাবলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান নাদু বলেন, গ্রাম্য সালিশের সিদ্ধান্ত না মেনে হামলা করবে এটা কল্পনাতীত। কিন্তু সাবেক জিপি আব্দুর রশিদ এভাবে সালিশের সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন তা কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। এনামুল হক লিটনরা নির্মাণ শ্রমিক ও তার ভাই-ভাতিজাদের উপর হামলা করে মারাত্মক অপরাধ করেছে। ফেরাতে গিয়ে তিনিও আহত হয়েছেন। বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি ঘটনাটি শুনে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের পুলিশ বক্সের এএসআই নবীন বলেন, সালিশী বৈঠকে একজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের লাশ মর্গে রয়েছে।
বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম তুহীন আলী বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




টাঙ্গাইলে গ্রাম্য সালিশের রায়কে কেন্দ্র খুন, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৮:২৮:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুন ২০২০

হাসান সিকদার, টাঙ্গাইলঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের সোনালিয়া মিয়াবাড়ী এলাকায় রোববার সন্ধ্যায় জমির পাওনা টাকা নিয়ে সালিশের রায়কে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে প্রকৌশল নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহ (৩৮) খুন হয়েছেন। তিনি সোনালিয়া গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে। সোমবার সকালে নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে করটিয়া শাখা প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারে করটিয়া বাসস্ট্যান্ডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, সোনালিয়া মিয়াবাড়ীর আব্দুল্লাহ মিয়া জমি বিক্রির জন্য স্থানীয় মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে এনামুল হক লিটনের কাছ থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা নেন। পরে নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহ মিয়া জমি না দিয়ে টাকা ফেরত দিতে তালবাহানা করছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে রোববার বিকালে স্থানীয় শামছু পীর সাহেবের বাড়ির পাশে খোলা জায়গায় গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। হাবলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান নাদুর সভাপতিত্বে গ্রাম্য সালিশে স্থানীয় মাতাব্বর ওয়াজেদ আলী, ছানোয়ার হোসেন, ইউপি সদস্য পলাশ মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা পানসু মিয়াসহ স্থানীয় মাতব্বররা উপস্থিত ছিলেন। সালিশে আব্দুর রহমান নাদু, মাতব্বর ওয়াজেদ আলী, ছানোয়ার হোসেন ও পলাশ মিয়ার সমন্বয়ে জুড়ি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আব্দুল্লাহ মিয়াকে পাওনাকৃত ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা এনামুল হক লিটনকে ফেরত ও তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষের এনামুল হক লিটনের ভাই টাঙ্গাইলের সাবেক জিপি অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ বিচারের রায় না মানার ঘোষণা দেন। এ সময় এনামুল হক লিটন ও তাদের পক্ষের লোকজন নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহ মিয়া ও তার ভাই আনু মিয়া(৩৫), ভাতিজা জাহিদকে(২৪) এলোপাতারি ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দোষীদের ফাঁসির দাবিতে সোমবার সকালে করটিয়া শাখা জেলা নির্মাণ প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল সোনালিয়া গ্রাম ও করটিয়া বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে তারা করটিয়া বাসস্ট্যান্ডে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধন চলাকালে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি করে বক্তব্য রাখেন, জেলা নির্মাণ প্রকৌশল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বিপ্লব হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক রুস্তম মিয়া, সহ-সম্পাদক মেরাজ হোসেন, করটিয়া শাখার সভাপতি আমজাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরু মিয়া, স্থানীয় ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান প্রমুখ। স্থানীয় ইউপি সদস্য পলাশ মিয়া বলেন, সালিশে আব্দুল্লাহ মিয়াকে পাওনাকৃত ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা এনামুল হক লিটনকে ফেরত ও তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। কিন্তু এনামুল হক লিটনরা সে সিদ্ধান্ত মানেনি। এ সময় এনামুল হক লিটন ও তার পক্ষের লোকজন আব্দুল্লাহ মিয়াকে সালিশ থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে ছুরিকাঘাত ও পিটিয়ে আহত করে। এ সময় তার ভাই-ভাতিজা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। আমরা তাদের ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।সালিশের সভাপতি ও হাবলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান নাদু বলেন, গ্রাম্য সালিশের সিদ্ধান্ত না মেনে হামলা করবে এটা কল্পনাতীত। কিন্তু সাবেক জিপি আব্দুর রশিদ এভাবে সালিশের সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন তা কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। এনামুল হক লিটনরা নির্মাণ শ্রমিক ও তার ভাই-ভাতিজাদের উপর হামলা করে মারাত্মক অপরাধ করেছে। ফেরাতে গিয়ে তিনিও আহত হয়েছেন। বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম জানান, ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। তিনি ঘটনাটি শুনে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের পুলিশ বক্সের এএসআই নবীন বলেন, সালিশী বৈঠকে একজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতের লাশ মর্গে রয়েছে।
বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম তুহীন আলী বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।