ঢাকা ০২:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




সরকারি বরাদ্দ যেন তার পৈতৃক সম্পত্তি:

সরকারি বরাদ্দ লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকৌশলী মানিকের সম্পদের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক;
  • আপডেট সময় : ০৪:২৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ১৯৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: এ যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের যাদুর কান্ড। জেলা পরিষদের উন্নয়ন ও বরাদ্দ যেনো তাদের পৈতৃক সম্পদ। দিনাজপুর জেলা পরিষদের সকল প্রকার বরাদ্দ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের যাদুর মতোই ফুলেফেঁপে উঠেছে তার সম্পদ। জেলা শহরে রয়েছে বহুতল ভবন, একাধিক লিচুবাগান সহ নামে বেনামে অর্থ সম্পদ। এত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ যার উপর তিনি হলেন দিনাজপুর জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী মানিক মিয়া।

মেয়রের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের ছাত্রছায়ায় দিনাজপুর জেলা পরিষদকে দুর্নীতির মহাউৎসব স্থান হিসেবে পরিচিতি করে তুলেছিলেন প্রকৌশলী মানিক মিয়া। উক্ত জেলা পরিষদে তার রয়েছে দুর্নীতির সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে আছে আরও দুইজন। কোনো উন্নয়ন নেই চলছে চলছে শুধুই লুটপাট। রাজস্ব এবং এডিপি উন্নয়নের অর্থ সম্পূর্ণরূপে খেয়ে ফেলছে ঘুষখোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ও মনিক মিয়া সিন্ডিকেট তাদের আরেক সহযোগী উচ্চমান সহকারী শিরিন ডাক্তার। তাদের তিনজনের দাপটে দিনাজপুর জেলা পরিষদে অন্যান্য কর্মকর্তারা তঠস্থ রয়েছে। মহা দুর্নীতিবাজ এই উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ মানিক মিয়া ও উচ্চমান সহকারী শিরিন আক্তারের দাপটে দিনাজপুর জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড না হলেও উন্নয়ন হয়েছে এসব কর্মকর্তাদের নিজেদের।

লুটপাটের টাকায় নিজেরা ফুলে ফেঁপে বিত্ত-বৈভবের মালিক বলে গেছেন মনিক। শহরে করেছেন বহুতল ভবন, লিচু বাগান কিনেছেন ৩টি। তবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন এই দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা। শুধু তাই নয় রীতিমতো নির্বাহী প্রকৌশলীর নামে বরাদ্দকৃত বাংলো তিন কর্মচারীসহ ব্যবহার করছেন জয়নাল আবেদীন। ওয়েটিং কর্মচারীর বেতন দেয়া হচ্ছে জেলা পরিষদ থেকে। অভিযোগ রয়েছে, মানিক এবং শিরিন ঘুষের টাকার একটি অংশ জয়নাল আবেদীনকে দিয়ে সমস্ত অপকর্ম জায়েজ করেন।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে জেলা পরিষদের চেয়ার-টেবিলও ঘুষ খায়। এসব ঘুষখোরদের মধ্যে উপ সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মানিক মিয়ার স্থান এক নম্বরে। এর পরই রয়েছে উচ্চমান সহকারী শিরিন আক্তার । তারা দুজনেই দিনাজপুর শহরে বিলাসবহুল বহুতল বাড়ি নির্মাণ করেছেন । মোহাম্মদ মানিক মিয়া মাত্র তিন বছরের ডিপ্লোমা করে সহকারি প্রকৌশলীর সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে তিনি জেলা পরিষদের আইন লংঘন করছেন, এমনটি জানান জেলা পরিষদের একাধিক কর্মকর্তা।

সরে জমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘুষখোর মানিক এডিবি উন্নয়নের ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ৪০% ঘুষ গ্রহণ করেছেন। এই ঘুষের টাকা উচ্চমান সহকারী শিরিন আক্তার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন এই তিনজন মিলে আত্মসাৎ করেছেন।

ভুক্তভোগীরা এ প্রতিবেদককে জানান, ঘুষ না দিলে স্কুল কলেজ, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, ৪০% কমিশন না দিলে অনুদানের টাকা দিতে চান না। সুতরাং মানিককে ৪০ শতাংশ ঘুষ দিয়ে হলেও তারা এডিবি উন্নয়নের টাকা গ্রহণ করেছেন।সরে জমিন খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, মানিক মিয়া ঘুষের টাকায় দিনাজপুরে ৩টি লিচু বাগান ক্রয় করেছেন। মানিক দীর্ঘ আট বছর যাবত দিনাজপুর জেলা পরিষদে কর্মরত। আট বছরে ফুলে ফেঁপে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, শহরের পাহাড়পুর এলাকায় তার পাঁচ তলা ডুপ্লেক্স বাড়ি রয়েছে । সেখানে উপস্থিত হয়ে মানিকের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বাড়িটির বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। মানিকের স্ত্রী বলেন, তিন কাঠা কাটা জমি কিনেছেন ২৮ লাখ টাকায়, বাড়ি করতে আরো দু কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অন্যদিকে উচ্চমান সহকারী দুর্নীতিবাজ শিরীন আক্তার শহরের মিশন রোডে বহুতল বাড়ি করেছেন। ব্যাংকেও রয়েছে আরও ৫০ লাখ টাকা । এছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদ কিনেছেন। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে দিনাজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারে বসে।

দুর্নীতির এসব বিষয় নিয়ে জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান এডিবি উন্নয়ন খাতে ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা এবং রাজস্ব খাতে আরো টাকা যুক্ত হয়েছিল। রাজস্ব খাতে আরো কত টাকা যুক্ত হয়েছিল সে বিষয়টি তিনি পরিষ্কার করেননি। তবে অফিসের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান রাজস্ব খাত থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হলেও উন্নয়নের নামে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চতুর জয়নাল আবেদীনের কাছে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দকৃত টাকা ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়া হলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান এবং তালিকা এ প্রতিবেদককে হোয়াটসঅ্যাপে দেয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর ফোন ধরেন না। তালিকাও দেননি।

জানা গেছে, জেলা পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী তিনজন ইঞ্জিনিয়ার থাকার কথা। অনৈতিক সুবিধা ভোগ করার স্বার্থে দীর্ঘদিন একজন ইঞ্জিনিয়ার কর্মরত রয়েছে। জেলা পরিষদের আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার আল আমিন পোস্টিং হয়ে দিনাজপুর জেলা পরিষদে যুক্ত হলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে তাকে দপ্তর বুঝে দেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে দিনাজপুর জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পরিষদকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য এসব দুর্নীতিবাজদের চাকরি থেকে বহিষ্কার ও শাস্তির ব্যবস্থা না করলে চেয়ারম্যান শত চেষ্টা করেও দিনাজপুর জেলা পরিষদকে দুর্নীতমুক্ত রাখতে পারবেন না। কথা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ও সচিবের সাথে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রকৌশলী মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয় মন্তব্য জানতে চাইলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: দেলওয়ার হোসেন বলেন, বিগত দিনে জেলা পরিষদের অসংখ্য বদনাম শুনেছি আমি চাই আমার মেয়াদকলে জেলা পরিষদের সকল ধরনের দুর্নাম -অনিয়ম দূর করে কলঙ্কমুক্ত করতে। সে যেই হোকনা কেন দুর্নীতিবাজের ঠাঁই হবেনা দিনাজপুর জেলা পরিষদে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রকৌশলী মানিক মিয়াকে মুঠোফোনে তার মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি মিটিংয়ে আছি। পরে কোন প্রকার মন্তব্য জানাননি।

 

Loading

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




সরকারি বরাদ্দ যেন তার পৈতৃক সম্পত্তি:

সরকারি বরাদ্দ লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকৌশলী মানিকের সম্পদের পাহাড়

আপডেট সময় : ০৪:২৬:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: এ যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের যাদুর কান্ড। জেলা পরিষদের উন্নয়ন ও বরাদ্দ যেনো তাদের পৈতৃক সম্পদ। দিনাজপুর জেলা পরিষদের সকল প্রকার বরাদ্দ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের যাদুর মতোই ফুলেফেঁপে উঠেছে তার সম্পদ। জেলা শহরে রয়েছে বহুতল ভবন, একাধিক লিচুবাগান সহ নামে বেনামে অর্থ সম্পদ। এত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ যার উপর তিনি হলেন দিনাজপুর জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী মানিক মিয়া।

মেয়রের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের ছাত্রছায়ায় দিনাজপুর জেলা পরিষদকে দুর্নীতির মহাউৎসব স্থান হিসেবে পরিচিতি করে তুলেছিলেন প্রকৌশলী মানিক মিয়া। উক্ত জেলা পরিষদে তার রয়েছে দুর্নীতির সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে আছে আরও দুইজন। কোনো উন্নয়ন নেই চলছে চলছে শুধুই লুটপাট। রাজস্ব এবং এডিপি উন্নয়নের অর্থ সম্পূর্ণরূপে খেয়ে ফেলছে ঘুষখোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ও মনিক মিয়া সিন্ডিকেট তাদের আরেক সহযোগী উচ্চমান সহকারী শিরিন ডাক্তার। তাদের তিনজনের দাপটে দিনাজপুর জেলা পরিষদে অন্যান্য কর্মকর্তারা তঠস্থ রয়েছে। মহা দুর্নীতিবাজ এই উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ মানিক মিয়া ও উচ্চমান সহকারী শিরিন আক্তারের দাপটে দিনাজপুর জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড না হলেও উন্নয়ন হয়েছে এসব কর্মকর্তাদের নিজেদের।

লুটপাটের টাকায় নিজেরা ফুলে ফেঁপে বিত্ত-বৈভবের মালিক বলে গেছেন মনিক। শহরে করেছেন বহুতল ভবন, লিচু বাগান কিনেছেন ৩টি। তবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন এই দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা। শুধু তাই নয় রীতিমতো নির্বাহী প্রকৌশলীর নামে বরাদ্দকৃত বাংলো তিন কর্মচারীসহ ব্যবহার করছেন জয়নাল আবেদীন। ওয়েটিং কর্মচারীর বেতন দেয়া হচ্ছে জেলা পরিষদ থেকে। অভিযোগ রয়েছে, মানিক এবং শিরিন ঘুষের টাকার একটি অংশ জয়নাল আবেদীনকে দিয়ে সমস্ত অপকর্ম জায়েজ করেন।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে জেলা পরিষদের চেয়ার-টেবিলও ঘুষ খায়। এসব ঘুষখোরদের মধ্যে উপ সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মানিক মিয়ার স্থান এক নম্বরে। এর পরই রয়েছে উচ্চমান সহকারী শিরিন আক্তার । তারা দুজনেই দিনাজপুর শহরে বিলাসবহুল বহুতল বাড়ি নির্মাণ করেছেন । মোহাম্মদ মানিক মিয়া মাত্র তিন বছরের ডিপ্লোমা করে সহকারি প্রকৌশলীর সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে তিনি জেলা পরিষদের আইন লংঘন করছেন, এমনটি জানান জেলা পরিষদের একাধিক কর্মকর্তা।

সরে জমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘুষখোর মানিক এডিবি উন্নয়নের ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার ৪০% ঘুষ গ্রহণ করেছেন। এই ঘুষের টাকা উচ্চমান সহকারী শিরিন আক্তার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন এই তিনজন মিলে আত্মসাৎ করেছেন।

ভুক্তভোগীরা এ প্রতিবেদককে জানান, ঘুষ না দিলে স্কুল কলেজ, মসজিদ, মন্দির, গির্জা, ৪০% কমিশন না দিলে অনুদানের টাকা দিতে চান না। সুতরাং মানিককে ৪০ শতাংশ ঘুষ দিয়ে হলেও তারা এডিবি উন্নয়নের টাকা গ্রহণ করেছেন।সরে জমিন খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, মানিক মিয়া ঘুষের টাকায় দিনাজপুরে ৩টি লিচু বাগান ক্রয় করেছেন। মানিক দীর্ঘ আট বছর যাবত দিনাজপুর জেলা পরিষদে কর্মরত। আট বছরে ফুলে ফেঁপে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, শহরের পাহাড়পুর এলাকায় তার পাঁচ তলা ডুপ্লেক্স বাড়ি রয়েছে । সেখানে উপস্থিত হয়ে মানিকের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বাড়িটির বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। মানিকের স্ত্রী বলেন, তিন কাঠা কাটা জমি কিনেছেন ২৮ লাখ টাকায়, বাড়ি করতে আরো দু কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অন্যদিকে উচ্চমান সহকারী দুর্নীতিবাজ শিরীন আক্তার শহরের মিশন রোডে বহুতল বাড়ি করেছেন। ব্যাংকেও রয়েছে আরও ৫০ লাখ টাকা । এছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদ কিনেছেন। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে দিনাজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারে বসে।

দুর্নীতির এসব বিষয় নিয়ে জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান এডিবি উন্নয়ন খাতে ৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা এবং রাজস্ব খাতে আরো টাকা যুক্ত হয়েছিল। রাজস্ব খাতে আরো কত টাকা যুক্ত হয়েছিল সে বিষয়টি তিনি পরিষ্কার করেননি। তবে অফিসের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান রাজস্ব খাত থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হলেও উন্নয়নের নামে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। চতুর জয়নাল আবেদীনের কাছে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দকৃত টাকা ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়া হলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান এবং তালিকা এ প্রতিবেদককে হোয়াটসঅ্যাপে দেয়া হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর ফোন ধরেন না। তালিকাও দেননি।

জানা গেছে, জেলা পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী তিনজন ইঞ্জিনিয়ার থাকার কথা। অনৈতিক সুবিধা ভোগ করার স্বার্থে দীর্ঘদিন একজন ইঞ্জিনিয়ার কর্মরত রয়েছে। জেলা পরিষদের আরেকজন ইঞ্জিনিয়ার আল আমিন পোস্টিং হয়ে দিনাজপুর জেলা পরিষদে যুক্ত হলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে তাকে দপ্তর বুঝে দেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে দিনাজপুর জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পরিষদকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য এসব দুর্নীতিবাজদের চাকরি থেকে বহিষ্কার ও শাস্তির ব্যবস্থা না করলে চেয়ারম্যান শত চেষ্টা করেও দিনাজপুর জেলা পরিষদকে দুর্নীতমুক্ত রাখতে পারবেন না। কথা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ও সচিবের সাথে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা জানান, তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রকৌশলী মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয় মন্তব্য জানতে চাইলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: দেলওয়ার হোসেন বলেন, বিগত দিনে জেলা পরিষদের অসংখ্য বদনাম শুনেছি আমি চাই আমার মেয়াদকলে জেলা পরিষদের সকল ধরনের দুর্নাম -অনিয়ম দূর করে কলঙ্কমুক্ত করতে। সে যেই হোকনা কেন দুর্নীতিবাজের ঠাঁই হবেনা দিনাজপুর জেলা পরিষদে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রকৌশলী মানিক মিয়াকে মুঠোফোনে তার মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি মিটিংয়ে আছি। পরে কোন প্রকার মন্তব্য জানাননি।

 

Loading