ঢাকা ০৭:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




চারদিকে মরদেহ আর আর্তনাদ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০২০ ১১৮ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ; 
আমার ছেলের হোম অ্যাটেনডেন্ট রেজিনা পারুল গোমেজ। আমার দুই ছেলে তাঁকে ‘নানু’ বলে সম্বোধন করে। এজেন্সি থেকে গত বছর নভেম্বরে তাঁকে আমার বাসায় পাঠায়। ফরসা, মাঝারি উচ্চতার মানুষ। প্রথম দিন এসে বললেন, ‘আমি তোমাগো কিন্তু তুমি কইয়া ডাকমু। আমার বড় নাতি তোমগো চাইয়া বড়।’

পারুল গোমেজের বয়স ৬৫ হলেও এখন বেশ শক্তপোক্ত। কোন কাজ করতে তার ‘না’ নেই। বসে থাকতে পারেন না। খুব মায়া করেন আমার ছোট ছেলেকে। আমার বড় ছেলেও তাঁকে খুব পছন্দ করে। কোনো দিন তাঁর আসতে দেরি হলে, বারবার জানতে চায়, ‘নানু কখন আসবে?’

পারুল গোমেজের স্বামী আসার সময় গাড়িতে নামিয়ে দিয়ে যায়। যাওয়ার সময় পারুল গোমেজ ট্রেনে যায়। আমাদের বাসা থেকে ট্রেন স্টেশন বেশ খানিকটা দূরে। আমার স্বামী যদি কখনো তাঁকে বলে, আন্টি আপনাকে গাড়িতে করে ‘স্টেশনে’ নামিয়ে দিয়ে আসব? উনি বলেন, ‘না না আমি একাই যেতে পারব।’ হাঁটতে খুব পছন্দ করেন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হলে পারুল গোমেজকে কীভাবে বাসায় আসতে নিষেধ করব বুঝতে পারছিলাম না! তাঁকে বললাম, আন্টি আপনি তো ট্রেনে চড়েন, এখন বাসা থেকে বের না হওয়াই ভালো! উনি বললেন, ‘আমি কিছু ভয় পাই না। গড আমাকে দেখবে।’

করোনা মহামারিতে আমরা যখন গৃহবন্দী, পারুল গোমেজ আমাকে ফোন করে বলেছে, ‘ওপরওয়ালাকে ডাকো। কিছু হবে না।’ তারপর বেশ কিছুদিন তার কোনো খবর নেই। ফোন করলে ধরেন না। হঠাৎ একদিন ফোন করে বললেন, ‘শরীর খুব খারাপ। পরে ফোন করে বলব।’

তারপর প্রায় ১৫ দিন কোন খবর নেই। আমি মহাদুশ্চিন্তায়। প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা ফোন করি, টেক্সট করি। কোনো উত্তর নেই। এজেন্সির সুপারভাইজারকে ফোন করলাম। তিনিও কিছু জানেন না।

হঠাৎ একদিন দুপুরবেলা ফোন করে পারুল গোমেজ জানালেন, ‘আজ সকালে হাসপাতাল থেকে ফিরেছি।’ আমি বললাম, ‘কেন? কি হয়েছে?’ উত্তরে জানালেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দশ দিন হাসপাতালে ছিলাম। এখনো শরীর খুব দুর্বল। পরে ফোন করে সব বলব।’

চার-পাঁচ দিন পরে একদিন ফোন করলেন পারুল গোমেজ। জানালেন, ছেলে কাজের জায়গা থেকে জ্বর নিয়ে এসেছে। এপ্রিলের ৫/৬ তারিখের দিকে হবে। ক্রমে ছেলে বউ ও নাতিরাও অসুস্থ হল। ছেলে কিছু খেতে পারে না। সকালে তার জন্য পরোটা বানাতে গেছি। হঠাৎ করে আমার বমি শুরু হল। বমি করে আর উঠতেই পারি না। ছেলে দোতলা থেকে নিচে নেমে এল। কেন পরোটা বানাচ্ছি, এই নিয়ে রাগারাগি করল। তারপর বাটার দিয়ে পাউরুটি খেতে দিল আমাকে। চা ও পানি খাওয়াল। খেয়ে কিছুটা সুস্থ বোধ করলাম।

রাতে আবার ডায়রিয়া ও বমি। অ্যাম্বুলেন্স কল করা হল। ডাক্তাররা এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলল, ওই রকম কিছু না। বাসায় থেকে ওষুধ খাও। ফিজিশিয়ানকে কল করতে বলল। ড. ফেরদৌস খন্দকারকে ফোন করলাম। উনি ওষুধ দিলেন। কিন্তু বমি ও ডায়রিয়া থামছিল না।

পরদিন আবার অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হল। ডাক্তাররা এবার টেস্ট করে বললেন, করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে। তারা অক্সিজেন মাস্ক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে গেল আমাকে। একটা স্কার্ট আর গেঞ্জি পরে গেলাম। সঙ্গে কেউ যায়নি। মোবাইলও নিতে পারিনি সঙ্গে। জ্যামাইকার কুইন্স হাসপাতালের সামনে এসে দেখি অ্যাম্বুলেন্সের লম্বা লাইন। ভেতরে ঢুকতেও দীর্ঘ সময় লাগল।

ভেতরে গিয়ে দেখি মানুষের চিৎকার। ইমার্জেন্সিতে যেখানে ১০০ মানুষের জায়গা হওয়ার কথা, সেখানে হাজার মানুষের ভিড়। কেউ দেখার নেই। কে কারে দেখবে। ডাক্তার-নার্সদের নাভিশ্বাস অবস্থা। বেডে তিন দিন শুয়ে থেকেছি। কখনো জ্ঞান ছিল, কখনো ছিল না। জ্ঞান আসলে চিৎকার করেছি, একটু পানি দে। পায়খানা করে বিছানা নষ্ট করে ফেলেছি। অক্সিজেন ছাড়াই মাস্ক পরে ছিলাম তিন দিন।

হয়তো তখন মরে যেতে পারতাম। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে মরলাম না। ডাইনে-বাঁয়ে অনেক লোককে দেখলাম ঘুমিয়ে আছে। ব্যাগের মধ্যে যখন ঢুকিয়ে ফেলে, তখন বুঝতে পারলাম, তারা মারা গেছেন। আমি নিজের শরীরে চিমটি দিয়ে দেখি, আমি কি বেঁচে আছি?

‘ওটা কি ডেডবডি?’ নার্সকে জিজ্ঞাসা করি। ‘ওই দিকে তাকাবি না’—নার্স উত্তরে বলে। ইমার্জেন্সি থেকে নিয়ে আমার চিকিৎসা শুরু হয়। শরীরে স্যালাইন দেয় ওরা। স্যালাইনের সঙ্গে এক ধরনের ওষুধ দেয়। শরীর দিয়ে ধোঁয়ার মতো বের হয়। আমার পায়খানা পরিষ্কার করে নতুন কাপড় পরিয়ে দেয়। ওয়েল ক্লথ দেয়। কত দিন খাওয়া নেই। পেট জ্বলে। ডায়াবেটিস নিচে। হাসপাতাল থেকে অনেক ধরনের খাবার দেয়। কিন্তু কিছু খেতে পারি না।

এক বাঙালি ডাক্তারকে পেলাম। উনি বললেন, ‘খালা দোয়া করেন চারতলায় যেন যেতে না হয়।’ চার তলায় সবাই ভেন্টিলেটরের রোগী। আমার পাশে এক কৃষ্ণাঙ্গ নারী ছিলেন, তাঁকে ভেন্টিলেটর দেওয়ার আগে ডাক্তার বলল, ‘তুমি ফিরেও আসত পার, আবার ফিরে নাও আসতে পার। শেষ কথা কিছু বলতে চাও?’ ওই মহিলা বললেন, ‘আমার স্বামীকে বলবে, আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। আমাকে যেন সে ক্ষমা করে দেয়।’ এরপর মহিলাকে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলা হল।

কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পরে ওরা আমাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। কারণ, আমি হাসপাতালের খাবার খেতে পারতাম না। এখন আমি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছি। আগে সবাইকে আমি সাহস দিতাম। এখন আমি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়লাম। দোয়া করি, এমন ভয়ংকর অভিজ্ঞতা আমার শত্রুরও যেন না হয়। এত কষ্ট সহ্য করা যায় না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




চারদিকে মরদেহ আর আর্তনাদ

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০২০

সকালের সংবাদ; 
আমার ছেলের হোম অ্যাটেনডেন্ট রেজিনা পারুল গোমেজ। আমার দুই ছেলে তাঁকে ‘নানু’ বলে সম্বোধন করে। এজেন্সি থেকে গত বছর নভেম্বরে তাঁকে আমার বাসায় পাঠায়। ফরসা, মাঝারি উচ্চতার মানুষ। প্রথম দিন এসে বললেন, ‘আমি তোমাগো কিন্তু তুমি কইয়া ডাকমু। আমার বড় নাতি তোমগো চাইয়া বড়।’

পারুল গোমেজের বয়স ৬৫ হলেও এখন বেশ শক্তপোক্ত। কোন কাজ করতে তার ‘না’ নেই। বসে থাকতে পারেন না। খুব মায়া করেন আমার ছোট ছেলেকে। আমার বড় ছেলেও তাঁকে খুব পছন্দ করে। কোনো দিন তাঁর আসতে দেরি হলে, বারবার জানতে চায়, ‘নানু কখন আসবে?’

পারুল গোমেজের স্বামী আসার সময় গাড়িতে নামিয়ে দিয়ে যায়। যাওয়ার সময় পারুল গোমেজ ট্রেনে যায়। আমাদের বাসা থেকে ট্রেন স্টেশন বেশ খানিকটা দূরে। আমার স্বামী যদি কখনো তাঁকে বলে, আন্টি আপনাকে গাড়িতে করে ‘স্টেশনে’ নামিয়ে দিয়ে আসব? উনি বলেন, ‘না না আমি একাই যেতে পারব।’ হাঁটতে খুব পছন্দ করেন তিনি।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হলে পারুল গোমেজকে কীভাবে বাসায় আসতে নিষেধ করব বুঝতে পারছিলাম না! তাঁকে বললাম, আন্টি আপনি তো ট্রেনে চড়েন, এখন বাসা থেকে বের না হওয়াই ভালো! উনি বললেন, ‘আমি কিছু ভয় পাই না। গড আমাকে দেখবে।’

করোনা মহামারিতে আমরা যখন গৃহবন্দী, পারুল গোমেজ আমাকে ফোন করে বলেছে, ‘ওপরওয়ালাকে ডাকো। কিছু হবে না।’ তারপর বেশ কিছুদিন তার কোনো খবর নেই। ফোন করলে ধরেন না। হঠাৎ একদিন ফোন করে বললেন, ‘শরীর খুব খারাপ। পরে ফোন করে বলব।’

তারপর প্রায় ১৫ দিন কোন খবর নেই। আমি মহাদুশ্চিন্তায়। প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা ফোন করি, টেক্সট করি। কোনো উত্তর নেই। এজেন্সির সুপারভাইজারকে ফোন করলাম। তিনিও কিছু জানেন না।

হঠাৎ একদিন দুপুরবেলা ফোন করে পারুল গোমেজ জানালেন, ‘আজ সকালে হাসপাতাল থেকে ফিরেছি।’ আমি বললাম, ‘কেন? কি হয়েছে?’ উত্তরে জানালেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দশ দিন হাসপাতালে ছিলাম। এখনো শরীর খুব দুর্বল। পরে ফোন করে সব বলব।’

চার-পাঁচ দিন পরে একদিন ফোন করলেন পারুল গোমেজ। জানালেন, ছেলে কাজের জায়গা থেকে জ্বর নিয়ে এসেছে। এপ্রিলের ৫/৬ তারিখের দিকে হবে। ক্রমে ছেলে বউ ও নাতিরাও অসুস্থ হল। ছেলে কিছু খেতে পারে না। সকালে তার জন্য পরোটা বানাতে গেছি। হঠাৎ করে আমার বমি শুরু হল। বমি করে আর উঠতেই পারি না। ছেলে দোতলা থেকে নিচে নেমে এল। কেন পরোটা বানাচ্ছি, এই নিয়ে রাগারাগি করল। তারপর বাটার দিয়ে পাউরুটি খেতে দিল আমাকে। চা ও পানি খাওয়াল। খেয়ে কিছুটা সুস্থ বোধ করলাম।

রাতে আবার ডায়রিয়া ও বমি। অ্যাম্বুলেন্স কল করা হল। ডাক্তাররা এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলল, ওই রকম কিছু না। বাসায় থেকে ওষুধ খাও। ফিজিশিয়ানকে কল করতে বলল। ড. ফেরদৌস খন্দকারকে ফোন করলাম। উনি ওষুধ দিলেন। কিন্তু বমি ও ডায়রিয়া থামছিল না।

পরদিন আবার অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হল। ডাক্তাররা এবার টেস্ট করে বললেন, করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে। তারা অক্সিজেন মাস্ক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে গেল আমাকে। একটা স্কার্ট আর গেঞ্জি পরে গেলাম। সঙ্গে কেউ যায়নি। মোবাইলও নিতে পারিনি সঙ্গে। জ্যামাইকার কুইন্স হাসপাতালের সামনে এসে দেখি অ্যাম্বুলেন্সের লম্বা লাইন। ভেতরে ঢুকতেও দীর্ঘ সময় লাগল।

ভেতরে গিয়ে দেখি মানুষের চিৎকার। ইমার্জেন্সিতে যেখানে ১০০ মানুষের জায়গা হওয়ার কথা, সেখানে হাজার মানুষের ভিড়। কেউ দেখার নেই। কে কারে দেখবে। ডাক্তার-নার্সদের নাভিশ্বাস অবস্থা। বেডে তিন দিন শুয়ে থেকেছি। কখনো জ্ঞান ছিল, কখনো ছিল না। জ্ঞান আসলে চিৎকার করেছি, একটু পানি দে। পায়খানা করে বিছানা নষ্ট করে ফেলেছি। অক্সিজেন ছাড়াই মাস্ক পরে ছিলাম তিন দিন।

হয়তো তখন মরে যেতে পারতাম। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে মরলাম না। ডাইনে-বাঁয়ে অনেক লোককে দেখলাম ঘুমিয়ে আছে। ব্যাগের মধ্যে যখন ঢুকিয়ে ফেলে, তখন বুঝতে পারলাম, তারা মারা গেছেন। আমি নিজের শরীরে চিমটি দিয়ে দেখি, আমি কি বেঁচে আছি?

‘ওটা কি ডেডবডি?’ নার্সকে জিজ্ঞাসা করি। ‘ওই দিকে তাকাবি না’—নার্স উত্তরে বলে। ইমার্জেন্সি থেকে নিয়ে আমার চিকিৎসা শুরু হয়। শরীরে স্যালাইন দেয় ওরা। স্যালাইনের সঙ্গে এক ধরনের ওষুধ দেয়। শরীর দিয়ে ধোঁয়ার মতো বের হয়। আমার পায়খানা পরিষ্কার করে নতুন কাপড় পরিয়ে দেয়। ওয়েল ক্লথ দেয়। কত দিন খাওয়া নেই। পেট জ্বলে। ডায়াবেটিস নিচে। হাসপাতাল থেকে অনেক ধরনের খাবার দেয়। কিন্তু কিছু খেতে পারি না।

এক বাঙালি ডাক্তারকে পেলাম। উনি বললেন, ‘খালা দোয়া করেন চারতলায় যেন যেতে না হয়।’ চার তলায় সবাই ভেন্টিলেটরের রোগী। আমার পাশে এক কৃষ্ণাঙ্গ নারী ছিলেন, তাঁকে ভেন্টিলেটর দেওয়ার আগে ডাক্তার বলল, ‘তুমি ফিরেও আসত পার, আবার ফিরে নাও আসতে পার। শেষ কথা কিছু বলতে চাও?’ ওই মহিলা বললেন, ‘আমার স্বামীকে বলবে, আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। আমাকে যেন সে ক্ষমা করে দেয়।’ এরপর মহিলাকে ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলা হল।

কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠার পরে ওরা আমাকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। কারণ, আমি হাসপাতালের খাবার খেতে পারতাম না। এখন আমি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছি। আগে সবাইকে আমি সাহস দিতাম। এখন আমি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়লাম। দোয়া করি, এমন ভয়ংকর অভিজ্ঞতা আমার শত্রুরও যেন না হয়। এত কষ্ট সহ্য করা যায় না।