ঢাকা ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি হবে সত্যিকারের গ্রীন ক্যাম্পাসঃ ভিসি মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo প্রতারণাচক্র থেকে সাবধান থাকতে আহবান জানিয়েছেন শাবি উপাচার্য Logo শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্বোধনী কাজে সর্বদা সাপোর্ট থাকবে; শাবি উপাচার্য Logo জবি শিক্ষককে হেনস্থা, গুরু পাপে লঘু দণ্ড Logo কুবিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, মারধরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন




পেয়ারার মন ১ শ টাকা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:০৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯ ৬১ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি;
‘বাংলার আপেল’ খ্যাত দক্ষিণাঞ্চলের পেয়ারার মোকাম ঝালকাঠির ভীমরুলী গ্রাম। সেখানে বর্তমানে পেয়ারার দাম খুবই কম। এতে পেয়ারা গাছ থেকে তোলার শ্রমিক মজুরিও হয় না। তাই হতাশ হয়ে পেয়ারা বিক্রি না করে ফিরে যান পেয়ারা চাষিরা। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভীমরুলী গ্রামের পেয়ারা চাষি সুজন হালদার শানু বলেন, ‘আমরা ১শ’ টাকায় ১ মণ পেয়ারা বিক্রি করি। সেই পেয়ারা ঢাকায় কেজিপ্রতি ১০০-১২০ টাকা বিক্রি হয়। ১ মণ পেয়ারা বিক্রি করে ২ কেজি চালও কেনা যায় না।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কীর্তিপাশা, ভীমরুলী, শতদাসকাঠি, খাজুরা, মিরাকাঠি, ডুমুরিয়া, জগদীশপুর, খোদ্রপাড়া, পোষন্ডা, হিমানন্দকাঠি, বেতরা, কাপড়কাঠি ও পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানার বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে পেয়ারা বাগান। সড়ক ও জলপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ মোকাম থেকে পেয়ারা সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, দ্রুত পচনশীল এ ফল ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো বড় শহরে নিয়ে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্থানীয় বাজারে পাইকারদের কাছে নামমাত্র মূল্যে পেয়ারা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। ফলে কিছু মানুষ বিনাশ্রমে বিপুল পরিমাণ মুনাফা পাচ্ছে। অন্যদিকে কঠোর পরিশ্রম করেও চাষিরা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করতে পারছে না।

কাপড়কাঠি গ্রামের পেয়ারা চাষি পরিতোষ বেপারী বলেন, ‘আমার দেড় একর জমিতে পেয়ারার বাগান রয়েছে। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে ৮০ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছি। এখন পেয়ারার ভরা মৌসুম কিন্তু দাম অনেক কম। যে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে, তাতে প্রতিদিনের শ্রমিক খরচও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

শতদাসকাঠি গ্রামের বিপুল হালদার বলেন, ‘আমার এক একর ২৫ শতাংশ জমিতে পেয়ারার বাগান রয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। আমরা পেয়ারা মহাজনদের কাছে বিক্রি করি। মহাজনরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন। এতে মহাজন ও পাইকাররা লাভবান হচ্ছেন।’

ভবেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, ‘প্রতিবছর বড় বড় কোম্পানি যদি জেলি তৈরির জন্য এখান থেকে পেয়ারা কিনতো, তাহলে আমরা বেশি লাভবান হতাম। সবচেয়ে ভালো হতো ভীমরুলী গ্রামে জেলি কারখানা স্থাপন করলে।’

ভীমরুলী গ্রামের পেয়ারার মহাজন লিটন হালদার বলেন, ‘সারাবছর কঠোর পরিশ্রম করেও পেয়ারা চাষিরা ঋণের বোঝা মুক্ত হতে পারছে না। দারিদ্র্য আঁকড়ে ধরেছে তাদের জীবনযাত্রাকে। আমরা যতটা পারি তাদের সহায়তা করি।’

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘এ বছর ৬৫০ হেক্টর জমিতে পেয়ারার আবাদ হয়েছে। গড়ে ৮ টন করে ফলন হয়েছে। তবে চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, বিধায় হতাশ হয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




পেয়ারার মন ১ শ টাকা!

আপডেট সময় : ০৩:০৯:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি;
‘বাংলার আপেল’ খ্যাত দক্ষিণাঞ্চলের পেয়ারার মোকাম ঝালকাঠির ভীমরুলী গ্রাম। সেখানে বর্তমানে পেয়ারার দাম খুবই কম। এতে পেয়ারা গাছ থেকে তোলার শ্রমিক মজুরিও হয় না। তাই হতাশ হয়ে পেয়ারা বিক্রি না করে ফিরে যান পেয়ারা চাষিরা। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভীমরুলী গ্রামের পেয়ারা চাষি সুজন হালদার শানু বলেন, ‘আমরা ১শ’ টাকায় ১ মণ পেয়ারা বিক্রি করি। সেই পেয়ারা ঢাকায় কেজিপ্রতি ১০০-১২০ টাকা বিক্রি হয়। ১ মণ পেয়ারা বিক্রি করে ২ কেজি চালও কেনা যায় না।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কীর্তিপাশা, ভীমরুলী, শতদাসকাঠি, খাজুরা, মিরাকাঠি, ডুমুরিয়া, জগদীশপুর, খোদ্রপাড়া, পোষন্ডা, হিমানন্দকাঠি, বেতরা, কাপড়কাঠি ও পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানার বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে পেয়ারা বাগান। সড়ক ও জলপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ মোকাম থেকে পেয়ারা সরবরাহ করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, দ্রুত পচনশীল এ ফল ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো বড় শহরে নিয়ে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই স্থানীয় বাজারে পাইকারদের কাছে নামমাত্র মূল্যে পেয়ারা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। ফলে কিছু মানুষ বিনাশ্রমে বিপুল পরিমাণ মুনাফা পাচ্ছে। অন্যদিকে কঠোর পরিশ্রম করেও চাষিরা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করতে পারছে না।

কাপড়কাঠি গ্রামের পেয়ারা চাষি পরিতোষ বেপারী বলেন, ‘আমার দেড় একর জমিতে পেয়ারার বাগান রয়েছে। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে ৮০ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি করেছি। এখন পেয়ারার ভরা মৌসুম কিন্তু দাম অনেক কম। যে দামে বিক্রি করতে হচ্ছে, তাতে প্রতিদিনের শ্রমিক খরচও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

শতদাসকাঠি গ্রামের বিপুল হালদার বলেন, ‘আমার এক একর ২৫ শতাংশ জমিতে পেয়ারার বাগান রয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। আমরা পেয়ারা মহাজনদের কাছে বিক্রি করি। মহাজনরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন। এতে মহাজন ও পাইকাররা লাভবান হচ্ছেন।’

ভবেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, ‘প্রতিবছর বড় বড় কোম্পানি যদি জেলি তৈরির জন্য এখান থেকে পেয়ারা কিনতো, তাহলে আমরা বেশি লাভবান হতাম। সবচেয়ে ভালো হতো ভীমরুলী গ্রামে জেলি কারখানা স্থাপন করলে।’

ভীমরুলী গ্রামের পেয়ারার মহাজন লিটন হালদার বলেন, ‘সারাবছর কঠোর পরিশ্রম করেও পেয়ারা চাষিরা ঋণের বোঝা মুক্ত হতে পারছে না। দারিদ্র্য আঁকড়ে ধরেছে তাদের জীবনযাত্রাকে। আমরা যতটা পারি তাদের সহায়তা করি।’

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘এ বছর ৬৫০ হেক্টর জমিতে পেয়ারার আবাদ হয়েছে। গড়ে ৮ টন করে ফলন হয়েছে। তবে চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না, বিধায় হতাশ হয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন।’