ঢাকা ০৬:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




মানবতার ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর গল্প

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:০৩:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯ ৪০৫ বার পড়া হয়েছে

আবুল বাশার মিরাজ : ৩০ বছর ধরে ৯ হাজারের বেশি জটিল আর দুরারোগ্য রোগের অপারেশন করেছেন। কিন্তু রোগী মৃত্যুর হার প্রায় শুণ্যের কাছাকাছি। দেশে যখন জটিল রোগের অপারেশনে রোগী মৃত্যুর হার অত্যাধিক। সেখানে ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী সৃষ্টি করেছেন এক অনন্য উদাহরণ। তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের নিউরো-সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি চিকিৎসাকে নিয়েছেন কেবল পেশা নয় বরং দায়িত্ব হিসাবে। যিনি একই সাথে সার্জন, নিউরো এনেস্থেটিক্স, নিউরো আইসিইউ কন্সালেল্টের কাজগুলো করে যাচ্ছেন।

তার কাছে কোন রোগী আসলে পরম যত্নে , মায়া মমতায়, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন দীর্ঘ সময় ধরে। এভাবে যত্ন ও সেবার মানসিকতা নিয়ে অসুস্থ রোগীর হাজার হাজার রোগীকে সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। এসব কারণে মানবিক ও কর্তব্য পরায়ণ ডাক্তার হিসাবে বগুড়াসহ পাশ্ববর্তী জেলাতে সুখ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি।

চট্রগামে জন্ম নেওয়া ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর পড়াশোনার হাতেখড়ি হয় জেলার উত্তর রাঙুনিয়া স্কুলে। তিনি এ স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করার পর ভর্তি হন রাঙুনিয়া কলেজে। এইচএসসি পাসের পর ভর্তি হন সিলেট মেডিকেল কলেজে। স্নাতকোত্তর অর্জন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে আনেস্টেথিয়াসহ বিভিন্ন রোগের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন পিজি হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে। কর্মজীবনে তিনি কাজ করেছেন ঢাকার পিজি হাসপাতাল, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চট্রগাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের নামকরা হাসপাতালে।

ডা. ফরিদুল সময় পেলেই চলে যান বগুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। উদ্দেশ্য একটাই গরীব মানুষদের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান। স্থানীয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের বিনামূল্যে সেবা প্রদানের জন্য ডাকলে সেখানেও ছুটে যান তিনি। প্রতি বছরই দিনব্যাপী শত শত রোগীর ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছেন তিনি।

এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মানুষকে সেবা প্রদান করা পৃথিবীর সব মানুষেরই নৈতিক দায়িত্ব। সুবিধাবঞ্চিত, গরীব ও অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে পারলে আমি শান্তি পাই। তিনি বলেন, দেশে সেরিব্রাল পালসি, পারকিনন্সস ডিজিজ, ডিমেন্সিয়া, পিএলআইডি রোগের লক্ষ লক্ষ রোগী রয়েছে। এসব রোগ হলে রোগীর অনেক কষ্ট হয়। আমিরিকা,সিঙ্গাপুর, ইন্ডিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নেওয়ার পরও অনেক সময় ভালো হয় না। যার জন্য অপারেশন পরবর্তীতে এই রোগকে বলা ফেইলব্যাক সিনড্রম। কিন্তু ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর দাবি, তার আবিষ্কৃত পদ্ধতিতে এসব রোগীরা শতভাগ সুস্থহচ্ছেন। এ রোগে এই প্রর্যন্ত তিনি প্রায় ৩ হাজার অপারেশন করেছেন এবং সবাই ভালো হয়েছেন।

এছাড়াও তিনি ৭ টা বাচ্চার মাথার খুলির প্লাস্টিক সার্জারি করেছেন, এখানেও তিনি শতভাগ সফলতার দাবি করেছেন। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের মধ্যে একটি অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আর সেটি হলো, দেশের বাইরে গেলেই রোগীরা ভালো সেবা পাবেন, তাই যান। অনেকের বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা নেই। তারা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বলতে পারেন এতে করে আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একরকম অপমান করা হচ্ছে।

বর্তমানে দেশেই সব ধরণে রোগের চিকিৎসা করা হচ্ছে। এখন ক্যান্সার, কিডনি, লিভার, হৃদরোগসহ সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেশেই সুলভে পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশেই চিকিৎসা নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই সবারও উচিত এটা করা। তবেই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




মানবতার ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর গল্প

আপডেট সময় : ০৫:০৩:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯

আবুল বাশার মিরাজ : ৩০ বছর ধরে ৯ হাজারের বেশি জটিল আর দুরারোগ্য রোগের অপারেশন করেছেন। কিন্তু রোগী মৃত্যুর হার প্রায় শুণ্যের কাছাকাছি। দেশে যখন জটিল রোগের অপারেশনে রোগী মৃত্যুর হার অত্যাধিক। সেখানে ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী সৃষ্টি করেছেন এক অনন্য উদাহরণ। তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের নিউরো-সার্জারী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি চিকিৎসাকে নিয়েছেন কেবল পেশা নয় বরং দায়িত্ব হিসাবে। যিনি একই সাথে সার্জন, নিউরো এনেস্থেটিক্স, নিউরো আইসিইউ কন্সালেল্টের কাজগুলো করে যাচ্ছেন।

তার কাছে কোন রোগী আসলে পরম যত্নে , মায়া মমতায়, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন দীর্ঘ সময় ধরে। এভাবে যত্ন ও সেবার মানসিকতা নিয়ে অসুস্থ রোগীর হাজার হাজার রোগীকে সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। এসব কারণে মানবিক ও কর্তব্য পরায়ণ ডাক্তার হিসাবে বগুড়াসহ পাশ্ববর্তী জেলাতে সুখ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি।

চট্রগামে জন্ম নেওয়া ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর পড়াশোনার হাতেখড়ি হয় জেলার উত্তর রাঙুনিয়া স্কুলে। তিনি এ স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করার পর ভর্তি হন রাঙুনিয়া কলেজে। এইচএসসি পাসের পর ভর্তি হন সিলেট মেডিকেল কলেজে। স্নাতকোত্তর অর্জন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে আনেস্টেথিয়াসহ বিভিন্ন রোগের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন পিজি হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে। কর্মজীবনে তিনি কাজ করেছেন ঢাকার পিজি হাসপাতাল, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, চট্রগাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের নামকরা হাসপাতালে।

ডা. ফরিদুল সময় পেলেই চলে যান বগুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। উদ্দেশ্য একটাই গরীব মানুষদের উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান। স্থানীয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের বিনামূল্যে সেবা প্রদানের জন্য ডাকলে সেখানেও ছুটে যান তিনি। প্রতি বছরই দিনব্যাপী শত শত রোগীর ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছেন তিনি।

এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মানুষকে সেবা প্রদান করা পৃথিবীর সব মানুষেরই নৈতিক দায়িত্ব। সুবিধাবঞ্চিত, গরীব ও অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে পারলে আমি শান্তি পাই। তিনি বলেন, দেশে সেরিব্রাল পালসি, পারকিনন্সস ডিজিজ, ডিমেন্সিয়া, পিএলআইডি রোগের লক্ষ লক্ষ রোগী রয়েছে। এসব রোগ হলে রোগীর অনেক কষ্ট হয়। আমিরিকা,সিঙ্গাপুর, ইন্ডিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নেওয়ার পরও অনেক সময় ভালো হয় না। যার জন্য অপারেশন পরবর্তীতে এই রোগকে বলা ফেইলব্যাক সিনড্রম। কিন্তু ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর দাবি, তার আবিষ্কৃত পদ্ধতিতে এসব রোগীরা শতভাগ সুস্থহচ্ছেন। এ রোগে এই প্রর্যন্ত তিনি প্রায় ৩ হাজার অপারেশন করেছেন এবং সবাই ভালো হয়েছেন।

এছাড়াও তিনি ৭ টা বাচ্চার মাথার খুলির প্লাস্টিক সার্জারি করেছেন, এখানেও তিনি শতভাগ সফলতার দাবি করেছেন। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের মধ্যে একটি অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আর সেটি হলো, দেশের বাইরে গেলেই রোগীরা ভালো সেবা পাবেন, তাই যান। অনেকের বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা নেই। তারা বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বলতে পারেন এতে করে আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একরকম অপমান করা হচ্ছে।

বর্তমানে দেশেই সব ধরণে রোগের চিকিৎসা করা হচ্ছে। এখন ক্যান্সার, কিডনি, লিভার, হৃদরোগসহ সব ধরনের রোগের চিকিৎসা দেশেই সুলভে পাওয়া যাচ্ছে। যেখানে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশেই চিকিৎসা নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই সবারও উচিত এটা করা। তবেই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে।