ঢাকা ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ময়মনসিংহে সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি প্রমাণের পরেও বহাল তবিয়তে  Logo গণপূর্তে কায়কোবাদ-তামজীদ সিন্ডিকেট: দুর্নীতির অভিযোগে আলোচনায় দুই প্রকৌশলী Logo আওয়ামী সুবিধাবাদী নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম গণপূর্তে বহাল তবিয়তে Logo প্রতারণায় শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন হেনোলাক্স কোম্পানির নুরুল আমিন দম্পতি Logo ঢাকায় জমকালো আয়োজনে ধর্মপুর ইউনিয়ন এসোসিয়েশনের গ্র্যান্ড মিট আপ Logo শ্রীনগরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রবিনের দৌরাত্ম্য, হাসপাতাল কেন্দ্রিক মাদক-ভেজাল ওষুধ সাপ্লাই  Logo টেকসই কৃষি, বনায়ন ও নগরায়ণে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান ইইউ রাষ্ট্রদূতের Logo জেলা জজের দুর্নীতি আড়াল করতে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo সাবেক ছাত্রদল নেতা জসীম উদ্দীনের খালার বনশ্রীর বাসায় সন্ত্রাসীদের হামলা Logo জুড়ি বিএনপির সভাপতি সেলিম’র অশ্লীল কথোপকথনের অডিও ভাইরাল

প্রতারণায় শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন হেনোলাক্স কোম্পানির নুরুল আমিন দম্পতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১৮:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০৫ বার পড়া হয়েছে

হেনোলাক্স এর নুরুল দম্পতির ভেল্কিবাজিতে নিঃশ্ব শত পরিবার, প্রতারণার মাধ্যমে গড়েছেন শতকোটি টাকার সম্পদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেই কোন ডাক্তারী সনদ তবুও তিনি নামের আগে ব্যবহার করেন ডাক্তার, বাস্তবে নেই কোন কোম্পানি তবুও তিনি নিজেকে ৩/৪ টি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাবী করেন,কখনো তিনি আমিন পোল্ট্রি লিমিটেডের চেয়ারম্যান, আমিন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আমিন ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন শুধু এতোটুকুতে সীমাবদ্ধ নয় এর পিছনে রয়েছে তার এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদ, তিনি আর কেউ নয় তিনি হলেন হেনোলাক্স কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিন হেনোলাক্স কোম্পানির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে এখনো প্রতারণা অব্যাহত রেখেছেন সাবেক এই কোম্পানির এমডি নুরুল আমিন ও ফাতেমা আমিন দম্পতি, বাস্তবে কোম্পানি গুলোর অস্তিত্ব না থাকলেও এখনো তার হেনোলাক্স সহ ৩/৪ টি কোম্পানির এমডি পরিচয় দিয়ে শেয়ার বিক্রি অযুহাত দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন শত শত কোটি টাকা। নিজেদের কোনো কোম্পানি বা বৈধ ব্যবসা বা আয়ের উৎস না থাকলেও নুরুল আমিন দম্পতি পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় হাজার কোটি টাকার স্থাবর অস্থাবর সম্পদের মালিক বনে গেছেন।

নিজ জেলা নরসিংদী এবং রাজধানী ঢাকা শহরে গড়েছেন অডেল সম্পদের পাহাড়। একের পর এক গড়ে তুলছেন বিলাসবহুল গাড়ি বাড়ি ও ফ্ল্যাট। প্রায় হাজার কোটি টাকার মালিকানা-তার সবই প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জন করা। তাকে বিশ্বাস করে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক সাধারণ মানুষ। এই প্রতারক আর কেউ নন। তিনি হলেন প্রায় ১৮ বছর আগে বন্ধ হওয়া হেনোলাক্স কোম্পানির মালিক নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিন দম্পতি। এই দম্পতি প্রতারণা করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে কুষ্টিয়ার বাসিন্দা গাজী আনিসুর রহমান জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যাও করেন। নিজের শরীরে আগুন দিয়ে ব্যবসায়ী গাজী আনিসের আত্মাহুতির ঘটনায় পরে সামনে এসেছিলো হেনোলাক্স কোম্পানির নাম।
মৃত্যুর আগে গাজী আনিস জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অভিযোগ করে গেছেন, হেনোলাক্স কোম্পানিতে তিনি ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। লভ্যাংশসহ সেই টাকা ৩ কোটির ওপরে পৌঁছালেও কোম্পানির মালিক নুরুল আমিন কোনো অর্থ ফেরত দেননি। বরং তাকে উন্টো বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করেছিলেন।

নুরুল আমিন ১৯৮১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ঢাকার গোপীবাগ এলাকায় কাদের হোমিও হল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ১৫ বছর চাকরি করেন। এরই মধ্যে ১৯৯১ সালে হেনোলাক্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। চাকরির পাশাপাশি শুরু করেন ব্যবসা। পরে ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ১৫ বছরের চাকরিটি নুরুল আমিন ছেড়ে দেন। পরিচিতি পায় তার হেনোলাক্স কোম্পানি সে সময়ে হেনোলাক্স কোম্পানিটি সরকারের ভ্যাট টেক্স ফাঁকি মেয়াদ উর্তিরন ক্যামিক্যাল ব্যবহার, সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফর্সা ক্রিম তৈরি সহ বিভিন্ন প্রকার প্রতারণা জরিত ছিলেন তারা যা সে সময়কার তাদের কোম্পানিতে চাকুরী করা এক শ্রমিকের কাছ থেকে জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার জয়নগর গ্রামের অতি নিম্নবৃত্ত পরিবারের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নুরুল আমিন খুবই অর্থকষ্টে দিনযান করতেন, তার এই অর্থ কষ্ঠকে দুরিকরণের জন্য ঢাকা এসে একটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কেন্দ্রে মাসিক বেতনে চাকুরী করতেন, তার পরে ত্বক ফর্সা ও মুখের দাগ দূর করার কয়েকটি ক্রিম নিয়ে তিনি হেনোলাক্স নাম দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। হঠাৎ করেই নানা প্রতিকূলতায় ২০০৪ সালে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন নূরুল আমিন। পরে হেনোলাক্স ফুড নামে খাদ্যপণ্য ও আমিন হারবাল কোম্পানি নামে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু লোকসানের কারণে দুটি ব্যবসাই ২০১৯ সালে বন্ধ করে দেন। বর্তমানে তিনি নিজেকে আমিন ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ও আমিন পোলট্রি লিমিটেডের চেয়ারম্যান বলে দাবি করেন। প্রকৃতপক্ষে এসব কোম্পানির কোনোটিরই কার্যক্রম নেই। এমনকি এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবগুলোয়ই ঠিকানা দেখানো হয়েছে ৩/১, পুরানা পল্টন, হেনোলাক্স সেন্টারকে। আর বিভিন্ন ব্যক্তিকে এ কোম্পানির নাম ও সেগুলোতে পার্টনার বানানোর কথা বলে নুরুল আমিন দম্পতি হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নুরুল আমিন দম্পতি নিজেদের ব্যবসায় অংশীদার বানানোর যে প্রলোভনের ফাঁদ পেতেছিলেন তাতে পা দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই, যাদের একজন হলেন কুষ্টিয়ার ঠিকাদার গাজী আনিসুর রহমান। কিন্তু সবাই প্রতিবাদ না করলেও গাজী আনিসুর রহমান আত্মাহুতি দিয়ে এই প্রতারক দম্পতির মুখোশ উন্মোচন করেন। এ ঘটনায় নুরুল আমিন দম্পতির বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় ২০২২ সালের ৫ জুলাই মামলা করা হয়। মামলা নং ৯।

অভিযোগ রয়েছে, প্রায় দুই যুগ ধরে বন্ধ থাকা কোম্পানির ভুয়া অংশীদারত্ব দিতে ভয়ংকর প্রতারণার ফাঁদ পাতে নুরুল আমিন দম্পতি। তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ব্যবসায় অংশীদার হতে চাওয়া আগ্রহীদের অনেকেই খুইয়েছেন কোটি কোটি টাকা। প্রতারক এই দম্পতি কথিত হেনোলাক্স গ্রুপের প্রধান কার্যালয় হিসেবে ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেন ৩/১, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০। আর স্কাইভিউ হেনোলাক্স সেন্টার নামের ১১ তলার এই বাণিজ্যিক ভবনটির তৃতীয় তলায় কথিত হেনোলাক্স গ্রুপের প্রধান কার্যালয় দেখানো হয়েছে।

কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, সদ্য বিদায়ি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি অ্যাপার্টমেন্টে নুরুল আমিনের অনেক আধিপত্য ছিল। কারণ কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিতে নূরুল আমিনের বাসায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক
মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতার যাতায়াত ছিল। আর এ সুযোগে প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি মালিক সমিতির কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার দাপটে ভবনের সবাই তটস্থ থাকতেন। অনেক দিন ধরে তার কোনো ব্যবসা নেই। অথচ অর্থ সম্পদ বেড়েছে অনেকগুণ। তার এ সবই হয়েছে প্রতারণার মাধ্যমে অন্য মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করে।

চলবে…… বিস্তারিত আগামী পর্বে..

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :
error: Content is protected !!

প্রতারণায় শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন হেনোলাক্স কোম্পানির নুরুল আমিন দম্পতি

আপডেট সময় : ১২:১৮:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হেনোলাক্স এর নুরুল দম্পতির ভেল্কিবাজিতে নিঃশ্ব শত পরিবার, প্রতারণার মাধ্যমে গড়েছেন শতকোটি টাকার সম্পদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেই কোন ডাক্তারী সনদ তবুও তিনি নামের আগে ব্যবহার করেন ডাক্তার, বাস্তবে নেই কোন কোম্পানি তবুও তিনি নিজেকে ৩/৪ টি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাবী করেন,কখনো তিনি আমিন পোল্ট্রি লিমিটেডের চেয়ারম্যান, আমিন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আমিন ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন শুধু এতোটুকুতে সীমাবদ্ধ নয় এর পিছনে রয়েছে তার এক ভয়ঙ্কর প্রতারণার ফাঁদ, তিনি আর কেউ নয় তিনি হলেন হেনোলাক্স কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিন হেনোলাক্স কোম্পানির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে এখনো প্রতারণা অব্যাহত রেখেছেন সাবেক এই কোম্পানির এমডি নুরুল আমিন ও ফাতেমা আমিন দম্পতি, বাস্তবে কোম্পানি গুলোর অস্তিত্ব না থাকলেও এখনো তার হেনোলাক্স সহ ৩/৪ টি কোম্পানির এমডি পরিচয় দিয়ে শেয়ার বিক্রি অযুহাত দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন শত শত কোটি টাকা। নিজেদের কোনো কোম্পানি বা বৈধ ব্যবসা বা আয়ের উৎস না থাকলেও নুরুল আমিন দম্পতি পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় হাজার কোটি টাকার স্থাবর অস্থাবর সম্পদের মালিক বনে গেছেন।

নিজ জেলা নরসিংদী এবং রাজধানী ঢাকা শহরে গড়েছেন অডেল সম্পদের পাহাড়। একের পর এক গড়ে তুলছেন বিলাসবহুল গাড়ি বাড়ি ও ফ্ল্যাট। প্রায় হাজার কোটি টাকার মালিকানা-তার সবই প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জন করা। তাকে বিশ্বাস করে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক সাধারণ মানুষ। এই প্রতারক আর কেউ নন। তিনি হলেন প্রায় ১৮ বছর আগে বন্ধ হওয়া হেনোলাক্স কোম্পানির মালিক নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিন দম্পতি। এই দম্পতি প্রতারণা করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে কুষ্টিয়ার বাসিন্দা গাজী আনিসুর রহমান জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যাও করেন। নিজের শরীরে আগুন দিয়ে ব্যবসায়ী গাজী আনিসের আত্মাহুতির ঘটনায় পরে সামনে এসেছিলো হেনোলাক্স কোম্পানির নাম।
মৃত্যুর আগে গাজী আনিস জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অভিযোগ করে গেছেন, হেনোলাক্স কোম্পানিতে তিনি ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। লভ্যাংশসহ সেই টাকা ৩ কোটির ওপরে পৌঁছালেও কোম্পানির মালিক নুরুল আমিন কোনো অর্থ ফেরত দেননি। বরং তাকে উন্টো বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করেছিলেন।

নুরুল আমিন ১৯৮১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ঢাকার গোপীবাগ এলাকায় কাদের হোমিও হল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ১৫ বছর চাকরি করেন। এরই মধ্যে ১৯৯১ সালে হেনোলাক্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। চাকরির পাশাপাশি শুরু করেন ব্যবসা। পরে ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ১৫ বছরের চাকরিটি নুরুল আমিন ছেড়ে দেন। পরিচিতি পায় তার হেনোলাক্স কোম্পানি সে সময়ে হেনোলাক্স কোম্পানিটি সরকারের ভ্যাট টেক্স ফাঁকি মেয়াদ উর্তিরন ক্যামিক্যাল ব্যবহার, সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফর্সা ক্রিম তৈরি সহ বিভিন্ন প্রকার প্রতারণা জরিত ছিলেন তারা যা সে সময়কার তাদের কোম্পানিতে চাকুরী করা এক শ্রমিকের কাছ থেকে জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার জয়নগর গ্রামের অতি নিম্নবৃত্ত পরিবারের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নুরুল আমিন খুবই অর্থকষ্টে দিনযান করতেন, তার এই অর্থ কষ্ঠকে দুরিকরণের জন্য ঢাকা এসে একটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কেন্দ্রে মাসিক বেতনে চাকুরী করতেন, তার পরে ত্বক ফর্সা ও মুখের দাগ দূর করার কয়েকটি ক্রিম নিয়ে তিনি হেনোলাক্স নাম দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। হঠাৎ করেই নানা প্রতিকূলতায় ২০০৪ সালে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন নূরুল আমিন। পরে হেনোলাক্স ফুড নামে খাদ্যপণ্য ও আমিন হারবাল কোম্পানি নামে ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু লোকসানের কারণে দুটি ব্যবসাই ২০১৯ সালে বন্ধ করে দেন। বর্তমানে তিনি নিজেকে আমিন ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ও আমিন পোলট্রি লিমিটেডের চেয়ারম্যান বলে দাবি করেন। প্রকৃতপক্ষে এসব কোম্পানির কোনোটিরই কার্যক্রম নেই। এমনকি এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবগুলোয়ই ঠিকানা দেখানো হয়েছে ৩/১, পুরানা পল্টন, হেনোলাক্স সেন্টারকে। আর বিভিন্ন ব্যক্তিকে এ কোম্পানির নাম ও সেগুলোতে পার্টনার বানানোর কথা বলে নুরুল আমিন দম্পতি হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নুরুল আমিন দম্পতি নিজেদের ব্যবসায় অংশীদার বানানোর যে প্রলোভনের ফাঁদ পেতেছিলেন তাতে পা দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকেই, যাদের একজন হলেন কুষ্টিয়ার ঠিকাদার গাজী আনিসুর রহমান। কিন্তু সবাই প্রতিবাদ না করলেও গাজী আনিসুর রহমান আত্মাহুতি দিয়ে এই প্রতারক দম্পতির মুখোশ উন্মোচন করেন। এ ঘটনায় নুরুল আমিন দম্পতির বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় ২০২২ সালের ৫ জুলাই মামলা করা হয়। মামলা নং ৯।

অভিযোগ রয়েছে, প্রায় দুই যুগ ধরে বন্ধ থাকা কোম্পানির ভুয়া অংশীদারত্ব দিতে ভয়ংকর প্রতারণার ফাঁদ পাতে নুরুল আমিন দম্পতি। তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ব্যবসায় অংশীদার হতে চাওয়া আগ্রহীদের অনেকেই খুইয়েছেন কোটি কোটি টাকা। প্রতারক এই দম্পতি কথিত হেনোলাক্স গ্রুপের প্রধান কার্যালয় হিসেবে ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেন ৩/১, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০। আর স্কাইভিউ হেনোলাক্স সেন্টার নামের ১১ তলার এই বাণিজ্যিক ভবনটির তৃতীয় তলায় কথিত হেনোলাক্স গ্রুপের প্রধান কার্যালয় দেখানো হয়েছে।

কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের বলেন, সদ্য বিদায়ি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি অ্যাপার্টমেন্টে নুরুল আমিনের অনেক আধিপত্য ছিল। কারণ কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিতে নূরুল আমিনের বাসায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক
মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতার যাতায়াত ছিল। আর এ সুযোগে প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি মালিক সমিতির কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার দাপটে ভবনের সবাই তটস্থ থাকতেন। অনেক দিন ধরে তার কোনো ব্যবসা নেই। অথচ অর্থ সম্পদ বেড়েছে অনেকগুণ। তার এ সবই হয়েছে প্রতারণার মাধ্যমে অন্য মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করে।

চলবে…… বিস্তারিত আগামী পর্বে..