ঢাকার নব নিযুক্ত দুই মেয়রেকে নিয়ে সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজপ্লাবনের ফেসবুক পোষ্ট
- আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মে ২০২০ ১৬৮ বার পড়া হয়েছে
সকালের সংবাদ ডেস্ক; নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে স্বপ্নের ঢাকা সিটি নিয়ে একজন নাগরিক হিসেবে চমৎকার কিছু কথা দুই সিটির নবনিযুক্ত মেয়রের উদ্দেশ্য লিখেছেন সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজ প্লাবন। রবিবার সন্ধায় ফিরোজ প্লাবনের টাইমলাইনে লিখাটি নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনার ঝড় তোলে।
স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলোঃ
প্রিয় দুই নবনিযুক্ত মেয়র মহোদয়।
আসসালামুআলাইকুম।
প্রথমেই আমার পক্ষ থেকে আবারো সালাম, শুভেচ্ছা সহ সংগ্রামী অভিনন্দন। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য জনগণের রায়ে ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদে আপনারা দুই মেয়র রাজধানীর সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তারই প্রেক্ষাপটে আমি আজ ঢাকার দুই সিটি মেয়র হিসেবে আপনাদের কে নিয়ে আমার মনের কিছু কথা ও চাওয়া আপনাদের সদয় বিবেচনায় আজ উপস্থাপন করলাম।
কারন ইতিমধ্যেই আপনার দুজনই স্বস্ব দায়িত্বে নিজেদের কাজ শুরু করেছেন। আশা করছি সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে আপনারা কাজ করবেন, যেমন স্বপ্নের কথা আমিও নির্বাচনকালীন সময়ে আপনাদের নিয়ে গর্ব করে গানে গানে আমি স্বকন্ঠে গেয়েছিলাম।
√আমার মতে স্বপ্নের ঢাকার কিছু বাস্তবায়ন অতিব জরুরি
১/ প্রথমেই ঢাকার বাতাশ ও পরিবেশ দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে পূর্বে বাস্তবায়ন কৃত রাস্তার মিনি ডাস্টবিন গুলো মেরামত করা দরকার,কারন অনেক স্হানেই ঝুলন্ত ডাস্টবিন গুলো অযত্নে ভেঙেচুরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে।
২/ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির পর খুব দ্রুত রাস্তাটির সংস্কার করা ও রাস্তার দুপাশে বৃক্ষ রোপন করে অক্সিজেন সরবরাহ করা প্রতিনিয়তই জরুরি।
৩/ঢাকার প্রতিটি পার্কে রাতের অন্ধকার তৈরি না করে পর্যাপ্ত লাইট ও প্রশাসননিক তৎপরতা বাড়ানো উচিৎ,এতে ছিন্নমুল টোকাই নামক অপরাধী ও ভ্রাম্যমাণ পতিতার দৌরাত্ম কমবে ও মানুষ পার্ক গুলোতে সকাল বিকাল ব্যায়াম সহ বাচ্চাদের নিয়ে অভিভাবক গন নির্বিঘ্নে পারিবারিক বিনোদন নিতে পারবে।
৪/ঢাকার প্রতিটি ফুটওভার ব্রীজ কে রাতে পর্যাপ্ত লাইটের ব্যাবস্হা সহ ছিন্নমূল মানুষদের আবাসস্থল থেকে মুক্ত করতে হবে।
৫/ছিন্নমূল মানুষ ও সিটির সকল বস্তিবাসীকে ঢাকা অদূরে বস্তি প্রকল্প করণ পূর্বক ছিন্নমূলদের আবাসস্থল করার ব্যাবস্থা করতে হবে।
৬/সকল প্রকার রাস্তার উপর ঝুলে থাকা বিভিন্ন প্রকার ক্যাবল গুলোকে গুছিয়ে পাইপ/মাটির তলদেশ দিয়ে আনয়নের সিস্টেম চালু করা খুবই জরুরি।
৭/সকল প্রকার গণশৌচাগার সাধারণের জন্য উন্মুক্ত/ফ্রি করে দিতে হবে,টাকা না দিয়ে সাধারণ মানুষ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পারলে সেক্ষেত্রে যত্রতত্র মলমূত্রত্যাগ বন্ধ হবে।
৮/সিটির মধ্যে সর্বত্রই ফুটওভার ব্রীজ ব্যাবহার ও ডাস্টিবিন ছাড়া হাতে থাকা অপ্রয়োজনীয় কাগজ বোতল যত্রতত্র ফেলা আইনী প্রক্রিয়ায় বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৯/ ওপেনে সর্বত্রই ধুমপান বন্ধের আইন কড়াকড়ি করতে হবে।
১০/রাস্তার পাশে যে কোনো প্রকার হকার বসা বন্ধ করতে হবে,নির্দিষ্ট স্হানে হকার্স মার্কেট চালু করতে হবে।
১১/সিটির মধ্যে যে কোনো প্রকার বিষাক্ত ক্যামিক্যাল গোডাউন ও সকল ফ্যাক্টরি ঢাকার বাহিরে সরিয়ে নিতে হবে।
১২/সিটির ভিতরের সকল ফ্লাইওভারের টোল ফ্রি করতে হবে, এতে সবাই নির্বিঘ্নে ফ্লাইওভার ব্যাবহার করবে, এতে যানজট অনেকাংশে কমে আসবে।
১৩/তেঁজগাও ট্রাকস্ট্যান্ড সহ সকল প্রকার ট্রাক ও মিনি ট্রাক স্ট্যান্ড সিটির বাহিরে স্থাপন করতে হবে।
১৪/ঢাকার পাশ দিয়ে বয়ে চলা বুড়িগঙ্গা নদীকে সংস্কার পূর্বক পরিপূর্ণ বিনোদন হিসেবে নদীকে হাতিরঝিলের মতই ব্যাবহার করতে হবে,নদীর পাড়ে সিটির ভিতরে গড়ে উঠা সকল ডায়িং ফ্যাক্টরি সহ অন্যান্য ফ্যাক্টরী সরিয়ে নিতে হবে।
১৫/ছিনতাই সহ অন্যান্য অপরাধ বন্ধে সিটির সকল রাস্তা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা জরুরি।
১৬/সিটির ভিতরে সকল প্রকার আন্দোলন নামক অবরোধ ও গাড়ি ভাংচুরের প্রতিকূলে শক্ত আইন তৈরি করে সিটিতে আন্দোলন নিষিদ্ধ নগরী ঘোষণা করতে হবে।
১৭/সিটিতে ঢুকার আগে সকল কাঁচামাল ক্যামিক্যাল টেষ্ট করে আড়তে আনলোড সিস্টেম চালু করতে হবে।
১৮/পূর্বে প্লানিং করা (প্রয়াত মেয়র আনিসুর রহমানের)প্লানিং করা এর ঢাকার মধ্যে যানবাহন এর ডিপো সিস্টেমে সরকারি নিয়ম চালু করতে হবে।
১৯/ সিটির সকল নাগরিকদের প্রতি মাসে সরকারি ভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
২০/ঢাকার প্রতিটি বিল্ডিং এর ছাদে পরিকল্পিত ছাদ বাগান প্রকল্প চালু করতে হবে,জনগন কে এই বিষয়ে উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।
২১/মশা নগরীর সকল সমস্যার উর্ধ্বে , গত কয়েক বছরের ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া রোগের বাস্তবতা এমনটাই প্রমাণ করছে,তাই ঢাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতি দিন নিয়মকরে মশা মারার ঔষদ ছিটানো সহ নতুন ফর্মুলা বাস্তবায়ন পূর্বক কার্যকর ভুমিকা নিতে হবে।
২২/ওয়াসার প্রতিটি এলাকায় পাইপের ফাটল ধরার কারনে বিশুদ্ধ পানির সংকটে সিটি বাসী,তাই এই বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ জরুরি।
২৩/ দৃষ্টিনন্দন বিজিএমইএ ভবনটিকে না ভেঙে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য হাসপাতাল হিসেবে ভবনটিকে কাজে লাগানোর জন্য ও আমার মতামত ব্যাক্ত করছি।
মাননীয় মেয়র মহোদয় গন আমার বিশ্বাস একটি সুষ্ঠু পদক্ষেপ হতে পারে আমাদের সবার জন্য কল্যাণকর, এছাড়া জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু কন্যা বঙ্গরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এই মুহূর্তে আপনাদের দুই কিংবদন্তীর ভুমিকা অপরিসীম।
আর আমরা সাধারণ জনগণ উপহার পাবো একটি বিশ্বসেরা মডেল ঢাকা সিটি।
মাননীয় মেয়র মহোদয় গন আমি অবশেষে এই ক্ষুদ্র মানুষ টি যেতে যেতে বলবো আমি ছোট বেলা থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক,তাই দেশের প্রতি ও জাতিরজনকের প্রতি অবিচল ভালোবাসায় আমি এযাবৎ কালে হাজারের অধিক নৌকা প্রতীক,জাতিরজনক ও বঙ্গরত্নকে নিয়ে গান করেছি।যা আমি মনে করি এই দেশে জন্মনিয়ে জাতিরজনকের দ্রেশপ্রেম ও জননেত্রী শেখহাসিনার কাছে নিজেকে ঋণী মনে করেই নৌকার জয়গান গেয়ে চলছি, আমৃত্যু জননেত্রী কে মায়ের আসনে রেখে শ্রদ্ধা ও ভালোবেসে যাবো।
শুভেচ্ছাান্তে।
সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক ফিরোজপ্লাবন।