ঢাকা ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শাবি ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ছড়ানো গুজবে সয়লাব Logo সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে Logo জবিতে আজীবন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ Logo শাবিতে হল প্রশাসনকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নোটিসে জোর পূর্বক সাইন আদায় Logo এবার সামনে আসছে ছাত্রলীগ কর্তৃক আন্দোলনকারীদের মারধরের আরো ঘটনা Logo আবাসিক হল ছাড়ছে শাবি শিক্ষার্থীরা Logo নিরাপত্তার স্বার্থে শাবি শিক্ষার্থীদের আইডিকার্ড সাথে রাখার আহবান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের Logo জনস্বাস্থ্যের প্রধান সাধুর যত অসাধু কর্ম: দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ! Logo বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখা যুগ্ম পরিচালক আলমগীরের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য  Logo রাজশাহীতে এটিএন বাংলার সাংবাদিক সুজাউদ্দিন ছোটনকে হয়রানিমূলক মামলায় বএিমইউজরে নিন্দা ও প্রতিবাদ




গরু চুরির অপবাদে মুক্তিযোদ্ধাকে বেঁধে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্যাতন!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:০৭:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ৯৯ বার পড়া হয়েছে

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ছেলের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ তুলে আকবর আলী ওরফে ধনী (৮০) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে দড়ি দিয়ে বেধে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামলার দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ভুক্তভোগী ওই মুক্তিযোদ্ধা।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের জাওরানী এলাকায় চেয়ারম্যানের বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এদিকে এর আগে গত বছরের ১৬ মে চেয়ারম্যানের ওই বাড়িতে এক যুবুককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়।

নির্যাতনের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনী উত্তর জাওরানী গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়া সে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। আর অভিযুক্ত মহির উদ্দিন ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এই ঘটনার মত আরও অনেক ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
জানাগেছে, ওই ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনীর ছেলের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ তুলে গ্রাম পুলিশ মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাড়ি থেকে জোড় করে তুলে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের বাড়িতে। এরপর চেয়ারম্যান ও গ্রাম পুলিশ মিলে জোড় পূর্বক ওই মুক্তিযোদ্ধাকে চেয়ারের সাথে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে রাখেন। এরপর চলে নির্যাতন। বিষয়টি নিয়ে জানা-জানি হলে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমোলচনার সৃষ্টি হয়। এর এক পর্যায়ে স্থানীয় ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের চাপে মুক্তিযোদ্ধা ধনীর হাতের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়।

ওই এলাকার নাম প্রকাশ্যে অনিশ্চুক একাধিক স্থানীয়রা বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধার ছেলে গরু চুরি করছে। এমন অভিযোগ তুলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনীকে গ্রাম পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে চেয়ারের সাথে দঁড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়। পরে জমাটবদ্ধ স্থানীয়দের রোষানলে মুক্তিযোদ্ধার হাতের বাধন খুলে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনী বলেন, আমার ছেলে নাকি গরু চুরি করেছে। এমন অভিযোগ তুলে আমার বাড়িতে এসে চেয়ারম্যান ও চৌকিদার জোর পূর্বক আমাকে তুলে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের বাড়িতে। কোন কিছু না বলেই চেয়ারে বসিয়ে দড়ি দিয়ে হাত বেধে ফেলে। আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে বসে থাকি বলেই হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন তিনি। চোখের জল মুচতে মুচতে তিনি শুধু একটাই কথা বলেন দেশ স্বাধীন করে শেষ বয়সে আমি এই পেলাম। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এ বিষয়ে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাকে কোন মারধর করা হয়নি। তার ছেলে গরু চোর সে জন্য তাকে ডাকা হয়েছিলো। আপনি পরিষদ বাদ দিয়ে নিজ বাড়িতে বিচার সালিশ করে কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তার কোন সদুত্তোর মেলেনি। এর আগেও আপনার ওই বাসায় এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো চেষ্টা করেন এমন প্রশ্ন করা হলে তারও কোন উত্তর দেননি তিনি।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৬ মে নুরুজ্জামান নামে এক যুবককে চেয়ারম্যানের ওই বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো চেষ্টা করেন চেয়ারম্যানের ছেলে জাহাঙ্গীর ও ভাই মনসুর হেলাল। আর সেই ঘটনার মামলায় বর্তমানে তারা জামিনে আছেন। এ দিকে গত বছর ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৩জন গ্রাম পুলিশ মাদকদ্রব্য নিয়ে পুলিশের নিকট আটক হয়। তাদের মামলা চলমান রয়েছে।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




গরু চুরির অপবাদে মুক্তিযোদ্ধাকে বেঁধে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্যাতন!

আপডেট সময় : ০৩:০৭:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ছেলের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ তুলে আকবর আলী ওরফে ধনী (৮০) নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে দড়ি দিয়ে বেধে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামলার দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ভুক্তভোগী ওই মুক্তিযোদ্ধা।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের জাওরানী এলাকায় চেয়ারম্যানের বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এদিকে এর আগে গত বছরের ১৬ মে চেয়ারম্যানের ওই বাড়িতে এক যুবুককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়।

নির্যাতনের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনী উত্তর জাওরানী গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়া সে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। আর অভিযুক্ত মহির উদ্দিন ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এই ঘটনার মত আরও অনেক ন্যাক্কার জনক ঘটনা ঘটে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
জানাগেছে, ওই ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনীর ছেলের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ তুলে গ্রাম পুলিশ মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাড়ি থেকে জোড় করে তুলে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের বাড়িতে। এরপর চেয়ারম্যান ও গ্রাম পুলিশ মিলে জোড় পূর্বক ওই মুক্তিযোদ্ধাকে চেয়ারের সাথে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে রাখেন। এরপর চলে নির্যাতন। বিষয়টি নিয়ে জানা-জানি হলে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমোলচনার সৃষ্টি হয়। এর এক পর্যায়ে স্থানীয় ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের চাপে মুক্তিযোদ্ধা ধনীর হাতের বাঁধন খুলে দেওয়া হয়।

ওই এলাকার নাম প্রকাশ্যে অনিশ্চুক একাধিক স্থানীয়রা বলেন, ওই মুক্তিযোদ্ধার ছেলে গরু চুরি করছে। এমন অভিযোগ তুলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনীকে গ্রাম পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে চেয়ারের সাথে দঁড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়। পরে জমাটবদ্ধ স্থানীয়দের রোষানলে মুক্তিযোদ্ধার হাতের বাধন খুলে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনী বলেন, আমার ছেলে নাকি গরু চুরি করেছে। এমন অভিযোগ তুলে আমার বাড়িতে এসে চেয়ারম্যান ও চৌকিদার জোর পূর্বক আমাকে তুলে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের বাড়িতে। কোন কিছু না বলেই চেয়ারে বসিয়ে দড়ি দিয়ে হাত বেধে ফেলে। আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে বসে থাকি বলেই হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন তিনি। চোখের জল মুচতে মুচতে তিনি শুধু একটাই কথা বলেন দেশ স্বাধীন করে শেষ বয়সে আমি এই পেলাম। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এ বিষয়ে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাকে কোন মারধর করা হয়নি। তার ছেলে গরু চোর সে জন্য তাকে ডাকা হয়েছিলো। আপনি পরিষদ বাদ দিয়ে নিজ বাড়িতে বিচার সালিশ করে কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তার কোন সদুত্তোর মেলেনি। এর আগেও আপনার ওই বাসায় এক যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো চেষ্টা করেন এমন প্রশ্ন করা হলে তারও কোন উত্তর দেননি তিনি।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৬ মে নুরুজ্জামান নামে এক যুবককে চেয়ারম্যানের ওই বাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো চেষ্টা করেন চেয়ারম্যানের ছেলে জাহাঙ্গীর ও ভাই মনসুর হেলাল। আর সেই ঘটনার মামলায় বর্তমানে তারা জামিনে আছেন। এ দিকে গত বছর ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ৩জন গ্রাম পুলিশ মাদকদ্রব্য নিয়ে পুলিশের নিকট আটক হয়। তাদের মামলা চলমান রয়েছে।