প্রতিবাদে উত্তাল হংকং

- আপডেট সময় : ০৩:৩৩:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০১৯ ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক;
চীন এবং তাইওয়ানে বন্দি বহিঃসমর্পণ সংক্রান্ত এক প্রস্তাবিত বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে হংকং। বুধবার ভোর থেকেই হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে এসেছে। খবর বিবিসির।
বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের সরকারি দফতরগুলোর আশপাশের প্রধান সড়কগুলোতে অবস্থান নেওয়ায় শহরের অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থলটি অচল হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আইন পরিষদ (লেগকো) বিলটির দ্বিতীয় বিতর্কের জন্য সময় নিয়েছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, বিলটির দ্বিতীয় বিতর্কের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। পরিষদের সদস্যরা পরবর্তীতে নতুন সময় জানিয়ে দেবেন।
ব্যাপক গণআন্দোলনের মধ্যেই সোমবার হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম জানান, প্রত্যর্পণ বিলে কোনো কাটছাঁট করা হবে না। এরপর থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে হংকং।
ভোর থেকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ল্যামের দফতরের আশপাশে জড়ো হয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে ল্যামের দফতরের চারপাশে কয়েকশ দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হংকং পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। বিক্ষোভকারীরা সরে না গেলে তারা জোর করতে বাধ্য হবে বলে এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে।
১৯৯৭ সালে ব্রিটিশদের থেকে চীনের কাছে হংকংয়ের হস্তান্তরের পর থেকে বিতর্কিত এই বিলটিকে কেন্দ্র করে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক বিক্ষোভ দেখেছে এশিয়ার এই অর্থনৈতিক কেন্দ্রটি। কিন্তু তারপরও প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী ল্যাম।
বিক্ষোভকারীরা মনে করছেন, বন্দি প্রত্যাবর্তনের এই আইন পাস হলে তা হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে৷
হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল অবধি অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে দেশটি৷
প্রসঙ্গত, গত বছরের এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত এই বিলটি তৈরি করা হয়৷ তাইওয়ানে ছুটি কাটানোর সময় অন্তঃসত্ত্বা বান্ধবীকে হত্যার অভিয়োগ ওঠে হংকংয়ের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে৷ কিন্তু তাইওয়ানের সঙ্গে হংকংয়ের বন্দি বিনিময়ের কোনো চুক্তি না থাকায় সেই ব্যক্তিকে এখন তাইপেতে বিচারের জন্য পাঠানো যাচ্ছে না৷
প্রস্তাবিত বিলে এরকম পরিস্থিতিতে সন্দেহভাজন অপরাধীকে ফেরত পাঠানোর পথ সুগম করা হয়েছে৷ কিন্তু চীন এই আইনের সুবিধা নিয়ে হংকংয়ের বাসিন্দাদের উপর খবরদারি বাড়াতে পারে বলে সন্দেহ থাকায় বিষয়টি সেখানে এক রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে৷ ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সাধারণ বাসিন্দারা ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷
পাশাপাশি তাইওয়ান জানিয়েছে, সন্দেহভাজন সেই খুনের মামলার আসামিকে ফেরত নিতে চায় না তারা। কেননা পরবর্তীতে চীন এটিকে কাজে লাগাতে পারে৷
বেইজিংয়ের দুর্বল আইন এবং মানবাধিকার রেকর্ডের কারণে সেখানে কোন বন্দিকে ফেরত পাঠানোকে নিরাপদ মনে করছেন না তাইওয়ান এবং হংকংয়ের সাধারণ মানুষ৷