ঢাকা ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বিএনপি নেতা মাহিদুর রহমান নেতৃত্বের বিস্ময় Logo স্বৈরাচারের দোসর প্রধান বিচারপতির ধর্ম ছেলে পরিচয়ে মোজাম্মেলের অধর্ম! Logo রাজধানীতে মার্কেট দখল করতে গিয়ে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আটক Logo স্কুলের ভেতরে নিয়মিত চলে তাশ ও জুয়া! Logo চাঁদা চাওয়ায় দাকোপে ৫ আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা Logo ভোলা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আল আমিন সম্পাদক শামসউদ্দিন Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এর উদ্যোগে দুমকিতে ক্যারিয়ার সামিট অনুষ্ঠিত Logo সওজ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে প্রচারিত প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ Logo বিপ্লবী গান, আবৃত্তি এবং কাওয়ালী গানে মেতেছে আশা বিশ্ববিদ্যালয় Logo ছত্রিশ টাকার নকলনবীশ প্রভাবশালী কোটিপতি!




ডিআইজি মিজানকে বরখাস্তের প্রস্তাব যাচ্ছে রাষ্ট্রপতির কাছে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৩৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০১৯ ১১২ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ ডেস্ক;
পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও সাত মাসে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন দুদকের কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজকালের মধ্যে প্রস্তাবটি পাঠাবে বলে জানা গেছে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সাময়িক বরখাস্তের জন্য কিছু ধাপ পার হতে হয়। সে জন্যই কিছুটা দেরি হয়েছে। এখন তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি অপরাধের আলাদা আলাদা বিচার হবে।

পুলিশে একজন কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর জন্য তৈরি করা প্রস্তাবে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শাহাব উদ্দিন কোরেশীর অনুসন্ধান প্রতিবেদন তুলে ধরা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা জানান, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী, পদস্থ কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে হলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগবে। সে কারণে মিজানকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাটিও রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হচ্ছে।

তদন্ত কমিটির মতামতঃ
মিজানুরের বিরুদ্ধে করা সংবাদ পাঠিকার অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে কমিটি প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগের সত্যতা পায়। মিজানুর ওই সংবাদ পাঠিকাকে বলেছিলেন, তাঁকে খুন করে ৬৪ টুকরা করবেন। কমিটি পর্যালোচনায় এ বক্তব্যের সত্যতা পায়। কমিটির কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে ডিআইজি জানান, ওই সংবাদ পাঠিকা পরিকল্পিতভাবে তাঁর আবেগের সুযোগ নিয়ে উসকানিমূলক কথা বলে তাঁকে উত্তেজিত করেছেন। ফলে তিনি নিজে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে সংবাদ পাঠিকার বিরুদ্ধে কিছু অপ্রত্যাশিত শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করেছিলেন। এ বিষয়ে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চান। সংবাদ পাঠিকা এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন ডিআইজি মিজানুর
গত জানুয়ারিতে মিজানুরকে প্রত্যাহার করা হয় 
সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি–উত্ত্যক্তের অভিযোগ প্রমাণিত 
ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি

মিজানের বিরুদ্ধে জিডি করার জন্য সংবাদ পাঠিকা তাঁর স্বামীকে নিয়ে বিমানবন্দর থানায় গিয়েছিলেন কি না, তা–ও অনুসন্ধান করেছে কমিটি। কমিটি জানতে পারে, ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি প্রকাশের পর অভিযোগ নিয়ে আইনানুগ প্রতিকার চেয়ে ওই নারী থানায় যান। ‘চন্দ্র মল্লিকা’ ও ‘দেশী মাল’ নামে দুটি ফেসবুক আইডি খুলে সেখানে নারীর আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিট তদন্ত করছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন ডিআইজি মিজানুর। গত জানুয়ারির শুরুর দিকে তাঁকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া গত বছরের ৩ মে অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে মিজানুরকে দুদক কার্যালয়ে প্রায় সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে মিজানুর রহমান ও তাঁর প্রথম স্ত্রী সোহেলিয়া আনারের আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ কোটি টাকার বেশি সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। মিজানুরের নামে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার অসংগতিপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা দুদকের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশ করে। তদন্ত শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ডিআইজি মিজানকে বরখাস্তের প্রস্তাব যাচ্ছে রাষ্ট্রপতির কাছে

আপডেট সময় : ১১:৩৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ জুন ২০১৯

সকালের সংবাদ ডেস্ক;
পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলেও সাত মাসে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন দুদকের কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজকালের মধ্যে প্রস্তাবটি পাঠাবে বলে জানা গেছে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, মিজানের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সাময়িক বরখাস্তের জন্য কিছু ধাপ পার হতে হয়। সে জন্যই কিছুটা দেরি হয়েছে। এখন তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি অপরাধের আলাদা আলাদা বিচার হবে।

পুলিশে একজন কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর জন্য তৈরি করা প্রস্তাবে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শাহাব উদ্দিন কোরেশীর অনুসন্ধান প্রতিবেদন তুলে ধরা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা জানান, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী, পদস্থ কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে হলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগবে। সে কারণে মিজানকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাটিও রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হচ্ছে।

তদন্ত কমিটির মতামতঃ
মিজানুরের বিরুদ্ধে করা সংবাদ পাঠিকার অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে কমিটি প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগের সত্যতা পায়। মিজানুর ওই সংবাদ পাঠিকাকে বলেছিলেন, তাঁকে খুন করে ৬৪ টুকরা করবেন। কমিটি পর্যালোচনায় এ বক্তব্যের সত্যতা পায়। কমিটির কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে ডিআইজি জানান, ওই সংবাদ পাঠিকা পরিকল্পিতভাবে তাঁর আবেগের সুযোগ নিয়ে উসকানিমূলক কথা বলে তাঁকে উত্তেজিত করেছেন। ফলে তিনি নিজে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে সংবাদ পাঠিকার বিরুদ্ধে কিছু অপ্রত্যাশিত শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করেছিলেন। এ বিষয়ে তিনি নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চান। সংবাদ পাঠিকা এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন ডিআইজি মিজানুর
গত জানুয়ারিতে মিজানুরকে প্রত্যাহার করা হয় 
সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি–উত্ত্যক্তের অভিযোগ প্রমাণিত 
ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি

মিজানের বিরুদ্ধে জিডি করার জন্য সংবাদ পাঠিকা তাঁর স্বামীকে নিয়ে বিমানবন্দর থানায় গিয়েছিলেন কি না, তা–ও অনুসন্ধান করেছে কমিটি। কমিটি জানতে পারে, ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি প্রকাশের পর অভিযোগ নিয়ে আইনানুগ প্রতিকার চেয়ে ওই নারী থানায় যান। ‘চন্দ্র মল্লিকা’ ও ‘দেশী মাল’ নামে দুটি ফেসবুক আইডি খুলে সেখানে নারীর আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিট তদন্ত করছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ছিলেন ডিআইজি মিজানুর। গত জানুয়ারির শুরুর দিকে তাঁকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া গত বছরের ৩ মে অবৈধ সম্পদসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে মিজানুরকে দুদক কার্যালয়ে প্রায় সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে মিজানুর রহমান ও তাঁর প্রথম স্ত্রী সোহেলিয়া আনারের আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ কোটি টাকার বেশি সম্পদের খোঁজ পায় দুদক। মিজানুরের নামে ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ১৯১ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৭২ লাখ ৯০ হাজার ৯৫২ টাকার অসংগতিপূর্ণ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা দুদকের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রকাশ করে। তদন্ত শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।