ঢাকা ১০:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হলেন মুহাম্মদ আবু আবিদ Logo প্রধান উপদেষ্টার দেয়া নির্বাচনী সময়ে সন্তুষ্ট নয় বিএনপি Logo ডেসটিনি প্রতারক রফিকুল আমিনের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন Logo একচেটিয়া লিফট সরবরাহ চুক্তি: ওয়ালটনের টাকায় শেখর সহ গণপূর্ত’ চার প্রকৌশলীর বিদেশ ভ্রমণ! Logo বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা ডিপিডিসির প্রকৌশলী রাজ্জাক ধরাছোঁয়ার বাইরে পর্ব -১ Logo আগস্ট বিপ্লবের অদৃশ্য শক্তি তারেক রহমান – মাহমুদ হাসান Logo ছাত্র জনতাকে ১০ মিনিটে ক্লিয়ার করার ঘোষণা দেয়া হামিদ চাকুরীতে বহাল Logo ছাত্রলীগ নেত্রী যুবলীগ নেতার প্রতারণার শিকার চিকিৎসক সালেহউদ্দিন: বিচার ও প্রতিকার দাবি Logo দেশসেরা সহকারী জজ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনে সংবর্ধনা Logo মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি বিএমজিটিএ’র




ডাক্তার অসুস্থ, হাতে স্যালাইন, তবু দেখছেন রোগী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:১৬:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০১৯ ২০৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক;
স্যালাইন ঝুলছে, ডাক্তার আর রোগী বসে আছেন। ইনফিউশন সেটটি রোগীর হাতে নয় শেষ হয়েছে ডাক্তারের হাতে। বাহিরের হোটেলের খাবার খেয়ে ফুড পয়জনিং এর শিকার স্বয়ং ডাক্তার। ছবিটি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের। সেখানে ৩৬তম বিসিএসের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ কাজী আব্দুল্লাহ মারুফ বৈকালিক দায়িত্ব পালন করছেন। এমন একটা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল সংবাদ’ ফেসবুক পেজে ছবিটি শেয়ার করে লিখেছে, এ ধরণের ছবি হয়তো শুধুমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব। অনেকে এই ডাক্তার সাহেবকে বাহবা দিলেও এটা আমাদের হেলথ সেক্টরের দৈন্যতার একটা চিত্র। এমন অসুস্থ অবস্থায় তাকে রিপ্লেস করার মতো অন্য কেউ এভেইলেবল নেই। অগত্যা এক হাতে স্যালাইন আর অন্য হাতে কলম।

ইউএইচএফপিও ছাড়া ১১ জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা। আছেন ৩ জন। একজন ফ্রাকচার হয়ে ছুটিতে, একজন আর এম ও এর দায়িত্বপালন করছেন। আরেকজন আমাদের এই বন্ধুটি। সকালের ডিউটি বাদেও সপ্তাহে কমপক্ষে চারদিন ইমার্জেন্সি দায়িত্ব পালন করতে হয়৷ ইএমও এর কোন পোস্ট অর্গানোগ্রামেই নেই। শিশু কন্সাল্টেন্ট একজন আছেন উনি আউটডোর পেশেন্ট দেখেন। সুইপারে সংখ্যা অপ্রতুল। রোগীর সিরিয়াল মেইনটেইনের মতো পর্যাপ্ত এমএলএসএস পর্যন্ত নেই। নিজেই টিকেট জমা নিয়ে নাম ডেকে ডেকে রোগী দেখতে হয়!

যখন উপজেলায় পোস্টেড ছিলাম তখন বাহিরে হোটেলে খেতে হতো। রোগীরস্বজনদের সাথে দেখা হলে বলতো স্যার আপনারাও এখানে খান! আপনাদের বাবুর্চি নাই? হেসে বলতাম, থাকার জায়গারই ভাল বন্দোবস্ত নেই, বাবুর্চি তো বিলাসিতা।

ইউএইচএফপিওদের গাড়ি দেওয়া হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে সেবার মান বাড়বে! কিন্তু যারা সরাসরি সেবা পৌঁছুবেন সেই মেডিকেল অফিসারদের খাবার ব্যবস্থাও নেই। রাস্তার পাশে “হোটেল আল ছালা দিয়া ঢাকা” তে তিনবেলা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয়! ২৪ ঘন্টা যারা সার্ভিস দেয় তাদের খাবার ব্যবস্থা হসপিটাল কর্তৃপক্ষ কেন করবেনা? তাদের কেন অলিগলির হোটেলে খেয়ে কর্তব্যরত অবস্থায় অসুস্থ হতে হবে!

২ জন ডাক্তার যে ১১ জনের দায়িত্ব পালন করছেন এটার মূল্যায়ন কীভাবে হবে? কোন ভাবেই তো এর কম্পেন্সেশন দেয়া সম্ভবপর বলে মনে করি না। বেতনের সমপরিমাণ অর্থ অতিরিক্ত দায়িত্বভাতা হিসেবে দিলেও না।

ডাক্তাররা এত আশা নিয়ে সরকারি চাকরিতে এসেও কেন তথাকথিত গ্রামগুলোতে থাকতে চান না এ প্রশ্নের উত্তর দেবার কি আর দরকার আছে?

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ডাক্তার অসুস্থ, হাতে স্যালাইন, তবু দেখছেন রোগী

আপডেট সময় : ০৫:১৬:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক;
স্যালাইন ঝুলছে, ডাক্তার আর রোগী বসে আছেন। ইনফিউশন সেটটি রোগীর হাতে নয় শেষ হয়েছে ডাক্তারের হাতে। বাহিরের হোটেলের খাবার খেয়ে ফুড পয়জনিং এর শিকার স্বয়ং ডাক্তার। ছবিটি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের। সেখানে ৩৬তম বিসিএসের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ কাজী আব্দুল্লাহ মারুফ বৈকালিক দায়িত্ব পালন করছেন। এমন একটা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল সংবাদ’ ফেসবুক পেজে ছবিটি শেয়ার করে লিখেছে, এ ধরণের ছবি হয়তো শুধুমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব। অনেকে এই ডাক্তার সাহেবকে বাহবা দিলেও এটা আমাদের হেলথ সেক্টরের দৈন্যতার একটা চিত্র। এমন অসুস্থ অবস্থায় তাকে রিপ্লেস করার মতো অন্য কেউ এভেইলেবল নেই। অগত্যা এক হাতে স্যালাইন আর অন্য হাতে কলম।

ইউএইচএফপিও ছাড়া ১১ জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা। আছেন ৩ জন। একজন ফ্রাকচার হয়ে ছুটিতে, একজন আর এম ও এর দায়িত্বপালন করছেন। আরেকজন আমাদের এই বন্ধুটি। সকালের ডিউটি বাদেও সপ্তাহে কমপক্ষে চারদিন ইমার্জেন্সি দায়িত্ব পালন করতে হয়৷ ইএমও এর কোন পোস্ট অর্গানোগ্রামেই নেই। শিশু কন্সাল্টেন্ট একজন আছেন উনি আউটডোর পেশেন্ট দেখেন। সুইপারে সংখ্যা অপ্রতুল। রোগীর সিরিয়াল মেইনটেইনের মতো পর্যাপ্ত এমএলএসএস পর্যন্ত নেই। নিজেই টিকেট জমা নিয়ে নাম ডেকে ডেকে রোগী দেখতে হয়!

যখন উপজেলায় পোস্টেড ছিলাম তখন বাহিরে হোটেলে খেতে হতো। রোগীরস্বজনদের সাথে দেখা হলে বলতো স্যার আপনারাও এখানে খান! আপনাদের বাবুর্চি নাই? হেসে বলতাম, থাকার জায়গারই ভাল বন্দোবস্ত নেই, বাবুর্চি তো বিলাসিতা।

ইউএইচএফপিওদের গাড়ি দেওয়া হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে সেবার মান বাড়বে! কিন্তু যারা সরাসরি সেবা পৌঁছুবেন সেই মেডিকেল অফিসারদের খাবার ব্যবস্থাও নেই। রাস্তার পাশে “হোটেল আল ছালা দিয়া ঢাকা” তে তিনবেলা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয়! ২৪ ঘন্টা যারা সার্ভিস দেয় তাদের খাবার ব্যবস্থা হসপিটাল কর্তৃপক্ষ কেন করবেনা? তাদের কেন অলিগলির হোটেলে খেয়ে কর্তব্যরত অবস্থায় অসুস্থ হতে হবে!

২ জন ডাক্তার যে ১১ জনের দায়িত্ব পালন করছেন এটার মূল্যায়ন কীভাবে হবে? কোন ভাবেই তো এর কম্পেন্সেশন দেয়া সম্ভবপর বলে মনে করি না। বেতনের সমপরিমাণ অর্থ অতিরিক্ত দায়িত্বভাতা হিসেবে দিলেও না।

ডাক্তাররা এত আশা নিয়ে সরকারি চাকরিতে এসেও কেন তথাকথিত গ্রামগুলোতে থাকতে চান না এ প্রশ্নের উত্তর দেবার কি আর দরকার আছে?