ঢাকা ০৬:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




ভারতে আটক তাবলিগ জামাতের ১০ বাংলাদেশি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৩:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০ ১০১ বার পড়া হয়েছে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক; ভারতের দিল্লিতে নিজামুদ্দিন এলাকার তাবলিগ জামাতের মারকাজ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ওই সমাবেশে অংশ নেওয়া দুইশরও বেশি বিদেশিকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে ছিলেন ৭৩ জন বাংলাদেশি। এই ৭৩ জনের ১০ জন কোয়ারেন্টিন (সঙ্গনিরোধ) শেষে মধ্য প্রদেশের শিওপুর শহরে যাওয়ার পর স্থানীয় পুলিশের হাতে আটক হন। বাকি ৬৩ জনের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

গত মঙ্গলবার শিওপুরে আটক ১০ তাবলিগ জামাত সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কোনো তথ্য না জানিয়ে মধ্য প্রদেশের শহরটিতে অবস্থান করছিলেন। ভারত সরকার এরই মধ্যে তাবলিগের সমাবেশে অংশ নেওয়া ৯৬০ জন বিদেশিকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের ভিসা বাতিল করেছে। আটক ১০ বাংরাদেশিও ওই তালিকায় রয়েছেন।

বুধবার শিওপুরের পুলিশ সুপার সম্পাত উপাধ্যায়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআই এবং নিউজ১৮ এ খবর জানায়।
নিউজ১৮ এর খবরটিতে বলা হয়েছে, নিজামুদ্দিন এলাকার মারকাজে (তাবলিগের প্রধান কেন্দ্র) অংশ নেওয়া ১২ জনকে গত মঙ্গলবার আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন কলকাতার এবং বাকি ১০ জন বাংলাদেশের বাসিন্দা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অবস্থানের অভিযোগে মূলত এদের আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে তাবলিগ জামাতের মধ্য প্রদেশের তিন বাসিন্দাকেও আটক করা হয়েছে।

সম্পাত উপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ১০ এবং কলকাতা তাবলিগ জামাতের দুই সদস্যের নমুনা পরীক্ষার পর তাদের দেহে আর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়নি। মারকাজের সমাবেশে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ায় তাদের কোয়ারান্টিনে পাঠানো হয়। মধ্য প্রদেশে গ্রেপ্তার হওয়ারাও তাদের সঙ্গে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমে এই খবরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে বুধবার বিকেলে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। মধ্য প্রদেশে ১০ জনের আটকের বিষয়ে তাঁর কাছে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই বলে তিনি জানান।

মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ভারত সরকার এরই মধ্যে নিজামুদ্দিন এলাকার মারকাজের সমাবেশ অংশ নেওয়া ৯৬০ জন বিদেশিকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের ভিসা বাতিল করেছে। মারকাজের সমাবেশে অংশ নেওয়া প্রায় একশ বাংলাদেশিকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল ভারত সরকার। এরই মধ্যে তাদের কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে তাদের বিষয়ে সবশেষ তথ্য জানানো হয়নি।

এ দিকে ভারতের কূটনীতিক সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজামুদ্দিন এলাকার মারকাজের সমাবেশে অংশ নেওয়া ওই একশ ছাড়াও তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশের আরও একশ সদস্য এ মুহূর্ত ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে এ মাসের প্রথম দিকে জানানো হয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের তাবলিগ জামাতের সাড়ে চারশরও বেশি সদস্য ভারতে গিয়েছেন।

পিটিআইয়ের এক খবরে বলা হয়েছে, ভারত নিজামুদ্দিন এলাকার মারকাজের সমাবেশে অংশ নেওয়া যে ৯৬০ জন বিদেশি তাবলিগ জামাত সদস্যকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ৩৭৯ জন, বাংলাদেশের ১১০ জন, কিরগিজস্তানের ৭৭ জন, মালয়েশিয়ার ৭৫ জন, থাইল্যান্ডের ৬৫ জন, মিয়ানমারের ৬৩ জন, শ্রীলঙ্কার ৩৩ জন, ভিয়েতনামের ১২ জন, যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবের ৯ জন করে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪ জন ও ফ্রান্সের ৩ জন নাগরিক রয়েছেন।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাবলিগ জামাতে অংশ নেওয়া বিদেশিরা এখন কোথায় অবস্থান করছেন সেটা খুঁজে বের করতে দিল্লি পুলিশ ও অন্য রাজ্যের পুলিশ প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছে। এরপর ওই বিদেশিদের বিরুদ্ধ ফরেনার্স অ্যাক্ট ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ভারতে আটক তাবলিগ জামাতের ১০ বাংলাদেশি

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২০

কূটনৈতিক প্রতিবেদক; ভারতের দিল্লিতে নিজামুদ্দিন এলাকার তাবলিগ জামাতের মারকাজ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ওই সমাবেশে অংশ নেওয়া দুইশরও বেশি বিদেশিকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে ছিলেন ৭৩ জন বাংলাদেশি। এই ৭৩ জনের ১০ জন কোয়ারেন্টিন (সঙ্গনিরোধ) শেষে মধ্য প্রদেশের শিওপুর শহরে যাওয়ার পর স্থানীয় পুলিশের হাতে আটক হন। বাকি ৬৩ জনের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

গত মঙ্গলবার শিওপুরে আটক ১০ তাবলিগ জামাত সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কোনো তথ্য না জানিয়ে মধ্য প্রদেশের শহরটিতে অবস্থান করছিলেন। ভারত সরকার এরই মধ্যে তাবলিগের সমাবেশে অংশ নেওয়া ৯৬০ জন বিদেশিকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের ভিসা বাতিল করেছে। আটক ১০ বাংরাদেশিও ওই তালিকায় রয়েছেন।

বুধবার শিওপুরের পুলিশ সুপার সম্পাত উপাধ্যায়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআই এবং নিউজ১৮ এ খবর জানায়।
নিউজ১৮ এর খবরটিতে বলা হয়েছে, নিজামুদ্দিন এলাকার মারকাজে (তাবলিগের প্রধান কেন্দ্র) অংশ নেওয়া ১২ জনকে গত মঙ্গলবার আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন কলকাতার এবং বাকি ১০ জন বাংলাদেশের বাসিন্দা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অবস্থানের অভিযোগে মূলত এদের আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে তাবলিগ জামাতের মধ্য প্রদেশের তিন বাসিন্দাকেও আটক করা হয়েছে।

সম্পাত উপাধ্যায় জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ১০ এবং কলকাতা তাবলিগ জামাতের দুই সদস্যের নমুনা পরীক্ষার পর তাদের দেহে আর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়নি। মারকাজের সমাবেশে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ায় তাদের কোয়ারান্টিনে পাঠানো হয়। মধ্য প্রদেশে গ্রেপ্তার হওয়ারাও তাদের সঙ্গে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমে এই খবরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে বুধবার বিকেলে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। মধ্য প্রদেশে ১০ জনের আটকের বিষয়ে তাঁর কাছে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই বলে তিনি জানান।

মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ভারত সরকার এরই মধ্যে নিজামুদ্দিন এলাকার মারকাজের সমাবেশ অংশ নেওয়া ৯৬০ জন বিদেশিকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের ভিসা বাতিল করেছে। মারকাজের সমাবেশে অংশ নেওয়া প্রায় একশ বাংলাদেশিকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল ভারত সরকার। এরই মধ্যে তাদের কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে তাদের বিষয়ে সবশেষ তথ্য জানানো হয়নি।

এ দিকে ভারতের কূটনীতিক সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজামুদ্দিন এলাকার মারকাজের সমাবেশে অংশ নেওয়া ওই একশ ছাড়াও তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশের আরও একশ সদস্য এ মুহূর্ত ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে এ মাসের প্রথম দিকে জানানো হয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের তাবলিগ জামাতের সাড়ে চারশরও বেশি সদস্য ভারতে গিয়েছেন।

পিটিআইয়ের এক খবরে বলা হয়েছে, ভারত নিজামুদ্দিন এলাকার মারকাজের সমাবেশে অংশ নেওয়া যে ৯৬০ জন বিদেশি তাবলিগ জামাত সদস্যকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ৩৭৯ জন, বাংলাদেশের ১১০ জন, কিরগিজস্তানের ৭৭ জন, মালয়েশিয়ার ৭৫ জন, থাইল্যান্ডের ৬৫ জন, মিয়ানমারের ৬৩ জন, শ্রীলঙ্কার ৩৩ জন, ভিয়েতনামের ১২ জন, যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবের ৯ জন করে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪ জন ও ফ্রান্সের ৩ জন নাগরিক রয়েছেন।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাবলিগ জামাতে অংশ নেওয়া বিদেশিরা এখন কোথায় অবস্থান করছেন সেটা খুঁজে বের করতে দিল্লি পুলিশ ও অন্য রাজ্যের পুলিশ প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছে। এরপর ওই বিদেশিদের বিরুদ্ধ ফরেনার্স অ্যাক্ট ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছে।