ঢাকা ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo চাকুরীচ্যুত প্রকৌশলী নাসির বহাল তবিয়তে পায়রা বন্দরে: গড়েছে অবৈধ সম্পদের পাহাড়!  Logo যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সকল দলকে নিয়ে বিএনপির যৌথসভা Logo ১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বরিশাল-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী স্বপনের মনোনয়নপত্র দাখিল Logo রাজপথ বিএনপির দখলে না থাকলেও বিটিভি  বিএনপি জামায়াতের দখলে! Logo দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বেস্ট হোল্ডিং Logo অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ সালমা উসমানের বেপরোয়া দুর্নীতি! Logo বরিশালের বাকেরগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকের ঘরে লুটপাট Logo ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন এখন করাপশনের ত্রিমুখী জুটি Logo মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৩৬২ জনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা Logo থিয়েটার কুবি’র নেতৃত্বে সুইটি-হান্নান




শ্বশুরবাড়িতে শিকলে বেঁধে জামাইকে পিটুনি, কারাগারে স্ত্রী-শাশুড়ি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৭:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০১৯ ৪৬ বার পড়া হয়েছে

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা;

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে জামাইকে শিকল দিয়ে বেঁধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রী, শাশুড়ি ও মামাশ্বশুরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার জামাইয়ের নাম সোহরাব হোসেন (৩০)। তিনি পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে। গত রোববার সন্ধ্যায় জীবননগর পৌর এলাকার হ্যালিপ্যাডপাড়ায় শ্বশুর হারেজ আলীর বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানের জন্য ঈদের পোশাক দিতে এসে ওই নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে জীবননগর থানার পুলিশ সোহরাব হোসেনের দায়ের করা মামলায় গতকাল সোমবার রাতে তাঁর (সোহরাবের) স্ত্রী নীলা খাতুন, শাশুড়ি মেহেরজান বেগম ও মামাশ্বশুর মসলেম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আজ দুপুরে জীবননগর আমলি আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

সোহরাব বলেন, কয়েক দিন আগে মুঠোফোনে ব্যালেন্স দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্ত্রী নীলার সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। নীলা ওই সময় হাতে আঘাত পেলে রাগ করে বাবার বাড়ি জীবননগরে চলে আসেন। সোহরাবের অভিযোগ, রোববার সন্ধ্যায় স্ত্রী ও সন্তানকে ঈদের জামাকাপড় দিতে জীবননগরে শ্বশুরবাড়িতে এলে মামাশ্বশুর মসলেম উদ্দিন অকথ্য গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই দিন সন্ধ্যা থেকে বাড়ির বাইরে বাঁশের মাচার সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। সারা রাত তাঁকে বাঁশের মাচায় বেঁধে রেখে দেওয়া হয়। গতকাল সকালে বাড়ির ভেতরে উঠানে কাঁঠালগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। বেঁধে রাখা সময়ে স্ত্রী ও শাশুড়ির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মামাশ্বশুর মারপিট করেন।

সোহরাব বলেন, ‘বিষয়টি জানাজানি হলে জীবননগর থানার পুলিশ গতকাল রাতে আমাকে উদ্ধার করে।’

অভিযুক্ত মামাশ্বশুর মসলেম উদ্দিন জীবননগর থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের জানান, ভাগনিকে মারপিট করার ঘটনায় রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ভাগনিজামাই সোহরাবকে বকাঝকা করা হয়। তিনি যাতে আত্মগোপনে থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নামে মিথ্যা গুমের মামলা দিতে না পারেন, সে জন্য তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে (সোহরাবের) বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু তার আগেই পুলিশ চলে আসে এবং তাঁদের গ্রেপ্তার করে থানায় নেয়।

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ গনি মিয়া জানান, সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে শিকলবন্দী জামাই সোহরাব হোসেনের ছবি প্রকাশের পরপরই তাঁকে উদ্ধার এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করে থানায় নেওয়া হয়। বেআইনিভাবে আটক ও মারধরের অভিযোগে নির্যাতিত সোহরাবের দায়ের করা মামলায় তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি ও মামাশ্বশুরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




শ্বশুরবাড়িতে শিকলে বেঁধে জামাইকে পিটুনি, কারাগারে স্ত্রী-শাশুড়ি

আপডেট সময় : ০৪:৪৭:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০১৯

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা;

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় শ্বশুরবাড়িতে জামাইকে শিকল দিয়ে বেঁধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রী, শাশুড়ি ও মামাশ্বশুরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার জামাইয়ের নাম সোহরাব হোসেন (৩০)। তিনি পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে। গত রোববার সন্ধ্যায় জীবননগর পৌর এলাকার হ্যালিপ্যাডপাড়ায় শ্বশুর হারেজ আলীর বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানের জন্য ঈদের পোশাক দিতে এসে ওই নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে জীবননগর থানার পুলিশ সোহরাব হোসেনের দায়ের করা মামলায় গতকাল সোমবার রাতে তাঁর (সোহরাবের) স্ত্রী নীলা খাতুন, শাশুড়ি মেহেরজান বেগম ও মামাশ্বশুর মসলেম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আজ দুপুরে জীবননগর আমলি আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

সোহরাব বলেন, কয়েক দিন আগে মুঠোফোনে ব্যালেন্স দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্ত্রী নীলার সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। নীলা ওই সময় হাতে আঘাত পেলে রাগ করে বাবার বাড়ি জীবননগরে চলে আসেন। সোহরাবের অভিযোগ, রোববার সন্ধ্যায় স্ত্রী ও সন্তানকে ঈদের জামাকাপড় দিতে জীবননগরে শ্বশুরবাড়িতে এলে মামাশ্বশুর মসলেম উদ্দিন অকথ্য গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই দিন সন্ধ্যা থেকে বাড়ির বাইরে বাঁশের মাচার সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। সারা রাত তাঁকে বাঁশের মাচায় বেঁধে রেখে দেওয়া হয়। গতকাল সকালে বাড়ির ভেতরে উঠানে কাঁঠালগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। বেঁধে রাখা সময়ে স্ত্রী ও শাশুড়ির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মামাশ্বশুর মারপিট করেন।

সোহরাব বলেন, ‘বিষয়টি জানাজানি হলে জীবননগর থানার পুলিশ গতকাল রাতে আমাকে উদ্ধার করে।’

অভিযুক্ত মামাশ্বশুর মসলেম উদ্দিন জীবননগর থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের জানান, ভাগনিকে মারপিট করার ঘটনায় রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ভাগনিজামাই সোহরাবকে বকাঝকা করা হয়। তিনি যাতে আত্মগোপনে থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নামে মিথ্যা গুমের মামলা দিতে না পারেন, সে জন্য তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। উদ্দেশ্য ছিল তাঁকে (সোহরাবের) বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু তার আগেই পুলিশ চলে আসে এবং তাঁদের গ্রেপ্তার করে থানায় নেয়।

জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ গনি মিয়া জানান, সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে শিকলবন্দী জামাই সোহরাব হোসেনের ছবি প্রকাশের পরপরই তাঁকে উদ্ধার এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করে থানায় নেওয়া হয়। বেআইনিভাবে আটক ও মারধরের অভিযোগে নির্যাতিত সোহরাবের দায়ের করা মামলায় তাঁর স্ত্রী, শাশুড়ি ও মামাশ্বশুরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।