ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




কেরানীগঞ্জ সেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিতে বিএনপি জামায়াত বিতর্ক তুঙ্গে 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০২২ ১৬১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকার কেরাণীগঞ্জে সেচ্ছাসেবক লীগের আঞ্চলিক শাখার আহ্ববায়ক কমিটিতে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে জায়গা না পাওয়া, বিতর্কিত ব্যাক্তিকে কমিটিতে রাখা, রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকেও অনেকেই কমিটিতে জায়গা পাওয়ায়, কমিটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা তৈরী হয়েছে। এ নিয়ে তৃনমূল সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে নানা গুঞ্জন চলছে।

জানা যায়, কেরানীগঞ্জ গুদারাঘাট আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ায়, গত ১১/৬/২২ তারিখে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী মিরাজুর রহমান সুমন ও সাধারণ সম্পাদক হাজী রমজান আলীর স্বাক্ষরিত প্যাডে মেয়াদ উত্তীর্ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এক মাসের জন্য ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্ববায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

৫১ সদস্যদের ভিতরে অনেকেই এসেছে যারা আগে কখোনোই রাজনীতি করে নি। রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকে সরাসরি আহ্ববায়ক কমিটিতে জায়গা পাওয়ায় অনেকটা বিষ্ময়য়ের জন্ম দিয়েছে।

নতুন অণেকেই জায়গা পেলেও উক্ত আহ্ববায়ক কমিটিতে জায়গা পান নি সাবেক আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পদক আনোয়ার হোসেন আনুসহ পুরাতন অনেক কর্মী । আনোয়ার হোসেন আনু বিগত ৫ বছর আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছে।

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোন কর্মকান্ডের সাথে আনু কখোনোই জড়িত ছিল না। এছাড়াও আনু তার গ্রামের বাড়ি লৌহজং থানা হলুদিয়া ইউনিয়নে বর্তমান এমপি সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির সাথে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে আনুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি দীর্ঘ দিন ধরে সেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। কেন আমাকে আহ্ববায়ক কমিটিতে রাখা হয় নি সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার ব্যাপারে কোন খারাপ রেকর্ড আছে এমনটা কেও বলতেও পারবে না। কিন্তু অনেকেই আছে যাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি সহ আমার কর্মীরা হতাশ হয়ে পরেছি।

সম্প্রতি কোনও বিতর্কীত ব্যক্তিকে দলে স্থান দেওয়া যাবে না বলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আওয়ামী লীগরে সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন , আওয়ামীলীগকে নতুন করে সাজানো হচ্ছ। নিজেদের পকেট ভরার জন্য নিজেদের সমর্থক বাড়ানোর জন্য দলে অনুপ্রবেশ কারীদের ঠাই দিবেন না। ইতিমধ্যেই ওবাইদুল কাদেরের এই কঠোর নিষেধাজ্ঞা পালন করে বেশ কিছু জেলা উপজেলায় আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের কমিটি করা হয়েছে।

এদিকে আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের আহ্ববায়ক কমিটিতে ১ নং যুগ্ন আহ্ববায়ক হিসেবে হান্নান মৃধার নাম ঘোষনা করা হয়েছে। হান্নান মৃধার বিরুদ্ধে চাদাবাজিসহ বেশ কিছু অভিযোগ। হান্নান মৃধার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, কেরানীগঞ্জ জিলা পরিষদ মার্কেট রোডে ফুটে এবং ব্রীজের ওপর কয়েকজন দোকানদারের কাছ থেকে চাদা নিয়েছে হান্নান মৃধা।

দিদার হোসেন নামে এক হকার জানান কিছু দিন আগে, আমি জিলা পরিষদ মার্কেটের সামনে ফুট দোকান বসাতে গেলে নেতা হান্নান আমার কাছে বিশ হাজার টাকা দাবি করনে। টাকা দিলে দোকান বসাতে পারবো। কি আর করবো ছেলে সন্তান স্ত্রী মুখের দিকে তাকিয়ে পেট চালানোর তাগিদে টাকা দিয়েছিলাম। তিন মাস ব্যবসা করার পর একদিন দেখি হান্নান আমার ফুটের জায়গাটি আরেকজনকে ভাড়া দিয়েছে। তখন আমার টাকা ফেরৎ চাইলে হান্নান নানা ভাবে আমাকে হুমকি ধামকি দিতে থাকে । আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে তখন চলে আসি।

দিদার হোসেন আরো জানান, হান্নান আমার আশে পাশে আরো কয়েকজনের কাছ থেকে এমন চাদা নিয়ে পরে তাদের উঠিয়ে দিয়েছে। কিছু হলেই সে ক্ষমতার দাপট দেখাতো এবং বড় নেতাদের নাম ব্যবহার করে হুমকি ধামকি দিতো।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে হান্নান মৃধা বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে। যারা এই অভিযোগ গুলা করেছে তাদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ আছে। বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটি নিয়ে হান্নান মৃধার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান কমিটিতে আমি যাদের নাম দিয়েছি ,যারা আসছে সকলেই আওয়ামী পরিবারের লোক। বিগত কমিটিতে যারা ছিলো সেখানে বিএনপির লোক, জামাতের অনেক লোক ছিলো। আমার কাছে স্পষ্ট প্রমান আছে। তাই পুরাতন অনেকের নাম বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটিতে আসে নাই।

কেরানীগঞ্জ সেচ্ছাসেবকলীগ আঞ্চলিক শাখার সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্ববায়ক , মো: মানিক শেখের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটিতে কাকে নেয়া হয়েছে কাকে নেয়া হয় নি এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে আহ্ববায়ক কমিটিতে অনেকের নাম দেখে আমি হতভম্ব হয়েছি। আঞ্চলিক শাখার সেচ্ছাসেবক লীগের ত্যাগী অনেক নেতা কর্মীর নাম এখানে নেই। আবার অনেকের নাম এখানে আছে যাদের কখনো আওয়ামী লীগের কোন মিটিং মিছিলে আমি দেখি নি। বিষয়টি উদ্ধর্তন নেতাদের ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।

আহ্ববায়ক কমিটির বিষয়ে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক হাজী রমজান আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আঞ্চলিক শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটি প্রবীন এবং নবীন উভয় মিলিয়ে গঠন করা হয়েছে। আগামী ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনকে মাথায় রেখেই নতুন কমিটি গঠন করা হবে। আনু মিটিং মিছিলে কম আসতো তাই হয়তো বাদ পড়েছে।

রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকেও আহ্ববায়ক কমিটিতে স্থান পেয়েছে অনেকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঐটা ব্যবসায়ী এলাকা ঐখানে প্রবীন আওয়ামীলীগের নেতারা নতুন কিছু ব্যবসায়ীর নাম আহ্বায়ক কমিটিতে প্রস্তাব করেছে তাই নতুন কিছু ব্যবসায়ী নাম হয়তো আসতে পারে। চাদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রমজান আলী বলেন, আহ্বায়ক কমিটির কারো নামে যদি চাঁদাবাজির অভিযোগ থাকে, প্রমান দিতে পারলে আমরা তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। আগের কমিটিতে বিএনপি জামাতের লোক ছিলো কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাবেক কমিটিতে বিএনপি জামাতের কোন লোক ই ছিলো না। এটা মিথ্যাচার। ব্যাক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ি রেসেই এই কথা বলেছে। বিএনপি জামাতের লোক ছিলো এখন এই কথা কেন বলছে ৫ বছর আগে কেন বললো না? সব কিছু বিবেচনা করে সম্মেলনের মাধ্যমে একটা যোগ্য কমিটিই আসবে।

এ বিষয়ে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী মিরাজুর রহমান সুমনের কথা হলে তিনি বলেন, এই মাসের শেষের দিকে সম্মেলনের মাধ্যমে আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি দেয়া হবে। অনু আমাদের আগের কমিটির সাধারন সম্পাদক ছিলো না। তাকে সভাপতি মানিক কবে কিভাবে সাধারণ সম্পাদক বানায় তা আমার জানা নেই। গুদারাঘাট আঞ্চলিক শাখা আওয়ামীলীগের মূল দলের নেতারা এবং এলাকার অনেক বয়জেষ্ঠ ব্যাক্তি যারা আওয়ামীলীগ করে তারা কিছু ব্যবসায়ীর নাম দিয়েছে তাদের সাথে সমন্বয় করে নতুন কিছু নাম আহ্ববায়ক কমিটিতে এসেছে।

চাদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে সুমন বলেন, কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আছে কিনা সেটা আমার জানা নাই। তবে অভিযুক্ত কেও কমিটিতে আসতে পাড়বে না। কেও যদি অভিযোগের প্রমান দিতে পারে তাহলে সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন সন্ত্রাস,চাঁদাবাজ, খারাপ ব্যাক্তি আমাদের কমিটিতে আসতে পাড়বে না। কারন ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়। দলের চেয়ে দেশ বড়। পুরাতন কমিটিতে বিএনপি জামাতের কোন লোক ছিল না। সম্মেলনের মাধ্যমে একটি সচ্ছ কমিটি দেয়া হবে যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




কেরানীগঞ্জ সেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিতে বিএনপি জামায়াত বিতর্ক তুঙ্গে 

আপডেট সময় : ১১:২৩:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকার কেরাণীগঞ্জে সেচ্ছাসেবক লীগের আঞ্চলিক শাখার আহ্ববায়ক কমিটিতে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে জায়গা না পাওয়া, বিতর্কিত ব্যাক্তিকে কমিটিতে রাখা, রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকেও অনেকেই কমিটিতে জায়গা পাওয়ায়, কমিটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা তৈরী হয়েছে। এ নিয়ে তৃনমূল সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে নানা গুঞ্জন চলছে।

জানা যায়, কেরানীগঞ্জ গুদারাঘাট আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ায়, গত ১১/৬/২২ তারিখে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী মিরাজুর রহমান সুমন ও সাধারণ সম্পাদক হাজী রমজান আলীর স্বাক্ষরিত প্যাডে মেয়াদ উত্তীর্ন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এক মাসের জন্য ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্ববায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

৫১ সদস্যদের ভিতরে অনেকেই এসেছে যারা আগে কখোনোই রাজনীতি করে নি। রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকে সরাসরি আহ্ববায়ক কমিটিতে জায়গা পাওয়ায় অনেকটা বিষ্ময়য়ের জন্ম দিয়েছে।

নতুন অণেকেই জায়গা পেলেও উক্ত আহ্ববায়ক কমিটিতে জায়গা পান নি সাবেক আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পদক আনোয়ার হোসেন আনুসহ পুরাতন অনেক কর্মী । আনোয়ার হোসেন আনু বিগত ৫ বছর আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছে।

দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কোন কর্মকান্ডের সাথে আনু কখোনোই জড়িত ছিল না। এছাড়াও আনু তার গ্রামের বাড়ি লৌহজং থানা হলুদিয়া ইউনিয়নে বর্তমান এমপি সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির সাথে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে আনুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি দীর্ঘ দিন ধরে সেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। কেন আমাকে আহ্ববায়ক কমিটিতে রাখা হয় নি সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার ব্যাপারে কোন খারাপ রেকর্ড আছে এমনটা কেও বলতেও পারবে না। কিন্তু অনেকেই আছে যাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে আমি সহ আমার কর্মীরা হতাশ হয়ে পরেছি।

সম্প্রতি কোনও বিতর্কীত ব্যক্তিকে দলে স্থান দেওয়া যাবে না বলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আওয়ামী লীগরে সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন , আওয়ামীলীগকে নতুন করে সাজানো হচ্ছ। নিজেদের পকেট ভরার জন্য নিজেদের সমর্থক বাড়ানোর জন্য দলে অনুপ্রবেশ কারীদের ঠাই দিবেন না। ইতিমধ্যেই ওবাইদুল কাদেরের এই কঠোর নিষেধাজ্ঞা পালন করে বেশ কিছু জেলা উপজেলায় আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের কমিটি করা হয়েছে।

এদিকে আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের আহ্ববায়ক কমিটিতে ১ নং যুগ্ন আহ্ববায়ক হিসেবে হান্নান মৃধার নাম ঘোষনা করা হয়েছে। হান্নান মৃধার বিরুদ্ধে চাদাবাজিসহ বেশ কিছু অভিযোগ। হান্নান মৃধার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, কেরানীগঞ্জ জিলা পরিষদ মার্কেট রোডে ফুটে এবং ব্রীজের ওপর কয়েকজন দোকানদারের কাছ থেকে চাদা নিয়েছে হান্নান মৃধা।

দিদার হোসেন নামে এক হকার জানান কিছু দিন আগে, আমি জিলা পরিষদ মার্কেটের সামনে ফুট দোকান বসাতে গেলে নেতা হান্নান আমার কাছে বিশ হাজার টাকা দাবি করনে। টাকা দিলে দোকান বসাতে পারবো। কি আর করবো ছেলে সন্তান স্ত্রী মুখের দিকে তাকিয়ে পেট চালানোর তাগিদে টাকা দিয়েছিলাম। তিন মাস ব্যবসা করার পর একদিন দেখি হান্নান আমার ফুটের জায়গাটি আরেকজনকে ভাড়া দিয়েছে। তখন আমার টাকা ফেরৎ চাইলে হান্নান নানা ভাবে আমাকে হুমকি ধামকি দিতে থাকে । আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে তখন চলে আসি।

দিদার হোসেন আরো জানান, হান্নান আমার আশে পাশে আরো কয়েকজনের কাছ থেকে এমন চাদা নিয়ে পরে তাদের উঠিয়ে দিয়েছে। কিছু হলেই সে ক্ষমতার দাপট দেখাতো এবং বড় নেতাদের নাম ব্যবহার করে হুমকি ধামকি দিতো।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে হান্নান মৃধা বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে। যারা এই অভিযোগ গুলা করেছে তাদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ আছে। বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটি নিয়ে হান্নান মৃধার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান কমিটিতে আমি যাদের নাম দিয়েছি ,যারা আসছে সকলেই আওয়ামী পরিবারের লোক। বিগত কমিটিতে যারা ছিলো সেখানে বিএনপির লোক, জামাতের অনেক লোক ছিলো। আমার কাছে স্পষ্ট প্রমান আছে। তাই পুরাতন অনেকের নাম বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটিতে আসে নাই।

কেরানীগঞ্জ সেচ্ছাসেবকলীগ আঞ্চলিক শাখার সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্ববায়ক , মো: মানিক শেখের সাথে কথা হলে তিনি জানান, বর্তমান আহ্ববায়ক কমিটিতে কাকে নেয়া হয়েছে কাকে নেয়া হয় নি এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে আহ্ববায়ক কমিটিতে অনেকের নাম দেখে আমি হতভম্ব হয়েছি। আঞ্চলিক শাখার সেচ্ছাসেবক লীগের ত্যাগী অনেক নেতা কর্মীর নাম এখানে নেই। আবার অনেকের নাম এখানে আছে যাদের কখনো আওয়ামী লীগের কোন মিটিং মিছিলে আমি দেখি নি। বিষয়টি উদ্ধর্তন নেতাদের ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।

আহ্ববায়ক কমিটির বিষয়ে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক হাজী রমজান আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আঞ্চলিক শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটি প্রবীন এবং নবীন উভয় মিলিয়ে গঠন করা হয়েছে। আগামী ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনকে মাথায় রেখেই নতুন কমিটি গঠন করা হবে। আনু মিটিং মিছিলে কম আসতো তাই হয়তো বাদ পড়েছে।

রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না থেকেও আহ্ববায়ক কমিটিতে স্থান পেয়েছে অনেকে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঐটা ব্যবসায়ী এলাকা ঐখানে প্রবীন আওয়ামীলীগের নেতারা নতুন কিছু ব্যবসায়ীর নাম আহ্বায়ক কমিটিতে প্রস্তাব করেছে তাই নতুন কিছু ব্যবসায়ী নাম হয়তো আসতে পারে। চাদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রমজান আলী বলেন, আহ্বায়ক কমিটির কারো নামে যদি চাঁদাবাজির অভিযোগ থাকে, প্রমান দিতে পারলে আমরা তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। আগের কমিটিতে বিএনপি জামাতের লোক ছিলো কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাবেক কমিটিতে বিএনপি জামাতের কোন লোক ই ছিলো না। এটা মিথ্যাচার। ব্যাক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ি রেসেই এই কথা বলেছে। বিএনপি জামাতের লোক ছিলো এখন এই কথা কেন বলছে ৫ বছর আগে কেন বললো না? সব কিছু বিবেচনা করে সম্মেলনের মাধ্যমে একটা যোগ্য কমিটিই আসবে।

এ বিষয়ে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী মিরাজুর রহমান সুমনের কথা হলে তিনি বলেন, এই মাসের শেষের দিকে সম্মেলনের মাধ্যমে আঞ্চলিক শাখা সেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি দেয়া হবে। অনু আমাদের আগের কমিটির সাধারন সম্পাদক ছিলো না। তাকে সভাপতি মানিক কবে কিভাবে সাধারণ সম্পাদক বানায় তা আমার জানা নেই। গুদারাঘাট আঞ্চলিক শাখা আওয়ামীলীগের মূল দলের নেতারা এবং এলাকার অনেক বয়জেষ্ঠ ব্যাক্তি যারা আওয়ামীলীগ করে তারা কিছু ব্যবসায়ীর নাম দিয়েছে তাদের সাথে সমন্বয় করে নতুন কিছু নাম আহ্ববায়ক কমিটিতে এসেছে।

চাদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে সুমন বলেন, কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আছে কিনা সেটা আমার জানা নাই। তবে অভিযুক্ত কেও কমিটিতে আসতে পাড়বে না। কেও যদি অভিযোগের প্রমান দিতে পারে তাহলে সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন সন্ত্রাস,চাঁদাবাজ, খারাপ ব্যাক্তি আমাদের কমিটিতে আসতে পাড়বে না। কারন ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়। দলের চেয়ে দেশ বড়। পুরাতন কমিটিতে বিএনপি জামাতের কোন লোক ছিল না। সম্মেলনের মাধ্যমে একটি সচ্ছ কমিটি দেয়া হবে যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী।