মোহাম্মদপুর সাভারের আতংক গাংচিল বাহিনীর প্রধান জলদস্যু কবিরের খুঁটির জোর কোথায়?

- আপডেট সময় : ০২:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ২২৯ বার পড়া হয়েছে

হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্র, মাদক ও চাঁদাবাজি সহ ২৬ মামলার আসামী সন্ত্রাসী কবির র্যাবের হাতে পর-পর দুইবার গ্রেফতারের পরেও অদৃশ্য শক্তিতে জামিনে এসে আরও বেপরোয়া। সাভার জেলার বরদেশী ইউনিয়নের সরকারী খাস জমি অবৈধভাবে বালু ভরাট করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি ও প্রতারণা করে আসছে একটি হাউজিং কোম্পানী। প্রকাশ্যে হত্যা সহ নানা ধরণের হুমকি দিয়ে আসছে কবির বাহিনী।
বিশেষ প্রতিনিধি:
ভোলা সদর উপজেলার ১০ নং ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ডাক্তার গিয়াস উদ্দিন কর্তৃক তার আপন ভাগ্নীর ভোগ দখলীয় জমি ভুয়া দলীল তৈরী করে জবর দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তথ্য সূত্রে জানা যায়, ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চরগাজী নামক মৌজার গিয়াস উদ্দিনের বোন লুৎফুন্নেছা স্বামী মৃত আব্দুল মোতালেব। আব্দুল মোতালেব তার স্ত্রী ও মেয়ে রোকেয়া বেগম (২৩) কে ১ একর ৮০ শতাংশ জমি হেবা দলিল দিয়ে যায়। আব্দুল মোতালেব মৃত্যুবরণ করার পর গিয়াস উদ্দিনের নজর পরে বোন ও ভাগ্নীর জমির উপর। গিয়াস উদ্দিন ছলে বলে কলে কৌশলে তাদের জমি দখল করার কুট কৌশল চালায়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে স্থানীয় সন্ত্রাসী ইউনুছ (৪০), পিতা মৃত আব্দুল হাশেম, মাতা-মমতাজ বেগম, সাং-কুঞ্জপট্রি তার ছোট ভাই আব্দুল মালেক (২৮) ও তার স্ত্রী মরিয়ম বিবির নামে বোনের মাধ্যমে রোকেয়া বেগমকে নাবালিকা দেখিয়ে জমির দলিল নেয়। অর্থাৎ ভাগ্নীর জমির নামে মাত্র মুল্য দেখিয়ে দলিল দেয় যা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তথ্য সূত্রে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিন তার বোন লুৎফুন্নেছাকে নতুন জমি তার মেয়ের নামে ক্রয় করার লোভ দেখিয়ে দলিলে স্বাক্ষর নেয়। এব্যাপারে ভুক্তভোগী রোকেয়া বেগম বলেন, আমার বাবা মৃত্যুর পূর্বে আমাকে ৯০ শতাংশ জমি হেবা দলিল দেয় আমার জমি আমার মামা কসাই গিয়াস উদ্দিন আমার মাকে দিয়ে ইউনুছ গংদের নামে দলিল করে দেয়। আমার নামের জমি আমার মা কিভাবে দলিল দেয় তা আমার বোধগম্য নয়। এব্যাপারে রোকেয়ার মা লুৎফুন্নেছা বলেন, আমার ভাই গিয়াস উদ্দিন আমার মেয়ের ৪৫ শতাংশ জমি আমার কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে দলিল করে নেয় যা আমি মোটেও জানিনা। পরে জানতে পারি একদল সন্ত্রাসীকে জমি বুঝিয়ে দিয়েছে। এব্যাপারে অভিযুক্ত গিয়াস উদ্দিনকে জিজ্ঞেস করলে সে বলেন, আমার জমি না কিন্তু জমি বিক্রয়ের সহযোগীতা করেছি মাত্র। রোকেয়া সংবাদ কর্মীকে জানান, আমার জমি উদ্ধারের জন্য ভেলুমিয়া পুলিশ ফাড়িতে অভিযোগ করেছিলাম দায়িত্বে থাকা উপ-পুলিশ তদন্ত কর্মকর্তা রাজিব বিষয়টি তদন্ত করে আমাকে ঘর উত্তোলন করতে বলেছেন। কিন্তু গিয়াস উদ্দিনের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে ঘর তুলতে দেয় নি। এব্যাপারে ভেলুমিয়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই রাজিবকে তার ব্যবহারিত মুঠো ফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান বাদিনী জমি পাবে কিন্তু স্থানীয় সন্ত্রাসীদের তোপের মুখে আমি সমাধান দিতে পারিনি। তবে আপনারা পুলিশ সুপার মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করলে আমি এ্যাকশনে যেতে পারব। রোকেয়া বেগম তার জমি ফিরে পাওয়া ও আইনী সহযোগীতা পাওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র সচিব (সুরক্ষা বিভাগ) সহ আরও ৪ জায়গায় গত ০২ রা জানুয়ারী ২০২৩ ইং সালে আবেদন করেন।
কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন প্রকার আইনী সহযোগীতা পাননি। স্থানীয় সাবেক মেম্বার মহসিন খানের সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গিয়াস উদ্দিন একজন খারাপ প্রকৃতির লোক তার কাছে বোন-ভাগ্নীর কোন মূল্য নাই। সে টাকার জন্য যেকোন কাজ নির্দিধায় করতে পারে। তবে তার বাবা শাহজাহান মাষ্টার একজন ভালো মানুষ ছিলেন।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিন নামে বেনামে প্রায় ১০০ একর জমির মালিক। সমাজে এমন কোন অপকর্ম নাই যার সাথে সে জড়িত নাই। গত কয়েকমাস পূর্বে ভেলুমিয়া বাজার সংলগ্ন জয়তুন বিবি হত্যা কান্ডের সাথে গিয়াস উদ্দিন পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল, যা অনেকে কানাঘুসা করছেন। টাকা দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিজেকে ধরাছোয়ার বাহিরে রেখেছেন। তার সাথে জয়তুনের সুদের ব্যবসা ছিল বলে অনেকেই অবগত আছেন।
তার ঔষধের ফার্মেসিতে যৌন উত্তেজক ঔষধসহ সকল প্রকার মাদক অহরহ পাওয়া যায়, তাকে এসকল বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে নিজেকে ফেরেশতার মত ফুটিয়ে তোলেন। ভুক্তভোগী ও এলাকার জনগনের দাবি সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু গিয়াস উদ্দিনকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে তার হাত থেকে এলাকার অসংখ্য লোক রেহাই পেত ও সস্তিতে নিরাপদে জীবন-যাপন করতে পারত। তাই প্রশাসনের সঠিক তদন্ত ও বাস্তব পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছে অসহায় জনগণ।