ঢাকা ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo টঙ্গীতে ১১ বছরের ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ নিখোঁজ Logo “স্টার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৫” পেলেন দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ Logo খুলনায় মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ, এলাকায় চাপা উত্তেজনা Logo স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগী ‘যশোর বিআরটিএ অফিসের তারিক ধরাছোঁয়ার বাইরে|(পর্ব – ০১) Logo টাঙ্গাইল-৩ আসনে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে মাঠে মাইনুল ইসলাম Logo স্বরূপকাঠি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলমের উপর সন্ত্রাসী হামলা Logo মহাখালীতে পেট্রোল পাম্পে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৭ জন জাতীয় বার্নে Logo সেনাবাহিনী ও আনসারে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত চক্রের ৬ জন গ্রেপ্তার Logo ময়মনসিংহে সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি প্রমাণের পরেও বহাল তবিয়তে  Logo গণপূর্তে কায়কোবাদ-তামজীদ সিন্ডিকেট: দুর্নীতির অভিযোগে আলোচনায় দুই প্রকৌশলী

সেনাবাহিনী ও আনসারে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত চক্রের ৬ জন গ্রেপ্তার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:৪০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৪৭৮ বার পড়া হয়েছে

অনলেইন ডেস্ক: সেনাবাহিনী ও আনসার ব্যাটালিয়ানে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত চক্রের মূলহোতাসহ ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪। তাদের কাছ থেকে ১টি প্রাইভেট কার, ৭টি মোবাইল ফোন, ২টি ভুয়া নিয়োগপত্র ও নগদ ৯৫ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সোহেল রানা ওরফে মিলন (৩৩), তৈয়ব ওরফে মোস্তাক (৪৬), মো. সজীব মুন্সি (৪৪), শামীম আহমেদ (৪৫), মো. মওলাদ আলী খান (৫২) ও সোহেল রানা ওরফে জিন্নাহ (৩৭)।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) র্যাব-৪ কার্যালয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান সদর কোম্পানি কমান্ডার শাহাবুদ্দিন কবীর। বলেন, চক্রটির মূলহোতা সোহেল নিজেকে মেজর পরিচয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামের সহজ সরল লোকদের ফাঁদে ফেলে ভুয়া নিয়োগপত্র দিতেন। এভাবেই হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। ২০১৬ সাল থেকে চক্রটি এমন প্রতারণা করে আসছিলো। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় লোকাল এজেন্টও নিয়োগ দিয়েছিল। এজেন্টরা মাঠ পরীক্ষাতে বাদ যাওয়াদের টার্গেট করে এমন প্রতারণা করছিলো বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে সোহেল রানা নামে একজন আমাদের কাছে অভিযোগ করেন যে তারা একটি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার আপন ছোট ভাই গত ১৪ সেপ্টেম্বর সফিপুর আনসার ব্যাটালিয়ন একাডেমিতে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়েন। এসময় অজ্ঞাত ব্যক্তি মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে জানান তার ভাইয়ের কিছু শারীরিক সমস্যা আছে। ভুক্তভোগী তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে মেজর সোহেল পরিচয় দেন এবং তার সঙ্গে পরে দেখা করতে বলেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ঢাকা মহানগরীর শাহ আলী থানায় অবস্থিত একটি হোটেলে আসামি সোহেল রানার সঙ্গে দেখা করেন। এসময় সোহেল রানা নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দেন এবং তার সঙ্গে থাকা অপর প্রতারক তৈয়বুর রহমানকে সেনাবাহিনীর কর্নেল বলে পরিচয় করিয়ে দেন। সোহেল ভুক্তভোগীর ভাইকে আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহী পদে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে জানান, তার সঙ্গে আনসারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ আছে এবং ১২ লাখ টাকা দিলে তার ছোট ভাইকে চাকরিতে নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারবেন।

তিনি বলেন, এই প্রস্তাবে ভুক্তভোগী রাজি হন এবং সেই মোতাবেক গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রাইভেট একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চার লাখ টাকা দেন। টাকা পাওয়ার পর মেজর পরিচয় দানকারী সোহেল, কর্নেল পরিচয় দানকারী তৈয়বুর রহমানসহ অন্যান্য আসামিরা ভুক্তভোগীকে তার ভাই রাজুর(১৯) আনসার ব্যাটালিয়নে যোগদানের নিয়োগপত্র দেন। নিয়োগপত্রটি দেয়ার পর বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আরো এক লাখ টাকা নেন। নিয়েগপত্রটি পেয়ে ভুক্তভোগী তার ভাইকে নিয়ে বাড়ি আসেন। বাড়িতে এসে তারা তাদের গ্রামের আনসারের সিপাহি পদে নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হয়েছে এমন একটি ছেলের নিয়োগপত্রের সঙ্গে তাদের নিয়োগপত্রটির অনেক গরমিল দেখতে পান। পরবর্তীতে ভুক্তোভোগী খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে আসামিদের দেয়া নিয়োগপত্রটি ভুয়া।

কোম্পানি কমান্ডার শাহাবুদ্দিন কবীর আরও বলেন, এ বিষয়ে তারা শাহ আলী থানা এবং র‌্যাব-৪ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। র‌্যাব-৪ একটি চৌকস আভিযানিক দল তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান সনাক্ত করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা ও সাভারে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। আসামিদের গ্রেপ্তারের সময় একজন ভিকটিমকে পাওয়া যায়, যাকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নাম করে নিয়ে এসেছিল।

তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। ইতোপূর্বে একই ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কারণে র‌্যাব-৪ কর্তৃক দুইবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :
error: Content is protected !!

সেনাবাহিনী ও আনসারে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত চক্রের ৬ জন গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ০৪:৪০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অনলেইন ডেস্ক: সেনাবাহিনী ও আনসার ব্যাটালিয়ানে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণায় জড়িত চক্রের মূলহোতাসহ ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪। তাদের কাছ থেকে ১টি প্রাইভেট কার, ৭টি মোবাইল ফোন, ২টি ভুয়া নিয়োগপত্র ও নগদ ৯৫ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সোহেল রানা ওরফে মিলন (৩৩), তৈয়ব ওরফে মোস্তাক (৪৬), মো. সজীব মুন্সি (৪৪), শামীম আহমেদ (৪৫), মো. মওলাদ আলী খান (৫২) ও সোহেল রানা ওরফে জিন্নাহ (৩৭)।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) র্যাব-৪ কার্যালয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান সদর কোম্পানি কমান্ডার শাহাবুদ্দিন কবীর। বলেন, চক্রটির মূলহোতা সোহেল নিজেকে মেজর পরিচয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে গ্রামের সহজ সরল লোকদের ফাঁদে ফেলে ভুয়া নিয়োগপত্র দিতেন। এভাবেই হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। ২০১৬ সাল থেকে চক্রটি এমন প্রতারণা করে আসছিলো। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় লোকাল এজেন্টও নিয়োগ দিয়েছিল। এজেন্টরা মাঠ পরীক্ষাতে বাদ যাওয়াদের টার্গেট করে এমন প্রতারণা করছিলো বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে সোহেল রানা নামে একজন আমাদের কাছে অভিযোগ করেন যে তারা একটি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার আপন ছোট ভাই গত ১৪ সেপ্টেম্বর সফিপুর আনসার ব্যাটালিয়ন একাডেমিতে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়েন। এসময় অজ্ঞাত ব্যক্তি মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে জানান তার ভাইয়ের কিছু শারীরিক সমস্যা আছে। ভুক্তভোগী তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে মেজর সোহেল পরিচয় দেন এবং তার সঙ্গে পরে দেখা করতে বলেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, পরবর্তীতে ভুক্তভোগী ঢাকা মহানগরীর শাহ আলী থানায় অবস্থিত একটি হোটেলে আসামি সোহেল রানার সঙ্গে দেখা করেন। এসময় সোহেল রানা নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দেন এবং তার সঙ্গে থাকা অপর প্রতারক তৈয়বুর রহমানকে সেনাবাহিনীর কর্নেল বলে পরিচয় করিয়ে দেন। সোহেল ভুক্তভোগীর ভাইকে আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহী পদে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে জানান, তার সঙ্গে আনসারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ আছে এবং ১২ লাখ টাকা দিলে তার ছোট ভাইকে চাকরিতে নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারবেন।

তিনি বলেন, এই প্রস্তাবে ভুক্তভোগী রাজি হন এবং সেই মোতাবেক গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রাইভেট একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চার লাখ টাকা দেন। টাকা পাওয়ার পর মেজর পরিচয় দানকারী সোহেল, কর্নেল পরিচয় দানকারী তৈয়বুর রহমানসহ অন্যান্য আসামিরা ভুক্তভোগীকে তার ভাই রাজুর(১৯) আনসার ব্যাটালিয়নে যোগদানের নিয়োগপত্র দেন। নিয়োগপত্রটি দেয়ার পর বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আরো এক লাখ টাকা নেন। নিয়েগপত্রটি পেয়ে ভুক্তভোগী তার ভাইকে নিয়ে বাড়ি আসেন। বাড়িতে এসে তারা তাদের গ্রামের আনসারের সিপাহি পদে নিয়োগপত্র প্রাপ্ত হয়েছে এমন একটি ছেলের নিয়োগপত্রের সঙ্গে তাদের নিয়োগপত্রটির অনেক গরমিল দেখতে পান। পরবর্তীতে ভুক্তোভোগী খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে আসামিদের দেয়া নিয়োগপত্রটি ভুয়া।

কোম্পানি কমান্ডার শাহাবুদ্দিন কবীর আরও বলেন, এ বিষয়ে তারা শাহ আলী থানা এবং র‌্যাব-৪ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। র‌্যাব-৪ একটি চৌকস আভিযানিক দল তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান সনাক্ত করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা ও সাভারে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। আসামিদের গ্রেপ্তারের সময় একজন ভিকটিমকে পাওয়া যায়, যাকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার নাম করে নিয়ে এসেছিল।

তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। ইতোপূর্বে একই ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কারণে র‌্যাব-৪ কর্তৃক দুইবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।