ঢাকা ০৬:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন Logo রাশিয়ায় কনসার্ট হলে বন্দুক হামলার নিহত ৬০, দায় স্বীকার আইএসের




বন্ধুর বাসায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০২:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১ ৮৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক;

রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরের এই ঘটনায় পুলিশ চার তরুণকে আটক করেছে। আটকদের মধ্যে একজনের দাবি, ওই ছাত্রী তার পূর্বপরিচিত।

পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলছাত্রীর শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আটক চারজনের মধ্যে এ লেভেল পরীক্ষা দেয়া এক তরুণ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। নিহত ওই ছাত্রী রাজধানীর নামকরা একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ত।

স্কুলছাত্রীর মায়ের দাবি, তার মেয়ের সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই। ধর্ষণের পর তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কলাবাগান থানায় ফোন করে জানায়, এক তরুণ এক কিশোরীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এনেছেন। কিশোরীর শরীর থেকে রক্ত ঝড়ছে। তখন নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান ওই তরুণকে আটকে রাখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। এরই মধ্যে কলাবাগান থানার পুলিশ আনোয়ার খান হাসপাতালে গিয়ে ওই তরুণকে আটক করে। খবর পেয়ে ওই তরুণের তিন বন্ধু হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাদেরও আটক করে। পরে চারজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ পরে স্কুলছাত্রীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

পুলিশের এসি আবুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক এ লেভেল পরীক্ষা দেয়া ওই তরুণ দাবি করেছেন, মেয়েটি তার পূর্বপরিচিত। বাসার সবাই ঢাকার বাইরে থাকার সুযোগে তাকে ডলফিন গলির তাদের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে নিয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপরই মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়লে তিনি তাকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সুরতহাল প্রতিবেদনে মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেয়া হচ্ছে।’

আশপাশের লোকজন ঘটনা সম্পর্কে কিছুই টের পাননি বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে।

সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত মেয়েটির মা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মেয়ে আমাকে ফোন করে বলে, “মা, আমি বান্ধবীর বাসায় নোট শিট আনতে গেলাম।” তখন আমি কর্মস্থলে। বেলা একটার দিকে এক তরুণ আমাকে ফোন করে বলে, “আপনার মেয়ে অচেতন হয়ে গেছে। তার শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে। আপনি আনোয়ার খান মডার্নে আসেন।” তখন আমি ওই ছেলের কাছে জানতে চাই আমার মেয়ে কোথায় গিয়েছিল। সে জানায়, তার বাসায়। বাসায় কেউ ছিল কি না জানতে চাইলে ছেলেটি না–সূচক জবাব দেয়।’

নিহত মেয়েটির মা বলেন, ‘বখাটে ছেলের সঙ্গে কথা বলার পর আমার বুঝতে আর কিছু বাকি থাকে না। আমি দ্রুত হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আমার মেয়েকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার কাপড়চোপড়ে রক্তমাখা।’

মেয়েটির মা আরও অভিযোগ করেন, ‘তার মেয়ের সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই। ওই বখাটে পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। মেয়েকে কৌশলে বাসায় নিয়ে ওই বখাটেসহ চারজন মিলে ধর্ষণ করেছে। হয়তো বাধা দেয়ায় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। মেয়ের হাতে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন তিনি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বন্ধুর বাসায় স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ

আপডেট সময় : ১২:০২:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক;

রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরের এই ঘটনায় পুলিশ চার তরুণকে আটক করেছে। আটকদের মধ্যে একজনের দাবি, ওই ছাত্রী তার পূর্বপরিচিত।

পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলছাত্রীর শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আটক চারজনের মধ্যে এ লেভেল পরীক্ষা দেয়া এক তরুণ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। নিহত ওই ছাত্রী রাজধানীর নামকরা একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ত।

স্কুলছাত্রীর মায়ের দাবি, তার মেয়ের সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই। ধর্ষণের পর তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরণে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কলাবাগান থানায় ফোন করে জানায়, এক তরুণ এক কিশোরীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এনেছেন। কিশোরীর শরীর থেকে রক্ত ঝড়ছে। তখন নিউমার্কেট অঞ্চল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান ওই তরুণকে আটকে রাখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন। এরই মধ্যে কলাবাগান থানার পুলিশ আনোয়ার খান হাসপাতালে গিয়ে ওই তরুণকে আটক করে। খবর পেয়ে ওই তরুণের তিন বন্ধু হাসপাতালে গেলে পুলিশ তাদেরও আটক করে। পরে চারজনকে কলাবাগান থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ পরে স্কুলছাত্রীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

পুলিশের এসি আবুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক এ লেভেল পরীক্ষা দেয়া ওই তরুণ দাবি করেছেন, মেয়েটি তার পূর্বপরিচিত। বাসার সবাই ঢাকার বাইরে থাকার সুযোগে তাকে ডলফিন গলির তাদের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে নিয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপরই মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়লে তিনি তাকে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সুরতহাল প্রতিবেদনে মেয়েটির শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেয়া হচ্ছে।’

আশপাশের লোকজন ঘটনা সম্পর্কে কিছুই টের পাননি বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছে।

সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত মেয়েটির মা। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মেয়ে আমাকে ফোন করে বলে, “মা, আমি বান্ধবীর বাসায় নোট শিট আনতে গেলাম।” তখন আমি কর্মস্থলে। বেলা একটার দিকে এক তরুণ আমাকে ফোন করে বলে, “আপনার মেয়ে অচেতন হয়ে গেছে। তার শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে। আপনি আনোয়ার খান মডার্নে আসেন।” তখন আমি ওই ছেলের কাছে জানতে চাই আমার মেয়ে কোথায় গিয়েছিল। সে জানায়, তার বাসায়। বাসায় কেউ ছিল কি না জানতে চাইলে ছেলেটি না–সূচক জবাব দেয়।’

নিহত মেয়েটির মা বলেন, ‘বখাটে ছেলের সঙ্গে কথা বলার পর আমার বুঝতে আর কিছু বাকি থাকে না। আমি দ্রুত হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আমার মেয়েকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার কাপড়চোপড়ে রক্তমাখা।’

মেয়েটির মা আরও অভিযোগ করেন, ‘তার মেয়ের সঙ্গে কারও সম্পর্ক নেই। ওই বখাটে পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। মেয়েকে কৌশলে বাসায় নিয়ে ওই বখাটেসহ চারজন মিলে ধর্ষণ করেছে। হয়তো বাধা দেয়ায় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। মেয়ের হাতে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন তিনি।’