ঢাকা ০২:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান Logo সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এইচ এম আল-আমিন Logo সওজ ও গণপূর্তের ‘মাফিয়া’ আওয়ামী ঘনিষ্ঠ দোসর মুস্তাফিজ ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় করেও বহাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় জিম্মি শহিদুল! Logo আওয়ামী লীগের পক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলায় এনআরবি ব্যাংক’ ২ পরিচালকের অর্থ সহায়তা Logo ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর ফায়ারের উপ-পরিচালক দীনোমনির বিরূদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ




দুর্দান্ত জয়ে সেমিফাইনালের পথে টাইগাররা! 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯ ১৩৪ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ ডেস্ক;
৭৫, ৬৪, ১২১, ১২৪ ব্যাটিংয়ের এই পরিসংখ্যান যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই স্বপ্নের। অথচ কি সাবলিলভাবেই না এই স্কোরগুলো গড়ে ফেললেন সাকিব! বিশ্বকাপে বাংলাদেশের চার ম্যাচে ৩৮৪ রান শুধু বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রানের মসনদ ফিরেই পেলেন না বরং দুই ম্যাচ হারার পরে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে মাঠের বাইরে থেকে তেড়ে আসা অনেক প্রশ্নকে ছক্কা মেরে ওপারে পাঠিয়ে দিলেন। তাতে কষ্ট পেতে চাইলেও পেতে পারে ব্রান্ডন ম্যাককুলাম কিংবা নাসের হুসেন! তাতে অবশ্য বাংলাদেশের কিছু যায় আসছে না। বাংলাদেশের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি তা হলো ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্নকে কক্ষপথে ফিরিয়ে আনা। দলের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার। সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্নকে টিকিয়ে রাখার। আর সেই স্বপ্ন পূরণে সাকিবের সঙ্গে আজ কি দারুণ সঙ্গটাই না দিলেন লিটন কুমার দাস। সঙ্গে ১৩৫ বলে ১৮৯ রানের অপরাজিত জুটি দুর্দান্ত এক জয় ছিনিয়ে আনলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। অথচ ফর্মে থাকার পরও বিশ্বকাপে যেন জায়গা হচ্ছিল না লিটনের। শুধু দলের সাইডবেঞ্চে বসে থাকার জন্য যে আসেননি তার শক্ত এক বার্তা রাখলেন ৬৯ বলে ৮ চার ও চার ছক্কায় ৯৪ রান করা লিটন কুমার দাস।

এর শুরুটা অবশ্য করেছিলেন তামিম ও সৌম্য। টনটনে বড় টার্গেট তাড়ায় নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দেন তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। রানের জন্য লড়ছিলেন তামিম, অন্যপ্রান্তে সৌম্য সাবলীল ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন। নবম ওভারের প্রথম বলে আন্দ্রে রাসেলকে পয়েন্টের ওপর দিয়ে দারুণ এক ছক্কা মারলেন সৌম্য। পরের বলেই ক্যাচ তুলে দিলেন স্লিপে। ২৩ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ২৯ রান করা সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে ৫২ রানের ওপেনিং জুটি। সৌম্যর আউটের পর হাত খুলতে থাকেন তামিম। সাকিবকে সঙ্গী করে এগিয়ে নিতে থাকেন দলের স্কোর।

দ্বিতীয় উইকেটে তখন এসে গেছে ৬৯ রান। জমে উঠেছে জুটি ঠিক তখনি শেলডন কটরেলের দুর্দান্ত এক থ্রোতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে যান ৪৭তম হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৩ রান দূরে থাকা তামিম। কটরেল নিজেই সরাসরি থ্রোতে তামিমের স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। তামিমের আউট হওয়ার কিছুণের মধ্যেই থমাসের লেগ স্ট্যাম্পেও বাইরের বল খোঁচা মেরে মেরে আউট হন মুশফিক (১)। তামিম-মুশফিকের জোড়া শিকার করে আবার ট্রাকে ফিরে আসে উইন্ডিজ। সঙ্গে বাড়তে থাকে বাংলাদেশি সমর্থকদের দীর্ঘশ্বাস। চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু মিঠুনের পরিবর্তে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে মুখিয়ে থাকা লিটন কি দুর্দান্তভাবেই না সে সুযোগ কাজে লাগালেন। সাকিবের সঙ্গে গড়লেন অনবদ্য ১৭৯ রানের জুটি। যে জুটি শক্ত ভীত গড়ে দেয় বাংলাদেশের। নিশ্চিত করে জয়। যে জয় আনন্দের, হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩২১ রান তোলে উইন্ডিজ। ভয়ংকর ক্রিস গেইল ১৩ বল খেলে একটি রানও করতে পারেননি! শেষ পর্যন্ত দলীয় ৬ রানে সাইফউদ্দিনের বলে ক্রিস গেইলের ক্যাচ দুর্দান্তভাবে লুফে নেন মুশফিকুর রহিম। এমন অবস্থায় দলের হাল ধরেন অপর ওপেনার এভিন লুইস এবং শাই হোপ। ৫৯ বলে ফিফটি করেন এভিন লুইস। দুজনের জুটিতে তখন ১১৬ রান এসে গেছে। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন সাকিব। তার ঘূর্ণিতে বদলি ফিল্ডার সাব্বিরের তালুবন্দি হন ৬৭ বলে ৭০ করা এভিন লুইস।

এরপর ৭৫ বলে বাংলাদেশের বিপে টানা ৬ষ্ঠ ফিফটি করেন শাই হোপ। উইকেটে এসে রানের জন্য ছটফট করছিলেন নিকোলাস পুরান (২৫)। তাকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। লং অন থেকে দারুন ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার। বিধ্বংসী শিমরন হেটমায়ার উইকেটে এসেই তা-ব শুরু করেন। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মাত্র ২৫ বলে। শেষ পর্যন্ত এই মারকাটারি ব্যাটসম্যানকে তামিম ইকবালের তালুবন্দি করেন মুস্তাফিজ। ক্রিস গেইলের মতো আরেক ভয়ংকর হার্ডহিটার আন্দ্রে রাসেলও ‘ডাক’ মারেন আজ। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মুশফিকের গ্লাভসে ধরা পড়েন এই দানবীয় ব্যাটসম্যান।

এরপর উইকেটে এসে ঝড় তোলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ১৫ বলে ৩৩ রান করে বিপজ্জনক এই অল-রাউন্ডার সাইফউদ্দিনের শিকার হন। শাই হোপকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেন মুস্তাফিজ। ১২১ বলে ৯৬ রান করা হোপকে লিটন দাসের তালুবন্দি করে নিজের তৃতীয় শিকার ধরেন কাটার মাস্টার। শেষদিকে ব্র্যাভোর ১৫ বলে ১৬ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে উইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩২১ রান। শেষ বলে ব্র্যাভোকে বোল্ড করে দেন সাইফ। ৩টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ আর সাইফউদ্দিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




দুর্দান্ত জয়ে সেমিফাইনালের পথে টাইগাররা! 

আপডেট সময় : ১১:৪৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯

সকালের সংবাদ ডেস্ক;
৭৫, ৬৪, ১২১, ১২৪ ব্যাটিংয়ের এই পরিসংখ্যান যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই স্বপ্নের। অথচ কি সাবলিলভাবেই না এই স্কোরগুলো গড়ে ফেললেন সাকিব! বিশ্বকাপে বাংলাদেশের চার ম্যাচে ৩৮৪ রান শুধু বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রানের মসনদ ফিরেই পেলেন না বরং দুই ম্যাচ হারার পরে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে মাঠের বাইরে থেকে তেড়ে আসা অনেক প্রশ্নকে ছক্কা মেরে ওপারে পাঠিয়ে দিলেন। তাতে কষ্ট পেতে চাইলেও পেতে পারে ব্রান্ডন ম্যাককুলাম কিংবা নাসের হুসেন! তাতে অবশ্য বাংলাদেশের কিছু যায় আসছে না। বাংলাদেশের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি তা হলো ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্নকে কক্ষপথে ফিরিয়ে আনা। দলের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার। সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্নকে টিকিয়ে রাখার। আর সেই স্বপ্ন পূরণে সাকিবের সঙ্গে আজ কি দারুণ সঙ্গটাই না দিলেন লিটন কুমার দাস। সঙ্গে ১৩৫ বলে ১৮৯ রানের অপরাজিত জুটি দুর্দান্ত এক জয় ছিনিয়ে আনলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। অথচ ফর্মে থাকার পরও বিশ্বকাপে যেন জায়গা হচ্ছিল না লিটনের। শুধু দলের সাইডবেঞ্চে বসে থাকার জন্য যে আসেননি তার শক্ত এক বার্তা রাখলেন ৬৯ বলে ৮ চার ও চার ছক্কায় ৯৪ রান করা লিটন কুমার দাস।

এর শুরুটা অবশ্য করেছিলেন তামিম ও সৌম্য। টনটনে বড় টার্গেট তাড়ায় নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দেন তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। রানের জন্য লড়ছিলেন তামিম, অন্যপ্রান্তে সৌম্য সাবলীল ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন। নবম ওভারের প্রথম বলে আন্দ্রে রাসেলকে পয়েন্টের ওপর দিয়ে দারুণ এক ছক্কা মারলেন সৌম্য। পরের বলেই ক্যাচ তুলে দিলেন স্লিপে। ২৩ বলে ২ চার ২ ছক্কায় ২৯ রান করা সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে ৫২ রানের ওপেনিং জুটি। সৌম্যর আউটের পর হাত খুলতে থাকেন তামিম। সাকিবকে সঙ্গী করে এগিয়ে নিতে থাকেন দলের স্কোর।

দ্বিতীয় উইকেটে তখন এসে গেছে ৬৯ রান। জমে উঠেছে জুটি ঠিক তখনি শেলডন কটরেলের দুর্দান্ত এক থ্রোতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে যান ৪৭তম হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৩ রান দূরে থাকা তামিম। কটরেল নিজেই সরাসরি থ্রোতে তামিমের স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। তামিমের আউট হওয়ার কিছুণের মধ্যেই থমাসের লেগ স্ট্যাম্পেও বাইরের বল খোঁচা মেরে মেরে আউট হন মুশফিক (১)। তামিম-মুশফিকের জোড়া শিকার করে আবার ট্রাকে ফিরে আসে উইন্ডিজ। সঙ্গে বাড়তে থাকে বাংলাদেশি সমর্থকদের দীর্ঘশ্বাস। চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু মিঠুনের পরিবর্তে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে মুখিয়ে থাকা লিটন কি দুর্দান্তভাবেই না সে সুযোগ কাজে লাগালেন। সাকিবের সঙ্গে গড়লেন অনবদ্য ১৭৯ রানের জুটি। যে জুটি শক্ত ভীত গড়ে দেয় বাংলাদেশের। নিশ্চিত করে জয়। যে জয় আনন্দের, হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩২১ রান তোলে উইন্ডিজ। ভয়ংকর ক্রিস গেইল ১৩ বল খেলে একটি রানও করতে পারেননি! শেষ পর্যন্ত দলীয় ৬ রানে সাইফউদ্দিনের বলে ক্রিস গেইলের ক্যাচ দুর্দান্তভাবে লুফে নেন মুশফিকুর রহিম। এমন অবস্থায় দলের হাল ধরেন অপর ওপেনার এভিন লুইস এবং শাই হোপ। ৫৯ বলে ফিফটি করেন এভিন লুইস। দুজনের জুটিতে তখন ১১৬ রান এসে গেছে। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন সাকিব। তার ঘূর্ণিতে বদলি ফিল্ডার সাব্বিরের তালুবন্দি হন ৬৭ বলে ৭০ করা এভিন লুইস।

এরপর ৭৫ বলে বাংলাদেশের বিপে টানা ৬ষ্ঠ ফিফটি করেন শাই হোপ। উইকেটে এসে রানের জন্য ছটফট করছিলেন নিকোলাস পুরান (২৫)। তাকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। লং অন থেকে দারুন ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার। বিধ্বংসী শিমরন হেটমায়ার উইকেটে এসেই তা-ব শুরু করেন। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মাত্র ২৫ বলে। শেষ পর্যন্ত এই মারকাটারি ব্যাটসম্যানকে তামিম ইকবালের তালুবন্দি করেন মুস্তাফিজ। ক্রিস গেইলের মতো আরেক ভয়ংকর হার্ডহিটার আন্দ্রে রাসেলও ‘ডাক’ মারেন আজ। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মুশফিকের গ্লাভসে ধরা পড়েন এই দানবীয় ব্যাটসম্যান।

এরপর উইকেটে এসে ঝড় তোলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ১৫ বলে ৩৩ রান করে বিপজ্জনক এই অল-রাউন্ডার সাইফউদ্দিনের শিকার হন। শাই হোপকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেন মুস্তাফিজ। ১২১ বলে ৯৬ রান করা হোপকে লিটন দাসের তালুবন্দি করে নিজের তৃতীয় শিকার ধরেন কাটার মাস্টার। শেষদিকে ব্র্যাভোর ১৫ বলে ১৬ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে উইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩২১ রান। শেষ বলে ব্র্যাভোকে বোল্ড করে দেন সাইফ। ৩টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজ আর সাইফউদ্দিন।